অনেক বছর 'পর তোমাকে দেখলাম।
আমুল পরিবর্তন হয়েছে তোমার চেহারাতে
যতইদিনযাচ্ছে,আরওস্বতেজ                                      ও সুন্দরী হয়ে উঠছ তুমি!


ট্রেন থেকে নেমে, হাওড়ার সাব-ওয়েটা পেরিয়ে,
ডবল-ড্রেকারএস-৫এচড়তে চড়তে তোমাকে দেখলাম।
গ্রীষ্মের সন্ধ্যা,ঘামে প্যাচ প্যচে হয়ে উঠেছে সারা শরীর।
তার উপর ভয়ঙ্কর যান জট। আই পি এল চলছিল।
বাস-ট্রাম-মিনিবাস আর ট্যাক্সির 'পো-পো' আর
'গো-গোয়ানিতে' কান দুটি অস্বস্থিতে লাল হয়ে উঠেচিল।
হাওড়ারব্রীজটাপেরিয়ে,ব্যাবনরোডআর                                       পার্ক স্ট্রিট হয়ে, যখন মনুমেন্টের পাসে এলাম।
পরিদৃশ্যমান অদ্ভুত আলোক রশ্মিতে,
তুমি আরও সুন্দরী হয়ে উঠেছিলে।
তারপর সেই রেড-রোড, চারিদিকে সবুজায়নের
অন্ধকার চিরে বেরিয়ে আসছিল ফোর্টউইলিয়ামের
আলোর চ্ছটা।
শিশির মঞ্চের সামনে এসে, মনটা কেমন যেন
ভাব-বিভোর হয়ে উঠল।
তোমার কাব্যময় চেহারার উদ্ভুতত্ত্বকে রোমন্থন
করতে করতে, কাব্য ও নাট্যসাহিত্যের বাহ বন্ধন
থেকে,যখন নিজকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি,
তখন কানের মধ্যে ভেসে এল,গাড়ির সংঘর্ষময় ব্রেক আর লোকজনের আর্ত চিত্কার-
"গেল গেল!" "ধরো ধরো!"
স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙ্গার মত চোখে
বাসের খোলা জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখি,
স্ট্রীট লাইটের মৃদুমান্দ আলোয়,
তুমি হেঁটে চলেছ-গভীর আবেশে।

স্লীভলেশের মতন হালকা গোলাপী গেঞ্জী,
এরামের মতন ছোট্ট  নীল জীন্স প্যান্ট,
ধব ধবে ফর্সা পায়ে লাল রঙের স্লিপার,
হালকা বাদামী রঙের বব-কাট চুল, মৃদু-মান্দ
হাওয়ায় নিজকে উড়িয়ে নিয়ে চলেছিল।
মেরুন রঙের হেড ফোনটা রক্তাভ কান দূটিকে
আষ্টে পিষ্টে চেপে ধরেছিল।
গোল্ডেন কালারের চশমার ফ্রেমের মধ্য দিয়ে
বাম হাতের ফোর-জি ইনস্ট্রুমেন্টের উপর চোখ রেখে
টেকনলজির অতলান্তে হারিয়ে গিয়েছিলে তুমি!
মহীয়সী কোলকাতা!
কিছুতেই ভ্রুক্ষেপছিল না তোমার।
ক্ষীণাঙ্গী দেহটা হেলতে-দুলতে এগিয়ে চলেছিল
আপন মনে। -- তুমি কোলকাতা!
আমার স্বপ্নাতুর নির্মিমেষ দৃষ্টি,
তোমাকে বার বার বলছিলো....
" জাগো, এগিয়ে চলো।"
তুমি কোলকাতা!