শীতের সন্ধ্যায়,উত্তরের হিমেল হওয়া
নিরন্তর আসছিল ধেয়ে।
সমস্ত কিছুকে উপেক্ষা ক'রে
শহুরে ব্যাস্ততাময় জীবনে, একটু খুশীর আমেজ।
নবদম্পতির আগমণে, প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানটি ছিল বেশ।
আলোক রশ্মিতে প্রজ্জ্বল,অপরূপ লাবণ্যমন্ডিত
এক ত্রিতল রেঁস্তরার প্রাঙ্গন।
ধীরে ধীরে দু'চাকা, চার চাকা বাহনে আসছেন
বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় পরিজন।
কেউ বা সুট-বুট-টাই-কোটে,কেউ বা সাধারণ।
ঝলমলে শাড়ী আর ফুলের বাহার
বিবিধ অলঙ্কারে সজ্জ্বিতা রমনী ও কুমারীরা অতি মনোরম।
সবার মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল, বছর আটেকের বালক-অতি সাধারণ।
মা-বাবার আহ্বান অবহেলা ক'রে,
বারবার দেখছিল সে প্রবেশদ্বারে-দারোয়ানটিরে।
কাউকে বা সেলাম, কাউকে নমসকার,
"আসুন স্যার" বলে বারে বারে
অনিচ্ছাকৃত হাসি হাসে বিষন্ন অধরে।
অতঃপর সবাই জমায়েত রেঁস্তরার অভ্যর্থনা ঘরে।
মায়াবী আলো আর হালকা গানের সুরে,
একে অপরের সাথে"হাই" "হ্যালো" বলে-
হস্তমিলন আর বক্ষে জড়িয়ে ধরে।
পরিশেষে ভোজনের ক্ষণকাল পরে
রেঁস্তরা হতে একে একে প্রস্থান করে।
বালক দেখিল সব মনোযোগ সহকারে
দাঁড়াইল ধীরে আসি দারোয়ান সম্মুখে।
মা-বাবারে ডাকিল সে উচ্চ্ স্বরে,"হাই" বলো
"হ্যালো" করো ওরে।
"উনিও তো কারুর বাবা তোমার মতন।
ওনারও তো আছে কেউ মায়ের মতন।"
এই বলে দারোয়ানেরে করিল সে - অভিবাদান।
খুশীতে ভরিল তার বিষন্ন বদন।
"আয় খোকা" বলে তারে কোলে নিল তুলে।
ঠুনকো আভিজাত্য ভেঙ্গে গেল- আন্তরিকতার আহ্বানে।
মানবতা অঙ্কুরিত হল... আধুনিক জীবনে।
সেই অতি সাধারণ বালকের কারণে।