আমি সেই ক্ষুদ্র  বিবশ শিশুটি,
উদগত হয়েছিলাম মাতৃসদনের
হাসপাতালের পালঙ্কে।


আমার মতো অনেক শিশু উদিত  হয়েছিল
সৌরভের সকালে।
পূর্বের জানালায় সূর্য্যের কিরণ  রাঙিয়ে দিয়েছিল আমাদের শিশু পালঙ্ক গুলি কে।
স্পষ্ট মুখগুলি ভেসে এসেছিল আমার নয়নে,
বুঝেছিলাম তারা শিশু মানব।


একদৃষ্টে তাদের দিকে  চেয়েছিলাম আর
পাশাপাশি  পালঙ্কে শুয়ে কতই  না গল্প করছিলাম।
দোলায়ামান হয়ে আমি জিজ্ঞসা করেছিলাম
তারা কারা?
তারা একবাক্যে গর্জন করে বলেছিল শিশু মানব।
আমিও তাদের সুরে সুর রেখে চিৎকার করে
বলেছিলাম  আমিও শিশু মানব।


সেদিন আমি জানতাম না,
আমার ধর্ম,  কর্ম,  রুচি,  তাদের থেকে  আলাদা।
জানলাম  ঠিক দুদিন  পরে।


দুদিন পর ওই হাসপাতালের রেজিস্টারের খাতায় আমার নাম দিয়া হল, ধর্ম পরিচিত দিয়া  হল।
আমি হয়ে উঠলাম ধর্মের।
আমার মতোই আমার পাশে থাকা শিশু মানবরা হয়ে উঠলো  ধর্মের।


আমি হলাম হিন্দুর ছেলে,  কেউ হলো মুসলমানের ছেলে, কিউবা খ্রিষ্টান,  কিউবা শিখ।
সেদিন আমার  মানসে  আলোড়িত  হয়েছিল
তাহলে আমার জননীর বুকের দুধের  স্বাদ হিন্দুর, ওই পাশের শিশুটা টা মুসলিম এর,
তার পাশেরটা বৌদ্ধের।


সেই রাত্রে অন্তরের মধ্যে প্রশ্ন  উঁকি মারছিল,  আজও করে,  পৃথক ধর্মের আলাদা আলাদা মায়ের দুধের স্বাদ কি ভিন্ন ভিন্ন হয়?
তাহলে কি দুধের স্বাদ ধর্মের হয়, প্রাকৃতিক  নয়।
৮/৫৬.   ৫/০৬/২০১৭