(বুদ্ধের ডাকে আনন্দ আর মহামেগগালান নিজেদের সাধের ঘর ছেড়ে বিভাবর, রত্না, শৈল, সোনা, ছটা, উদয়, বিপুল - এই সাত পাহাড়ের ঘেরা রাজগীরের ১৫০০ ফুট উঁচু সর্পশঙ্কুল গৃধ্নকূট পাহাড়ের গুহায় তপস্যায় বসেছিলেন। ২৫৫০ বছরের আগে। সেই গুহা দেখে, পাহাড়ের পথে হাটার অনুভূতি লিখলাম।)
----------------------------------------  
বিভাবর, রত্না, শৈল, সোনা, উদয়, বিপুল…
পথ চলেছে ভেঙে ভেঙে কাঁটাগাছের উপর পা রেখে রেখে
মাথার উপরে জ্বলন্ত আকাশ
গলন্ত সীসার স্রোতের মত রোদ এসে পড়ছে
দু-পায়ের আশে পাশে হিস-হিস শব্দ তুলে
নিঃশ্বব্দে ঘুরে ফিরছে বিষধর সর্পকূল


জরা-ব্যাধি-মৃত্যু ভরা নিত্যকার জীবনের অন্ত খুঁজতে খুঁজতে
একটিও ‘অশোকগৃহ’ পায়নি যে তরুণ ভিখারী
তাঁর ডাকই পৌঁছেছে আরও কিছু তরুণের
কানে কানে
বনে বনে মর্মরে গুঞ্জরিত তার মুগ্ধ প্রতিধ্বনী
টেনে আনে ঘর থেকে পর্ণকুটিরে, গুহায়


ছটা পাহাড়ের কাঁটাভরা সপ্প্রশঙ্কুল সেই পথে
প্রশান্ত হৃদয়ে হেঁটে যায় ভিক্ষু আনন্দ
চোখে তাঁর শকুনের ঠোঁটের মত পাহাড়চূড়া
অন্যপথে একই লক্ষ্যে মহাবিপদের পথ ভেঙে ভেঙে
মহাভিক্ষুর শান্তিবাণী নিয়ে চলেন মহামেগগালান


প্রশস্ত হৃদয়ে সেই মহাশান্তির বাতাসে
বিগত ইতিহাসের স্বার্থ-দ্বন্দ্ব-রক্তস্রোত মুছে
জ্ঞানের অমলিন দীপশিখা জ্বেলে
সেই পথিকের পথ চেয়ে গুহা রক্ষা করে
গৃধ্নকূট জেগে আছে অনিমেষ
আজও…
...........................
রাজগীর,
২২ অক্টোবর, ২০১৩