আর বেশি দিন থাকবো না মা, তোর কাছেতে আমি।
তোর কোলেতে অল্প কদিন, খেলনা কত দামি।।
সবুজ মাঠের ঘাসে তখন খুজবি বলতো কাকে?
আমি তখন থাকবো বেঁচে, হলুদ পথের বাঁকে।।
কাকে তুই আর ভাত খাওয়াবি ময়না পাখির ছলে।
দেখবি যখন মুখটি আমার পাড়ার পুকুর জলে।।


সন্ধ্যা হলেই শঙ্খ-প্রদীপ জ্বালায় তুলসি তলে।
দেখবি মাগো ভরবে ওচোখ বিদায় ব্যাথার জলে।।
রাত্রি যখন আসবে নেমে তিমির ভুবন ভরে।
আমি তখন তোর থেকে মা কতই যেন দূরে।।
কাকে তখন চাঁদ দেখিয়ে শোনাবি বুড়ির গান?
ভাববি বসে একলা ঘরে বুঝেও অবুঝ প্রান।।


তুই তো জানিস তোকে ছেড়ে থাকবো কেমন করে?
সকাল বেলায় ভোরের ফুলে পড়বো ঝরে ঝরে।।
ফুল কুড়িয়ে নিয়ে যাবি ঠাকুর ঘরের ডাকে।
সেই ফুলেতে দেখবি মাগো আমার হাসি টাকে।।
তোর চোখে মা জল যদি হই কেমন হয় তবে?
তোর চোখেতেই থাকবো বেঁচে, ধুলা বালির রবে।।


রান্না ঘরে দেখবি যখন বরা গেছে কমে।
নকুলদানার পরিমাণটা কেন গেলো নেমে?
প্রশ্ন যখন তোর বুকেতে বাঁধবে বাসার আলো।
আমি তখন স্বপন নীড়ে তোর চোখেতে কালো।।
সূর্য্যি মামা অস্ত যাবে যখন খেলার ছলে।
বলবি তুই, কইরে খোকন….?আয় রে আমার কোলে।।
আমি তখন অলির সাথে ঘুরব শাখে শাখে।
আসলে সেথায় পাবি গো মা, আমায় তোর ওই বুকে।।


নিঝুম রাতে খুজবি যখন আমায় পাড়ায়-পাড়ায়।
আমি তখন দেখবি মা গো, লুকিয়ে রাতের তারায়।।
স্বপন দেখে নিশুত রাতে, উঠবি যখন জেগে।
দেখবি গো মা দাড়িয়ে আমি তোর স্বপনের রাগে।।
নিঃস্বতাকে সাথি করে, ডাকবি যখন কাছে।
দেখবি তখন আছি আমি নিঃস্বতারই পাছে।।


আমি তখন বলবো মাগো কাঁদিস কেন তুই?
আমি তো তোর পাশেই থাকি, তোর পাশে রোজ শুই।।
তোর কাছে রোজ গল্প শুনি নীল পরীদের পাখে।
তোর দেওয়া কত স্বপন, আমার দুচোখ ভরে আঁকে।।
কাঁদিস নে মা তুই এতো আজ আমার ব্যাথা লাগে।
আমি আজও তেমনি আছি, যেমনি ছিলেম আগে।।


       রচনাঃ (১৩ই এপ্রিল ২০১২), নিউব্যারাকপুর
সংরখিত