আমি আসি মানুষের মাঝে ছায়ার মত
আমি প্রতিটি মানুষের জঠরে বসি পরস্পরে।
কেউ আমাকে দেখে না, কিন্তু তারা
একে অপরের দিকে তাকায়।
তারা জানে, সেখানে আমি আছি।
আর আমি সেখানে থাকি না-
ধনকুবেরের অর্থের পাঁচিলে
সোনার চামচ নিয়ে জন্মানো শিশুদের তন্ত্রে।
সেখানে থাকি অন্য পরিচয়ে
অন্য ভূষণে!


আমার নীরবতা জোয়ারের নীরবতায়
শিশুদের খেলার মাঠ আর পড়ার পাঠে।
যখন তারা তাতে বিতৃষ্ণার্ত
গভীর রাতের তুষারপাতে
আর ঘন বর্ষণের ধারায়
সবাই চেনে আমাকে অদৃশ্য সত্তায়।


সকল প্রাণীদের আস্তানায়
সকল জীবের জীবন ধারণে
আমার অস্তিত্ব।
আমার আগমন ঘটে-
যুদ্ধ আর দামামা,ধ্বংস আর জিঘাংসায়
আক্রমণ আর প্রতিহিংসায়, লোভ আর লালসায়
মানবতার পদদলনে আমার তৃপ্ত হাসি!


আমার কারণে
একটি অস্ত্রময় পৃথিবী
বায়ু থেকে নদীর কান্নায়
এক সাগরের জন্মের ইতিহাস।
আমি শিশুদের উদরে
আমি বৃদ্ধের জঠরেও
আমি আছি রাজসিংহাসনে
আমি কুঁড়েঘরেও করি বাস
আমি সবার অন্তরে বাস করি
সবাইকে দেখি, কেউ দেখে না আমায়
সবাই আমার অস্তিত্ব টের পায়, কিন্তু
স্পর্শ করতে পারে না।


আমার জন্য লড়ে সবাই
রক্ত ঝরে কত!
আমার জন্য সততা ছাড়ে
অধর্মের লেশটুকু বিসর্জনে।


আমার জন্য লিখিত কত না বিধান
কত না বই- পত্র।
কেউ আমার উপসনায়
কেউ ব্যঙ্গ রসে।


আমাকে জয় করার চেষ্টা করো না
আমাকে বশ করতে যেইও না
আমাকে খুশি করো মানবতার আইনে
সততার চাদরে
তোমার হাতের শ্রেষ্ঠ উপার্জনে
আমি হই বশীভূত।
আমি ন্যায়ের অনুরক্ত
মানবতার আনুগত্যে।


আমি অদৃশ্য, আমি যৌবনের চিত্ত
আমি বিশ্বময়ের চির জীবনের।