******* আমি বিদ্রোহী *******
( প্রারম্ভিক )


আমি  মহারুদ্র,
চেতনারে কর হুঙ্কার,
একবার নয়,দুবার নয় , কর শত শতবার ,
গগন ভরিয়া ভেদিয়া উঠুক তব হুংকার ।
এই হুংকার-নাদ গরজে উঠুক বারংবার  ।
ধারন কর সবে মুরতি রুদ্র ;
ব্রাহ্মণ ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য আর শুদ্র ।
জীবন পেয়েছ যদি একবার,
অর্পণ করে মাকে ,কর  সৎকার।
এমন পথের দিশা , কোথা পাবে বল আর ?
মরনেও সুখ আছে , ভাবো  আরেকবার ।


আমি দেখেছি বল্গা হরিণের মত চোখ
বলতে চেয়েছে কিছু মাতৃ হারা বালক,
কণ্ঠ রুদ্ধ ,মুখে ভাসে কত লেনিন রেখা,
সুদৃঢ় ,দৃষ্টিতে ঝরে যেন কত রক্তলেখা।
স্তন্যপানরত শিশু মাতৃহারা, বোমারু নিয়াছে কাড়ি,
বীরত্ব না ছাই? কাপুরুষ , বীরত্বের বলিহারি ।
চিৎকারে প্রতিবাদ করে, ক্রন্দনে স্নায়ু কাঁপে,
বোমার গর্জনে ধরণী উত্তাপে যেন তাপে ।
অশ্র ভরা শিশুর আঁখি ,কে তার ভাষা বোঝে?
অবুঝ মনের শিশুটি , চেনা মুখটাকেই  খোঁজে ।
আমি দেখেছি ,সুন্দরী ললনা গেছে বধূর বেশে ;
স্বর্নালঙ্কারে পরিবৃত হয়ে ঘুরেছে  রাণীর দেশে।
হাতে গোনা দিন, সুদিনের স্বর্ণলেখা, চলে যে গেছে ;
ফিরেছে শুক্লবেশে, সিঁদুরের রক্তরেখা সে  মুছে ।
দেখেছি খুশির হিন্দোলে মেতেছে নিষ্পাপ  সুন্দর শিশুরা,
গুলির বর্ষনে রক্ত ঝরায় কে? চারিপাশে বিভৎস চেহারা ।


আমি দেখেছি, হিমাদ্রি শিখরে,শীতবাহী শীৎকার প্রবাহ,
ওতে ঢাকা পড়ে আছে,কত সেনানীর তাজা  মৃতদেহ,
মায়ের শীতল বুকে, ঘুমিয়ে ওরা অনন্ত সজ্জায়,
গরব করো সে-মায়ের,মুখ ঢেকো না লজ্জায় ।
কফিনের মাঝে দেখেছি কত, বীর যোদ্ধার মৃতদেহ _
বাক্সবন্দী দেহ আছে শুধু, শির নিয়ে গেছে কেহ ;
দেশের অপমান সইব না আর, রক্তে বিগুল বাজে ,
অগ্নিবীণা বাজাও তুমি আজ , তানপুরা নাহি  সাজে।
দেখেছি শত্রুর চার চোখ , পাঁচ পা , ঘরে ও বাইরে ,
সজাগ দৃষ্টিতে দেখে নাও ,পাশে কে থাকে ভাইয়ে ।
ঘরের শত্রু বিভীষণ থাকে আজ তোমার এলাকায়,
সবে মিলে তাকে ছেড়ে দাও সাগরের মাঝ-দরিয়ায় ।


(অন্তরা )
মেঘের গর্জনে দুন্দুভি শুনিতে যে পাই ,
রনংদেহী সাজে প্রস্তুত হও সবে ভাই ।
রোষানলে রবি ,আজ যেন রক্ত ঝরায় ,
শিরা-ধমনীতে টগবগে রক্ত যে ফোটায়।
দেশের সেবায় নিবেদিত প্রাণ, মাতৃ মন্ত্রে মোরা দীক্ষিত ;
অন্যায় নাহি সইব,নাহি বইব, মোরা সব উদ্যত  ;
মোরা শিক্ষিত,মোরা উথ্বিত,নই শঙ্কিত,মোরা জাগ্রত ।
বাহুবলে বলী,সুরে সুরে গলি,দেশে দেশে মোরা বিস্তিত ।
রক্তের ফেনিল ধারা বইছে আজ কেন  গঙ্গায় ?
বেঘোরে প্রাণ যায় কত ! বল, কে খোঁজ রাখে তায় ?
শত্রুর দ্বারে, আঘাত হানিব তেড়ে ,সাজ রণ-সজ্জায় ।
যুদ্ধের সাজে সেনানীর বেশে ,
মুক্তির খোঁজে মুক্ত এলোকেশে ,
শত্রু হানিছে আজ ঘুরে দেশে দেশে ।
প্রাপ্য ফিরায়ে দিব আজ,যাতনা দেব হেসে। ।


মন তাই ক্ষতবিক্ষত, সুর মন্দ্রিত, উচ্ছাস ঢলে যায়,
মুক্তির গড়ে, ঝরের বেগের মত, তোরা সব মিলে আয় ।
ভেবে নাও একবার, আমি সৌর্যের পরকাষ্টা।
শোনিতে বহে আমার সদা একলব্যের নিষ্ঠা ।
আমি দ্রোনাচার্য, আমিই  বীর অর্জুন,
শত্রুর বধে ভরে রাখি সদা মোর তীর-পুন।
আমি খুঙ্খার ,আমি পাশবিক,
শত্রুরে নাশ করি,আমি দানবিক ।
শক্তিতে ধরোহর , নেই কোন শঙ্কা ;
রাবনের মাথা পেতে ,যাব উড়ে লঙ্কা ।
আমি উচ্ছাস, খরস্রোতা প্রবাহী,
খড়কুটো ভেসে যায়, প্রাণ করে ত্রাহি ।
অঙ্গে অঙ্গে ওঠে ঢেউ, ওঠে জলতরঙ্গ _
শক্তির ধারা বহে, আমার প্রতিটি অঙ্গ।
আমি বিদ্যুত, ঝলকানি, আমি ঝঞ্ঝা ,
সোহাগীর তরে হয়ে যায় প্রেমলতা রাঞ্ঝা,
আমি বহ্নি , সৌদামিনী , আসি অচিরে ,
শত্রুরে নাশ করি,আমি রাতভর দুপুরে ।


( আহ্বান )
সবারে করি আহবান, ভেদাভেদ ভুলে, হও সবে এক প্রাণ,
বিচ্ছেদের সুরে, নাই কিছু ওরে, বৃথায় যাবে অমূল্য জান
হও জাগ্রত, হও উথ্বিত, মিলে মিশে সবে আসিবে প্রলয় ,
ভারতের গাঁথা ,গাইব একসূরে, বিশ্বের মাঝে হবে জয় ।


বাবুল আচার্যী  07/02/2016