রামলীলা
-----------


কৃষ্ণের রাজত্বে হাত বুলাতে আসিনি কখনও
রাঁধা শুধু তারই হোক রাতের আঁধারে সঙ্গোপনে ।
সীতার বস্ত্রহরণ পুলকিত করেছে রাতের নিস্তব্ধতায়
তবুও রামকে অস্বীকার করবো সে দুঃসাহস কোথায়।
চন্দ্রমুখীর রঙ্গালয়ে শূরার পেয়ালায় চুমুক দিয়েছি
আপাদমস্তক চোখ দিয়ে বুলিয়ে নিয়েছি রঙ্গলীলা ,
দেবদাসের অসার দেহের মাঝে পারুকে অসহায় হতে দেখেছি বারংবার।


আর খ্যাপাটে চুনিলাল যেন সাক্ষাত দেব পুরুষ
কাম শক্তি প্রদর্শনের এক নিদারুন ঝর্ণাধারা পেয়ালায় আর পেয়ালায়।
আদিমতার ঘ্রান আজ জেঁকে বসেছে সমস্ত শরীর জুড়ে
যোধা বাঈয়ের তরবারি যেন বুকের পাঁজরে বিদ্ধ হচ্ছে প্রতিনিয়ত ,
চকিত চাহনি সাবলীল বাক্যবাণ , কেন আমি আদিম হতে পারবোনা
লাল সালুর মজিদ যদি পারে , ধর্মের দোহাই আমাকেও কালপুরুষ বানিয়ে দাও।


দূরবীনের অন্তরালে রাজপথের মিছিলে আমাকে পোড়াতে দাও রৌদ্রের খড় তাপে
পেটানো শরীরী ভাষায় প্রিয়ার কামুক শরীরে আমিও পুরুষ হতে চাই ,
না হয় ভেঙ্গেছে বাবরি মসজিদ , কতবার দেখেছি সর্বনাশ এই ধরিত্রীর
মনিষীর গেঁড়ুয়া বস্ত্রের অন্তরালে , আমারও তো ইচ্ছে হয় কাউকে বধ করি।
নর্তকীর নূপুরের ঝংকারে কালিদাশ ও রেহাই পায়নি নিজগৃহে
মদের তীব্রতায় বেহুঁশ মাইকেল , আজ আমি তার দাসত্ব গ্রহন করবো
নজরুলের অগ্নিবীণায় সুরের মাতন তুলে , নাচাবো সমস্ত নারী জাতিকে।
বল বীর চির উন্নত মম শীর – আমার সমস্ত শিরা উপশিরায়
রবিঠাকুরের জমিদার বাড়ি আজ আমার রঙ্গশালা আমার রঙ্গমঞ্চ ,
শশিকান্তের বেহায়া সুর , আমি উম্মাত যেন পাষণ্ড এক প্রেমিক।
বাঁধ ভাঙ্গার প্রবল ইচ্ছার মুখে , চীনের প্রাচীর যেন একটা নিখাত চাবুক
আঘাতে আঘাতে জর্জরিত প্রেমিকার সমস্ত শরীর , যেন রামলীলা ,
রেকর্ডের খাতায় নাম লিখতে গিয়ে যেন - সতীত্ব বিসর্জন।


তবুও ক্ষান্ত দিবো – কেন আমি কি পুরুষ নাকি বেজন্মা ,
রাজত্ব যখন পেয়েছি ল্যাম্প পোষ্টের আলোয় সীতা হরনে দোষ কি।
বিদ্যাসাগরের ঝুলিতে আর কিছুই নেই - শুধুই মাংসপিণ্ড ,
খাবলে যখন ধরেছি তখন ছাড়বো কেন – কারন আমি পুরুষ
রাম - বুঝিনা , কৃষ্ণ - বুঝিনা আমি বুঝি রামলীলা কৃষ্ণের কামুক বাঁশি।
পৌরুষের দাপটে সময়ের আদিমতায় কারো জঠরে আমার প্রজন্ম ,
এটাই আমি এটাই আমার পুরুষত্ব......