আশিকুজ্জামান-এর কবিতাwww.bangla-kobita.com ওয়েবসাইটে আশিকুজ্জামান-এর প্রকাশিত কবিতাসমূহ।uuid:7d185313-565e-4d50-be79-02a6df9502c9;id=6072024-03-29T13:55:36Zhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/adkhana-chad/আধখানা চাঁদ2021-02-03T05:14:35-05:002023-06-26T21:01:07-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>চাই না তোমাকে স্বর্গে পেতে<br />চাই এই মাটির পৃথিবীতে নক্ষত্রের আগুন ভরা রাতে<br />আধখানা চাঁদ হাসবে আকাশের গায়ে<br />আর বাকী আধখানা চাঁদ তুমি হাসবে আমার ঘরে;<br />তখন স্বর্গ সে লোটাবে আমার পায়ে।</p>
<br /><p>জাগবো তোমার সাথে তন্দ্রা হারা রাতে,<br />ভালোবাসার মিছিলে<br />মুখরিত স্লোগানে কাঁপবে তোমার হৃদয়<br />তখন একাকী নীরবে মাতাল চোখে দেখব তোমাকে<br />বলব কথা হৃদয়ের কানে কানে ।</p>
<br /><p>যে কথা শুনতে বড় সাধ ছিল<br />সে কথা স্নিগ্ধ নয়ন তুলে <br />যাদু মাখা কণ্ঠে শোনাবে বারেবারে।<br />স্বপ্নের চিলেকোঠার জানালার খুলে<br />দেখব আধখানা চাঁদ আকাশে<br />আর বাকী আধখানা চাঁদ তুমি আমার ঘরে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bonna/বন্যা2020-12-25T09:10:08-05:002023-06-26T11:07:27-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>গাঁয়ে গাঁ ঘেঁষে ছোট ছোট ঘরগুলো মিলে গড়ে উঠেছে বসতি<br />সেগুলো গ্রাস করতে একটু একটু করে বাড়ছে নদীর পানি<br />সেইসাথে বাড়ছে ভয় নদীর তীরের মানুষগুলোর,<br />হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে পানির তোড়ে গরু ছাগল ভেসে গেল<br />ঘরের মেঝেতে খুঁটি গেড়ে উঁচু বাঁশের মাচায় ঠায় হলো ঘর বাসীর।<br />হতাশার বেলাভূমিতে আশা উঁকি দেয় <br />কিন্তু সময় বয়ে আনে আরও বেদনা।</p>
<br /><p>জমাট অন্ধকারে ঘুমের ঘোরে কোলের শিশুটি হারিয়ে গেল।<br />ঘুম ভেঙে মা দেখে খালি বিছানা<br />সর্বনাশা নদী তাকে নিয়ে গেছে।<br />জীবন বাঁচাতে সংসার পেতেছে ভেলায়<br />কোথায় ঠায় মিলবে কেউ জানে না,<br />অজানায় ভেসে চলে আর পিছন ফিরে চাই করুণ চোখে<br />ছোট ছোট সেই বসতিগুলো ছেঁড়া দ্বীপের মতো<br />কোনমতে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে জন মানবহীন, প্রাণহীন।</p>
<br /><p>ঠাঁই মিলেছে উঁচু রাস্তায়,রেল লাইনে,স্কুল ঘরে<br />প্রকৃতির সাথে লড়াই করে ওরা হেরে গেছে<br />এইসব মানুষের জন্য<br />খবরের কাগজের কলমের ডগা দিয়ে রক্ত ঝরছে<br />--‘বাঁচতে হলে খাদ্য চাই।<br />বানভাসি মানুষের আবার পিঠটান করে দাঁড়াতে ত্রাণ চাই’।</p>
<br /><p>ত্রাণের আশায় অভুক্ত মানুষের দল দীর্ঘ লাইনে<br />সামনে থরে থরে সাজানো সব ত্রাণের জিনিস<br />সেগুলোর দিকে করুণ ভাবে চেয়ে থাকে অসহায় দুর্বল মানুষ<br />দুপুর গড়িয়ে সভাপতির সাথে টিভি ক্যামেরা এলো<br />ত্রাণের উৎসব নাটকের শুটিং হবে; অভিনেতারা প্রস্তুত<br />এমপি চেয়ারম্যানের ঠোঁটের কোনে হাসি<br />ক্ষুধার্ত ও অসহায় মানুষেরা ছেড়ে দিল তাদের অধিকার।<br />সেইটুকু নিয়ে ত্রাণ দাতাদের গড়ে উঠল সম্পদের পাহাড়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/chokher-jole-hrydoy-hote/চোখের জলে হৃদয় হতে2020-11-24T09:22:42-05:002023-06-25T12:51:48-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>চোখের জলে হৃদয় হতে মুছে যায় তোমার নাম<br />এতটা পথ এসে, এত কষ্ট সয়ে কি পেলাম<br />যা কিছু ভেবেছিলাম আপন; সব ভুল <br />আমি ভুল করে ভুল মায়াজালে জড়িয়েছিলাম।</p>
<br /><p>দু’চোখে দেখেছিলাম দুরন্ত ঝরনা অফুরন্ত আলো<br />স্বপ্নের ঝড়ে উড়ে যেত বেদনার কাঁটা<br />দুরন্ত আবেগে কামনার চিতায় জ্বলে ওঠে নীল বাসনা<br />কথার গানে ঢাকা ছিল ধিক্কারে ভরা তোমার নোংরা মন<br />কি আফসোস, সেসব ছিল বড়ই অজানা।</p>
<br /><p>সব আশা ভেঙে-চুরে যায়, ভাঙে আশার ফুলদানি<br />চোখের জল মুছে সেই পথে আবার ফিরে যায়<br />যে পথে তুমি এসেছিলে<br />জানি ফিরবে না, তবুও আশা নিয়ে থাকি।</p>
<br /><p>কত যে ইচ্ছা কত যে স্বপ্ন<br />এ জীবনের খাতায় কে তার হিসাব মিটায়<br />কালো ভ্রমরের পাখায় যে ছন্দ ওঠে<br />সেই ছন্দে একবার বাঁধার সময় পেল না, হায় দুরন্ত হৃদয়!!<br />আমার হৃদয় এখনো তোমারই প্রতীক্ষা করে।<br />তুমি দিয়েছ সঞ্চিত জল আমার দু’চোখে ঝরাতে।</p>
<br /><p>আজ বৃষ্টির রাতে একা আমি, চোখে ঘুম নেই<br />হাওয়া ডেকে যায় লক্ষ্যবিহীন রাতের জলসায়<br />অকুল মোহনায় যেন আমার অধীর প্রাণে চির প্রতীক্ষা<br />এতটা পথ এসে, এত কষ্ট সয়ে কি পেলাম<br />চোখের জলে হৃদয় হতে মুছে যায় তোমার নাম।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bintir-chokhe-jol/বিন্তির চোখে জল2020-10-24T10:43:20-04:002023-06-25T14:29:33-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>জীবনের মহাসমুদ্রে একমাত্র বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো তুমি<br />সময়ের স্রোতে এলোমেলো ঘুরে ঘুরে<br />আমি তোমার বুকে খুঁজে পেয়েছি আশ্রয়।<br />পৃথিবীর পরে ব্যস্ত সবাই; কে কার খোঁজ রাখে?<br />তবুও আমি তোমার বুকে উড়িয়ে দিয়েছি<br />ভালোবাসার বিজয় পতাকা।<br />তোমার নামে এ বুকে শিহরণ জাগে <br />ঝরে পড়ে গাঢ় বেদনার মায়া।</p>
<br /><p>জীবন আকাশে যখন টুকরো টুকরো ব্যর্থতার মেঘ জমা হয়ে<br />ধেয়ে আসে জমাট অন্ধকার, আছড়ে পড়ে বিশাল ঢেউ<br />তখন দিশেহারা মন কেবল তোমাকেই খুঁজে পায়,<br />নিবিড় হতাশার চোখে জীবনকে দেখে<br />শিশিরের স্বচ্ছতার মতো টলমল।<br />সেই ক্ষণে সারা প্রাণ ধরে<br />কেবল তোমাকে ডেকে উঠি বারেবারে প্রিয়তমা<br />এ পৃথিবীর সবচেয়ে মিষ্টি নাম ধরে,‘বিন্তি’।<br />একি তুমি কাঁদছ?<br />কেউ ভালোবাসেনি তোমাকে? ভালোবাসা ক্ষুধাতুর মন তোমার?<br />‘না কিছু নয়’<br />বেদনায় বিক্ষুব্ধ হৃদয় আকাশে কষ্টের মেঘ কেটে কেটে<br />স্বপ্নের এই দিন যে কখনও আসবে<br />সে কথা ভাবতেই দু’চোখ জলে ভিজে যায়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bangladesh-sopno-dekhe/বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে2020-10-21T06:12:43-04:002023-06-27T12:00:35-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>নতুন প্রজন্মের পিঠে চড়ে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে<br />বস্তাপচা ইতিহাসের কাব্য চর্চায় যাদের জীবন চলে<br />তাদের বুকে পা রেখে নতুনেরা একদিন<br />গৌরবের আলপনা এঁকে দেবে নক্ষত্রের পিঠে<br />এ বিশ্ব অবাক চোখে দেখবে নতুন বাংলাদেশ।</p>
<br /><p>অমর একুশ আর মহান মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া<br />আমাদের কিছু নেই<br />আর যা আছে তা এ জাতির কলঙ্কের ইতিহাস<br />রকেট সায়েন্স, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, গবেষণায়<br />আমাদের অবদান এ বিশ্ব খুঁজে পায় না<br />আমরা বিশ্বকে বুক ফুলিয়ে বলি<br />আমরা একবার জ্বলে উঠেছিলাম উনিশশো বাহান্ন সালে<br />আর একবার লড়েছিলাম উনিশশো একাত্তরে <br />রকেট সায়েন্স, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, গবেষণা<br />এসব ফালতু বিষয়ে আমাদের সময় কোথায়?<br />আমরা এমন এক রাষ্ট্র ব্যবস্থা করে রেখেছি<br />যেখানে আমাদের মেধাবী কাউকে দরকার হয় না<br />আমাদের দরকার মঞ্চে মাইক ফাটানো নির্লজ্জ যুবকের<br />আমাদের দরকার আদর্শহীন পেশিশক্তির নতজানু চামচা।</p>
