চলেছে পান্থ অবনীপরে
যুগান্তরের মর্মগাঁথা পথের পরে;
শূন্যচরণ বর্ণ খচিত ধুসর ধূলি
মর্মে মর্মে রপ্ত করে চরণধ্বনি।
যুগ যুগান্তের ভিন্নজনের ভিন্ন পদাঘাত,
ভিন্ন ব্যথা, ভিন্ন কথা, ভিন্ন অভিমত,
ভিন্ন আশা, ব্যাকুলতা, আর হতাশার বুলি
আজন্ম সঞ্চয়ণ করে পৃষ্টপথের ধুলি।
ভিন্ন বেশে ভিন্ন দেশের ভিন্ন পথচারী
নিত্য দিবস নিত্য রজনী এই পথ সঞ্চারী-  
শুধু পথ পড়ে থাকে পথের পরে
                        পথের নেই তো চলা;
জন্মাবধি নিরিখে তাবৎ নরসমাজের ছলা!


সন্দিগ্ধ মন, দূর হতে দূর পান্থ চলিল বহি,
ঘরে অপেক্ষী প্রেয়সী তাঁহার পথ চাহে রহি রহি।
মস্তকপরে মার্তণ্ড তীক্ষ্ণ কিরণধারী-
মরুর বালি চরণ ধুলি সমান অনলধারী।
ক্লান্ত পথিক, ক্লান্ত চরণদ্বয়
ব্যথায় ব্যথায় শুধুই থমকে যায়;
বসি’ বৃক্ষছায়াতলে ক্ষণিক বিরাম,
চরণে লোভিল শান্তি, আত্মা অবিরাম
গাঁথে কত কথামালা সংসার লাগি-
বাঁধি’ তাঁরে মায়াডোরে ভুবন সোহাগি।  


সংসার আরাধনা নিয়ত চয়ন-
আঁকে বাঁকা স্বপ্নরেখা মুদিত নয়ন।
চলিল পান্থ পুনঃ ফেলি কথামালা,
পন্থ কুড়াইয়ে ভরে আপনার গলা।
শত মাল্য পরিহিত এই পন্থবর
যুগে যুগে ভরিয়াছে যুগের জঠর;
এক যুগেরে অন্যযুগে তুলিয়া টানি
যুগে যুগে নবযুগ রচে পথখানি।  


  -- রচনা, আনুমানিক ২০০৫।