________মৃত্যু সুধা পানে মানব জনম
মৃত্যু সুধা পানে মানব জনম। মৃত্যু নামের সুধা পান অপরিহার্য্য মানব জনমে। এ থেকে কারো মুক্তি নেই। এ সুধা কেহ পান করিতে চাহে না। এমন মোহের ধরাধাম ছেড়ে। একটা সময় সুধা পানে বাধ্য করা হয়। তখন এই অবনীর যতই ক্ষমতাধর যতই শক্তির আঁধার হউক না কেন, সেই পানে বাধ্য থাকে। তা হলে এ জনম কার? শরীর গুনে যার যার প্রত্যয় তার তার। মৃক্তিকা সম এই ভূঙ্কুর মানব শরীর, কার অধিকারে রয়?
______সফেদ শুভ্র বসন
সফেদ শুভ্র বসন
কখন, কবে, কার, পরনে জুটে; কেবা কার, মনে লয়?
ভবের ক্ষুধায় আদি অন্ত ভুলে রয়।
শৈশব কৈশর রয় পরে
দুরন্ত যৌবন অমানিশা; খোঁজ করতে ভুলে রয়
মানব জনমে মানব রতন।
সেই রতন যে কষ্টি পাথস
হেলায় ফেলে ভাটির কাল; পথিক তই চিনলে না পথ
ক্ষয়ে যায়রে শ্রেষ্ঠ বেলা।
______মৃত্তিকা
মৃত্যুতে শরীর নাকি বাঁচে?
লাশ নামের আবহে
অগ্নী জল বায়ু সুধা সনে মৃত্তিকা অভিমানে
শুষে গলে আদি অন্ত কি তারই কোলে?
ভাবতে ভাবতে মৃত্তিকা হেসে বলে
কোথায় হে নস্বর শরীর? লাশ বুনে গেলে
এসো আমার চাতাল তলে।
আমার বুকে রইবে তুমি
হার মজ্জা ক্ষয়ে ক্ষয়ে
কত অব্যক্ত প্রাণীর ক্ষুধার আহার
আমার শরীর তলে।
__________মানব শরীর অতঃপর আত্মা
শরীর যখন মৃত। সাদা কফিন। লাশ বহমান। তখন শ্বাস বিহীন। শরীর নামের শুন্য খাঁচা। সেখানটায় আর নাই, শ্রবণ শক্তি, কর্মশক্তি, দেখার শক্তি, কথা বলার শক্তি। নেই লোভ, ভালোবাসা, হিংসা দ্বেষ। এই যে ছিল বেঁচে থাকার শক্তি, তারা এখন কোন খানে লুকিয়ে?
বাঁচার শক্তির আঁধার আত্মা; মানব জনমের আত্মীয় সজ্জন ছিল একদিন। সে কোথায় যায়? কোন খানে পালাইল? এমন মানব শরীর ছেড়ে। তারে একা নিঃস্ব করে, মৃক্তিকা দহনে পোড়াইল।
______মানব জনম
মানব জনমের চির ভাস্মর, আত্মার কথা কই
সেই তো ছিল শরীর জুড়ে, আদি অন্ত সব জানে।
যদি পথিক হাঁটে ভুল পথে, কার বা আসে যায়
আগল খোলা শরীর খাঁচা, দ্বারের চাবি খুলরে ভবে।
নইলে জনম বৃথা যে তোর, লোভ লালশায় যায়রে বেলা
সময় হাতে মুক্তির পথে, শুদ্ধ রসে শরীর বাঁচা।
শরীর বাঁচলে শুদ্ধ রসে, আত্মা হবে চরাচরে
আত্মা যে তো খাঁচার মালিক, কেমনে তারে ভুলে থাকিস?
১৪২৪/৩০ অগ্রহায়ণ/হেমন্তকাল