<br /><p>এখনও এ দেশের <br />বুকের পাঁজরে শোষিত মানুষের হাড় জমা হয়<br />রক্ত ফেনা মুখে<br />মানুষ চেয়ে থাকে ন্যায় বিচারের প্রতিক্ষায়<br />একা এক নারী নির্জন রাস্তায় ভয়ে কেঁপে ওঠে<br />হতাশার বিস্ফোরণে তরুণেরা ছিটকে পড়ে দেশ বিদেশে<br />কেউ কেউ সর্বস্বান্ত হয়ে ফিরে আসে<br />তবুও এই প্রজন্মের পিঠে চড়ে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে<br />আগুনের ফুলকির মতো রং ছিটিয়ে<br />একদিন আসবেই আসবে সেই আকাঙ্ক্ষিত ভোর।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/keno-valobasi-tomai/কেন ভালোবাসি তোমায়2020-10-18T10:12:33-04:002023-06-25T07:58:15-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>কেন ভালোবাসি তোমায়? জানি না<br />বোধ হয় যৌবনের ঋণ তোমার কাছে<br />তোমার রূপে মুগ্ধ নই<br />তবুও হাসনাহেনা ফোটে হৃদয়ের গোপন কোণে<br />ও চোখ পটলচেরা মায়াবী হরিণীর নয়<br />ঐ আঁখিতে নেই বিদ্যুতের ঝলসানো চমক<br />কালো চুলে মেঘেরা এসে ঢেউ খেলে না<br />ঐ ঠৌঁট মেলে ধরে না গোলাপের পাপড়ি <br />ঐ হৃদয় শুধু একান্ত সহজে মেলে ধরে ভালবাসার গোলাপ।</p>
<br /><p>যখন কাছে আসি আমি হারিয়ে ফেলি ভালোবাসা<br />চোখের আড়ালে গেলে মনে জাগে কিসের তৃষ্ণা?<br />আঁধার ঢাকা পৃথিবীতে সূর্যের মতো তোমাকে খুঁজি<br />এ লুকোচুরি খেলা হৃদয়ের, ছলনার, প্রণয়ের<br />আবেশের শিহরণে কম্পন ওঠে প্রাণে<br />এনেছে অন্তর প্রণয়ের সৌরভ; নীরব অক্ষরের বিন্যাস।</p>
<br /><p>হয়তো এ ভালোবাসা হৃদয়ের নিছক এক খেলা<br />সেই প্রশ্নে আমিও নিত্যদিন থাকি বিদ্ধ<br />উড়াই প্রণয়ের ফানুস<br />ঘুমের ঘরে দেখি মায়াবিনী যাদুর খেলা<br />তৃষ্ণাতুর চোখে থাকি দিনরাত্রি, তৃপ্তিহীন কাটে সময়<br />মেঘের তরঙ্গ কেটে কেটে ভেসে যায় দুরে বলাকা<br />আমি সেখানে দেখি মুগ্ধতায় তোমার মুখের আলপনা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ekti-narir-mukh-vese-othe/একটা নারীর মুখ ভেসে ওঠে2020-10-05T16:46:48-04:002023-06-24T20:40:50-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>অবাধ্য স্বপ্নের সীমানায় রক্তের ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা<br />শুধু একটা নারীর মুখ ভেসে ওঠে<br />হৃদয়ে গোপনে বুনে দেয় পাগলামির বাঁকা কিছু ইশারা<br />ঐ মুখের আলো ছড়িয়ে থাকে চোখের পাতায়<br />নিরন্তর তার ছায়া এসে পড়ে ঘুমিয়ে থাকা চোখে। </p>
<br /><p>অন্ধকার মাঝরাতে একটা নারীর মুখ ভেসে ওঠে<br />ধান ক্ষেতের সোনালী মাঠে সে ভেসে ওঠে<br />সবুজ প্রান্তরে তার হাসির আওয়াজ পাওয়া যায়<br />চৈত্রের দুপরে ছন্দময় প্রাণ নিয়ে ছুটে আসে কাছে<br />পূর্ণিমার আলোয় ছায়া এসে পড়ে, আবার হারিয়ে যায়<br />অসীম আকাশে মেঘের মধ্যে তার সাঁওতালী নৃত্য দেখি।</p>
<br /><p>হৃদয়ে বিচিত্র জৌলুসে সেই নারীর মুখ উত্তেজনা আনে<br />মনে হয় এই বুঝি মেলে দেখা <br />কোকিলের কণ্ঠঝরা মধুর স্বপ্ন এসে বিষণ্ণ মনে ধাক্কা দেয়<br />আমি অসহ্য যন্ত্রণায় শুধু তাকে খুঁজি<br />নরম লতার মতো দেহে তারার মতো চোখে কেবল থাকে তার ইশারা<br />মনে হয় এ আমার সত্য ভালোবাসা!<br />শুধু একটি নারীর মুখ ভেসে ওঠে<br />হয়তো ভিত কপোতের মতো সংকুচিত প্রেম দ্বিধা ভরে ফোটে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/jibon-chute-cholche-somoyer-tane/জীবন ছুটে চলছে সময়ের টানে2020-10-03T02:27:33-04:002023-06-24T20:40:53-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>জীবন ছুটে চলছে সময়ের টানে<br />সমাজ-পরিবার-সম্মান-মর্যাদার গ্যালারীর থেকে<br />তীব্র স্লোগান ভেসে আসছে আরও জোরে ছুটতে হবে।<br />স্লোগানের উত্তাপে নিয়তি ঠেলে নিয়ে যায় জীবনের গন্তব্যে<br />বোধ জেগে ওঠে রেসের ময়দানে<br />সারি সারি প্রতিযোগীদের সাথে দাঁড়িয়ে আছি ছুটার জন্য<br />পৃথিবীর জনতা চেয়ে আছে রেসের সামনের মানুষটার দিকে<br />তার জন্য পুরষ্কারের স্তূপ জমা করে রাখা আছে।</p>
<br /><p>রেসের পিছনে যে রয়ে গেল তাকে কে-ই বা মনে রাখে!<br />যদি জিততে না পার তোমার কথা কেউ শুনবে না।<br />তোমাকে কেউ মানবে না।<br />তুমি সমান সুযোগ পাওনি, তোমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে<br />তোমার মামা-খালু নেই<br />এমনকি রেসের সময় সাহস দিতে<br />গ্যালারিতে কোন এক মায়াবী হরিণীও তোমার জন্য নেই!<br />যদি থাকতো তুমি আরও অনেককিছু দেখাতে পারতে।<br />হতেও পারত তুমিই জয়ী!!<br />তোমার কি আছে কি নেই <br />তাতে পৃথিবীর গ্যালারীর দর্শকের কাছে কিছু এসে যায় না<br />তারা দেখতে এসেছে রেসের সামনের মানুষটাকে।</p>
<br /><p>জীবনের রেসের সময় কেউ বুকে যন্ত্রণা নিয়ে<br />পথের উপর পড়ে গিয়ে তোমার পথ রুদ্ধ করলে<br />তার আর্ত চিৎকারে সেদিকে তাকাতে নেই!<br />তার বুকে পা রেখে তাকেও ডিঙাতে হয়।<br />মনে রেখ জীবনের দৌড়ে শুধু সামনে তাকাতে হয়<br />সামনেরটাকে অতিক্রম করতে আরও জোরে ছুটতে হয়<br />যদি না পার তোমার দিকে কেউ ফিরেও তাকাবে না<br />তোমাকে কেউ চাইবে না, কেউ চিনবে না<br />এ পৃথিবী বাসী শুধু তাকেই দেখতে চায় যে জয়ী হয়<br />ফুলের মালা শুধু তার জন্য।<br />পরাজিতদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা, অবহেলা, অবজ্ঞা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amake-ektu-bhalobasa-dao/আমাকে একটু ভালোবাসা দাও2020-09-26T07:37:51-04:002023-06-25T13:02:33-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমি তোমার চেখের দিকে যতবারই চাই<br />ততবারই আমার বুকের নদীতে ওঠে অশান্ত ঢেউ<br />হৃদয়ে অজানা উত্তেজনা আসে<br />কেবলি দেখতে পাই তোমার শান্ত ঠোঁটে <br />ভোরের আলোর মতো সুন্দর রেখাহীন হাসি।<br />আছি অনেকের মাঝে তবুও যেন আমি একা<br />সবার মাঝে থেকেও<br />পেয়েছি আমি তোমার প্রণয়ঘন দেখা।</p>
<br /><p>প্রেম জেগে থাকে কল্পনায় এক নীল প্রতীক্ষার আলোয়<br />তোমার কালো চোখে সমুদ্রের মতো গভীর বিস্ময়<br />ঐ চোখের আলোয় দেখি অজ্ঞাত প্রণয়<br />তাই আজো থাকি তোমার প্রতীক্ষায়<br />মনে হয় প্রাণের গোপন বৃন্তে ফুটেছে অবুঝ ভালোবাসা।</p>
<br /><p>তোমাকে ছাড়া আমার কি যে যন্ত্রণা<br />তা তোমাকে কখনো ছোঁবে না।<br />তোমার ভালোবাসার জন্য<br />শিকারি বিড়ালের মতো আমার চোখ জ্বলজ্বল করে<br />চৈত্র মাসের শিমুলের তুলার মতো স্বপ্নগুলো বাতাসে ওড়ে।<br />আমাকে একটু ভালোবাসা দাও!<br />তোমার সামনে আমি হাঁটু মুড়ে বসে আছি নত মুখে।<br />অথচ তুমি দেখছ নীলিমায় সাদা মেঘের রহস্য<br />অন্ধকার অরণ্যে গিয়ে খোঁজ জোনাকি পোকা<br />তার মানে কিছু যে বুঝি না তা নয়<br />কিছুকিছু তো বুঝি!!<br />তোমার সামনে আমি হাঁটু মুড়ে বসে আছি <br />আমাকে একটু ভালোবাসা দাও!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/kotobar-vebechi-ajei/কতবার ভেবেছি আজই2020-09-23T06:53:52-04:002023-06-27T08:49:10-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>কতবার ভেবেছি আজই তোমাকে বলব<br />আমার ভালোবাসার কথা<br />হৃদয়ের ক্লান্তি বুকের মধ্যে দুমড়ে ওঠে<br />কাছে গেলে ঠোঁট দু’টো শুধু নড়ে ওঠে<br />অবরুদ্ধ গলার স্বরে বিস্ময়ে বিমূঢ় আমি<br />এ কার গলার শব্দ শুনি! ফিরে আসি।<br />কিছুই বলা হয় না, দিনে দিনে প্রস্তুতি চলে।<br />অকুণ্ঠ পিপাসায় নিমজ্জিত হৃদয়ে<br />আবেগের লাগামহীন ঘোড়া দৌড়ে চলে।</p>
<br /><p>যখন আকাশে একটি একটি তারা ফোটে<br />তখন আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করে থাকি<br />যখন তারাগুলো আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে<br />ঝিকমিক করে<br />সেখানে তারা নয়, আমি দেখি তোমার মুখ।</p>
