ওরা এদেশের মানুষ চায় না,মাটি চায়
তাই পঁচিশে মার্চের নীরব রাতের কালো আঁধার ভেঙ্গে
নিরীহ ঘুমন্ত মানুষের বুক তাক করে
অতর্কিতে গর্জে উঠেছিল পাকিস্তানি শাসকদের নিষ্ঠুর কামান।
ছাত্র,শিক্ষক,সাংবাদিক পাখির মত মরে পড়ে রইল এখানে ওখানে।
প্রেসক্লাব,ছাত্রাবাস পরিণত হলো এক ধ্বংসস্তূপে।
আতংকিত মানুষ বাঁচার আশায় ঢাকা ছেড়ে দিগ্বিদিক ছুটছে
তাদের পিছে পিছে ছুটছে হানাদার হায়েনার দল
মাঝে মাঝে গর্জে উঠছে কামানের নল।


তারপর জন্ম নিল এক নতুন চেতনার
তাড়া খাওয়া মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়াল
পিঠের বদলে কামানের সামনে বুক পেতে দিলো
বাঁধা পেয়ে ক্রোধে ফেটে পড়ল শাসকের দল
বসত ভিটায় আগুন লাগিয়ে দিল জনপদের পর জনপদ
যুবতী মেয়েদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল
বাবার সামনে মেয়ের; স্বামীর সামনে স্ত্রীর সম্ভ্রম কেড়ে নিলো
শিশুদের শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে গুলি করে মারল।


দিশেহারা মানুষ ঠাঁই পেল সীমান্তের ওপারে আশ্রয় ক্যাম্পে
ওখানে পেটে ক্ষুধা বুকে প্রতিশোধের আগুন
এক চোখে স্বজন হারানোর বেদনা, অন্য চোখে খুনের নেশা।
তাদের ভয়ার্ত চোখে স্পর্ধার স্ফুলিঙ্গ ছড়ায়
বেপরোয়া সাহসের ঝড় মৃত্যুকে আহ্বান জানায়
পৃথিবীর বুক কাঁপিয়ে জানিয়ে দিল তারা মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তি বাহিনীর বাড়ল সাহস; বাড়ল বাংলাদেশের সীমানা
একে একে পতন হলো দখলদারদের আস্তানা।
হানাদার ও তাদের দোসররা পরাজয়ের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে
বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রাতের আঁধারে ধরে নিয়ে গেল
আর ফিরল না সেইসব সন্তানেরা!
অগণিত লাশের স্তূপের মাঝে পাওয়া গেল তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ
সেই লাশের গন্ধমাখা বাতাসে উড়ল লাল-সবুজের বিজয় পতাকা
পৃথিবীর মানচিত্র ঠেলে বেরিয়ে এলো একটা দেশ; বাংলাদেশ।