একদিন তোমাকে খুঁজে পাবই
শিশির ভেজা সবুজ সকালে
অথবা টুপটুপ ঝরা রোদ
মসৃণ নরম গোলাপের ডালে।


একদিন খুঁজে পাব বাঁশবন
ব-পাখির সোনালী মাথায়
কিম্বা হলকা হাওয়ায়
ভেসে আসা নৌকো পাতায়।


একদিন সুগন্ধি আনবে বয়ে
অখ্যাত কোন অনামি ফুল
তোমাকে সাজিয়ে দেবই সুন্দর
স্বপ্ন বিছানা বকুল।


একদিন ঠোঁট ছুঁয়ে আসা
জ্যোৎস্নার মত মৃদু হাসি
নিদ্রাহীন রাতে বেজে ওঠা
কালোর অমোঘ প্রেম বাঁশি।


একদিন পাবই অসীম আনন্দ
পাহাড়ি জলের ধারায়
অথবা যেখানে নির্মল কুয়াশারা
চুপিসারে বৃষ্টি পদাবলী গায়।


একদিন তুমি ভেসে উঠবেই
শালুক শান্ত দিঘী জলে
ছড়াবে যৌবন ধুনী চুপিচুপি
শারীরিক যত পাপড়িগুলো মেলে।


একদিন তুমি সূর্যভোর
দেখা দেবে পাহাড় চূড়ায়
যেখানে শিহরিত আলোকণা
লজ্জা ঢাকে রুপালী আভায়।


একদিন তুমি দুলে যাওয়া
উন্মুক্ত মাঠের ধান শীষ
মৃদু মৃদু হাওয়া ঢেউ যত
শুষে খায় যৌবন বিষ।


একদিন পাব ঘরে ফেরা এক
সান্ধ্য পাখির পালক
সূর্যের আগুনে পুড়ে পুড়ে
আকাশটা যতই রক্তলাল হোক।


একদিন তুমি আলের ওপরে
মন হারানো বিহু-মনা
ময়ূরের মত দুলে হাঁটাহাঁটি
অথবা এখনি মেলবে ডানা।


একদিন ছন্দে ভেসে যাও দূর
অজানা কবিতা ভেলায়
যদিও সযত্নে রাখা শব্দতে
বহমান নদীটি হোঁচট খায়।


একদিন তোমাকে পাবই ছবি
আঁকা আছ যে চিত্রপটে
ধুলোমাখা তুলিরং যত
সেইদিন উজ্জ্বল হবে বটে।


একদিন হোলীর আবীরে তুমি
জামদানী শাড়ীর নক্‌শায়
রঙে রঙে সখীরা সবাই
ফাল্গুনী হোরি গান গায়।


একদিন তুমি বাহারি ডানা
মধু পান করা প্রজাপতি
ফুলেরা আতর ভাসিয়ে রাখে
একটু ভালবাসা রেখে যাও যদি।


একদিন তোমাকে খুঁজে পাবই
বৃষ্টিতে ভেজা মহুয়ার বনে
মূর্ছিত আকাশে সেদিনও যদি
এতটুকু নেশা লাগে মনে।


একদিন তুমি সোনার হরিণ
মনের ভেতরে ছুটে যাওয়া
বনভূমি আলোকিত করে সেইদিন
তোমাকে নিছক একা পাওয়া।


একদিন তুমি জলের ভেতরে
পাখনা ছড়ানো সোনা মাছ
বুকের ওপরে উড়নির মত
জড়িয়েছ যত শ্যাওলা গাছ।


একদিন তোমাকে পাবই ঝিনুক
কোন এক সাগরবেলায়
যেখানে সূর্যের আলো অনাবিল
চারিদিকে মুক্তো ছড়ায়।


একদিন তোমাকে খুঁজে পাবই
মেঘ-বন্দিনী নীল চাঁদ
তারাগুলো হিংসার দীপ জ্বালে
অনন্ত সেই মধুচন্দ্রিমা রাত।


একদিন তুমি শুভেচ্ছা ভরা
নববর্ষের বাসন্তী ভোর
ব্যথাগুলো ঢাকা থাক সব
সাতরং মাখা আলোর ভেতর।


© কমল নুহিয়াল ১৫/০৪/২০০৯