<br /><p>যখন মধ্যাহ্নের আকাশ কাঁপানো ঝড়ে<br />দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে<br />তখন চোখের জলে খুঁজি তোমার হাত<br />মনে হয় ঐ হাতের স্পর্শ ছাড়া এ জীবন বৃথা<br />কেন এ বেঁচে থাকা?<br />মনে হয় সব নক্ষত্রের উদয়, উজ্জ্বলতা, জ্বলে উঠা<br />সব তোমার জন্যই<br />গোমড়া বৃষ্টিও তেরছা তাকায় সব তোমার জন্য।<br />তাই মনে মনে এগিয়ে যায় আজ তোমাকে বলবই বলব<br />আমার ভালোবাসার কথা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/joto-dure-jai/যত দূরে যাই2020-09-11T11:44:26-04:002023-06-25T12:51:06-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>যত দূরে যাই সেই নদীর ঢেউয়ের শব্দ শুনি আমি<br />সেই শব্দ চুপিচুপি এসে কানে কানে কথা বলে<br />যখন জীবনের বোঝা বয়ে বয়ে ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসে<br />তখন সে মিষ্টি সুরে বুকে বেদনা জাগায়<br />সে বুঝি মাথাভাঙ্গা নদী !</p>
<br /><p>ভরা যৌবনে তাকে দেখেছি; সেই রূপ কি ভোলা যায় !<br />প্রেমিক কি ভুলতে পারে তার প্রিয়ার রূপ ।<br />মৃদু বাতাসের তালে ছোট ছোট ঢেউয়ের খেলা<br />আকাশে গাংচিল আর মাছরাঙাদের মিলন মেলা<br />বারে বারে মনে পড়ে।</p>
<br /><p>হয়তো আর দেখা হবে না<br />রাখালের গরুর পাল নিয়ে তোমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়া।<br />কাঠফাটা রোদে<br />তোমার বুকে নেমে শীতল হওয়া আর হবে না। <br />বিকেলের নরম রোদে গাঁয়ের কোল ঘেঁষে<br />তোমার বিছানো সবুজ ঘাসের চাদরে বসে<br />তোমার অতিথি হয়ে<br />তোমার সাথে আর আড্ডা জমানো হবে না।</p>
<br /><p>আনমনে চেয়ে থেকে তোমাকে আর এ চোখ খুঁজবে না<br />তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন সাগরে হারাব না আর কোন দিন ।<br />শহরের ব্যস্ত জীবনে তোমার কোন স্থান নেই । <br />তবুও ক্লান্ত দেহে যখন চোখ বুঝে আসে<br />তখন জননীর মতো এসে তুমি কথা কও।<br />স্মৃতিকে জাগিয়ে দাও;সেই তুমি বুঝি মাথাভাঙ্গা নদী।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/romna-parke/রমনা পার্কে2020-09-07T08:19:10-04:002023-06-24T20:41:02-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবা, মায়ের হাতে সংসারের ভাঙ্গা হাল<br />অভাবের চাকায় পিষ্ট কচিকচি ভাইবোন<br />পরিত্রাণের কোন আশা নেই। <br />আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে দিতে <br />শান্তনা একদিন বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমাল।<br />কোন মতে কাজ পেল গার্মেন্টসে।<br />সেখানে জীবনকে নিংড়ে নেয় শ্রম।<br />কিছু টাকা বাড়িতে পাঠানোর আনন্দ<br />শরীরের ক্লান্তির উপর প্রফুল্লতার প্রলেপ আনে।</p>
<br /><p>হঠাৎ একদিন চাকরী খোয়া গেল, কোন প্রতিকারও নেই ;<br />তবুও তো বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে। <br />একদিন দেখা গেল তাকে<br />রমনা পার্কে আধো আলো ছায়ায় দাঁড়িয়ে আছে<br />প্রেমের সাজানো বাগান বিক্রির আশায় ।</p>
<br /><p>অন্ধকার পেরিয়ে একজন মানুষ এগিয়ে আসতে দেখে<br />শুকনো ঠোঁটে জোর করে হাসি ফুটিয়ে তোলে।<br />কি বিষম কাণ্ড! আরে এ তো মানুষ নয় পুলিশ!! <br />বুকে সব হারানোর ভয়, মুখে বিনয়ের হাসি<br />ভাসমান মেয়ের সুন্দর হাসিতে মনে ছড়ায় বিষ<br />চোখ চলে যায় ভ্যানেটি ব্যাগের দিকে<br />আঁচলে বাঁধা টাকার ছোট্ট পুঁটলিটার দিকে।</p>
<br /><p>দেহের সৌন্দর্য আর মনের আবেগকে ইজারা দিয়ে<br />ঐ আঁচলে জমিয়েছিল কিছু সঞ্চয়<br />পুলিশ সব ছিনিয়ে নিলো।<br />একটি পরিবারের খুশির ছবি ঐ চোখে উঠেছিল জেগে<br />সেই চোখ এখন পথের দিকে চেয়ে থাকা হরিণীর মত<br />হায়েনার দল যার শিশুটিকে ধরে নিয়ে গেল।<br />মনুষ্যত্ব পুলিশের উর্দির নীচে ঢাকা থাকে<br />সুযোগের সন্ধানে সর্বদা পুলিশের চোখে নগ্ন লালসার ঝড় ওঠে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ki-kore-bolle-tumi/কি করে বললে তুমি2020-09-06T03:52:47-04:002023-06-26T07:37:35-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>এত দিন পরে কি করে বললে তুমি ভুলে যাও<br />মেঘের ফাঁকে একমুঠো নরম আলো বিষণ্ণ দুপরের<br />কানে কানে যে সুরে কথা কয়<br />তুমি আজও আমার মনের গভীরে বসে<br />সেই সুরে বলছ কথা হৃদয়ের কানে কানে<br />বল,ভুলি কি করে তোমায়?</p>
<br /><p>তবে এত দিনে যা ছিল সবই কি অভিনয় !<br />নাকি আমার চেয়ে আরও রঙ দিয়ে আর কেউ<br />রাঙিয়েছে তোমার মন।<br />ফেলনা কাগজের ঘুড়ি সেও সুতার টানে<br />মেঘের উপরে উঁকি দিয়ে আকাশকে ছুঁতে চায়<br />হঠাৎ খেয়ালের বশে সুতা কেটে দিলে<br />বাতাসে ভেসে ভেসে কোথায় ঠিকানা খুঁজে পায়!<br />কে তাহারে ভালোবাসে,তুমি কি জান না কিছু ?</p>
<br /><p>সময়ের প্রয়োজনে মানুষ বদলায়,<br />জীবনের প্রয়োজনে প্রেম ছুঁড়ে ফেলে নিবিড় অন্ধকারে<br />সমৃদ্ধির লোভে স্বার্থের আকাশে ক্রুদ্ধ ঝঞ্ঝা ওঠে<br />প্রেম কোথায় হারিয়ে যায় কেউ তাকে খুঁজে পায় না আর;<br />জীবনের তীরে বসে সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা পাখির মতো<br />তাকে হঠাৎ অস্পষ্ট মনে পড়ে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/baba/বাবা2020-09-04T10:32:34-04:002023-06-24T20:40:45-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>জীবনের সূর্যটা যখন অস্ত গিয়েছে নিবিড় হতাশার কোলে<br />বাবার কণ্ঠ শুনে<br />অভিমানে বুকের মধ্যে মুখ গুঁজেছি নিশ্চিন্তে<br />আশ্রয় পেয়েছি শান্ত নদীর জলের মতো।<br />জীবনের সমস্ত ঝড় মাথায় নিয়ে<br />যে আমাকে বুকে আগলে রেখেছিলো;সে আমার বাবা।</p>
<br /><p>অভাবের তীব্রতায় ঝরা ফুলের মতো ঝরেছে তার শখ-আহ্লাদ<br />তবুও বাবা হাতে ধরে ছিল আদর্শের মশাল।<br />বাবা বলতো,“তুই বড় হয়ে আদর্শের এই মশাল<br />হাতে নিয়ে বঞ্চিত,অবহেলিত মানুষকে পথ দেখাবি কবে?”</p>
<br /><p>এই অশান্ত অন্ধকার পৃথিবীতে আমি এখন একা!<br />তোমার হাতের যে মশাল হতাশার অন্ধকারের বুক চিরে<br />মানুষের চলার পথের উপর ছড়িয়ে দিতো উজ্জ্বল আলো<br />সেই মশাল, আমার হাতে তেজোহীন<br />আবছা আলোয় হোঁচট খেয়ে পড়ে গেছি পথের উপর<br />ব্যথায় কুঁকড়ে গেছে সমস্ত শরীর।<br />এখন আর কেউ আগের মতো বলে না,<br />“মানিক আমার,ওঠ; আমি আছি, ভয় নেই তোর ।”<br />অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়ে বেদনার অশ্রু।</p>
<br /><p>কাছে বসে কেউ আর দু’হাতে মুছিয়ে দিয়ে বলে না<br />কাঁদতে নেই--! কাঁদলে, তুমি পরাজিত।<br />তাই,সমস্ত বেদনা লুকিয়ে আজো শুধু হেসে যায়<br />বুকে ক্ষত হয়ে জাগে ব্যথা। <br />অভিমানে কত কি যে মনে আসে<br />তবুও বাবা! আমি তোমাকেই ভালোবাসি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/govir-rate-ghum-venge-joi/গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়2020-08-23T02:40:36-04:002023-06-24T20:40:52-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ফাল্গুনের মেঠো পথে দেখা হয়েছিল তোমার আমার<br />তোমার মুখ ছিল যেন হাসিমাখা শিউলি ফুল<br />আমাদের বুকের ফুলদানিতে ছিল তখন ভালবাসার ফুল<br />প্রণয়ের মাদকতায় <br />একটা স্বচ্ছ প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের কাটছিল দিন।</p>
<br /><p>তারপর একদিন সবকিছুর অবসান হলো<br />আমাদের সুমধুর রাত শেষ হত বেহালার সুরের মতো<br />সুগন্ধি মাতাল মাংসের ঘ্রাণে রাতের আঁধারে আমরা জেগে থাকতাম<br />আমরা একসাথে দেখতাম চিলের পিঠে নেমে আসা সন্ধ্যার সূর্য।<br />তোমার নূপুরের ছন্দে তখনও যেন<br />আমার হৃদয়ে হাই বিটের কম্পন শোনা যেত।</p>
