গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহ
আর অসহনীয় আর্দ্রতায়।
মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির,
খরতাপে জলহীন উষ্ণতায়।


আমি এই গ্রীষ্মে
তবুও ভালো থাকি,
এক গাল হাসি দিয়ে
সুখের ছবি আঁকি।


কখনো আকাশে কালোমেঘ,
জমে জমে হয় বিশাল ঝড়।
সেই ঝড়ে আমি লন্ডভন্ড হই,
টিকে রই নিজেতে করে নির্ভর।


এরপর বর্ষা আসে,
পানিতে থইথই চারিপাশ।
সারাদিন মেঘলা আকাশ,
সাপ, বিচ্ছু, পশু, পাখি, মানুষের-
একত্রে বসবাস।


তখনো আমি ঠাই ভালো থাকি,
মিলেমিশে একসাথে।
এক গাল হাসিতে সুখ বিলাই,
হাতে হাত রেখে একসাথে।


কূল হারিয়ে মাঝ নদীতে,
তরী ভাসাই অচিন পানে।
জীবন কিংবা মৃত্যুর সমীপে,
অদৃষ্টের খবর কেবল তিঁনিই জানে।


হঠাৎ কূল পাই শরতে এসে,
মুক্ত নীলাকাশে পায়রা হাসে।
শান্তির বার্তাই তারা জানায়,
শুভ্র মেঘে কাঁচা রোদ যতটা মানায়।


আমি তখনো ভালো থাকি,
সদা হাসি, সদা খুশী রই।
মুক্ত আকাশে ঘুড়ি উড়াই,
যত দূর যাকনা সে
আমি ভীতু নই।


ভরদুপুরে টলমলে রোদ,
তবুও ভালো লাগে খুব।
বিকেল হলেই প্রাণ জুড়ায়,
প্রশান্তির জলমেঘে দেই এক ডুব।


স্নান সেরেই যেই উঠে আসি,
দেখি নবান্নের আয়োজন।
হেমন্ত এসেছে গোলাভরা ধানে,
তা বুঝতে আর কিসেরই প্রয়োজন।


কৃষাণীর হাসি মুখ দেখে,
আমি চেয়ে রই।
শাদা দাঁতে সুখের হাসি,
আমি ডুবে রই।


আমি এখনো ভালো আছি,
হেমন্তে এসেও।
ষড়ঋতুর ষড় ঢংয়ে,
ষড় আমেজেও।


এরপর কনকনে শীতে,
কাঁথা মুড়িয়ে পরে রই।
সারাদিন, সারাবেলা যেন,
উষ্ণ পরশেই বেঁচে রই।


আমি এই হাড় কাপানো শীতেও,
ভালো থাকি বেশ।
খেজুরের রসে পিঠাপুলিতে,
ভালো লাগা আমার অনিঃশেষ।


ঐ দরিদ্র বৃদ্ধ কিংবা শিশুর কষ্টে,
নিজেকে ভুলে রই।
নিজের কষ্টগুলো সব-
ছিড়ে ফেড়ে ক্ষান্ত হই।


ফুলের সুভাষে হঠাতই,
ঘুম ভেঙে আসে আমার।
বাহারি ফুলে বসন্ত-কুমারী
ভারী মিষ্টি রূপ যে ওগো তোমার।


এই মিষ্টি রূপের অাগমনে
খারাপ কি আর থাকা যায়?
সুগন্ধি কেশের নিগূঢ় পরশে,
সুখ যে মনে দাগ কেটে যায়।


বসন্ত তুমি ছলনা করোনা,
রূপে বিভোর করে আমাকে!
বসন্ত রোগে আর মানুষ মেরো না,
ভালোবাসবোনা তাহলে তোমাকে।


আমি ছয় ঋতুতেই ভালো থাকি,
ভালো থাকি বারো মাস।
কোন কিছুই আর বাঁধা নয় তাতে,
নিজেকে করি যে-
এখন আরও বেশি বিশ্বাস।।