নি:সঙ্গ একা আমি; জেগে আছি অন্ধকার ঘরে
জানি না কোন অপরাধে!
নিদ্রার রাজ্য থেকে হঠাত বের করে দিলেন রাজা মহাশয়
আটকে দিলেন এমনতর দুয়ার;
দ্বিতীয়বার করবো প্রবেশ; নাই কোন তার উপায়।


বৈদ্যুতিক পাখাটা নিজের যোগ্যতানুযায়ী ঘুরে চলছে নির্দিধায় নিরাহঙ্কারে
সদ্য বনবাসিত জীবটি ঘরাত ঘরাত শব্দ করে চালিয়ে যাচ্ছে ঘুমন্ত তরণী
ছ’পায়ের সস্তা পাটাতনটা মচর মচর ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছে তার অপারগতা।


সময় নির্ধারক যন্ত্রটা আমার কর্নদ্বারে অভিসারে জানিয়ে দিলো
এবং হিসেব করে দেখা গেলো যে, ভূ-গোলকের এ প্রান্তটুকু রাঙাতে হলে
সূর্য মহোদয়কে আরো ৩ ঘন্টা ১৬ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।


নয়নের রাজ্যে উতসবের ঘন-ঘটা
চোখের পাতা দু’টো কে-যেন শক্ত করে ধরে রেখেছে
দুই প্রান্তের মিলনের বাধা দূর হচ্ছে না কোন ভাবেই।


সমস্ত রজনী জেগে থাকার অভিলাস প্রকাশ পাচ্ছে প্রতিটা পলকে
কোন প্রতিবাদে কর্ণপাত করার সময় নেই আজ নয়ন তারাদের
শুনছেনা মনিবের আদেশ; মানছে না কোন বারন হা হা কা র।


লুকায়িত রক্তচোষারা চুপিসারে করে আক্রমন
বাধা পেয়ে ফিরে আসা দক্ষিণের বাতাসের সঙ্গে নেচে চলেছে উড়ন্ত মশক;
একে অপরকে বার্তা দিলো পৌছে; কারো দয়ার বা অনুগ্রহের পাত্র তারা নয়
নিজ বাহুবলে আপন কারিশমায় এ মানব জগতে প্রভাব বিছাতে হয়।


হাত নেড়ে তাড়িয়ে দিলে ভয় ধরে না মনে
বৈদ্যুতিক যন্ত্রটা ব্যাবহারে সায় দেয় না এ হৃদয়
ইট্টুসখানি প্রানটাকে ই-শক দিয়ে তারাতে নিজেকে নিজেই ঠাওরাই ছোট
কামড়ে দিলে রাগান্বিত আমি, হারাই হিতাহিত জ্ঞান।


দূর আকাশের নক্ষত্রের মতো নিভু নিভু করে জ্বলছে
লাল রঙের বিদ্যুত নির্দেশক ছোট্ট বাতিটা
বাতাসের প্রভাবে পানীয়র বোতলটা মেঝেতে গড়িয়ে চলে
গড় গড়ড়ড়ড়ড়ড়ড় শব্দ, বেশ! মন্দ লাগছে না
ই-পাখার তান্ডবে স্থীর হতে চেষ্টা করেও ব্যার্থ বারংবার।


মূল ফটকের দিকে তাক করা এনার্জি আলোটা
দরজার কাছে এসে সবিনয়ে দাড়িয়ে আছে স্থীর হয়ে
অন্ধকার দূর করতে অনুমতির অপেক্ষায়।


কম শব্দ ব্যায় করে সময় অতিবাহিত করা রোবোটিক প্রতিনিধি
জড় পদার্থের মতো নি:শব্দে পরে আছে নিজের ভাড়া করা জায়গাটাতে।


২৭শে মার্চ-এর এই নির্ঘুম রজনীতে একা নই হয়তো জেগে এ ভূবনে
সামিনের অসুস্থ্য ছোট বোনটা মাথার উপর দপ দপিয়ে হেটে বেড়াচ্ছে রাতভর
ভারী কোন বস্তু দিয়ে স্ব-জোড়ে আঘাত করছে একটু পর পর;
ঠিক মাথা বরাবর সিলিং এর উপর; মাঝে মাঝে চিতকার করে উঠে যা-তা;
প্রতি রাতের সূচী করা অনুষ্ঠানের পালা এটা
জানি না কি অপরাধে! ভূগছে এই শিশু সহ পিতা-মাতা-ভ্রাতা।


মনে পড়ে রবির কথা-
ওহে নিদ্রা দেব বা দেবী! কোথায় গেলে পালিয়ে এত রাতে
কি করিলে বলো পাইবো তোমারে, রাখিবো আখিতে আখিতে।


মধ্যরাতে জঠোরের আবেদন! কি করে করি অনুমোদন!  
ভারী কিছু নাই, অগত্যা তরল পানে করতে হলো নিবারন
“বদন বইয়ের” শিক্ষার্থীরা জেগে আছেন অনেকে নিজ নিজ ক্লাস রুমে
যদি কোন নতুন লেসন ধরা দেয় নিজ নিজ ফোনের স্ক্রিন বোর্ডে।


কততম ইন্দ্রিয় এটা! জানি না! তবে নাম বলা যায় স্পষ্ট করে
মাঝে মাঝেই মাথা উচু করে জানান দিয়ে যায় আপন সত্তা;
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ করে চলে নিজের মতো
অধৈর্য্য অবসাদ ক্লান্তিকর বা বিরক্তকর নয়
রেখেছি তারে স্ব-সম্মানে সীমাহীন অধ্যাবসায়।


নীরবতার হার বেড়েই চলেছে সমস্ত পরিবেশ জুড়ে
দরজার কাছে অপেক্ষমান আলোটা চলে গেছে দীর্ঘ অপেক্ষার পরে;
নাসারন্দ্রের অন্ধ্রপ্রদেশে কিছু একটা প্রবেশ করে হাচির উদ্রেক হতেই
নীরবতার ভাঙলো আগল কিছু সময়ের জন্য; অন্ধকার এ ঘরে।


আয় ঘুম আয়, আমার চোখে মুখে, সর্ব অঙ্গে আয়
কতকাল আর নির্ঘুম এমনি জেগে থাকা
নিদ্রা যদি আড়ি দিয়ে না আসে কারো কাছে
নিদ্রার জন্য হয়নি জন্ম জানি; তবুও নিদ্রার দরকার আছে।
KKB-27.03.2017