শীতের শেষ আমেজ! মেঘময় আকাশে নেই বৃষ্টি
এই রোদ ছায়ার খেলা চলছে সময়ে সময়
বাড়ির পাশের ইস্কুলে বার্ষিক পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান!
প্রতিবেশি খালাত ভাইয়ের সাথে ঘুরছি আনমনায়
একসময় সে বলল, চল আমার প্রেমীকে দেখাই"
বলেই যেখানে নিয়ে যায়,একদল মেয়েদের মাঝে
ওর কাঙ্খিত মেয়েটির পানে তাকাতেই মনে হল
আমি যেন ডুবে যাচ্ছি সাগরের গহীন জলে
দুই জোড়া নয়নের মিলনে ছন্দের গতিতে
চোখা-চোখিতে কেটে যায় অনন্ত প্রহর।
একসময় মনে হল আমি যেন পড়ে আছি
শুকনো মরুভুমিতে! আশেপাশে নেই জনপ্রাণীদের ছোঁয়া
এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিন এমনি ঘটত কাঙ্খিত কামনায়
আমি কলেজে যাবার পথে, ওর ইস্কুলে-
ওর চোখে দেখি আমাদের জীবনের ভবি স্বপ্নময়
একদিন একতরফা প্রেমিক খালাত ভাই বলল,
ওর প্রেমী কাকে যেন ভালবাসে; আমি তো পড়ে ফেলি-
আমাদের জীবনের আগামী সোনালি দিনের প্রত্যাশালন!
এভাবে চলে চারটি বছর! সাগরের নোনাজলে মাঝে মাঝেই
নিজেদের হারিয়ে চলি, কিন্তু মুখে কোনো কথা হয় নি যে।
ওর বন্ধুর মধ্যস্খতায় কতদিন আমাদের অভিসারের আয়োজন
কখনো সফলতা পায় নি যে, কোনো কথা কভু হয় নি যে
কখনো খাঁ বাড়ির বাঁশের সাকো, কখনো মাঝিবাড়ির চৌচালায়
দুজন এসে নিস্পলক চেয়ে থাকা, নির্বাক প্রেমের অমর সাক্ষী
আরো কেটে যায় দুটিবছর। ওর উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার পর-
ওর বেজে উঠে বিয়ের সানাই, ফুল ফুটে অজান্তে
ভার্সিটির হলে থেকে শুনি সেই বিরহের কথা
বিয়ের দিন সন্ধ্যায়, আমি ফিরছি হল থেকে বাড়িতে
শীতলক্ষ্যা নদীর ফেরি ঘাটে, এক নৌকাতে দেখি-
সন্ধ্যালয়ের আঁধার আবহে কে যেন বসে, পরিচিত গন্ধ
পায় মন, কাছে যেতে দেখি আমার চোখের তারা
জ্বলজলে চোখে; এবার আর ডুবে যাই নি সাগরের নোনাজলে
কাছে গিয়ে বললাম, যাচ্ছ কোথায় বিয়ের সাজে?
প্রতিউত্তরে- আমার হাত কি ধরতে পারবে নির্বাকী?
চারপাশ মনে হল, জোছনার আলোকে রাঙাল এই অমবস্যায়!