সর্ব যুগে সর্ব কালে মানুষ থাকে অসুখ জালে
যুগের যেমন অগ্রগতি নিদান মেলে বেশ কয়েকটি l
তেমন কিছু একটি গ্রামের কম বা বেশি রোগ নিদানের
একে একে স্মরণ করা মনে যেটুক আছে ধরা l


বছর শুরু সূর্য তলে ঘামাচিরা ভীষণ জ্বলে  
এখন কত ওষুধ চলে কত ওষুধ কত বলে l
সেই যুগেতে নিদান ছিল বৃষ্টিধারা গায়ে ঢালো
অথবা নাও লেবু কেটে রসখানি দাও গায়ে সেঁটে l  
ঘামাচি তো নাকাল বেজার, রাস্তা খুঁজত ছুটে যাবার l
গায়ের অসুখ গায়ে ফিনিস, নাই ওষুধে দারুন জিনিস l


এই সময়ে মাঠে যাওয়া ফুটবল খানি পায়ে পাওয়া
মরসুমের ঐ প্রথম দিনে খেলা শেষে আর বাঁচিনে
দুপায়ে কি বিষম ব্যথা রাতভর সে কি যন্ত্রনাটা l
নিদান ছিলো, ব্যথা পায়ে, আবার খেল মাঠে গিয়ে
খেলামাঝেই ব্যথা উধাও, বছর বছর এটাই চালাও l
কিন্তু যদি ব্যথা নিয়ে থেকে গেলে ঘরে শুয়ে
ব্যথা থাকে দিন কয়েক সঙ্গে খরচা টাকা শয়েক l


গ্রীষ্মের শেষে বর্ষাকালে ভিজে ভিজে পা নাকালে  
আঙ্গুল ফাঁকে সাদা ফোলা, দুর্গন্ধ ও আঙ্গুল জ্বলা
নিদান ছিল সহজ অতি হলুদ গুঁড়ো কয়েক রতি
আঙ্গুল ফাঁকে যত্ন করে রাত পোহালে অসুখ সারে l


শিশু যখন বড়ো হত দুই হাঁটুতে ব্যথা হত
এখন শুনি গ্রোয়িং পেইন, জানি না কি ওষুধ দিবেন l
আমাদের সেই ছোট্টবেলায় সহজ ছিলো সেটার উপায়
গামছাখানি শক্ত করে, বাঁধন দিতাম একটু জোরে
লেপ্টে দিতাম দুটি পায়ে, ব্যথা যেত নিজের গাঁয়ে l


কৃমি যখন সর্বনাশে বৃষ্টিধারা ভরা গ্লাসে
পান করে জল পেটটা ভরে, জানতাম কৃমি গেল মরে  l
পূজার সময় পাঁঠা বলি মাংস ঘরে থলি থলি
সব বেলাতে মাংস চিবাও সঙ্গে সঙ্গী দাঁতের ব্যথা-ও
প্যারা পাতা জলে ফোটাই গরম গরম দাঁতে লাগাই
দাঁতের ব্যথা ভয়ে পালায় বারণ নেইকো মাংস খাওয়ায় l


সর্বাঙ্গেতে বিষম ব্যথা রসুন তেলে মুড়ি মাখা
সঙ্গে একটু কালো জিরে ব্যথায় আরাম শরীর ঘিরে l
মচকে যদি যেত পা-টা হতো শুরু দারুণ ব্যথা
চুন ও হলুদ একটু লবণ জল মিশিয়ে করে দ্রবণ
গরম করে মলম মতো ব্যথায় দিলে আরাম হতো l
হেঁচকি ওঠে কতো যে বার সেটার থেকে পেতে নিস্তার
প্লাস্টিক ব্যাগটা মুখে ঢাকো কার্বন ডাই- কে কেবল শোঁকো
হেঁচকি যাবে শ্বশুরবাড়ি দেখো কতো তাড়াতাড়ি l
চলতে গিয়ে চোখে পোকা, থেমে পড়ো, রাস্তা ফাঁকা
একটি হাতে চোখটা খুলে পেছন পানে কদম চলে
পোকা যাবে চোখের বাহির রুমাল বিদ্যা নয়কো জাহির l


গ্রাম গিয়েছে টাউনে মিশে সোনার বাংলা হারায় দিশে
কৃষ্টি শিল্প শহরমুখী গ্রামের মানুষ বড়ই দুখী l
শিক্ষিতরা শহরবাসী, আঁধার গ্রামে লুপ্ত হাসি
কবিতায় সেই গ্রামকে খোঁজা, প্রাণচঞ্চলা জীবন সোজা l