বিকেল কিংবা সাঁঝে
সুন্দর পরিপাটি সাজে
খোঁপায় ফুল, মালা গুঁজে
মেয়েটি যায় কোন কাজে?
পুরুষ খদ্দেরের খোঁজে
মেয়েটি একদম বাজে।

নরম সজ্জার প্রতি ভাঁজে
লালসা আসে নগ্ন সাজে
শরীরি বিভঙ্গের হিল্লোলে
চোখের ইশারায় কৌশলে
কতো রকমের ছল ছলে
কামনার আগুন জ্বালে!

শরীরে জাগায় কতো ভাষা
এ খেলার নাম ভালোবাসা
কতো পুরুষের আনাগোনা
লোকে বলে বেশ্যাপনা।

এসেছে কি এইপথে জন্ম থেকে?
এসেছে জীবনের ভুল পথের বাঁকে
জন্ম থেকে মাড়ায়নি সে এ পথটা
এনেছে তাকে সমাজের বর্বরতা!

ধোঁকা খেয়ে খেয়ে বারবার
হয়েছে সে লালসার শিকার।
এনেছে তাকে ভোগ্যপণ্য করে
নিজের অজান্তেই অগোচরে
ধর্ষিতা হয়ে ভদ্রসমাজের
দুয়ার থেকে ফিরে ফিরে।

পেটের খিদের জ্বালায়
নেই যে কোন উপায়
প্রাণে যে বাঁচার আশা
বেছে নেয় নির্মম পেশা
দেখাতে হয় ভালোবাসা
এর নাম মেকি ভালোবাসা!

একদিন সেও বেঁধেছিলো বাসা
করেছিলো তাই একটুকু আশা
চেয়েছিলো একমুঠো ভালোবাসা
সে'টুকু আশা তার হয়েছে নিরাশা!

হেসে খেলে গান গেয়ে
আকাশপানে চেয়ে চেয়ে
মেয়েটিও দেখেছিলো স্বপ্ন
আজ তা দুরাশা দুঃস্বপ্ন
হারিয়ে গেছে আশার সংসার
জীবন জুড়ে শুধুই হাহাকার!

সমাজ পরিত্যক্তা পতিতা বেশ্যা
জীবনে হারিয়েছে ভালোবাসা
দেখাতে হয় নকল ভালোবাসা
নিরন্তর অভিনীত ভালোবাসা!

চরম হতাশাগ্রস্ত অসুখী বারাঙ্গনা
খুঁজে খুঁজে ফেরে নতুন ঠিকানা
জঠর-জ্বালা থেকে মুক্তির ঠিকানা
মুক্তি দেয়না কিছুতেই বেশ্যাখানা
ধুঁকে ধুঁকে মরে বেঁচে থাকার আস্তানা
নরক যন্ত্রণার এই ঠিকানাহীন ঠিকানা!

জীবনকে ভালোবেসে বাঁচার সাধনা
নিরলস জীবন সংগ্রামে হার না মানা
সমাজ-রণাঙ্গনে তুমি যে বীর ললনা
নারী, তুমি অনন্যা! তুমি আজ ধন্যা!

নও তুমি পতিতা, নও তুমি বারাঙ্গনা
তুমি শক্তি, তুমি বীর নারী বীরাঙ্গনা।।