আসবে তো ? রাঙাদা এবার পূজোতে আসছ তো ?
জানি তুমি আসবে, প্রত্যেক বারের মতো ।
তুমি যখন আসো তখন ঝড় ওঠে
বোশেখ মাসের কালবৈশাখীর মতো ।
শুকনো পাতা কত উড়ে যায়,
আর কেমন যেন উলোট-পালোট হয়ে যায় সব কিছু ।
তুমি সবার জন্য উপহার আনতে
অনেক অনেক কিছু, একে একে সবাইকে দিতে.......
আর আমার বেলা হাতে কখনই দিতে না ।
বলতে – রাখা আছে গীতবিতানের ৮০ নম্বর পাতায়,
কিম্বা পড়ার ডেস্কের মাঝের তাকে । কেন বুঝিনা....
তুমি দিদির জন্য রক্ত গোলাপ আনতে আমার জন্য জুই ।
একদিন আড়াল থেকে ছো মেরে নিয়েছিলাম...
কাঁটা ফুটে হাতটা রক্তে মাখামাখি হয়ে গেল  ।
তুমি হা হা করে বিকট হাসি হাসলে....
চোখ ফেটে কান্না এসেছিল, ছুটে পালিয়ে গেছি  ।
রাঙাদা, তোমার চোখের দিকে চেয়ে থাকতে পারিনা ।
হাল ভাঙা পাল ছেঁড়া নৌকা ক্রমশ ডুবে যায়...
সাগরের কোন অতল গভীর অন্ধকারে  ।
চোখ খুলতেই দেখি একেবারে জোত্স্না ভেজা বালির চরে ।
রাঙাদা, এবারে তোমার সাথে বেড়াতে যাব
অনেক দুরে যেখানে আকাশ মাটিতে মিশেছে,
টেলিগ্রাফের তারে বসে ফিঙে লেজ দোলাচ্ছে,
আর সাদা কাশফুল মাথা দুলিয়ে কাছে ডাকছে...
আমায় নিযে যাবে তো রাঙাদা?
তোমার মনে আছে, একবার আম পাড়তে গিয়ে
তোমার ছোঁড়া ঢিলে আমার মাথা ফেটেছিল  ।
সেদিন আমি কাঁদিনি, সত্যি কথাটা কাউকে বলিনি ।
বলেছি পড়ে গিয়ে মাথা ফেটেছে, এখনো দাগ রয়েছে ।
রাঙাদা, উঠোনের গাছে ছাতিম আর শিউলি ফুটেছে ।
সকালবেলা গাছের তলাটা ধবধবে সাদা হয়ে থাকে ।
এবারে আমি প্রথম শাড়ি পড়ব, জানিনা কেমন লাগবে !
টিভির খবর শুনে ওরা সবাই বলছে, তুমি আর আসবে না
ওদের কথা আমি বিশ্বাস করিনা, বিশ্বাস করিনা ।
আমি জানি, আমি জানি তুমি ঠিক আসবে ...আসবে তো?