দুখ যদি হয় দুঃখ বিলাস
সুখ স্বপনে ঘুমের আয়াস।
হাত বাড়িয়ে আকাশ ছোঁয়া
আকাশ তো নয়, গরম তাওয়া।
সৌর তেজের প্রবল ঝাঁঝে
হাত পুড়িয়ে সকাল সাঁঝে
হাড় হাভাতে সুখের খোঁজে
সুখ খোঁজা কি সবার সাজে?
দুখ যদি হয় দুঃখ বিলাস
সুখের ছোঁয়া মলয় বাতাস।
মনের কোনে মেঘ জমেছে
মেঘ যেন নয়, মন মেতেছে
মেঘের মেলায়, বৃষ্টি এল
চোখের কোলে, উপড়ে ফেল
বুকের পাথর, পাঁজর খোল
দুয়ার ভেঙে সুখ কি এল?
দুখ যদি হয় দুঃখ বিলাস
মনের ঘরে সুখের আবাস।
মনমানি না, মাভৈঃ বল
কোদাল কাঁধে, নাঙল ঠেল
রোপন করো সোনার ফসল।
হালের মাঠেই বাঁচার আভাস
খাটবো খাবো, মুক্ত আকাশ
সুখ পাওয়া কি এতই আয়াস?
দুখ যদি হয় দুঃখ বিলাস
সুখ সুধু নয়, সুখের তরাস।
হাড় ভাঙা শ্রম খাটছে শ্রমিক
ধুঁকছে শরীর ঝরছে যে ঘাম।
ঘাম নয় সে শোণিত ধারা
সোনায় স্বদেশ মুড়ছে তারা।
আমরা যারা গলায় গলায়
জেল্লা ছড়াই সোনায় মালায়।
সোনার সুখের মুখোশ পরা
সুখ নয় এ, দুখের ভারা-
ভাবের ঘরে ধার করা
শুধুই সুখের ভান করা।
দুখ যদি হয় দুঃখ বিলাস
গুমরে কাঁদে সুখের আরশ।
নিত্য নতুন কথার ভিড়ে
হক কথাটি বলবে কে রে?
কার বুকেতে পাটার জোর
হাতের বল পাহাড় তোড়
পাথর পিষে সড়ক গড়ে
তার চলা সেই দুখের ভিড়ে।
দুখ যদি হয় দুঃখ বিলাস
সুখ বেঁচে রয় ভাতের গরাস।
ভাত মুখে কি এমনি আসে?
চাষার শরীর আপনি চষে
ধান ফলে সে রক্ত রসে।
রোজ খাও যা দিন দুপুরে-
চাষার চামড়া, চাষার নাড়ী-
আর কতটা সুখ পেলে ভাই
সুখের লোভে পড়বে দাঁড়ি।