এই সাইটে গত কয়েক দিন ধরেই কবিতা-চুরি আলোচনার কেন্দ্র-বিন্দু হয়ে উঠেছে । আমি সর্বস্ব-হারানো মানুষ । একাধিকবার মহান চোর/ চোরদের বদান্যতা পেয়েছি । যে কারণেই এই আসর ছেড়ে বারবার চলে গেছি ।  এবার ছড়া নিয়ে এসেছিলাম । আজ পর্যন্ত ৯২ টি ছড়া পোস্ট করেছি । আর ৮ টি পোস্ট করব ও শেষ দিন কিছু “অন্ত্যমিল যুক্ত” টুকরো পোস্ট করব ।
দীর্ঘকাল ধরে ডায়রিতে বন্দী হয়ে থাকা ছড়ার ১০০ টি আপনাদের পড়িয়ে যাচাই করার ইচ্ছে ছিল । এর থেকে ৭০-৮০টি গ্রন্থভুক্ত হবে । যা আগামী পুজোর কাছাকাছি সময়ে প্রকাশিতব্য ।
যা বলার জন্য এই লেখার অবতারণা ।
এই ছড়াগুলি ছন্দ বা প্রকাশ-ভঙ্গির দিক দিয়ে অভিনব নয় । চিরাচরিত প্রথানুসারী রচনা-রীতি । কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে । সুতরাং বাচন-ভঙ্গি চুরি হওয়ার ভয় নেই । (প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে আমার রচনা-শৈলী চুরি হয় । আমি ক্ষোভে প্রায় ৮-১০ বছর সাহিত্য-সম্পর্ক-মুক্ত ছিলাম ।)
আমার এই ছড়াগুলি কিছু বৈশিষ্ট্য আছে । তা হল বিষয়, যা একান্তই আমার মস্তিস্ক-প্রসূত । প্রকৃতি বর্ণনাত্মক ছড়া বেশি নেই । যেমন “বঙ্গ-ভঙ্গের আসল কারণ “ এই ছড়াটির ভাষা-ছন্দ ও বাক-রীতির চেয়ে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক । অধিকাংশ ছড়াতেই কিছু না কিছু অভিনব বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে ।


চোরদের প্রতি আবেদন >
১) সরাসরি বিষয় চুরি করবেন না । কেন না পাণ্ডুলিপি তৈরি । বই-আশু প্রকাশিতব্য ।  এখানেও প্রমাণ থাকল, কখন ছড়াটি প্রকাশিত হয়েছে । যদি চুরি করেন “কপি-রাইট” আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন । সে ক্ষেত্রে আইন-গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
২) ছড়া বা ছড়ার অংশ-বিশেষ আমার অনুমতি ছাড়া কোনও মাধ্যমে উদ্ধৃত করা যাবে না । বই প্রকাশিত হওয়ার পর করতেই পারেন কিন্তু রীতি অনুসারে ছড়াকারের নাম উল্লেখ আবশ্যিক ।


কবিতা চোরদের প্রতি একটি গ্রহণ যোগ্য প্রস্তাব ঃ


আপনাদের কবিতা চুরির দরকার হয় কেন ? কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবেন এমন নির্বোধ ভাবনা থেকে নয় নিশ্চয় ? ফেস-বুকে বা সোশ্যাল-নেট-ওয়ার্কিং সাইটে পোস্ট করে কৃতিত্ব দেখাবেন যে আপনি দারুণ সিকুয়েন্স অনুসারী কবিতা লিখতে পারেন । বন্ধু/ বান্ধবীরা ইম্প্রেসড হবে । প্রেমিক/প্রেমিকার কাছে কদর বাড়বে । শ’য়ে শ’য়ে “লাইক” পড়বে । তাই তো ?
কবিতা লিখে কৃতিত্ব দেখানোর ইচ্ছে । কিন্তু লিখতে গেলে কলম ( ল্যাপ্টপের/ মোবাইলের বাটন ) ভেঙে যায় ।  বাংলা বানানে এত “নলেজ !” যে বাবার নামটা ইংরাজীতে  মোটামুটি লেখা গেলেও বাংলায় লিখলেই ভুল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ।  কিন্তু কবিতা ছাড়া “ইম্প্রেসড” করা যাবে না । অগত্যা চৌর্য-বৃত্তি ।
  মোটামুটি ধরেই নেওয়া আপনারা নেংটি-পরা চোর নন । বাপের / নিজের দেদার টাকা আছে । (অবশ্য এও দেখা গেছে বাবা  দরাদরি করে কানা বেগুন, পোকা-কাটা শাক শেষ বাজার থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, আর ছেলে/মেয়ে কানে হেড-ফোন গুঁজে বাবার বাজার-কাট মানি দিয়ে  হাই-স্পীড নেট রি-চার্জ করাচ্ছে । )


