হাসপাতালের বারান্দাতে দেখেছি সে এক বুড়ো,
মাঘের প্রভাত, ছিন্ন চাদর- শুয়ে আছে জড়সড়।
মৃত্যুর সাথে বয়স বুঝি যুদ্ধ বেঁধেছে এ প্রাতে,
তার চেয়ে আরো বড় যুদ্ধ একাকীত্বের সাথে!  
দুইধারে তাঁর ঘুমায় কত রোগী ও রোগীর সাথী,
বৃদ্ধ শুধু একা চেয়ে রয় কখন আসিবে নাতি।
সকাল গড়ায় দুপুর পেরোয় হয়না নাতির খবর
বুড়ো শুয়ে ভাবে নাতি কি তবে খুড়তে গেল কবর!
বৃদ্ধ বয়স- বেঁধেছে ব্যাধি, সাথে নাই তাঁর কেউ;
ছেলে বিলেতে, অনেক আগেই মরেছে বুড়োর বৌ।
মেয়েখানি তাঁর শ্বশুর বাড়ি, নিবাস পাশের গাঁয়;
স্বামী-সন্তান আর পরিজনে ব্যস্ত সে অতিশয়।
দশ কদমের গাঁ খানি তাঁর যেন অতিশয় দুর-
মরণের পর আত্মা যেন ছেড়েছে অন্তঃপুর।
নাতিখানি তাঁর খোজ নিয়ে যায় যখন খবর আসে,
এছাড়া যে তাঁর ধরণীর পর কেউ থাকেনা পাশে।
রুগ্ন শরীর, জীর্ণদশা- বৃদ্ধ কালের শাপ-
শরীরের ভার বয়ে বেড়ানোই বিষমও সন্তাপ।
এমনি দেহে বয়সের তরে বারবার আসে ব্যাধি-
যখনই তাঁর দেহ ধরিবার কাছে নেই কোন সাথী।
যৌবনে তাঁর অন্দরখানি ছিল পরিজনে ভরা,
নত করিবার ব্যাধিরা তখন ছিল সুদূরে হারা।  
জীর্ণ দেহ, ন্যুজ-অক্ষম, শূন্য বুড়োর বাস-
চতুর ব্যাধি এমনি অকালে করিতেছে পরিহাস!  


   -- রচনা ২১ জুন, ২০১৭।