পূর্ব অভিজ্ঞতায় সময়ের সংকেত যখন দেহে
রাত্রির অন্ধকারে জায়গাটা করে নিলো প্রস্তুত
কয়েকজন সহচরের সদয় হস্তে এনে দেওয়া
খড়, ঘাস, লতা, পাতায়।
অতঃপর সহচরেরা পর্দার অন্তরালে অপেক্ষায়
বোবা মায়ের অস্থিরতা প্রসব বেদনায়।


সময়ের নিয়মে ভূমিষ্ঠ হলো একটি সন্তান,
মায়ের লোমশ কালো দুটি হাত
সন্তানটিকে তুলে নিলো বুকে আপত্য স্নেহে।
সদ্যোজাতের দুর্বল, কালো হাতদুটো
মাতৃবুককে আলতো ছুঁয়ে কাঁপে থরথর অবিরত।


মা তার পরম আস্থায় একহাতে সন্তানকে বুকে জড়িয়ে
অন্যহাতের স্নেহময় মধুর পরশে
মুছে দিলো সদ্যোজাতের চোখ, মুখ ও কপাল থেকে
জন্মরসের জাল।
তারপর নিজের ঠোঁটদুটো দিয়ে স্পর্শ করলো সন্তানের ঠোঁট
সবশেষে সন্তানের ললাটে এঁকে দিল একটি দীর্ঘ চুম্বন।


ওগো গরিলা জননী!
তোমাকে বোবা বললাম- নির্ভাষী নয়।
ভাষা সমৃদ্ধ মানবী তার সদ্যজাত শিশুকে
এর চেয়ে শক্তিশালী কোন ভাষায়
পৃথিবীর বুকে স্বাগত জানাতে পারে কি না
তা আমার জানা নেই।
শুধু জানি,
তোমার হাত, তোমার বুক আর তোমার ঠোঁটের যে স্পর্শ
তা ঠিক আমার মায়ের মতোই।
ও স্পর্শ তুমি আমাকে আর একবার দিলে
আমিও ধন্য হতাম আর একবার।
------------------------------------------------------------


গরিলা মায়েরা রাত্রের অন্ধকারে সবার অগোচরে সন্তান প্রসব করে থাকে। সিডনির Torango  Zoo তে এমন একটি মায়ের উপর গবেষণা চালানো হয় ওদের সন্তান প্রসব সম্পর্কে জানার জন্যে। বেশ কয়েকবার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে, কর্তৃপক্ষ শেষপর্যন্ত অনেকগুলো অন্ধকারভেদকারী ক্যামেরা তার রাত্রিবাস স্থানে স্থাপন করে, যাতে ধরা পড়ে ওদের সন্তান প্রসবের অভূতপূর্ব দৃশ্য। একটি ওয়াইল্ড লাইফ প্রোগ্রামে টেলিভিশনে দেখার পর প্রক্রিয়াটি এবং আমার মনের অনুভূতিকে বর্ণনা করার চেষ্টা করলাম আমার ভাষার সীমাবদ্ধতার মধ্যে।