ক্ষণে ক্ষণে মাউস আর কীবোর্ড ঠেসা-
নিশীভোর দিনভোর ফেসবুকে বসা।
আদীম নেশার আজ জানিনে কি দশা-
শুরু হলো সভ্যের ডিজিটাল নেশা!
সেকেলে নেশার সনে এ কি গো তফাৎ?-
এই নেশা বিস্তারে সমুদয় জাত।
নর কিবা নারী, ধনী কিবা দ্বীন,
অজ্ঞ বা জ্ঞানী, কিংবা কুলীন,
বীর কিবা ভিতু, শালীন-অশালীন,
এ নেশার খপ্পরে সকলি বিলীন।
মাঝরাতে নিভৃতে মোবাইল ঘষা,
হোয়াটস অ্যাপ-টুইটারে চোখ ভাসা ভাসা-
আদীম নেশার আজ জানিনে কি দশা
শুরু হলো সভ্যের ডিজিটাল নেশা!


এ নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ে থাকে কর্ম,
সাধু তাই টিপে যাই ভুলে গিয়ে ধর্ম,
টিপে টিপে তর্জনী হয়ে যায় শীর্ণ,
মেরুদন্ডের ব্যাথা করে দেয় জীর্ণ,
ঘাড় ব্যাথা মাথা ব্যাথা দৃষ্টি যে ঝাপসায়,
ব্যান্ডউইথ খেয়ে খেয়ে মানিব্যাগ চুপসায়।
ভার্চুয়াল এ নেশায় হয়ে সব মগ্ন
ডিজিটাল স্লোগানে জাতি করে ধণ্য!
‘বাইনারি ডেটা’ শুধু এ নেশার পণ্য
তাই বুঝি কর্তারা করে না তা গণ্য!
মদ, গাঁজা, হিরোইন, ইয়াবার আদলে
এনালগ নেশা ছিল সীমিত ও আড়ালে।
ডিজিটাল নেশা শুধু বিস্তারে নগ্ন
আপামর জনতা হেথা তাই মগ্ন।
সেলফির ভেল্কিতে কত প্রাণ ঝরিল-
কত গবেষক তাই মেলাতেই মরিল!
কত নগ্ন ছবি হয়ে গেলো ভাইরাল,
ধর্ষিত নারী নিয়ে হলো স্কান্ড্যাল,
সমাজ বিরোধী কাজে ভরিল যে ভিট
তবুও নাম তাঁর সোস্যাল সাইট!


এই নেশা রুধিবারে নেই কোনো উদ্যোগ-
সবে তাই এ নেশায় করে যায় সম্ভোগ।
এই নেশা সময়ের করে কত নষ্ট,
কত নর চিত্তের করে পথভ্রষ্ট,
তার কোন তথ্য জানেনা তো আমলা-
শুধু তাই গেয়ে যায় ‘ডিজিটাল বাংলা’!
এই নেশা বিস্তারে হচ্ছে নিধন
কত সংসার আর কচি কচি মন-
তা সবি চিন্তার খোরাক জোগায়।
এই নেশা রুধিবার কি আছে উপায়!
ভাবনা গভীরে ধায় বাড়ে সংশয়-
‘নেশা’ নামে এ নেশার নেই পরিচয়!
নিরবে বদল কি গো নেশার ভাষা?-
এ মম ভাবনা সবে ভাবে তামাশা।
আদীম নেশার আজ জানিনে কি দশা
এ কি তবে শুরু হলো ডিজিটাল নেশা?