আঠার টাকার মজুরি খাটিয়া চলিতেছে দিন কষ্টে ,
মৃতবৎসার কন্যারত্ন এসেছে আবার ষষ্ঠে ।
রোগ-শয্যায় শায়িতা গৃহিনী অন্তিম বুঝি কাছে ,
অতি বরিষণে পাইনিকো কাজ , কপালে জানি কী আছে !
মুদিখানাতেও দেনা হয়ে আছি , বাকি নাহি দেবে আর ,
সম্বল নেই ঘরে এতটুকু বন্দক রাখিবার ।
কাণা-কড়ি নেই ছেঁড়া জামাটার পকেটে খুঁজিয়া দেখি !
ওদিকে শুনি প্রসূতির ঘরে প্রলাপ বকিছে সে কি !
খাদ্য নেই কো ঘরে এতটুকু , রোগিনীর নেই পথ্য ,
শোষিত সমাজে আমার মতন মানুষের নেই সত্ত্ব ।
বাঁচিবার বুঝি কোন অধিকার নেই কোন গরীবের ,
খাদ্য-বস্ত্র-ওষুধ-পথ্য সব কিছু ধনিকের ।
আরো কত কিছু ভাবিতে ভাবিতে চলেছি হাসপাতালে ,
গিয়ে সেথা দেখি ডাক্তার বাবু দাবার মন্ত্রী চালে ।
আবেদন মোর নিবেদন করে পাইনি জবাব তার ,
চুপচাপ শুধু দেখিয়া চলেছি অন্যায় অবিচার ।
কতক্ষণে বলিল বাবুজি , নেই কোন বেড খালি ,
কোন মেডিসিন নেই বলে বাবু সরকারে দেয় গালি ।
দুখানি চরণ জড়ায়ে ধরিয়া মিনতি করেছি যত —
বুকের রুদ্ধ পাঁজর ভাঙিয়া অশ্রু ঝরিল তত ।
নিঠুর বাবুর ভিজিল না মন , জাগিল না নীতি বোধ ,
অগ্নি-স্ফুলিঙ্গ ছুটিল ভিতরে নিতে হবে প্রতিশোধ !
হাসপাতালের ঔষধ কেন কালো পথে চলে যায় !
কেন, আমার মত অসহায় রোগী ঔষধ নাহি পায় ?
হাসপাতালের ঔষধ সব দোকানেতে পায় ঠাঁই !
আমাদের দেখে ডাক্তার বলে ঔষধ নাই নাই ।
পয়সা দিলেই বেড খালি হয় ঔষধ মেলে কত !
নির্বিচারে মরিতেছি মোরা অসহায় অবিরত ।
***********************************
রচনাকাল —১৯৮৫
************************************