শতছিন্ন, মলিন, তবুও সে জড়িয়ে আছে পরতে পরতে
ফেলে আসা সুদীর্ঘ সময়ে হাজার ঘটনার প্লাবনে কখনো বা ভেসে গেছে
তবুও সে বার বার উঁকি দিয়ে যায়, ডেকে বলে ভালো আছিস
প্রতিদিন সে একটু একটু করে বেড়েছে, পরিনত হয়েছে সুখে-দুখ্যে
জীবনের খেলা ঘরে হাসি কান্নায়-ভালোবাসায় হারিয়েছে, পেয়েছে
চলার পথ অবিরাম পথিকের পানে চেয়ে থাকে,  প্রতি মুহুর্তে
চলার ছন্দে নূতন পথ জাগে, ধুয়ে যায় ধূলা, আবার গায়ে লাগে
শৈশব বেঁচে থাকে, গভীর ভাবে জড়িয়ে থাকে, দিনের শেষে।।


শৈশবের সকাল, দুপুর, অপরাহ্ন থেকে সন্ধ্যার গভীরতায় রাত
সবই যেন কেমন দ্রুত লয়ে বয়ে যায়, ভোর হয় - সূর্য ওঠে
আড় মোড়া ভেঙ্গে বিছানা ছেড়ে বেরিয়ে আসে - জটলা করে
নূতন পরিকল্পনা করে, সে আজ নয়, শাপলা- শালুক
বিলের মাছ, রাস্তার ধুলো -নদীর না ডোবা চর - কাঁচের গুলি
ডাঁং-গুলি, ছিঁড়ে যাওয়া ফুটবলের পেটে কিছু খড় ভরে নিয়ে
অপেক্ষায়, কখন আসবে ছোঁড়া গুলো থাকে অধীর অপেক্ষায়
মাঠে প্রাতকৃ্ত -  নিমের দাঁতন - কাঁচা পেঁয়াজ পান্তা ভাত।।


দুপকেটে গুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়া-জোর গলায় হেল্লাস-তারগা
তেঁতুল-বট-সিরিষ-অশ্বতঁ-বকুল তল, যে দিন যখন যে আগে ডাকে
সংগঠিত নয় মনের টানে - বাড়ীর নানা কাজ ফেলে পালিয়ে
সকাল-গড়িয়ে দূপুর, কারো বা মুখ ভার সব গুলি হেরে গিয়ে
বাড়ী-ফেরা  বাবা-মায়ের বকা-ঝকা  বা অন্যের গালা গালি
পুকুরে ঝাঁপিয়ে স্নান সেরে -ভাতের থালায় গো-গ্রাসে মারা
আবার সুযোগের অপেক্ষা - মায়ের আঁচলে পয়সা খোঁজা
না পেলেও বেরিয়ে পড়া,  কেউ না কেউ নিশ্চই ধার দেবে  ।।


থাকতে হতনা কিছুই,  জুটে যেত, সে কোন না কোন ভাবে
শৈশব থাকত না বাঁধা - যত দিন না যুবক হয়ে ওঠা
সে থাকত জড়িয়ে গভীর মুগ্ধতায় - সব দায় ঠেলে ফেলে
হেল্লাস-তারগা ( সব শেষে যে তার আগে ) গায়ে গায়ে জড়িয়ে।।


আজো ঘুম ভাঙে - সাত সকালে স্কুল-টিউশন আছে
শৈশব নেই - শুধুই  দৌড় - তাড়া তাড়ি রাস্তা শেষ করতে হবে
পিঠে ভারী ভারী ব্যাগ, কেক-প্যাস্ট্রী-সন্দেশ-চাউমিন টিফিনে
ভবিষ্যত চলেছে গুটি গুটি পায়ে সকালের আমেজ ঘুম ভেঙ্গে
বন্ধ ঘরে বোকা বাক্স বা বুদ্ধির দেবীর আরাধনা কমপিউটারে
আগামীর দূরন্ত লক্ষে - বড় হতে হবে, বড় একা একা
তবুও সেই আমার ভালোবাসার শৈশবের মলিন চাদর জড়িয়ে আছে।।


   (আজ ৩৫০ পূর্ণ হোল, তাই ৩৫ লাইন সকল বন্ধুদের জন্য)