<br /><p>তারপর একদিন আমাদের আকাঙ্খার মহাপ্রলয়ে <br />ভালবাসার নৌকা ডুবে গেল<br />আমরা দু’জন দু’পাড়ে উঠে কোন রকমে জীবন বাঁচিয়েছি<br />পরস্পরের দু:খ বেদনা ক্ষত কি হবে আর নিক্তিতে মেপে<br />এখন আমি আর তোমাকে ঘনঘন মুঠোফোনের বার্তায় জাগায় না<br />সেই সবের সব হয়েছে পরিসমাপ্তি।<br />আমি আছি কাছাকাছি তোমার<br />তবুও তুমি দুরে কত দুরে!<br />আমার হৃদয়ে তোমার জন্য জাগে আকাঙ্ক্ষা<br />গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়, উঠে বসে থাকি<br />অতিথি পাখির ডানায় ভর করে স্বপ্ন আসে<br />আমার সকল সাধ পরাজিত হয়ে উড়ে যায় রাতের আঁধারে<br />কেবলই ভাবি, তুমি ছিলে আমারই<br />পরিপূর্ণভাবে তোমাকে পেয়েছিলাম রাতের অন্ধকারে<br />অথচ তুমি এখন! না থাক, আর ভাবতে পারি না।<br />আমার শরীরে নেমে আসে নামহীন যন্ত্রণা<br />কান্নার প্রয়োজন নেই, তবুও মাঝেমাঝে কেঁদে উঠি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/cholo-haria-jai/চলো হারিয়ে যায়2020-08-21T14:29:23-04:002023-06-24T20:40:48-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>চলো হারিয়ে যাই লোকালয় থেকে দুরে<br />হয়তো কোন এক নদীর ধারে<br />অথবা যেখানে পাহাড় আছে ঘিরে<br />উদাসী হাওয়ায় উড়ে যাওয়া মেঘ থেকে<br />এক মুঠো রোদ্দুর তোমাকে দেব মেখে।<br />চিলের কান্নার স্বরে তোমার ক্লান্তি দেব মুছিয়ে<br />কোমরে আড়ম্বরহীন শাড়ীর আঁচল পেঁচিয়ে<br />এক টুকরো বাঁকা পথের সীমানায় চুল খুলে<br />প্রজাপতি হয়ে তুমি ছুটে যাবে পথ ভূলে<br />তখন তুমি আমাকে ছায়ার মতো খুঁজে পাবে চোখে মেলে।</p>
<br /><p>চলো হারিয়ে যাই অনেক দুরের বুনো অরণ্যে<br />ভয়ে কাঁপানো এক ফালি সবুজের প্রান্তসীমা যেখানে<br />ঝোপঝাড়ের পাশ দিয়ে শান্ত নদী বয়ে গেছে সেখানে<br />হাঁসের পালকের মতো সাদা ডানায় জল ছুঁয়ে<br />আমরা সেই নদীতে ভেসে বেড়াব<br />সমস্ত বনভূমির আড়ষ্টতা<br />তোমার হাসির ফোয়ারায় আমি সরিয়ে দেব। </p>
<br /><p>চলো হারিয়ে যাই ঝিঝি পোকায় মুখরিত রাতের মিছিলে <br />যেখানে মৃদু বাতাসে জোনাকি পোকার বৈঠক দলে দলে<br />বুনো ফুলের সৌরভ ছিটানো জঙ্গলে চলো হেঁটে বেড়াই<br />চল নির্জনে রাত ডাকা পাখির ডাক শুনে আমরা চমকায়<br />জোছনা নেভানো গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে<br />চল ভালোবাসার বীজ বুনি লোকালয় ছাড়িয়ে।<br />কেরোসিনের কুপি জ্বালিয়ে চল বনে বনে হেঁটে বেড়ায়<br />ব্যম্ততা নিয়ে বিরাহীন ছুটে চলা, চল আমরা দু পায়ে মাড়ায়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ami-cheyechi-anorokom-ek-zibon/আমি চেয়েছি অন্যরকম এক জীবন2020-08-20T10:09:54-04:002023-06-24T20:40:40-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমি চাইনি টাকাশালে বসে একাকী জীবন<br />বেশ কয়েকটা বডি গার্ড আমাকে ঘিরে রোবট মানুষ<br />আমি চেয়েছি রোদের দুপরে হঠাৎ আসা বৃষ্টিতে ভিজতে।</p>
<br /><p>আমি চাইনি ঝলসানো চিকেন আনতে ব্যস্ত বেয়ারা<br />আমি চেয়েছি কুলিমজুর, ভ্যানওয়ালা, রিকশাওয়ালা<br />নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে ফুটপাতে বসে<br />সস্তার গরম খিচুড়ি খেতে।</p>
<br /><p>আমি চাইনি কুসুমের মতো নরম আলোয়<br />রাতের নিদ্রা সাজাতে রূপসীদের কপট প্রচেষ্টা<br />আমি চেয়েছি অমাবস্যা রাতের অন্ধকার<br />মাঝে মধ্যে জোনাকি পোকার মৃদু আলো<br />আর কিছু না।</p>
<br /><p>আমি চাইনি বিয়ারের বোতলের ছিপি খুলে<br />শরাবের গ্লাস হাতে নর্তকীর কোমরের ভাঁজে<br />মনি মাণিক্য আবিষ্কারে নেশায় আছড়ে পড়তে<br />আমি চেয়েছিলাম তোমার হাত ধরে<br />গোলাপ বাগানের খোঁজে হারিয়ে যেতে।<br /> <br />আমি চাইনি সম্পদ যশ খ্যাতির ব্যুহচক্র রচনা করতে<br />চেয়েছিলাম অবসর,আগামীকাল খাওয়ার নিশ্চয়তা<br />সকালে সোনালী সূর্য জানালায় উঁকি দেওয়া<br />চেয়েছিলাম শ্রাবণের ঘনঘোর বর্ষা দেখার দিন<br />আমি চেয়েছিলাম অন্য রকম জীবনের স্বাদ<br />অন্যরকম!<br />অথচ সময় দুরন্ত দস্যুর মতো সব কেড়ে নিয়ে<br />আমাকে উপহার দিয়ে গেল অন্য রকম এক জীবন<br />অন্যরকম এই জীবনে যার কিছুই আমি চাইনি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amar-mather-modhe-ek-jhak-poka/আমার মাথার মধ্যে এক ঝাঁক পোকা2020-08-16T14:28:58-04:002023-06-27T17:09:26-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>মনের মধ্য সর্বদা একটা ঝড় বয়ে চলে<br />সেই পাহাড়টা ডিঙাতে হবে<br />আমি অন্ধকারে থাকি একা;তার অস্তিত্ব নড়ে ওঠে<br />কে যেন আমাকে ঠেলে নিয়ে যায় সেইখানে<br />যেখানে খাড়া অমসৃণ পথ ঠাণ্ডা হাওয়ার ধার<br />প্রত্যাশার তন্ত্রীগুলো<br />একটা দমকা বাতাসে কেপে ওঠে<br />প্রশ্ন জাগে ঐখানে পৌঁছব কি কখনো,কোনদিন?</p>
<br /><p>অন্ধকারে আলোর বিস্ফোরণ ঘটে স্তব্ধতার প্রতিধ্বনি হয়<br />‘একটা মানুষ-যুদ্ধ করে মানুষের মুক্তির চেষ্টায়’<br />শূন্যতায় নীরবতায় অন্ধকারে সে একা কাঁদে<br />প্রার্থনার চাকা ঘোরে ভোর হবার অনেক আগে।<br />প্রশ্ন জাগে তার সঙ্গী হতে পারব কি কখনো, কোনদিন?</p>
<br /><p>এক ঝাঁক পোকা মাথার মধ্যে কামড়াতে থাকে<br />আমি তাদের পারি না এড়াতে<br />জীবনের নশ্বর শরীর ছুঁয়ে এক বন্য আদিমতা আসে<br />আমাকে ঐ পাহাড়টা ডিঙাতে হবে<br />সাপের ফণাকে তোয়াক্কা না করে<br />উত্তাল খাড়া গিরিখাতকে পরোয়া না করে<br />আকাঙ্ক্ষার অগ্নিকে বুকে ধরে<br />পাথরে পিচ্ছিল পথ মাড়িয়ে আমাকে ঐখানে পৌঁছাতেই হবে।<br />আমার মাথার মধ্যে এক-ঝাঁক পোকা<br />তারা আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে চলে<br />আমি তাদের এড়াতে পারি না!<br />কিছুতেই এড়াতে পারি না।<br />আমার মাথার মধ্যে এক-ঝাঁক পোকা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/fele-asa-jiboner/ফেলে আসা জীবনের2020-08-14T18:04:31-04:002023-06-24T20:40:51-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>পুরানো দিনের অপূর্ণতা মনে করে<br />কেন কষ্ট পাও প্রিয়া তার তরে?<br />স্মৃতির আঁচল ভরে<br />কত না আদর সোহাগ করে<br />ব্যর্থ আঁখি জল তুমি নিয়ে আসো।<br />তার চেয়ে বরং জীবনকে ভালোবাসো!</p>
<br /><p>হাতের কাছে তোমার রূপের শরাব<br />রক্ত রাঙা ঠোঁট তুমি নিয়ে নীরব <br />আশার মোহিনী মায়া কেবল আমাকে ডাকে<br />তোমার হাত যেন আমার হাতে থাকে<br />এ পৃথিবীতে মাত্র ক’টা দিন থাকতে এসে<br />কষ্টের আলপনা এঁকে এঁকে বেলা যায় শেষে<br />ফেলে আসা দিন জীবনে বাধা<br />তৈরি করে কেবল অসংখ্য ধাঁধাঁ<br />কালকে কি হবে ভেবে মরি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/jevabe-beche-achi/যেভাবে বেঁচে আছি2020-08-12T10:36:07-04:002023-06-26T20:24:22-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>যেভাবে বেঁচে আছি একে কি বেঁচে থাকা বলে!<br />এ জীবন কুকুর বিড়ালের নাকি মানুষের?<br />একটা কাজের জন্য<br />বাবুদের পায়ের কাছে হাত জোড় করি বসে থাকি!<br />ভেতরে ভেতরে কান্না বুক ঠেলে ওঠে<br />আমি সব কষ্ট লুকিয়ে একটা স্বপ্নকে আলগে ধরি<br />ছোট হতে হতে<br />আরও ছোট হয়ে অপমানে মাথা নিচু করি বসে থাকি।</p>
<br /><p>পকেট খালি, মাথাতেও নেতার হাত নেই<br />কে আমাকে টাকা ধার দেবে!<br />ব্যাংকের লোন ডিভিশনের কেউ কথাই বলে না<br />যারা প্রজেক্ট নিয়ে বসে আছে<br />তারা ক্ষুধার্ত বাঘের মতো আমার দিকে তাকায়।<br />মাঝে মধ্যে মনে হয়<br />একটা দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বেলে সব জ্বালিয়ে দিই।<br />রাতের অন্ধকারে ভয়ংকর ভাবে আলো চোখে এসে পড়ে<br />ঘুমাতে পারি না! খালি পকেট নাকি শিল্পের জন্ম দেয়!!<br />রাত জেগে জেগে কবিতা লেখি- ‘ব্যর্থ জীবনের ওপারে ক্ষীণ আলো’<br />ঘুমহীন চোখে অদ্ভুত আঁধারে খুঁজতে থাকি বেঁচে থাকার রোমাঞ্চ।</p>
<br /><p>হঠাৎ হঠাৎ স্বপ্ন দেখে চমকে উঠি<br />দেখি ঈশ্বরের পাশে তোমাদের স্থান<br />আর আমি থালা নিয়ে<br />ভিখারির কাছে হাত পেতে দাঁড়িয়ে বলছি<br />‘কয়দিন হাতে কাজ নেই, দু’একটা টাকা দাও।<br />এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়’!!</p>
