পূজার সময় পড়ে কতো পাঁঠা দুর্গা কিংবা কালী
ঘরে ঘরে যতো মালদা জেলায় পূজার বরণডালি l
হাট ও বাজারে কেনে তাঁরা পাঁঠা সকল মানুষ জড়ো
কেনে তাঁরা পাঁঠা সামর্থ্যমতো কেউ ছোট কেউ বড়ো l
পূজার আগেই মাস কিছু ধরে গ্রামভর চলে চর্চা
কতশত পাঁঠা কিরকম হলো কার হল কত খরচা l
কেবল যে বড়ো অথবা কি ছোট এটুকুই নয় শেষ
পাঁঠা বিশারদ গ্রাম জুড়ে যাঁরা তাঁদের জ্ঞান অশেষ l
তাঁরা দেখবেন বিশেষত কিছু অদ্ভুত গুণাবলী
পাঁঠাটিতে আছে মাল কতখানি, কোন্-টিতে মাল খালি l
ঘরে ঘরে চলে আনা আর গোনা বিস্তর গবেষণা
লেজ কভু নেড়ে কভু কাঁধ ঝেড়ে গুণ দোষ হয় গোণা l
আতিথ্যে কেও রাখে না তো ত্রুটি ঘরে গবেষক এলে
মনটা সবার খুশিতে অপার তেমন প্রশংসা পেলে l


এক বাড়ীটিতে এক সে বছর গ্রামের সবার মামা
আনলেন পাঁঠা মস্ত সে বড়ো গাড়ি থেকে যেই নামা,
ধেই ধেই করে গ্রামের সকলে আসলেন দলবলে
কি প্রশংসা কি প্রশংসা করলেন মন খুলে   !
বললেন তাঁরা এজাতীয় পাঁঠা দেখেনি কখনো কেউ,
মাথা থেকে পায়ে ডাইনে ও বাঁয়ে নিখুঁত নিটোল ঢেউ l
ছোট থেকে বড়ো, সকলের কথা - খুব ভালো ভালো খুব
যত হয় বলা মুখ চঞ্চলা এবং আতিথ্য সুখ l
মামা শুনে খুশি, খুশি রাশি রাশি, গামছায় মোছেন  ঘাম
গ্রামবাসীদের বললেন ডেকে, "উসুল হয়েছে দাম l"


রাত যায় বেড়ে ভ্যামানির স্বরে ঘুম ভাঙে বার বার
অবলা সে জীব নতুন আবাসে নেই কারও নিস্তার l
মামা যান রেগে বিষম আবেগে মাথা বাড়ি চিৎকারে
মামী দেখলেন অবলা সে জীব গায়ে দেন হাত নেড়ে l
আলোখানা জ্বলে ঘাসপাতা চলে একটুতে হয় শান্ত
একবার নয় বার বার হয় এ ঘটনার পুনরাবৃত্ত l
মামা যান উঠে রাগে মাথা ফুটে সেই রাগে চোখ লাল
ঘুম তাঁর গেল ওঠে হলাহল গ্রামবাসী খান ঝাল l
একে একে তার নাম ধরে ধরে দিয়ে যান টানা গাল
এইভাবে হলো পূবের আকাশে ভোরের সূর্য লাল l


বেলা যায় বেড়ে গা হাত পা ঝেড়ে মামী ওঠেন ঘুম থেকে
উঠানটা ফাঁকা দরজাটা বাঁকা বুদ্ধিটা যায় কেঁপে l
মামা কই ঘরে ? পাঁঠা গেল উড়ে ! কোনোদিকে নাই চিন্হ
খোঁজেন গ্রাম ঘুরে মাঠঘাট জুড়ে ফলাফল হয় শূন্য l


বেলা দ্বিপ্রহরে মামা ফিরে যান পাঁঠা করে হাটে বিক্রি
"প্রশংসকের প্রয়োজন নাই" জারী করেন মামা ডিক্রি l
"ছোট এক পাঁঠা আনব পূজাতে বলি হবে সাথে সাথে
ফের যদি কেউ আসে ঘরে ফেউ এক বারি দিব হাতে ।