ঠাকুমা বলেন ওরে পাখীটাকে তাড়া তাড়া
চিচিঙ্গে গুলো সব কেটে দেবে রে, তাড়া লেজ ঝোলা রে
ঊঠানের পাশে খানিক টা জায়গায় পুঁই আর চিচিঙ্গের মাচা
সাদা-বাদামী-কালো রঙের পাখী, লেজ টা শরীরের থেকে বড়
একই মাচায় দুই ফসল, সংসারের কাজে লাগে
গ্রামের প্রতি বাড়িতে প্রায় একই চিত্র,  অল্প জায়গায় নানা রকম।।


লাউ, পুঁই, নটে, পালং  তো থাকেই, ব্যবসায়িক নয়
বাড়ির নাতি নাতনিদের নিয়ে ঠাকুমার নানা রকম
কোন ভাগা ভাগি নয়, যার যখন দরকার তোলে খায়
দিদিরা স্কুল থেকে ফিরে চিচিঙ্গে ডাঁটার চচ্চড়ি বানায়
ভাই, বোন সবাই কে নিয়ে চিবায়, পেট ভরেনা, মন ভরে
এক সাথে থাকার অফুরান আনন্দ ভাগ করে নেয়।।


নটে পালং এর ক্ষেতে  সবাই  হাত লাগায়, জল দেয়
চারা গুলো বাড়ে লক লকিয়ে আনন্দে মন টা নেচে ওঠে
বাড়ির সবজী আর মোটা ভাতে অফুরান সুখে দিন কাটে
ছুটির সকালে বা বিকালে ঘাটের পাশে ছিপে ধরা পুঁঠি,
আনন্দের রেষা রেষি আলাদা মাত্রা যোগায়  মা, কাকির হাসিতে
ঠাকুমা, ছোট গুলোকে সন্ধ্যায় গল্প বলে ঘুম পাড়ায় ।।


লাইট নেই, হ্যারিকেনের আলোয় পড়া, কেউ বা ঘুমে  ঢোলে
ঠাকুমা বলেন, ওরে একটু পড়ে নে, মাস্টার কাল মারবে
ও বউমা, ওটারে খাইয়ে দেনা মা, আজ আর হবেনা ছেড়ে দে
হাতের নাগালে ছিলনা অনেক কিছুই, সুখ ছিল ,ছিল আনন্দ
পারস্পরিক সুখ-দুঃখের  অনাবিল আদান-প্রদান, ভালো-মন্দ
গল্প নেই, ভরসা বৃদ্ধাশ্রম,  সেই ঠাকুমাই আজ ব্রাত্য।।


খুব কি বেশী লাগে এক জন মানুষের? ঐটুকু বাঁচিয়ে কি হয়
সত্যই কি প্রয়োজন আরো অনেক কিছু?  ভালোবাসা নয় !
মানুষ তো আমরা, কত জানি, উজ্বল মুখে দেই নানা ভাষন
বাড়ির বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাদের পরবাসে রেখে মহানন্দে সারাক্ষণ
দুজনেই বেরুই, ছোট টির ভরসা লতা মাসি, সেও একা খেলে
ডিভাইস গেম, একটু বড় হলে গেম বদল, নীল ছবি দেখা।।