<br /><p>মাছের বাজারে, মাংসের বাজারে যাওয়া ভুলে গেছি<br />প্রথম শীতের প্রতিটি সন্ধ্যাবেলা<br />চাইনিজ রেস্টুরেন্টেগুলোয় নিয়ন আলোয় ভরে ওঠে<br />সুন্দর মুখগুলোয় পরিতৃপ্ত হাসি ঝলকে ওঠে<br />এসবের ভিড়ে জীবন থেকে প্রস্থানের পথ খুঁজতে থাকি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tumi-amar-ghore-aso/তুমি আমার ঘরে এসো2020-08-09T12:08:13-04:002023-06-27T08:05:22-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>প্রিয়া তুমি আমার ঘরে এসো<br />তোমার কোলের মধ্যে বিড়ালের মতো মুখ গুঁজে লুকিয়ে রব।<br />তখন তোমার সব কষ্ট <br />আমার বুকের উষ্ণতায় হারিয়ে যাবে।</p>
<br /><p>ভোরের আলোয় দোয়েলের গানের সুরে<br />আমি তোমার শিয়রে নীরব হয়ে বসে<br />মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম ভাঙ্গাবো।<br />তুমি ঘুম ঘুম চোখে ফ্রেশ রুম থেকে ভেজা মুখে এলে<br />রঙিন রুমালে এক নিবিড় ভালোবাসায়<br />ঐ মুখ আমি মুছিয়ে দেব;<br />তারপর,আমার হাতের কফি তোমাকে প্রশান্তি এনে দেবে।</p>
<br /><p>বিকেলের নরম রোদে মেঠো পথ দিয়ে<br />হাতে হাত ধরে চলে যাব মাথাভাঙা নদীর তীরে<br />কোমল ঘাসের উপর রুমাল বিছিয়ে বসে<br />আমরা দেখব<br />নীল আকাশের নীচে শান্ত নদীর জলে মাছেরা সাঁতার কাটে<br />এক নিবিড় নিশানায় মাছরাঙা স্থির হয়ে বাতাসে ভেসে থাকে।</p>
<br /><p>পথের ধারের বনফুল কুড়িয়ে<br />তোমার মাথায় পরাবো ফুলের মুকুট।<br />শিউলি ফুলের মালা চুরির মত জড়াবো তোমার হাতে<br />খোপায় জড়িয়ে দেব গাঁজরা ফুলের মালা<br />কোমরে দেব কলমি লতার বন্ধনী<br />আলতা দিয়ে পা রাঙিয়ে ঘাস ফুলের নূপুর পরিয়ে দেব<br />তোমার পায়।</p>
<br /><p>যত আভরণ আছে সব দিয়ে তোমাকে সাজাবো;<br />আর তোমাকে দেখে দেখে আমার এ চোখের তৃষ্ণা মেটাবো।<br />এত আনন্দ পেতে চাইলে এসো আমার কাছে প্রিয়া----<br />পৃথিবীর যত আনন্দ আছে আমি সব দেব তোমাকে!<br />তবুও আমার এ ঘরে তুমি কি আসবে না, প্রিয়তমা?</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tomadesr-kotha-bolechilam/তোমাদের কথা বলেছিলাম2020-07-29T01:40:37-04:002023-06-27T14:22:57-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অন্ধকার ঘরে আমি একা; বন্দী আমি।<br />আমার অপরাধ- আমি তোমাদের অধিকারের কথা বলেছিলাম<br />বুটের উদ্ধত গর্ব পিষে ফেলতে চেয়েছে <br />তোমাদের প্রতি আমার ভালোবাসা।<br />প্রতিবার আমি প্রতিজ্ঞা নিয়েছি প্রতিফলিত রংধনুর রঙের মত<br />আমি চাইনি তোমাদের জন্য করুণা, চেয়েছি মর্যাদা।</p>
<br /><p>পায়ে ছিল ভারী শিকলের ঝঞ্ঝা, রক্তমাখা বেয়নেট উদ্যত<br />শয়তানের হাসিতে কেঁপে উঠত বন্দীশালা <br />ওদের নিষ্ঠুরতায় আমার আর্তনাদ<br />ওদের কানে নগ্ন সঙ্গীতের সুর হয়ে বাজত<br />দিনের পর দিন ওরা আমাকে ঘুমাতে দেয়নি<br />চোখের পর হাই ভোল্টের লাইট জ্বালিয়েছে<br />হ্যাংগারের মতো ছাদের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে<br />আমার শরীরটাকে ওরা পেটাতে পেটাতে যখন হাঁপিয়ে উঠত<br />নাকমুখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ত<br />তখন ওয়াশ করতে চৌবাচ্চার মধ্যে চেপে ধরত<br />মনে হতো যেন বুকের ছাতি বোমার মতো ফেটে পড়বে<br />পৃথিবীর সমস্ত বাতাস শুষে নিতে চেষ্টা করতাম<br />চোখে দেখতাম বর্ণালী আলোর ছটা।<br />মৃত্যুর প্রার্থনা করতে করতে জ্ঞান হারাতাম<br />বৈদ্যুতিক শকে লাফিয়ে উঠে জানান দিতাম বেঁচে আছি<br />তখন আমি কান পেতে শুনতে পেতাম<br />ঐ পাপের রাজত্বের মরণের ঘণ্টা ধ্বনি!!<br />গুমোট বাতাস এসে কানে কানে বলে যেত<br />‘ অপেক্ষা কর, একদিন তোমার সময় আসবে’<br />তখন রক্তাক্ত ঠোঁটে কান্নাকে বেঁধে রেখে মুক্তির চারা বুনেছি<br />সময়ের স্রোত তাদের টেনে নিয়ে গেছে ভাগাড়ে<br />আর আমি, স্বপ্নের মশাল ধরিয়ে বিজয়ের সুসংবাদ এনেছি তোমাদের জন্য।<br />এখনো যেন রক্তাক্ত যন্ত্রণার স্মৃতিগুলি প্রখর উজ্জ্বলতায় ভরা<br />রক্তিম ক্ষতচিহ্ণে আঘাতে নোয়ানো পিঠে চাবুকের আলপনা<br />কেননা আমি শুধু তোমাদের অধিকারের কথা বলেছিলাম<br />করুণা নয়, তোমাদের মর্যাদার জন্য লড়েছিলাম।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/edier-khushi/ঈদের খুশি2020-07-28T00:04:44-04:002023-06-24T20:40:49-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আসছে ঈদ,খুশির জোয়ারে ভাসছে মানুষ<br />শপিং মলে ঝরছে নিয়ন আলোর ঝুপ ঝুপ বৃষ্টি<br />চোখ ঝলসানো আলোর ফোয়ারার নিচে<br />সরবে চলছে দামি গাড়ির আসা যাওয়া<br />দোকান সেজেছে নববধূর সাজে<br />ব্রাইডাল রুমের মতো উপচে পড়া ভিড় সবখানে।</p>
<br /><p>সুন্দর পোশাকে মানুষের বাড়ায় মর্যাদা।<br />মার্কেটে এসে সবার মনে লেগেছে বসন্তের হাওয়া<br />হৃদয় সেজেছে কৃষ্ণচূড়ার রঙে।<br />সমস্ত শক্তি দিয়ে ভিড় ঠেলে ঠেলে<br />মনের মাধুরী মিশিয়ে কেনা হলো অনেক কিছু<br />মনের ছেঁড়া পালে হাওয়া লেগে যেন ভেসে চলছে<br />উচ্ছলতার শান্ত নীল জলে।</p>
<br /><p>বাড়ি ফিরতেই নজর পড়ল পিচ্চিটা ছেঁড়া জামায়<br />গেট খুলে দাঁড়িয়ে আছে।<br />‘জামা নেই তোর’? গৃহকর্তার অবাক কণ্ঠে প্রশ্ন<br />সজল চোখে সে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল<br />বলল না কিছুই;<br />যেন বেদনার পাহাড় মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে<br />হালকা হবার প্রতীক্ষায়।<br />কি মনে করে গৃহকর্তা বলল,<br />এবার ঈদে একটা নতুন জামা কিনে দেব তোকে<br />তার কাছে মনে হলো<br />সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে মানুষ রূপি ফেরেশতা<br />সেই খুশিতে<br />মন ছুটে বেড়াল বর্ণিল নরম মেঘের ভাঁজে ভাঁজে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ratrir-chokhe-prodip-shikha/রাত্রির চোখে প্রদীপ শিখা2020-07-22T02:43:45-04:002023-06-27T08:30:10-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তুমি ভাব অফিসের কাজের চাপে তোমাকে ভুলে থাকি প্রিয়া?<br />সত্য নয়! ভুলি কি করে?<br />তুমি যে আমার জীবনের সাথে বাঁধা!<br />যেদিন তুমি আমাকে টেনেছো ঐ বুকে<br />সেদিন থেকে গোলাপের গন্ধ ভুলে তোমার বুকের ঘ্রাণ খুঁজি।</p>
<br /><p>তোমার কপালে ছোট্ট একটা টিপ<br />আমার কাজের টেবিলে বসে বসে দেখি দেয়ালের পেইন্টিংয়ে<br />ঘরে থাক তবু এতো প্রবলভাবে ডাক!<br />তোমার দুই চোখে বাঁধ-উপচে পড়া ভালোবাসার জোয়ার আমাকে টানে<br />তখন হৃদয়ে আমার হতাশার সিঁড়ি ভেঙে পূর্ণিমা উঠে আসে<br />তুমি নিয়ে আসো ফাল্গুনের রঙ, ঝরে পড়ে চৈত্রের খরতাপ<br />আমার দগ্ধ আকাশে ভাসে বৈশাখী মেঘ<br />তোমার ভালোবাসার তোড়ে <br />ভেসে যায় আমার ফ্যাকাসে দিনগুলি বাতিল কাগজের মতো।।<br />যেন তুমি আঁধারের ঘোমটা খুলে<br />রাত্রির চোখে জ্বালো<br />তোমার আমার প্রেমের প্রদীপ শিখা!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ami-hariey-feli-poth/আমি হারিয়ে ফেলি পথ2020-07-21T01:24:23-04:002023-06-25T16:59:04-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বিস্মৃত অতীত বইয়ের পাতায়<br />কোন কেন সময় তোমাকে পড়ে ফেলি<br />তোমার হাতে হাত রাখতে গিয়ে <br />আমি শুধু পেয়েছিলাম অশ্রুজল<br />বুকে জেগে আছে বোবা কষ্ট<br />আমার সত্তার গভীরে এখনও তোমাকে বয়ে নিয়ে চলছি।<br />তোমার যাবার পশ্চাতে <br />কেবল শুনতে পাই আমার অশ্রুপতনের ধ্বনি<br />আমার ঘুমন্ত সত্তায় ঠায় পায় তোমাকে অনুভবের তিক্ততা<br />এই বিশ্বের গালিচায় যখন তোমাকে প্রথম দেখি<br />যেন মনে হয়েছিল তুমি তন্দ্রাচ্ছন্ন রাজকুমারী<br />তোমার চোখ পদ্ম ফুলের মতো ফুটে ছিল<br />তোমার শরীর থেকে নি:সৃত<br />বন্য ফুলের গন্ধে আমি ছিলাম সম্মোহিত।<br />তোমার চোখের গভীরে ছিল বিদ্যুতের চমক<br />আমার চোখের পাতায় ভর করে স্বপ্ন নেমে এসেছিল সেদিন<br />আমার জীবনের সম্মুখে<br />টাঙ্গিয়ে রেখেছিলে তোমার মুখের সুন্দর হাসি<br />এতসব আয়োজনে দেখে আমি ছিলাম সদা সতর্ক<br />আমার হাতে তখনও ছিল প্রজ্বলিত প্রদীপ <br />তা সত্ত্বেও তোমার মাঝে আমি হারিয়ে ফেলি পথ ।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/banglar-boke-ek-nodi/বাংলার বুকে এক নদী2020-07-19T06:52:50-04:002023-06-27T15:05:45-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বাংলার বুক চিরে প্রবাহিত নদী অশান্ত<br />রক্তের স্রোতে প্লাবন আসে।<br />ধনতন্ত্র ছুঁড়ে ফেলছে আদর্শ-নীতি মানবতা<br />পরস্পরকে ক্ষতবিক্ষত করে, ঠকিয়ে আমরা বেঁচে থাকব<br />এই আমাদের আদর্শ। এটাই আমাদের নীতি।</p>
