একটি নদী ছিল দুপারে ঘাট মাঝিমাল্লার হই হুল্লোড়
বিকালের লাল সূর্য জোছনা রাতের আধাখানা চাঁদ
ছোট ছোট ছেলেদের অবাধ্য কোলাহল
সোনালি রোদে উড়ে যেত গাঙচিল বা সাদা বকের দল
যার ছিল উত্তাল ঢেউয়ের হুংকার
যেন শিল্পীর তুলিতে নিখুঁত মায়াভরা এক ছবি
সে বুঝেছিল রুজির নিত্য সংগ্রামে লড়াইরত জেলেদের কান্না
আকাশে জমে থাকা কালো মেঘেদের দিয়েছিলো অঝোরে কাঁদার অবাদ স্বাধীনতা
সে শুনে ছিল ঢেউকেলানো সন্ধ্যায় যুগলবদ্ধ প্রেমের জমে থাকা না বলা হাজার গল্প
মাঝির ছেলেটা কাল থেকে আর স্কুলে যাবে না
পড়ার বই নেই গায়ে জামা নেই ঘরে চাল থাকে তো নুন নেই
সেই ছেলেটার পড়ার প্রতি ছিল ভীষণ ঝোঁক
একরাতে নদী বলেছিল আমার বুকের মাছ ধরে বাজারে বিকিয়ে কাল থেকে তুমি স্কুলে যাবে
আমি জানিনা হয়তোবা সেই ছেলেটাই আজ কোন কলেজের অধ্যাপক
আমি জানি এই কবিতা পড়ে সেই নদীটাকে খুঁজেছিলে
হয়তোবা একমুঠো সুশীতল জল শ্রদ্ধাবনত ললাটে ঠেকাতে
হয়তোবা কালের গর্বে হারিয়ে যাওয়া সেই সোনালি দিনের সৃতিগুলো আবারো ফিরে চাইতে
আমি আজ দুঃখের সাথে জানাচ্ছি এইখানে আজ আর সেই নদীটি নেই
নেই অথৈ জলরাশি সেই ঘাট সেই মাছ সেই মাঝি
আছে শুধু চোখ ধাঁধানো নানা রঙের অট্টরালিকা
সবুজ ঘাস মাঠহীন বড়লোকের বহুতল ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কলেজ
রাজপথ ধাপিয়ে সাঁই সাঁই ছুটে চলছে ছয়চাকার যান
এখানে আজ কৃত্রিমতার ভীরে শুধু সার্থকেই কেবল খুজে ফেরা
এখানে নেই জীবনের রুপ রস গন্ধ শুকনো মাটির ধুলো
আছে শুধু মিথ্যে প্রতিশ্রুতির বেলেল্লাপনা
পেশীশক্তির নির্বাচনের ডামাডোল
লোক দেখানো উন্নয়নের মিথ্যে আশ্বাস
দুঃখিত ঘৃণায় আমার বমি আসছে
কলম চলছে না খাতার পাতাও সরে যাচ্ছে দূরে
কৃত্রিম ধোঁয়ায় চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে আমি আর লেখার রসদ পাচ্ছি না