আজ থেকে পুজোর ছুটি, একটু ফাঁকা ফাঁকা
পাশের জায়গাটা অনেকখন খালি ছিল,
বারাসাতে কে যেন এসে বসলো,একটা  চেনা গন্ধ
আগন্তুক আমার কোকড়ানো চুল এলেমেলো করে বলে
''কিরে চিনতেই পারছিসনা, না ভান করছিস ?''
হকচকিয়ে নাক টেনে বললাম ''ভালো তুই কেমন ?''
স্মৃতির উঠোন আতিপাতি করে মিথ্যে খুঁজলাম,
না পেয়েও  বললাম'' তোর্ মা কেমন আছে?'
উজ্জ্বল মুখটা হটাত মলিন হয়ে গেল।
''নিশ্চয় সুলেখা তোকে খবর দেয়নি ।
মা শেষের দিকে তোর কথা খুব বলত।''
আমার বুকের ধুক পুকুনি বেড়ে গেল
কে এই অচেনা বন্ধু ? কে সুলেখা ? কার মা?
আমি  কি স্মৃতিভ্রষ্ট? না! তবে কেন  চিনতে পারছিনা।
আবার পিঠে ধপাস করে  চাপড় পড়ল  
''আবার কবি কবি ভাব, কোথায় হারিয়ে গেলি?
এই জন্য ছোট বেলায় তোকে খুব খেপাতাম।
ঠিক জানি এখন তুই মার কথা ভাবছিস ?
প্রতিবার অষ্টমীর পুজোতে মা অঞ্জলী দিত,
সুলেখার হাত দিয়ে পাঠানো তোর দেওয়া শাড়িতে ।
একবার দেরী দেখে বলেছিল- ''অনি ভালো আছেতো?
'অনিকেত' নামটা  ছোট করে নিয়েছিল ।
অনি কে আসতে বলিস , অনেকদিন আসেনি।''
কি স্বার্থপর দেখত ! তোর কথা বল, বিয়ে করেছিস ?
আচ্ছা তুই কি ! সুলেখা ছাড়া জগতে মেয়ে নেই?
তবে জেনে রাখ অনি, তোর ভালবাসাও ভালো নেই।
মুখে হাসি থাকলেও সুলেখার অন্তর মরুভূমি...
চেয়েছিল তোর ছায়া, পেল প্রাণহীন তাজমহল।
তোর নাম্বারটা দেত ? সুলেখা কিছুতেই দেয়না ।
এই রে দমদম স্টেশন । আমি নামছি তুই আসিস।'
ট্রেনটা ছেড়ে দেয়...মুখটা নিমিষে মিলিয়ে গেল...
আমি ' অনিকেত ' নই । চিত্কার করতে চাইলাম,
বলতে গিয়ে দেখি গলার স্বর অস্ফুট ...