<br /><p>আমাদের রক্তের শিরায় শিরায় এখন লোভ, হীনতা <br />বিশ্বাসঘাতকতার আগ্নেয় লাভা ভেসে চলে আমাদের মনের গহীনে <br />আমরা চিনি পরস্পরের মুখ ও মুখোশ, তবুও আমরা নিশ্চুপ।</p>
<br /><p>যারা আজো আদর্শকে ভালোবাসে<br />ভালোবাসে নিপীড়িত মানুষকে <br />তাদের জন্য যারা বুক পেতে রাখে<br />আমরা তাদেরকেই ঘৃণা করি।<br />এসব করে <br />আমরা যারা ক্ষমতার মসনদে বসে পা দোলাচ্ছি<br />সেই আমাদের জন্য গোলাপের স্তবকে পথ সাজিয়েছে জনতা।<br />সেই পথ ছেড়ে কেন যাব আমরা কাঁটা ছড়ানো পথে?</p>
<br /><p>লোকে বলে ভগ্ন-সিংহাসন আমাদের!<br />শুনে হাসি পায় <br />আমি দেখি স্থির-অক্ষয় তার প্রতিবিম্ব।<br />আমাদের জৌলুসের পেয়ালায় সোনালী মদ<br />যারা অস্ত্র হাতে আমাদের রক্ষায় অতন্দ্র পাহারায়<br />তারা এবার একটু বিরতি দাও।<br />লিখে ফেল আমাদের ইতিহাস<br />দেশের বিরাট বোঝা কাঁধে নিয়ে সার্থক হয়েছি<br />কত চক্রান্তের বেড়াজাল ঘিরে ফেলেছে<br />হঠাৎ ওঠা ঘূর্ণিঝড় উড়িয়ে নিতে এসেছে<br />তবুও সফল হয়েছি। লিখে ফেল এইসব! <br />ইতিহাস বইয়ে তোমরা লেখে ফেল আমাদেরই জয়গান।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amased-vobissot-prokonmo-shomo/আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা শোন2020-07-14T00:44:25-04:002023-06-27T12:31:55-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>হে অনাগতরা, আমরা তোমাদের জন্য রেখে যাচ্ছি<br />বসবাসের অযোগ্য নগরী,নষ্ট সমাজ, বিপন্ন মানবতা<br />রেখে যাচ্ছি বাংলা, ইংলিশ মিশ্রিত এক খিচুড়ি ভাষা<br />আমরা বাংলা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে <br />তোমাদের জন্য এসব নিয়ে এসেছি।<br />রেখে যাচ্ছি নোংরা পরিবেশ, গলাবাজির জয়গান<br />এ দেশকে চামচাদের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে চলে যাচ্ছি।</p>
<br /><p>একটা চাকরীর জন্য, একটা কাজের জন্য<br />নীতি আদর্শকে শিকেয় তুলে পার্টির নোংরা ছেলেটার পায়ে<br />তৈল মালিশ করতে করতে বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছি<br />ধনুকের মতো বাঁকা মেরুদণ্ডটা মট করে ভেঙে যাওয়ার ভয়ে<br />সোজা হয়ে উঁচু গলায় দাঁড়িয়ে কখনো কথা বলিনি। <br />এভাবেই কোনমতে জীবনটা পার করে দিলাম।<br />আসল বন্ধু ছেড়ে ভার্চুয়াল বন্ধু বানিয়ে<br />জীবনটাকে কৌটার মধ্যে ঢুকিয়ে কাটানোর ফরমুলা রেখে গেলাম।</p>
<br /><p>আদর্শ বলতে কেবল যে কোন উপায়ে বিত্তশালী হওয়ার <br />দু-একটি নিদর্শন রেখে গেলাম।<br />যদি এইভাবে তোমরা তোমাদের জীবন কাটাতে পার<br />তবে তোমরা আমাদের যোগ্য উত্তরাধিকারী!<br />আমরা নির্মাণ করে চলে যাচ্ছি<br />সেইসব কল্পকথা, মনুষ্যত্ব বিবেক লুণ্ঠনের ছবি<br />আর প্রতিদিন স্বপ্নের ভেতরে খুঁজে ফিরেছি আমাদের মুক্তিদাতা। </p>
<br /><p>আমাদের স্বপ্নের মতো কেউ কি জাগে! কে জেগে থাকে!<br />যাদের জাগবার কথা তারা আঁচলে মুখ লুকায়<br />কেউ মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে জাগবার শপথ নেয়, <br />কিছুকাল পরে সেই আবার ভয়ে মটকা মেরে থাকে।<br />এসব দেখে দেখে ঘেন্না হওয়া স্বাভাবিক, অথচ কিছুই হয় না।<br />অনাগতরা শোন, তেলাপোকাও একদিন পাখির মতো উড়েছিল।<br />একবার তার উড়বার সাধ হয়েছিল। আর তো আমরা মানুষ!!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tomake-akechi-kobitai/তোমাকে এঁকেছি কবিতায়2020-07-10T23:47:19-04:002023-06-27T18:59:12-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমার প্রতিটি অনুভূতি গলিয়ে গলিয়ে<br />তোমার জন্য নির্মাণ করেছি এক-একটি কবিতা<br />শুধু তোমাকে শোনানোর জন্যই আমি লিখে চলি কবিতা<br />তোমাকে একটা বর্ণাঢ্য সময় উপহার দিতে<br />আমি তোমাকে এঁকেছি কবিতায়।<br />তোমার শান্ত মনটাতে খুশির রঙ মেখে দিতে<br />আমি তোমাকে এঁকেছি কবিতায়।<br />তোমার চারিপাশে হাসি-আনন্দের ব্যূহ রচনা করতে<br />আমি তোমাকে এঁকেছি কবিতায়।</p>
<br /><p>কোন মতে খেয়ে না খেয়ে মাত্র কয়টা টাকা জমিয়ে<br />বন্ধুদের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে<br />বাড়ি ভাড়ার টাকা বাকি রেখে ছাপিয়েছিলাম একটি কাব্যগ্রন্থ<br />প্রথম কবিতার বই হাতে পেয়ে<br />ছুটতে ছুটতে আমি তোমার কাছে এসেছিলাম!<br />বই পেয়ে তোমার চোখে ঝলসে উঠেছিল খুশির চমক<br />তোমার উচ্ছ্বাস দেখে আমি আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম।</p>
<br /><p>রাত গভীর হয় খালি পকেটে স্বপ্নের ঝড় ওঠে<br />তোমার জন্য আমার বুকে থাকে কেবলই হাহাকার<br />আমি কোন চিত্রশিল্পী নই<br />তবুও রাত জেগে জেগে তোমাকে আঁকি কবিতায় কবিতায়<br />কবিতা লিখে পুরস্কারে বদলে জুটেছে তিরস্কার<br />বিকৃত আবৃত্তি করে কেউ কেউ লোক হাসিয়ে বাহবা নিয়েছে<br />দুঃখের ঢেউ ঝনঝন করে বেজে উঠেছে আমার বুকে মধ্যে<br />তবুও সবাইকে লুকিয়ে লুকিয়ে আমি কবিতা লিখেছি<br />কল্পনায় পেয়েছিল আমার আত্মা তোমার ভালোবাসার স্বাদ<br />তাই লিখে যাই কবিতা! শুধু তোমার জন্য।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/chorea-pore-agun/কাহিনীকাব্য:মুহাম্মদ (স:) ::৮. ছড়িয়ে পড়ে আগুন2020-07-08T13:21:37-04:002023-06-25T13:08:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>কোরাইশরা কিছু করতে না পেরে মাথায় ভেঙ্গে পড়ে আকাশ<br />লক্ষ্য তাদের তখন মুহাম্মদ<br />রাগে ক্ষোভে সাফা পাহাড়ে ধ্যানমগ্ন মুহাম্মদের কাছে আবুযহল উপস্থিত<br />মুখ থেকে নির্গত হয় কথার বিষ, মুহাম্মদ থাকে নির্বিকার<br />ধৈর্য হারা হয়ে আবুযহল পাথর তুলে মস্তকে মারে ঢিল<br />রক্তে ভেজা শরীর নিয়ে চুপে চুপে ঘরে ফিরে যায় মুহাম্মদ<br />দুর থেকে দেখে এক ক্রীতদাসী, দুঃখে বুক ফেটে যায় তার<br />হামজা তখন শিকার থেকে ফিরছিল<br />ক্রীতদাসীর মুখে ঘটনা শুনে বীর-কেশরী হামজা গর্জে উঠল<br />‘কার এত স্পর্ধা! আমার ভ্রাতুষ্পুত্রের গায়ে দেয় হাত!!’<br />রাগে উন্মাদ হামজা খুঁজে পেয়ে গেল আবুযহলকে<br />ত্রুদ্ধ কণ্ঠে বলে, ‘তুই কেন হাত দিয়েছিস মুহাম্মদের গায়ে?<br />জানিস না, সে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! ধর্মের জন্য!<br />তবে আমিও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম। আয় আমার কাছে!’<br />স্তম্ভিত আবুযহল! স্তম্ভিত কোরাইশ-গন!! কি হয়ে গেল।</p>
<br /><p>একদিন কোরাইশরা ওতবাকে পাঠায় দূত হিসাবে<br />এসে সে প্রশ্ন রাখে, ‘কি চাও মুহাম্মদ? নেতৃত্ব, সুন্দরী নারী?’<br />মুহাম্মদ বলে, ‘তোমরা আমার একহাতে সূর্য অন্য হাতে চাঁদ এনে দিলেও<br />আমি সত্য-ধর্মের কথাই বলব তোমাদের’।<br />মুহাম্মদের কণ্ঠে সুরা হা-মীম শুনে চিন্তিত হয়ে পড়ে সে! <br />তবে কি তারা ভুল পথে আছে? ভাবে ওতবা।<br />ওদিকে অতি উৎসাহে কোরাইশরা ওতবার পথ চেয়ে আছে<br />ওতবা এসে বলে,‘মুহাম্মদ ফিরিয়ে দিয়েছে!’ <br />আর আমার কথা শোন, মুহাম্মদকে যা খুশি করতে দাও<br />কি লাভ অনর্থক গণ্ডগোলে?’<br />ওতবা, তোমার কি হয়েছে? তুমিও পাল্টে গেলে; বলে, কোরাইশগন।</p>
