পোড়া ডিজেলের একরাশ কালো ধোঁয়া বাতাসে ভাসিয়ে
১২ টার লঞ্চটা ঘাট ছেড়ে গেল; গনগনে রোদ মেখে
একটা পাক খেয়ে দক্ষিনে মুখ ঘুরিয়ে ঢেউ কেটে চলতে লাগল
একবার মাত্র দেখতে পেয়েছিলাম জানালা থেকে তুমি হাত নাড়ছ
মাতলার ঢেউ ভাঙার শব্দ ছাপিয়ে ইঞ্জিনের গোঙানি শুনছিলাম
কালো ধোঁয়ারা উড়ে এসে বলে যাচ্ছিল; তুমি কবিতার বইয়ে মগ্ন
আমি আর পারিনি, ভেসে পড়লাম গাং চিলের পাখায়, লঞ্চের পিছনে পিছনে
লঞ্চের প্রপেলারে আহত মাছের লোভে ওরা, আমি কবিতা শোনার নেশায়
বন্ধু তুমি তো কথা দিয়েছিলে, ফিরে এসে আমাকে নতুন কবিতা শোনাবে
ঢেউয়ের মাথায় নাচতে নাচতে তোমার লঞ্চ ধীরে ধীরে দৃষ্টি পথের বাহিরে
কালো ধোঁয়াও এক সময় মেঘের দেশ মিলিয়ে গেল, জন শূন্য হল লঞ্চ ঘাট
আমি একা রোদ মেখে দঁড়িয়ে ছিলাম, দেখলাম নদীর জলে ভাটার টান
প্রতিটা ঢেউ একটা একটা পংতি উপহার দিচ্ছিল, যেন কবিতার বান
গোধুলি নামল নদীর বুক ছুঁয়ে, কালো কালো জেলে নৌকা গুলো জাল গোটালো।
সেই থেকে আজো অনন্ত সময় দাঁড়িয়ে আছি; ১২টার লঞ্চ ঘাটে
তোমার প্রিয় কবিতা নিয়ে, মাতলার ঢেউ গুনে চেতনে অচেতনে
ছয় ঋতুর একদিনও ভুল হয়নি জানো, যতক্ষণ দেখা যায় ততক্ষণ
গাংচিলের পাখায় ভেসে যেতে যেতে বার বার খুঁজেছি তোমায়
তোমার প্রিয় কবিতা গুলো যে আমার বুকের মাঝে, শোনানো হয়নি
জানি না; কতকাল তোমার ভালো লাগাকে এমন করে আগলাবো
আমার ছোট্ট নৌকা যদি ছাড়ার সময় হয়ে যায়, মাঝি ডাক দেয়
আমি চলে গেলে, তুমি লঞ্চ নিয়ে আমাকে খুঁজো, তোমার কবিতার জন্য।
সোনারপুর
১১/০৭/২০২০