ছেলে শিক্ষায় শিক্ষিত হবে, 
সব মায়ে মতো স্বপ্ন ছিলো আমার মারও।
বাবারও বরাবর।
বাবার কথা, ছেলেটা যদি মানুষ হয়?
বাড়ি ফিরলে,পিছু পিছু লোকগুলো ছুটবে।
সেনা বাহিনী ভীর ঠেলে আসবে,
 স্যালুট দেওয়ার জন্য।
পড়ার টেবিলে গভীর রাত পর্যন্ত পড়তে দেখে,
 মার আশার আলো জ্বলতো।
মাথার তালুলে নিরগানো তেল ঘষে  ঘষে
বলতো,
"বাবা। তোর কাছে তো এই টুকু চাই।"
মাকে কেমন করে বলি,ওসব কিছু হবেনা ।
আমার পাঠ্য বইয়ের ভেতর,
  লুকিয়ে থাকতো  জীবনান্দ।


বছর শেষে বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট হাতে,
মাথা নিচু করে বাড়ী ঢুকতাম।
খুশি মনে খুলে দেখতেন, আমার মা।
লাল কালিতে লেখা অকৃতকার্য।
মায়ের মুখ দেখে বুঝতাম,মায়ে কষ্ঠ।
আবারো প্রতিজ্ঞা করে,কখনও রাখানি।


 একটু একটু লিখতে শুরু চুপে চুপে।
জীবানন্দ হওয়া নেশায়।
সিগারেট সাথে ঘোর টানা শুরু,
শুনেছি কবিরা ঘোর খায়।
বুড়িগঙ্গায় ভেসে থাকা জেটির উপর বসে।
গোধূলীর রংয়ে নিজেকে মিলিয়ে দেখতে,
 শুরু অন্য এক পৃথিবী।
প্রেমের হাত বাড়িয়ে যে কিশোরী সাড়া দেয়নি।
 সেও পাশে বসে জল নাড়ছে।
 কবিতা সিঁড়ি বেয়ে চুম্বন ঠোঁটে।
অথচ কোন কালেই প্রেম বিকায়নি আমার।
গার্লস স্কুলের ছুটির সময় দিনের রিজরার্ভে ।
পিছু হেঁটে  বেনীর ভাঁজে  খুলে নিতাম কবিতা।
আত্মসম্মানের কথা ভাবিনি,
ভিক্ষারী মতো দু হাত বাড়িয়ে,
 ফিরেছি শূন্য হাতে।
দশটি গোলাপ হত্যা করেছি।
কোথায় ও ভালোবাসা মেলেনি।
তিন টাকার ঘোরে সবই পেয়েছি তা।


মা বুঝে ছিলেন। "ছেলেটা বাজে হয়ে উঠেছে।"
বাবার কাছে অভিযোগ অঢেল।
 চুলে মুঠি ধরে  ঔরস জাত অস্বীকার করে,
কুলাঙ্কারের মিথ্যে আপবাদ।
মাথা নিচু  দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।বললেন,
"মরগে।অমানুষ।"
কবিতা লিখলে কি অমানুষ হয়?
বাবাকে বলতে ইচ্ছে করছিলো।
যদি আমি রাস্তার মোড়ে পিস্তল হাতে 
মানুষের পিছু ছুটতাম।
গলায় ছুরি ধরে ,
 খুলে নিতাম কিশোরীর পায়জামার ডুরি।
সমাজ তোমাদের স্যালুট করতো।