জানালার গ্রীল ধরে দেখি রাতের ব্যস্ত শহরটা
সঙ্গী এক মগ ধুমায়িত কফি,
নিজেকে বড্ড আত্মভোলা এক শরনার্থী মনে হয় এই শহরে,
অথচ কত চেনা এই শহর আমার!
আমি খুজে ফিরি আমাকে এই নগরে।


যদি আমাকে জিগ্যেস করি কে আমি, কি আমার পরিচয়?
ঐ রাতের দূর আকাশের তারাদের মত,
আমি কি জ্বলি মিটিমিটি আমার মনে?
প্রশ্নবোধক চিহৃরা উকি দেয় মনের কোণে
একরাশ শীতল হাওয়া বয়ে যায় শিরদাড়া বেয়ে
আমার অস্থিত্বে লাগে এক প্রচন্ড ঝাঁকুনি,
মেঘের ঘনঘটা দেখি ঈষান কোণে।


নিকষ কালো রাতের আঁধার দেখি চোখ খোলে
বুঝতে পারি আমার জগতটা দাড়িয়ে আছে আলো আঁধারীর মাঝে ;
মোহের কাছে যদি ও পড়েছি ধরা তবু নত নয় আমার শির,
আমার কাছেই তো কত অচেনা আমি, যেন উদাস গাংচিল
মিছে তপস্যায় তবে কি ক্ষয়ে যাবে কারো দয়ার দান?
নাকি ঘুম থেকে জাগব কভু, ভাংবে মিছে অভিমান।


স্রোতের টানে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া তৃণলতার মত,
গরিয়ে যাচ্ছি ভাটির টানে,
কান পেতে শুনি শুধু ডাহুকের ডাক অলস দুপুরে
জড়তার চাদরে জড়িয়ে আছে আত্মভোলা প্রাণ;
যেন নিজেই সে করেছে সে নিজের সাথে অভিমান।
হৃদয় নিংরানো এক টুকরো কচি কোমলতা দিয়ে,
কে যেন দিয়েছে ডেকে আমার সাধনার বেদিখান।


জানালার পাশেই অদৃশ্য ঝিঁঝিঁপোকারা মেতেছে উল্লাসে,
নাকি আমার উদাস মৌনতা নিয়ে মেতেছে তামাশায়?
দেখেনি ওরা কভূ এমন সৃষ্টির সেরাকে ;
এভাবে ডুবতে হতাশায়!
ঠিক সেই বেলায় বৃষ্টির সাথে ভেসে এল একরাশ দমকা হাওয়া,
ঝিঁঝিঁপোকারা থেমে গেল নিমিষে,
বৃষ্টির কচি ফোঁটার স্নানে ভেসে গেল ধরনী
শুধু আমিই থেকে গেলাম আত্মভোলার আবেশে।