<br /><p>আবার, একদিন তারা সভার মাঝে ডেকে নিয়ে যায় মুহাম্মদকে<br />সকলে একসাথে বলে, ‘যদি পয়গম্বর হও চমৎকার দেখাও<br />মুহাম্মদ নির্ভয়ে বলে<br />এসব আল্লার ইচ্ছা, এসব করতে আমি আসিনি<br />আমি এসেছি সত্য-ধর্মের বানী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে।<br />ক’দিন পর গোপনে জরুরী সভা ডাকে আবুযহল<br />বলে, মুহাম্মদের জন্য আমাদের সম্মান,ধর্ম আজ ভূলুণ্ঠিত! <br />কে আছ কোরাইশদের বীর! তার মাথা কেটে আনার জন্য প্রস্তুত!!<br />বিনিময়ে পাবে পুরষ্কার; একসহস্র স্বর্ণমুদ্রা,একশত উট।<br />খোলা তরবারি হাতে ওমর উঠে দাঁড়ায়; এ আর এমন কি!<br />উমর চলছে মুহাম্মদের মৃত্যু দূত হয়ে, হাতে খোলা তলোয়ার<br />সভাসদদের উল্লাসিত মুখরিত স্লোগান তার কানে সুধা ঢালছে।</p>
<br /><p>পথিমধ্যে বন্ধু নঈম তাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘এই বীর বেসে কোথায় চলছ হে!’<br />উমর বলে,‘মুহাম্মদের মাথা কেটে আজ আনবই আনব!’ <br />নঈম বলে, আগে নিজের ঘর সামলাও পরে মুহাম্মদ।<br />ক্ষোভে সে ফিরে যায় বাড়ি, কিসের যেন মৃদু গুঞ্জন শোনা যায়<br />ফাতেমা, সাঈদকে ক্রুদ্ধ হয়ে ডাকে! কি পড়ছিস তোরা’?<br />‘কিছু না’ উত্তর দেয় ফাতিমা<br />ওমরের মাথায় যেন আগুন জ্বলে, সাঈদকে শুরু করে প্রহার<br />এগিয়ে আসে ফাতিমা; আঘাতে আঘাতে সেও জর্জরিত<br />বোনের তাজা রক্ত দেখে ওমরের ফেরে হুস, সে কি অমানুষ?<br />হতচকিত হয়ে কণ্ঠে বিনয় ঝরে পড়ে, তোমরা কি পড়ছিলে দেখাও আমাকে<br />‘পবিত্র হয়ে এসো’, বলে ফাতিমা।<br />ওমরের বাড়ে কৌতূহল কি সেই জিনিস! <br />গোসল করে ওমর পড়তে শুরু করে<br />তার আত্মা কেঁপে কেঁপে ওঠে, ধরে আসে গলা!<br />ভাবে, এটা নিশ্চয় আল্লাহর বানী।</p>
<br /><p>খোলা তরাবরি নিয়ে ছুটে যায় মুহাম্মদের কাছে<br />ওমরকে দেখে ভীত সাহাবীরা মুহাম্মদকে ঘিরে ধরে<br />তার হাতের তরবারী আর মুহাম্মদের ঐ মাথার দিকে ওঠে না<br />পায়ের তলে ফেলে হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে থাকে সে<br />ওমরের ইসলাম গ্রহণে দুরের পাহাড়ে প্রতিধ্বনি ওঠে ‘আল্লাহু আকবর’।<br />একদিন ওমর প্রস্তাব রাখে,‘মরি বাঁচি একবার কাবা ঘরে নামাজ পড়তে হবে!’<br />সকলের মনে লাগে দোলা<br />দুই কাতারে বিভক্ত শোভা যাত্রা! সাফা পর্বত থেকে শুরু।<br />একটাতে সমানে ওমর,অন্যটিতে হামযা, মাঝখানে মুহাম্মদ<br />আল্লাহু আকবর ধ্বনি মুখরিত গিরি-প্রান্তর! অবাক চোখে দেখে জনতা <br />একি দু:সাহস দেবদেবীর সামনে নামায!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/alo-hoey-jolbe-annontokal/আলো হয়ে জ্বলবে অনন্তকাল 2020-07-05T23:54:49-04:002023-06-24T20:40:35-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ইসলামের পতাকা তুলে ধরা হাতে হ্যান্ডকাপ পরানো<br />আল্লাহর বানী উচ্চারিত মুখে কস্টটেপ আঁটা<br />পিছমোড়া করে বাঁধা<br />থেঁতলানো আঙ্গুল, বৃদ্ধাঙ্গুলিতে জমাট বাধা রক্ত।<br />চোখ কালো কাপড়ে শক্ত করে বাঁধা, দৃষ্টি আঁধারে ঢাকা। <br />উর্দি পরা একটা লোক তার হৃদয়ের আলো নিভিয়ে ফেলতে<br />দগ্ধ সিগারেটের টুকরো নেভানোর মতো করে<br />বুকের উপর দাঁড়িয়ে বুট দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছে!<br />বুকে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাকায় <br />আঙুর ফলের মতো টসটসে ফোসকা উঠেছিল সেখানে।<br />মানুষটি অবাক হয়ে উর্দি পরা লোকগুলোর দিকে চেয়ে আছে<br />হাসি হাসি মুখ তার; তীব্র ব্যথার কোন চিহ্ন দেখা যায় না। </p>
<br /><p>সে মনে মনে উর্দি পরা লোকগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলল<br />‘তোমরা অন্ধকারের মানুষ<br />সবার চোখে অদৃশ্য কালো পর্দা টেনে দিয়েছ<br />তাই তোমাদের কুকীর্তি কেউ দেখতে পায় না।<br />কালো টাকায় মোড়ানো সামিয়ানার নীচে<br />শয়তানের জলসা শুনে শুনে তোমাদের জীবিকা চলে<br />অন্যায় অবিচারের দুর্দান্ত দাপটে আদিম সভ্যতা ফিরে এসেছে<br />তোমাদের দিন একদিন শেষ হবে আসবে নতুন ভোর’।</p>
<br /><p>সত্য ও ন্যায়ের জন্য গনগনে আগুনের উপর দিয়ে হাঁটে যেতে হয়<br />ইসলামের পতাকা হাতে চলতে গেলে ফাঁসির মঞ্চ স্বাগত জানায়<br />রক্ত ঝরা পথে আসে ইসলামের মুক্তি<br />হাজারো আত্মত্যাগে লেখা হয় বিজয় গাঁথা<br />যারা স্বপ্ন দেখতে জানে....!<br />তাদের জন্য অপেক্ষা করছে সেই বিজয়ের মহাকাব্য।</p>
<br /><p>গভীর রাতে তাকে অজানায় নিয়ে চলছে উর্দি পরা লোকগুলো<br />ভারী জীপ গাড়ি চলার স্পষ্ট আওয়াজ হঠাৎ থেমে যায়<br />জীপ থেকে তাকে টানতে টানতে নামানো হলো জন্তু জানোয়ারের মতো<br />রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত ক্ষেতের কাছে সে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল<br />একজন চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলল<br />আরেকজন এসে মুখের কস্টটেপ খুলে দিল<br />চোখের বাঁধন খুলে দিল।</p>
<br /><p>আরও একজন বলে উঠলো, এবার তোকে মুক্তি দেব<br />সাথে সাথে টর্চের আলো পড়ে চোখ ধাঁদিয়ে গেল তার<br />তাক করা রাইফেল চকচক করে উঠলো<br />সে সব বুঝে নিলো নিমিষে।<br />মানুষটি চিৎকার করে বলে উঠলো<br />‘আমি ফাঁসির মঞ্চে যেতে ভয় পায় না। তোমরা এখানে এনেছ কেন?<br />আমাকে ফাঁসিতে ঝোলাতে তোমাদের এত ভয়!!<br />একজন নিরস্ত্র মানুষকে মারতে এতগুলো লোক অস্ত্র হাতে!<br />তোমাদের দেখলে আমার লজ্জা হয়!<br />জেলখানার বন্ধ প্রকোষ্ঠে অনায়াসে মারতে পারতে!! <br />এত পরিশ্রমের কি দরকার ছিল?</p>
<br /><p>একজন উর্দি পরা লোক হা হা শব্দে অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ল<br />আমরা একটু হাতের নিশানা প্র্যাকটিস করতে তোকে এখানে এনেছি।<br />মানুষটি দৃঢ় কণ্ঠে শান্ত স্বরে বলল, ‘আমি মরতে ভয় পায় না।<br />তোমাদেরও একদিন মরতে হবে!<br />আর কতদিন তোমরা তোমাদের আত্মা শয়তানের কাছে জিম্মি রাখবে<br />মহান আল্লাহকে ভয় কর; নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল’।<br />উর্দি পরা লোকগুলো খানিক হতচকিত হয়ে গেল<br />চোখে তখন তাদের প্রমোশন-পুরষ্কারের ঝলসানো বিজ্ঞাপন<br />নিমিষেই বন্দুক গর্জে উঠলো, পরপর কয়েকটি গুলির শব্দ।</p>
<br /><p>ভয়ার্ত পাখিগুলো শব্দ করে ডেকে উঠে থেমে গেল<br />নিস্তব্ধতা ভেঙে শব্দটা আকাশ ফাটিয়ে পৌঁছে গেল ছোট্ট জনপদে<br />ঘুম ভেঙে কয়েকটি মানুষ<br />ভয় পেয়ে কৌতূহলে সেদিকে এগিয়ে গেল<br />তখনও ভারী বুট, বাজখাঁই গলার আওয়াজ ভেসে আসছে<br />ভারী ভারী টর্চের আলো দেখে বুঝে নিলো সবাই কি ঘটে গেল।<br />সেই যুবকের মা এখনো তার জন্য কাঁদে!<br />সেই মা তার জন্য এখনো থাকে অপেক্ষায়।<br />সব আলো ছাপিয়ে তারা দেখতে পেল একটা আলোর ফোয়ারা<br />আকাশের দিকে উঠে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল ঘরে ঘরে<br />পত্রিকার পাতায় সেই সংবাদ পাওয়া গেল কি গেল না<br />কেউ খোঁজেনি। <br />অন্যায় অবিচার জুলুম নির্যাতনে যখন মানুষের দু:স্বপ্নের রাত<br />সেখানে সে স্বপ্নের ভেতরে আসে সেই আলো হয়ে<br />নতুন শিশুর চোখের তারায় তাকে দেখা যায় সে বেঁচে আছে<br />সুবর্ণ সময়ের অপেক্ষায় সে, আবার ঝলসে উঠবে<br />ইসলামের আলো জ্বালিয়ে দিয়ে সে চলে গেছে; জ্বলবে অনন্তকাল।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amra-ekdin-uthe-darabo/আমরা একদিন উঠে দাঁড়াব2020-07-04T01:28:57-04:002023-06-26T10:37:44-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমরা এখন এদেশে বেঁচে আছি গভীর হতাশা বুকে নিয়ে<br />আশার স্নায়ুতন্ত্রীগুলো বীণার তারের মতো ছিঁড়ে যায়<br />মানুষের মুখে মুখে বেদনার বেহালা বাজে<br />অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি আমাদের হৃদয়কে বিদীর্ণ করে।</p>
