স্কুল পালিয়ে খেলার মাঠে খেলতে ছিলাম গুলি
পেছন হতে গুরুমশাই হঠাৎ এসে কানটা দিল মুলি।
বলল- পাজি হতচ্ছাড়া বাঁদর, বদমাইশির ধাড়ি
আবার যদি এমন করিস ভাঙবো পিঠে ছড়ি।

ভাঙলে ছড়ি বয়েই গেলো; আনবে নতুন ছড়ি
না হয় তিনি নালিশ দেবেন উজিয়ে এসে বাড়ি।
মা বকবে, কাঁদবে খানিক; বলবে বাবা রেগে—
দূর হয়ে যা সামনে থেকে; এক্ষুনি যা ভেগে।

সারাটা দিন বাউণ্ডুলে ঘুরিস হাটে মাঠে—
কচি খোকা নয় মোটে তুই; বুদ্ধি কি নেই ঘটে!
উদয়াস্ত খাটছি আমি ফেলছি মাথার ঘাম
এবার একটু ক্ষান্ত দে তুই; একটু দে না বিরাম।

এমন কিছু হয়নি মোটেই; দেয়নি কোনোই নালিশ
(গুরুমশাই) বলল ডেকে ভয় নেই তোর; করবোনা কো পানিশ  
মাথামোটা নয় মোটে তুই; বুদ্ধি অনেক ধরিস—
পাঠের সময় মগজটাকে লুকিয়ে কোথায় রাখিস?

আমি বললাম- বুদ্ধি কোথায়! গোবর ভরা মাথা—  
পরীক্ষাতে শূন্য তো পাই! সবাই বলে এক্কেবারে ভোঁতা।  
মুচকি হেসে মাথার ওপর- হাতটা তাহার রেখে
বললে তিনি- শূন্য থেকেই হয় রে শুরু; শূন্য থেকেই শেখে।      

সারাদিন তুই দাপিয়ে বেড়াস; দুষ্টুমি এত করিস  
পাঠের সময় হেলায় হারালি; তা কি কখনো বুঝিস?
স্কুলের পড়ায় মন বসে না! সমস্যা কি? আমায় দে সব বলে  
আমিও তখন বলেই দিলাম আমার কথা- মনের ঝাঁপি খুলে।    

বাংলা তাও ঠিকই আছে; ব্যাকরণ বড় ব্যাঁকা
হাবিজাবি যত নিয়ম কানুন- এতকিছু যায় শেখা!
ইতিহাস আর ভূগোল যেন গোলক ধাঁধায় মোড়া
বিজ্ঞান সে তো বিষম ব্যাপার, পাগলা রেসের ঘোড়া!  

সারাদিন ধরে এত নাম ধাম এত তারিখের বোঝা
মনে রাখা সে তো কঠিন কাজ; একেবারে নয় সোজা।
অংক! বিভীষিকা; ভাল্লাগেনা, ইংরাজিটাও বোরিং
এতসব শুনে বললেন তিনি- পাগল ছেলে করবি রে কিসে স্কোরিং?  

নম্বর নিয়ে এত যে কথা- অতশত আমি বুঝি না
ভালো না লাগলে জোর করে ভালো কিছুতেই আমি খুঁজি না।
কোন দেশে ভালো আখের চাষ; কোন দেশে ভালো আলু
জোর করে কেন রাখব মনে- কোন রাজা ছিল চালু?
  
তেলের বাঁশে তে সারাদিন কেন বাঁদর শুধুই উঠছে?
বেরিয়ে যাওয়ার নল খুলে দিয়ে অভিরাম কেন অবিরাম জল ভরছে!
মরা তালগাছে কোন পাখি থাকে? কি দিয়ে বানায় বাসা!
ক্লাসে তো সেসব বলেনা কিছুই! যা কিছু বলে সবই ভাসা ভাসা।

এত যে শিখি, এত মনে রাখি- লাগে কি সে সব কাজে?
কি করে হঠাৎ কি যে হয়ে গেল; গুরুমশাই জড়িয়ে বুকের মাঝে-
হঠাৎই বলল- শেখার কোন নেই তো রে শেষ, শুরুই আসল বিষয়—  
তুই শিখে নে যা মনে চায়— প্রকৃতির পাঠশালায়।।