প্রতি রাতেই চেনাপথ ধরে একাকি হেঁটে বেড়াই
হাঁটতে থাকলেও রাস্তার আশপাশে নজর বুলাতে ভুল হয় না,
রাস্তার দু’পাশ দূর্বাঘাসের ফাঁকে ফুটে থাকে অসংখ্য বুনোফুল
নিয়ন আলোতে বুনোফুলগুলো বড্ড অচেনা লাগে।


পথটা নির্জন হলেও রাতের হাঁটার কাজটা সাড়েন অনেকেই
মানুষের কলকাকলীতে সুনসান পথ মূখর হয়ে থাকে;
সেই মুখরিত পথের মাঝখানে শুয়ে থাকে এক পোয়াতি কুকুর
তার আশেপাশে পাহারা দিতে থাকে আরো ছয়সাতটা কুকুর
খুব আয়েশ করে পোয়াতি কুকুর ঘুমিয়ে থাকে।


তার পাশ ঘেঁষেই আমরা হাঁটি
মানে বার বার হেঁটে হেঁটে গোল চক্কর দিতে থাকি
আমার মত সবারই মনে মায়া হয় কুকুরটির জন্য
কেউ তাঁকে যন্ত্রণা দেয়না ভুলেও, ঘুম থেকে উঠানোর চিন্তাও করে না।


পোয়াতি কুকুরটির বাবা কুকুর কোনটি হয়তো সে জানে না
অথচ তাদের আগত সন্তানের জন্য কুকুরগুলো উদগ্রীব থাকে
ভালবাসায় ভরিয়ে দেয় পোয়াতি কুকুরটিকে কুকুরগুলো।
যখনই বিপদের আশংকার আঁচ পায়
ওরা দলবদ্ধভাবে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে
যেন মা কুকুরটির কোন ক্ষতি না হয়।


ভাবনাগুলো তখনই এলোমেলো হতে থাকে, পুরুষরা তোমানুষ অথচ
রাত বিরাতে অসহায় মেয়েদের নিজেদের খায়েশ মিটানোর জন্য
ভোগ করে মুহুর্তেই ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।


নষ্টামির শেষ পর্যায়ে অসহায় মেয়েটিকে পোয়াতি বানিয়ে
সেই নষ্ট পুরুষ আর সে পথে পা বাড়ায় না কখনো
ভুলক্রমে সে হয় অনাগত সন্তানের বাবা।


সন্তানের বাবা কখনো পিছু ফিরে দেখে না, বা ভাবেও না অসহায় মেয়েটির কথা।
পিতৃপরিচয়হীন একটি শিশু পৃথিবীতে এসেই লাঞ্চনা গঞ্জনার শিকার হয়
তবু তার ঠোঁটে লেগে থাকে মিষ্টি হাসি, মায়াকাড়া চাহনী,
অবুঝ শিশু কখন যে আধোবোলে বলে উঠে বাব বাব্বা, মা ।


সে বুঝতেই পারে না আগত দিনগুলো কতটা ভারী হয়ে বর্ষাবে তার মাথায়;
তার পথচলা হবে কাঁটা বিছানো পথে, পথ চলতে সে প্রতিনিয়তই শুনবে
তার মা সম্পর্কে তিক্ত আর লজ্জার কথা।


তবুও সেই মা তার সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবে,
রক্ষা করতে চায় সকল অশুভ শক্তির কাছ থেকে..
সর্বশক্তি দিয়ে আগলে রাখে অভাগী মা তার সন্তানকে
যেন দু:খের বা নষ্টামির একটা আঁচড়ও না পড়ে তার গায়ে।


পরম মমতায় সন্তানকে লালন পালন করে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ভবিষ্যতে।
আর অন্যদিকে সম্মানের সহিত সমাজে মাথাউঁচু করে বেঁচে থাকে
নোংরা মনের মানুষটি, যে সেই অভাগা সন্তানের বাবা।
(26 September 2014 at 22:38)