"বনলতা" আজও বেঁচে আছে...
তোমার মনেতে, আমার চোখেতে,
হৃদয়ের অনন্ত গভীরে!
আকর্ষক আধুনিকতা যতই আসুক ধেয়ে,
মুঠো ফোনের স্ক্রীনের উপর যতই থাকো চেয়ে
দেখবে তুমি গভীর ভাবে, আর একবার ফিরে,
ঘন অরণ্যের পথে সেলফি নিতে গিয়ে
সবুজ ঘাসের উপর বসে এলোচুলে
নয়তো বা একরাশ রঙিন ফুলেদের সাথে
ভাস্কর্য মন্ডিত মুখটি লুকিয়ে
তৃষিত ভ্রমরের মত, মধুপ হয়েছিলে।
কিংবা গ্রীষ্মের আকাশ থেকে, চাতকের আহ্বানে
হঠাত্ ঝরে পড়া এক-পশলা বৃষ্টির 'পরে
মাটির 'সেঁদো' গন্ধ নিয়েছিলে প্রাণভরে।
তাপদগ্ধ গ্রীষ্মের ঘোলা জলাশয়ে
মাছরাঙা-পানকৌটি আর সান্ধ্য শঙ্খচিলে
তোমারছায়াখেলছিলআনমনে।
আজও দেখিবে তুমি,প্রত্যন্তগ্রামে,
প্রথম বরষা জলে ভেজা কাপড়ে
সুডোল তনুখানি ঢেকে,
দ্রুত পায়ে হেঁটে যায় ঘরে
গ্রাম্য রমণী সারে সারে।
কাঁখেতে জলের কলস,
অন্য হাতে ন্যাংটো শিশুটিকে টেনে নিয়ে চলে।
আজও দেখবে তুমি
বাংলার জলভরা ক্ষেতে
সজীবতার আনন্দে
বলদের সাথে হাল ধরে কৃষক সারে সারে
বরষার ঘোলা জলে,
গাঁঙচিল আসে ধেয়ে,
নদী-নালা-জলাশয়ে মাছ ধরে জেলে।
ময়ূর দেখিবে তুমি
নাচিছে পেখম তুলে বনেতে।
আম-জাম-কাঁঠালের বনে বনে
প্রত্যহ সকালে, কোকিলের কুহুতান শুনিবে সকলে।
অশোক-কিংসুক-পলাশ আর কৃষ্ণচুড়ার
নয়ন ভরানো রঙেতে
দক্ষিনা বাতাসে, ফুলের সুবাসে
বুঝিবে, বসন্ত এসেছে প্রাণেতে।
দেখিবে ইহাদের মাঝে
বনলতা আজও বেঁচে আছে।
বিঃ দ্রঃ প্রকৃত পক্ষে কবি জীবনানন্দের জন্ম তিথিকে স্মরণ করে লেখা কবিতা। মানে "বনলতার" শ্রষ্ঠা আজও বেঁচে আছেন।