শীতের কুহেলি ভরা সকাল,
কে নিয়ে যায় মোরে আনমনে ;
সুর্য উঠে এল প্রায় মধ্যগগনে ।
হেঁটে পিছু পিছু আসবে অভিসারে অচিরেই বিকাল ।
কিছু রবে আচ্ছন্ন ধোঁয়াটে ,কিছু স্ফটিক জলের মত পরিষ্কার ।
যে কালো মেঘ করেছিল ঝড়ো আকাশে..
সে আর কিছু নয়..
বিপথে হারিয়ে যাওয়া আমার অমানিশা র অন্ধকার ।
মধ্যাহ্নে বেলায় সেধেছিলুম যে গীতিমালা _
সে যুগান্তরে চেপে থাকা কাগজের ভাঁজে বাসি ফুল মালা ।
কঠিন বরফের চাদরে সেগুলো এখন প্রায় জীবাশ্ম !
এলোমেলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আবছা কিছু স্মৃতিভংশ।
তবু মনের কোন এক কোনে, অস্ফুট স্মৃতি- ছবি- ধ্বনি রা  
হাহাকার করে ,মেতে ওঠে,দোল খায় ,
বিক্ষোভ তুলে সাগরের তল থেকে উঠে এসে সজীব হতে চায় _
অঙ্কুশহীন বীজের নবাগত সবুজ কুঁরি পাতার মতো ।
ফিরে পেতে চায়, সুধা ঝরা আলো বায়ু জল, আর নীলিমার জীবন ;
এ যেন মুমূর্ষু রোগীর ছটফট  আর্তনাদ,প্রাণবায়ু পেতে চায় আমরণ ।
শীতের পর শীত এসে শীতল করে দিয়ে গেছে সব_
বিবাগী মন দুমড়ে করে সংকীর্তন,হৃদয়ে বৈভব ।
বারবার তাই, ফিরে ফিরে তাকাই কুয়াশাঘন চাদরে ;
যেন মনে হয় কেহ অপলকে চেয়ে আছে বারেবারে ।
আকাশ থেকে নেমে আসা শ্বেত বিন্দুর অমৃত সাগরে ।
সে সময়ও ছিল অনন্য _
মন ছিল দুর্বার দুর্বিনীত নদী ,
কুলে অকুলে গড়াগড়ি খেত নিরবধি ।
উঁচু চাই থেকে আছড়ে পড়া_
ছন্নছাড়া জলের মতো ছিল ছিন্নভিন্ন ।
আজ দিগন্তের পড়ে এল আবার  ঘন কুয়াশা__
স্মৃতি খোঁজে তার হারানো পুরাতন বাসা ।
ধরণীর বুকে যেন ধবল মেঘমালা লুটিয়ে পড়েছে ;
ঢেকে গেছে সবুজের ডালি_
ঢেকে গেছে বাগিচার ফুল ও তার বনমালী ।
ঢেকে গেছে ঐ সুদূরে র মাঠ অলিগলি পথ ।
ঢেকে গেছে,আমাদের গাঁয়ের টইটম্বুর কাজলা
মেয়ের ডাগর ডাগর হরিণী চোখ ,
তা দেখে শুধু ভেসে ওঠে বহু অক্ষত যৌবনের রামধনু ভরা চোখ ।
উচ্ছাসে ঢেউগুলো পেতে চায় একটুখানি সুখ ।
কিশোরী তুলছে জল নদীর ঘাট থেকে,  
বরফের চাদর ঢেকে _
ধ্যানগম্ভীর স্থির নিশ্চুপ নদীর তীরে

আমি সেই পানে চেয়ে আছি _
আজো চেয়ে আছি কুহেলির ভোরে !
অবেলায় ডাকে কেহ বেদনার ঘোরে ।
কিন্তু আমি আর সেখানে নেই ....
চলে গেছি দূরে বহুদূরে অনন্ত সাগর পাড়ে  ।


বাবুল আচার্যী    31/10/2016