ভাবনা আসে অন্তরালে,  মন কেমনের পেখম মেলে
বিষণ্ণতার ফুটো নৌকায় স্মৃতির বৈঠায় হেলেদুলে।  


সব বাড়িতেই বাঁধন ছিল, পরিবারের শাসন ছিল
ঘর গুলো আলাদা হলেও একই হাঁড়ির ভাত ছিল    
দাওয়ার নিচেই খেলার জায়গা সব বাড়িতেই উঠোন ছিল  
মা–জেটি-কাকির দুপুরে খাবার পরে খোশ গল্প ছিল    
শীত দুপুরে রোদে বসে হাতে উলের কাঁটা ছিল
অন্য দুপুরে চটের আসনে নকশা তোলার ধুম ছিল।    


সময় গুলো পালিয়ে গেল, বৈশাখী ঝড় যেমন যায়
কিছু ছবি তবুও সবাক, জীবন পাতার মলিন রেখায়।  


ভর দুপুরে জামের ডালে আমের তলায় জটলা ছিল
টপকে বেড়া কাঁটার আঁচড়, তাতেও কি পরোয়া ছিল
কার বাগানে কি কি গাছ, সে সব প্রায় মুখস্থ  ছিল
কোন পথে বিপদের গন্ধ সে সব ভালোই জানা ছিল
ধরা পড়লে কান মোলা, গাঁটটা এসব ও পাওনা ছিল
নালিশ হলে দু-চার ঘা কঞ্চির মার, সে প্রায় বাঁধা ছিল।  


ক্লান্তিহীন ছটফটে মন কবে যে কোথায় হারিয়ে গেল
জানা নেই তার হদিশ, কখন দায়-দায়িত্বের ভুতে পেল।


দিনের  শেষে সন্ধ্যায় বড়দের খোল করতালের বোল ছিল    
সুরে না হলেও কাটাতে সময় হরিনামের দল ছিল
কুপির আলোয় কাকা জ্যাঠাদের তাস লুডোর আসর ছিল    
মাটির দাওয়ায় ছালায় বসে মুড়ি খাওয়ার চল ছিল
কাঁচের গ্লাসে গুড়ের চায়ে চুমুক দেওয়ার তৃপ্তি ছিল
সামান্যতেই খুশীর বাতাস, সকল মুখেই হাসি ছিল।  


সকাল না হতেই সন্ধ্যা, মনেহত বড্ড ছোট দিনের সময়
ওড়ার আকাশ রেখে বাকি ফিরতে হত আপন কুলায়।  


এক আলোতেই গোল হয়ে খুদে পড়ুয়াদের পড়া ছিল
কেউ কেউ ঢুলতে থাকলে অন্যদের আড়চোখের হাসি ছিল
চিমটি দিয়ে জাগিয়ে দিলে মুখে রবি ঠাকুরের ছড়া ছিল  
ঢুলতে ঢুলতেই দুইয়ের নামতায় সময় যেন বাঁধা ছিল
ঠিক করে দেখে পড়,  মায়ের কড়া ধমক ছিল  
লালচোখে বিরামহীন হাই তুললে দাদা দাদীর আদর ছিল।


কিশোর বেলার দুরন্তপনা কোন ভাবেই ছিলনা বাঁধা
চঞ্চল সব দুষ্টু গুলো কোথায় গেলো সেটাই মস্ত ধাঁধা।  


সোনারপুর/৭.৬.২০২২