পাল্কিতে চড়ে এক রঙীন যুগল জীবন শুরু হয় l তারপর "দুদিক থেকে আসমান ... সরে" "দম বন্ধ" হয়ে গেলে ছয় বেহারার কাঁধে লাশ হয়ে চটমোড়া অবস্থায়  সেই পাল্কিতে চড়ে আবার যাত্রা l এবার যাত্রা হয় আগুনের দিকে, নয়তো খাদের দিকে, যার যেমন ধর্মবিশ্বাস l প্রাণহীন দেহে তবু পিছনে ফেলে আসা "শূণ্য নগরে /
জ্বলে যাওয়া চটে যাওয়া / আটচালা ঘরে"র হাতছানি l পার্থিব বস্তুর আকর্ষণ, "হাত বিহীন ঘড়ি"  "টিকটিক করে চলে" তার স্মৃতি মনকে ব্যাকুল করে l ফিরবার সাধ জাগে, ফেলে আসা জীবনের "স্বাদ" পেতে ইচ্ছা করে পুনরায় l তবু সে তো হবার নয় l যা গেছে তা তো একেবারেই গেছে l ঘড়ি টিক টিক করে সামনের পানে চলে l প্রকৃতি তার নিয়ম রক্ষা করে l যে পাল্কি চলে আগুনের দিকে, যে পাল্কির গন্তব্য কবর - সেই পাল্কিতে শয়ান "বেহুঁশ অধমের" "প্রতিরাতে মহুয়ার ঘোরে" ঘরে ফেরা হয় না l জীবনের "ঘোর" কেটে গেছে, ছয় বেহারার কাঁধ থেকে এবার ধরিত্রী মায়ের গভীর গহন অন্দরে আশ্রয় নেবার পালা l
রূপক কবিতা "পাল্কি" তে কবি নাজমুন নাহার জীবনের এক অমোঘ সত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছেন l জীবন চলে সামনের পানে l যাপিত জীবন একবার পার হয়ে এলে সেই জীবনে আর কখনো ফেরা যায় না l তার স্মৃতি থাকে, যাপিত জীবনের স্পন্দন থাকে, "টিক টিক" করে     কর্মফল পেছনে অনুরণন তোলে l কিন্ত তার কর্তা শেষ যাত্রার অভিযাত্রী l যাত্রা তার অমোঘ l
সুন্দর, সাবলীল, গভীর আধ্যাত্মিক অর্থবাহী রূপক কবিতার জন্য কবিকে আন্তরিক অভিনন্দন l