সারারাত জেগে জেগে
আমি পায়চারি করি
কবিতার পঙতিরা
এসে এসে চলে যায়,
কবিতার খাতাটাতে
এটা-ওটা-সেটা লিখি
ঠিক যেন জমছে না
লাগে বড়ো অসহায়।
বড়ো বড়ো কবিদের
কবিতার বই পড়ি
শব্দের মায়াজালে
হয়ে পড়ি বন্দী,
অনাহারী মানুষের
দুর্দশা পূঁজি করে
মায়াজাল ফাঁদবার
করি কূট ফন্দি।
রাত-ভর চেষ্টায়
বেশ খাঁড়া হয়ে যায়
অনাহারী মানুষের
কষ্টের কাব্য,
ভোরবেলা ক্ষুধা লাগে
নাশতার খোঁজ করি
কবিতার মান নিয়ে
খেতে খেতে ভাববো।
ভরপেট নাশতার
পর পর ভাবলাম
তাল-লয়-ছন্দে
কবিতায় ভুল নেই,
ভাবনায় পড়ে ছেদ
দরজায় খট্ খট্
কে এলো অবেলায়
দরজাটা খুলে দেই।
কান্ডজ্ঞাণহীন
এক বুড়ো দরজায়
হাতে লাঠি,কাঁধে ঝোলা
মুখে চায় ভিক্ষা,
ভিক্ষুক দর্শনে
মেজাজ বিগড়ে যায়
ভাবলাম দেই তারে
একখানা শিক্ষা।
চাহিদার ধাত দেখে
মনে হলো সেয়ানা
অর্থের পাশাপাশি
নাশতাও চাই তার,
হাত তুলে থামালাম
বললাম "মাফ করো"
অনায়াসে ঝেড়ে ফেলি
সবগুলো আবদার।
তারপর ম্লানমুখো
বৃদ্ধের সামনেই
ঠাস্ করে দরজাটা
করলাম বন্ধ,
দেখলাম ফুটো দিয়ে
বৃদ্ধের চলে যাওয়া
তবু যেন নাকে লাগে
তার পচা গন্ধ।
অনাহারী মানুষের
কষ্টের কথা লিখে
সস্তায় দেশজুড়ে
বেশ নাম ফাঁটছে,
যোজন যোজন দূরে
ভিক্ষার সন্ধানে
অনাহারী কতো লোক
অবিরাম হাঁটছে।