ধরণী
এখন চিত, শুয়ে পড়ে আছে লাটে, মরা
চোখ দুটো বাসি মাছের চাউনিতে স্থির
তার কোলে নিভে আসা কাজলের ছাই
নাকের ফুটোয় গড়াচ্ছে জল, দু’ ফোঁটা
কানের লতি ফ্যাকাসে,  টিকটিকির পেট
ঠোঁট ফাটা ৷ নারকোলের ভাঙ্গা খোলার
মত মুখের ফাটলের শুকনো হাহাকারে
মেকী পলেস্তারা চটা চটা উঠে আসছে


কাল,
রাতের আঁধারে ধোঁয়াটে পিদিমের আলোয়
এর মোহে অন্ধ হয়েছিল সে নেশার চোখে,
ডেকেছিল এর মীনাক্ষী চোখের ভীরু পলক
তেল কাজলের লক্ষ্মণ রেখার ভিতর থেকে,
নাসিকা রন্ধ্রে শুনেছিল সলিলের কলধ্বনি
কানের গোলাপি পাতায়, উত্তপ্ত শিহরণ
ঠোঁট দুটো ছিল রাঙা, মসৃণ, আপত্তিহীন
সারা শরীর যেন উর্বর গাঙ্গেয় উপত্যকার
পলি, মেদের স্তরে অঙ্কুরিত স্নেহের বীজ


ডাক শুনে, দেখে, আছে জমি, জল, বীজ
খুঁজল সে নিজের মধ্যে এক উৎসাহী চাষা
কিন্তু সে ধরণী হল দ্বিধার লাঙ্গলে দ্বিবিভক্ত
কর্ষণে শেষ হয়ে গেল  সব ফলনের আশা


তাই এর গলা টিপে করেছে তাকে অনাবাদী
দুঃখ, না করে নিজের সর্বনাশের সব আয়েস
সে এখন এই লাশের সাথে আজীবন মেয়াদী
এক দুর্ভাগা


----------------------------------------
© ইন্দ্রনীর / ০৫ নভেম্বর ২০১৩