যে চোখের জলে নদী
----
জল!সে তো মেঘেরও আছে,
ঘাসের আছে,তাপের আছে
আর আমার চোখে?
আমার চোখে যত জল আছে জমা
ওখানে পৃথিবীর সমস্ত মহাসাগর অনায়াসে
ঠাই নেবে,আমি জল চাইনি নদী;
তোমার কাছে জল চাইনি আমি,
কতটুকু জল আছে তোমার?
আমি চেয়েছি এতটুকু শীতল বাতাস,
তোমার দুই পার ঘিরে থাকা বেণুবনে
দোল খাওয়া দখিনা বাতাসের কিছুটা
আমি চেয়েছিলাম কোনও এক
তপ্ত দগ্ধ নিদাঘ দুপুরে।
ক্রমশ লু'হাওয়া বয়েছিলো ওখানে
যেমন একাকী মরুর পথিক
দিকভ্রান্ত হয়,
জল নয়,মরিচীকা ওখানে দৃষ্টিতে বিভ্রম হানে।
ক্লান্ত পথিক শ্রান্ত হয়,সমস্ত শক্তি নিঃশেষিত
তপ্ত বালুকণায় পড়ে থাকে তার অস্পষ্ট পদচিহ্ন,
মরুঝড় উড়িয়ে নিয়ে যায় সময়ে,
ওখানে কি কেউ ছিলো কখনও?
অবসাদে আমি তাকাই দিগন্তে,
ওখানে চিত্র বিচিত্র সব রেখা-
মায়াবী হাতছানি তাদের,দূরে আরও বহুদূরে।
আমি ওখানে দেখতে পাই কার ছায়া যেন,
ওখানে কি শীতল বাতাস আছে?
আছে বেণুবন আর পাতাদের কথা বলা?
ধীর পায়ে আমি হাঁটতে থাকি,
নদীটা পিছনে পড়ে থাকে,আমি ওর জল চাইনা।
শুষ্ক বিবর্ণ নদী,নিজেই রিক্ত নিঃস্ব কবেই,
আকাশ তার সবটুকু জল দখল নিয়েছে।
আমি সবুজ ঘাসে আকণ্ঠ ডুব দেই,
ঘাসের সমুদ্রে শয্যা পাতি নির্ভয়ে।
মাটি আর আমি খুব কাছাকাছি এখন,
উপরে নীল আকাশটা ছায়া মানব হয়ে
আমায় পাহারা দেয়।
প্রচণ্ড শীতল আমি,বরফ হতে থাকি ক্রমশ,
আকাশ দেখেছে কেউ না জানুক;
আকাশ জেনেছে আমি মাটিকে দিয়ে গেছি
আমার চোখের সমস্ত জমাট জলাধার।
আমি নিজেই নদী দিয়ে যাই উপহার,
চোখের জলের নদী।
তারপর আমি মাটিতে মিশে যাই,
আমি মাটি হয়ে যাই-
এখন মাটিতে সবুজ অরণ্য দোলে,
হরিৎ পত্রাদি পরস্পর সুখ দুঃখ বিনিময় করে,
আমি আর একাকী নই,
অজস্র কথা আমার সঙ্গী এখন।
৬/৪/১৯