সেদিন রাতে পথে যেতে যেতে দেখেছি অন্ধকারে
এক ভিখারিনী সাথে খুকুমণি ঘুমায় পথের ধারে;
ইটের বালিশে রেখেছে মাথা,
শাড়ির আঁচল বনেছে কাঁথা,
পৌষের রাতে ঘন কুয়াশাতে ঘুমায় জননীমাতা,
সাথে খুকুমণি ছোট দেহখানি কলার পাতায় পাতা।


ঝিরঝিরে বয় হিমেল মলয় এমনি শীতের রাতে,
হাড় কনকন করে ক্ষণেক্ষণ- ঠোঁট ঠরঠর সাথে।
হিমেল হাওয়ার এমনি স্বভাব
দ্বিগুণ বাড়ায় শীতের প্রভাব
ঘরহীনদের সাথে বুঝি তাঁর আদি জনমের আড়ি-
‘শীতের রাতে কোন হেঁয়ালিতে ছেড়েছিস তোরা বাড়ি’!
  
হিম হিম রাত এই ধরাপাত কুয়াশায় গেছে ভিজে,
পাতে পাতা রাখি’ সব তরুশাখী যেন উষ্ণতা খোঁজে;
তারি মাঝ হতে হীন দু’টি পাতা
যেন ঝরে গেছে- নিঠুর বিধাতা
দিল না রে ঠাই অতি অনীহায় ঘনপল্লব মাঝ-
দীন-হীনদের ছুড়ে ফেলা বুঝি অধীশ্বরের কাজ!


শহরের পরে আছে সারে সারে হাজার দালানবাটী-
নীচে দারোয়ান বাঁশি ফুকরান হাতে মোটা মোটা লাঠি;
তারি চারিধার ঘেঁষতে মানা,
যেন আশপাশ সকলি কেনা,
নীচের কোণায় ছাউনিখানা পড়ে আছে তবু খালি-
দুপুরবেলায় সেখানে ঘুমায় ফুলবাগানের মালি।


হিম আঁধারেতে কোন ছাউনিতে মেলেনি যে তাঁর ঠাই,  
তীক্ষ্ণ সূচে শোক বুনে গেছে ছেঁড়া শাড়িটির গায়।  
লাঠিখানি তাঁর বহিতেছে ভার,
কত ক্ষোভ আর কত ধিক্কার-
কত অভিশাপ জমে আছে তাঁর ত্বকের ভাঁজে ভাঁজে!
পথ চলি ধীর ভাবি অস্থির, মরি বিবেকের লাজে!  


* এখানে 'পাতে'=পাতায়


         --- ৭ জুন ২০১৭