মুল প্রস্তাব ঃ
আমার বাড়িতে কবিতা কারখানা আছে । সুলভ মূল্যে কবিতা সরবরাহ করে থাকি । ডিস্কাউন্টের ব্যবস্থা আছে ।
মূল্য তালিকা >
প্রতি মাসে
১) দৈনিক একটি কবিতা ।  (১০ থেকে ১২ পঙক্তি ) ৬০০০ টাকা । ডিস্কাউণ্ট ১০০০ । দেয় ৫০০০ টাকা ।
২)   ঐ                   (১৩- থেকে ২৪ পঙক্তি) ১০০০০ টাকা  ডিস্কাউন্ট  ২০০০ । দেয় ৮০০০ টাকা
৩)   ঐ                  (২৫-থেকে ৬০ পঙক্তি ) ২৫,০০০ টাকা । ডিস্কাউন্ট ৫০০০ টাকা । দেয় ২০,০০০ টাকা ।
যেমন বিষয়, যেমন ছন্দ, যেমন টক-ঝাল-নুন-মিষ্টি কষাটে স্বাদ চান নিঃসন্দেহে পাওয়া যাবে । আদি রসাত্মক কবিতার জন্য স্পেশ্যাল চার্জ । কবিতা পিছু ১০০০০ টাকা । বিফলে মূল্য ফেরত ।
অর্ডার দেওয়ার পর মাল সাপ্লাইয়ের জন্য  (১) ১০মিনিট , (২) ২০ মিনিট ও (৩) ৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে ।


আজীবন চুক্তিরও সুবিধা পাওয়া যায় । মূল্য ৫০০ ০০০ টাকা । এ ক্ষেত্রে দিনে একাধিক মাল সাপ্লাইয়ের অনুরোধ সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হয় । কেউ ওই অর্ডারি মাল ছাপিয়ে কবি সাজতে পারেন । মাল একবার সাপ্লাইয়ের পর আমার আর কোনও দাবি থাকবে না ।
তাৎক্ষণিক নমুনা ঃ
ধরুন আপনার বান্ধবী বা প্রেমিকার নাম ভামিনী ।
তার উদ্দেশ্যে একটি কবিতা ফেস-বুকে পোস্ট করে তার কাছে যেমন কৃতিত্ব পেতে চান সেই সঙ্গে হাজার কয়েক “লাইক” পেতে চান ।
এই কবিতাটি পোস্ট করতে পারেন ।


“ভামিনী আমার প্রাণের ভামিনী তুমি যে কামিনী-গন্ধা
অহো হৃদয় তোমার তরঙ্গিত যেন স্বর্গ অলকানন্দা ।
ভাঙা নৌকাটি আমার ভাসিয়ে দেব তোমার ছন্দ-রঙ্গে
ডোবে তো ডুবুক হাবুডুবু খাব তোমার রস-তরঙ্গে ।
যত বন্ধু তখন পাড়ে দাঁড়িয়ে দন্তে কাটবে ঘাস
ঘোঁত ঘোঁত করে কেউ বা আবার ফেলবে দীর্ঘশ্বাস ।
ব্রহ্মা জেলে, জাল ফেলে ফেলে, খুঁজবে আমার দেহ
মরে ভূত হলাম না উধাও হয়েছি ঘনাবেই সন্দেহ ।
নরকের রাজবাড়িতে তখন আমার কী জামাই আদর
ভামিনী ভেবেছ ! তুমি বঁধুয়া আর আমি কিনা ভাবী বর  ।“


এটি নমুনামাত্র । এটি লিখতে আমার ১০ মিনিট সময় খরচ হয়েছে ।
ফেল কড়ি । হয়ে যাও কবি । তুমি কী আমার পর ।
আমার আবেদনে তুমুল সাড়া পাওয়ার আশায় থাকলাম । কবিতা লিখে তো কিছু হল না । কবিতা সাপ্লাই করে যদি গরিবের দু’পয়সা কামাই হয় তাতে আশা করি কারো আপত্তি থাকার কথা নয় ।
ধন্যবাদ ।