উৎসর্গঃআমার পিতৃছায়া প ট ল দা কে।


(১)
সূর্যের তেজ একশোগুণ বাড়িয়ে দিয়ে
            বিদ্রোহের অাগুন জ্বেলে
তোমাদের কাব্য-বাংলার নষ্ট অাঙিনায়
       কে?কে ছুটে অাসবে অাজ?
    
ভাষার কসম!
        অামার শোকার্ত হৃদয়ের গোপন অক্ষরগুলো
অদৃশ্য কালিতে রচিত হবে চাঁদোয়ার নীচে........


এক জন্মের সব ব্যথিত শব্দমালাও
     অাগুনঝরা বৃষ্টি হয়ে
ঝরে পড়বে ঐ ঐ গিরিখাদের ওপর!
   নীল পর্বতের ছায়াতেও দেখা যাবে
                             বিমর্ষ স্মৃতির মিনার......


হে বাংলা!
    জন্মের মিছিলে কেন জারি হলো মৃত্যুর কারফিউ?
নষ্ট শকুনেরা কেনো ছিঁড়ে খেলো
                  অামার ধর্ষিতা বোনের হৃৎপিণ্ড?
হে বাংলা!
          অামাকে অাজ ঘুমুতে দাও!
অযোগ্য নপুংশকের নেতৃত্বে
        বিধ্বস্ত ব্যারিকেড পার হয়ে
       অবিরাম....অবিরাম....
             লেফট্-রাইট করে যাচ্ছে
                     অসহায় মাটির মানুষেরা........
হে বাংলা!
     অামাকে বধির করে দাও!
অামি অার কোনদিন শুনতে চাইনা
           দূর ফসলের মাঠে
পাঁজরের হাড় বেরিয়ে অাসা
               কোন কৃষকের বুকফাঁটা অার্তনাদ!


২০১৬ সালের অস্থির মুহূর্তে
       পাতাল সাম্রাজ্য হতে উঠে অাসা
একচক্ষুওয়ালা দানবের কালো হাতে
  নীরবে কেঁদে মরছে
কয়েকটি অক্ষর"স্বা-ধী-ন-তা"........


দুর্নীতি অার অপশিক্ষায় ছেয়ে গেছে
                     শিক্ষা বিভাগ
                     রাজস্ব বিভাগ
                     মৎস বিভাগ,এমনি অারো......


অাজ কবিতার জন্য অামাকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায়
যদি ঢুকানো হয় জেলের ভিতর কিংবা
                সাজানো হয় ফাঁসির মঞ্চ  
তবে নির্জন নিশীথে
       জায়নামাজে দাঁড়িয়ে থাকা
দুখিনী মায়ের কালিমাখা চোখ হতে
       দু'ফোঁটা অশ্রু অাঙুলের ডগায় নিয়ে
           অামি হাসতে হাসতে চলে যাব ফাঁসির মঞ্চে!


তোমরা অার কোনদিন অামাকে করুণা দিতে এসো না
       অামি তো শুকনো ধুলোর পথে
কিংবা রক্ত-করবীর প্রতি শাখায় শাখায়
          ভালোবাসা বিলিয়েছি উজাড় করে......


অামাকে যেতে দাও দৃশ্যের অাড়ালে
          অসীম উর্ধ্বালোকে হোক কিছুটা বিচরণ
তাই তোমরা অার কোনদিন অামাকে করুণা দিতে এসো না.....


(২)
পাহাড়ের চূড়ায় ওৎ পেতে থাকে অসংখ্য মৃত্যু
        ক্ষমাহীন সময়ের উন্মাদনায় দেখি জীবনের নষ্ট প্রহসন!
স্মৃতির সমুদ্রে ভেসে যায়
           স্বপ্ন দিয়ে গড়া অামার বৃন্দাবন।


এবার বলো!
        অভিশপ্তের চৌরাস্তায়
কে?কে জ্বালাবে অামার চন্দন চিতা?
শেষ ছাইটুকুতেই অামি না হয় খুঁজে নিতাম চোখের স্বপ্নকাজল...


হঠাৎ শতাব্দীর ভৌতিক অন্ধকারে
      অশরীরী প্রেতাত্মাদের অাদিম উল্লাস!
        অাসে অচেনা সঙ্গীতের সুর
কাঁপে ধুলোর সাম্রাজ্য!
           ধসে অামার সাড়ে তিন-হাত মাটির দেয়াল.....
(৩)
মেঘের অাড়ালে চাঁদ
            অাধো-ঘুমে চোখ
                     ঘড়ির কাটা চলমান......


অদূরেই কাঁটাঘেরা প্রাচীর
           প্রহরীর পলায়ন
                    দরজায় দাঁড়ানো অাগন্তুক;


চারিপাশে ফিসফাস অাওয়াজ
            কিছু জংলী গন্ধ
                    অনিচ্ছায় প্রবল ধস্তাধস্তি.....


সজোরে ছায়া দৌড়ায়
           মেঝেতে নিথর দেহ
                   লাল-রঙা দেয়াল;


জাগ্রত মুক্তচিন্তা নস্যাৎ
           বাংলার মাটিতে
                   কবির মরা ইতিহাস........


(৪)
রক্ত-বর্ণা নগর
       নিষিদ্ধ ছায়াপথে
                হেঁটে চলে পথিক,


সামনেই দোতালা বাড়ি
        কুয়াশা-ভেজা ছাদ
                 সিঁড়িতে মৃত ফুল;


রাত্রি দ্বি-প্রহর
        থামে নি ঘড়ির কাটা
                  স্বপ্ন দেখছে যুবতী.....


দরোজায় অাঙ্গুলের টোকা
        জাপটে ধরলো ভূত
                   বাতি কিন্তু বন্ধ.......


বিছানায় রক্তের দাগ
        ঠিক দশমাস পর....
                   বঙ্গে জন্মায় জারজ শিশু.........