<br /><p>অবক্ষয়ের স্রোতে মূল্যবোধের প্রাচীর ধ্বসে পড়ে<br />জাতির বিবেক শিক্ষক পয়সার লোভে নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছে<br />ডাক্তার রোগীর পকেটের সার্জারিতে ব্যস্ত<br />আমলারা রাজনীতিবিদদের সামনে তেলের শিশি হাতে নতজানু<br />রাজনীতিবিদরা বক্তৃতার মঞ্চে দেশের উন্নয়নে মাইক ফাটায়<br />আর অন্তরালে! বিভিন্ন প্রজেক্টে নিজেদের উন্নয়নের জোয়ার আনে।</p>
<br /><p>আজ সবকিছু একাকার<br />কেউ আর তার নিজস্ব মর্যাদার জায়গায় নেই!<br />ব্যক্তিগত স্বার্থ সবার উপরে<br />দেশের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়।<br />দেশ ও জাতির উত্থানকে<br />কেউ আর নিজেদের কল্যাণ বলে ভাবে না।<br />দেশের স্বার্থকে পায়ে মাড়িয়ে অদ্ভুত আঁধারের ভেতর<br />কেবল নিজের কথাই ভাবি<br />কোথাও ন্যায়নীতি নেই, আদর্শ নেই, চক্ষুলজ্জা নেই<br />আছে কেবল ব্যক্তিগত চাওয়া<br />ব্যক্তি স্বার্থের বর্বর আগ্রাসনের নিচে জাতি আজ বিবস্ত্র।</p>
<br /><p>হঠাৎ করেই আমাদের কাছে এসেছে অবিশ্বাস্য সুযোগ <br />সুযোগের বিপুল স্রোত সভ্যতার পাহাড় থেকে নেমে আসছে।<br />আমরা ছিলাম শত শত বছরের অনাহারক্লিষ্ট বঞ্চিত জাতি<br />আমরা ভালো কিছুর স্বাদ কখনও পাইনি<br />এখন পৃথিবীর ঐশ্বর্য ভাণ্ডার হাতের নাগালের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে<br />তাহলে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকা কেন?<br />যেকোনো মূল্যেই হোক আজ সব পেতে হবে<br />পৃথিবীর সম্পদ লুণ্ঠনের আশায় আমরা সবাই উম্মাদ<br />আমরা একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়েছি পাকের মধ্যে<br />এখন সময় মূল্যবোধের নয়, এখন সময় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার<br />এখন সময় সম্পদ জড়ো করার, এখন সময় বিলাসিতার<br />এখন সময় হৃদয়কে শান্ত করার<br />সব সাধ মিটে গেলে আমরা আবার মূল্যবোধ শিখে নেব<br />অবক্ষয়ের ধ্বংস স্তূপ সরিয়ে আমরা আবার উঠে দাঁড়াব।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/jege-otheni-bangladesh/জেগে ওঠেনি বাংলাদেশ2020-07-03T01:05:47-04:002023-06-24T20:40:52-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ধর্ষিতার চিৎকারে বিবেকের কানে তালা লেগে যায়<br />টিভি সংবাদের হাহাকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে <br />সংবাদপত্রের রক্তাক্ত পাতায় নিঙড়ানো আর্তনাদ ফুটে ওঠে<br />বিচার চাইতে গিয়ে বাবা<br />লাঞ্ছনা আর অপমান নিয়ে মাথা হেঁট করে বাড়ি ফিরে এসেছে।<br />সে যন্ত্রণা বুকে আমাদের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়<br />আমরা কি এখনো মানুষ?<br />হায়েনার অট্টহাসির প্রতিধ্বনি তোমরা কি শুনতে পাও?<br />মোচড়ানো ব্যথার কাতর স্বর<br />ব্যক্ত করার দিন হয়তো তোমাদেরও একদিন আসছে!!<br />সে মানুষের কাছে ফরিয়াদ জানায়, সমাজের কাছে ফরিয়াদ জানায়<br />রাষ্ট্রের কাছে ফরিয়াদ জানায়, বিধাতার কাছে ফরিয়াদ জানায়<br />সে সবার কাছে পদাঘাত খেয়ে<br />আমাদের অভিশপ্ত নগরীতে ভাঁড় সেজে ফিরে আসে।<br />সে ছিল মানুষ; কেমন করে ভাঁড়ের জীবন বইবে সে?</p>
<br /><p>ট্রেন লাইনে মাথা দিয়ে কাঁদছে দু’জন মানুষ বাবা ও মেয়ে<br />জীবন মৃত্যুর মাঝখানে কয়েক ফোঁটা চোখের জল<br />ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন দেহ, ছিটকে যায় রক্ত<br />যেন নিদারুণ এক শিল্পকর্ম!<br />তখন আমাদের মনুষ্যত্ব লাল আভায় লজ্জাহীন সূর্যাস্ত।<br />এসেছে হাজার হাজার মানুষ, এসেছে পুলিশ ভ্যান<br />সাংবাদিক এসেছে ক্যামেরা ঝুলিয়ে শুটিং করতে<br />দুর দূরান্ত থেকে এখনো আসছে মানুষ, আসছে গাড়ি<br />তারা ওখানে কেউ কিছু দেখেছে? সত্যিই দেখেছে?<br />না, কিছুই দেখেনি!! তারা একে অপরের মুখ চেয়ে আছে!<br />যেন কিছুই দেখেনি; কিছুই ঘটেনি!!</p>
<br /><p>ওদিকে ওরা বাংলাদেশের বুকে বসে<br />মদের পেয়ালায় ফুর্তিতে রাত্রি কাটায়<br />এসব দেখেও আমরা জেগে উঠি না, ক্রোধে ফুঁসে উঠি না।<br />শুধু রক্তাক্ত বেদনার লজ্জার ইতিহাস লেখে যাই<br />সমাজ নষ্ট, নদী নষ্ট, বিচার নষ্ট; নষ্ট বাংলাদেশ।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/mone-pore-tomake/মনে পড়ে তোমাকে2020-06-26T00:37:00-04:002023-06-24T23:10:24-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>উচ্চ শিক্ষা, সোনালী স্বপ্ন আমাকে ডেকেছে একাকী<br />আমি তার টানে ছুটে এসেছি নির্মম শীতের দেশে<br />রাতে পড়ার ঘরে নিঃসঙ্গ আমি বসে বসে ভাবি<br />দারিদ্র্যের অরক্ষিত সংসারে তোমাকে ফেলে এসেছি<br />আর কত কত দিন থাকবে তুমি আমার আশায়!<br />অন্ধকারে হিম ঠাণ্ডা বাতাসের জাপটায় শুনি<br />তোমার বিয়ের সানাইয়ের সুর<br />তখন আমার বুকে ওঠে মৃত্যুর মাতম।</p>
<br /><p>এ জীবন কি কেবলই দীর্ঘশ্বাস তোমার আমার!<br />জোছনার বাঁধ ভেঙ্গে পড়া পথে আমরা কি আর হাঁটব না?<br />বই হাতে আনমনে শুধু তোমরাই প্রতীক্ষা করি<br />অন্ধকার রাতে ধীরে প্রবাহিত নদীর মতো<br />স্বপ্নের ভেতর তোমার কাছে পৌঁছে যাই<br />ছাপার কালির অক্ষরে আছড়ে পড়ে তোমার প্রণয়ের ঢেউ।<br />আমার অক্ষমতার জ্বালা কাঁটার মতো বিঁধে যায় বুকে<br />বিত্তহীনের আগুনে হৃদয় পুড়ে যায়<br />প্রেমের সোনালী শিখায় পঙ্গপালের মতো কষ্ট আসে<br />প্রাণবন্ত জীবনের শিখা জ্বালিয়ে তুমি আছো ঐ পারে<br />আর আমি এখানে ডলারের উড়াউড়ি দেখে দেখে<br />নির্মান করি তোমার আমার সোনালী স্বপ্নের সৌধ।<br />প্রেম আর স্বপ্নের গোলক ধাঁধায় আমার সরল জীবনে<br />আগ্নেয়গিরির আগ্নেয় বায়ুর মতো<br />ক্ষণে ক্ষণে বেরিয়ে পড়ে এ বুকের হাহাকার।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/kebol-tomare-jonoo/কেবল তোমারই জন্য2020-06-24T06:33:29-04:002023-06-24T20:40:57-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>কেবল তোমারই জন্য মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় ধরে<br />কত যুবক এখনও চলছে কঠোর কঠিন অভিযানে।<br />তোমার কাজল টানা চোখের দিকে চেয়ে<br />অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা গেছে দেশে দেশে<br />তবুও কি সেই যুবক বুঝেছে তোমাকে? বোঝেনি!<br />তুমি বিপুল রহস্য নিয়ে রয়ে গেছ<br />দিনের অস্পষ্ট আলোর মতো অন্ধকারে।</p>
<br /><p>তোমায় দেখলে কেন বুকের মধ্যে ঝড় ওঠে<br />যে নেতা অগণিত জনতার সামনে<br />বক্তৃতার মঞ্চে চিৎকার করে মাইক ফাটিয়েছে<br />সহজ মানুষের মত তোমাকে কিছু বলতে গেলে<br />কেন আশংকায় ঠোঁট দু’টো কেঁপে কেঁপে ওঠে!<br />তোমার স্পর্শে শরীরে বিদ্যুতের তরঙ্গ খেলা করে<br />তোমার এক হাতে বিষের পিয়ালা অন্য হাতে সুধা<br />বিষের কথা ভুলে যুবকেরা সুধার দিকে চেয়ে থাকে<br />কে বিষ পায়<br />কার ভাগ্যে সুধা জোটে তা কে বলতে পারে!</p>
<br /><p>কেবল তোমারই জন্য পৃথিবীর সৌন্দর্য চোখে থাকে<br />ফুল হয়ে ফুটে বাতাসে ঢাল গন্ধ<br />তারই টানে যুবকেরা আগুনের পতঙ্গের মতো ছুটে আসে<br />কারো হৃদয়ে ঢালো প্রেম, কারো হৃদয়ে আগুন<br />যেই হৃদয়ে প্রেম আছে সেই হৃদয় আঁধার কেটে কেটে<br />পথ চিনে পাড়ি দেয় বাঁধার সাগর<br />তখন সবাই অবাক বিস্ময়ে তার দিকে চেয়ে থাকে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/pabo-notun-jibon/পাব নতুন জীবন2020-06-20T00:21:06-04:002023-06-25T12:45:13-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমার চারপাশে ছড়িয়ে রেখেছ হাসি<br />তোমার মায়াবী দৃষ্টির আকর্ষণে তাই কাছে আসি<br />তোমার জন্য হয়ে যায় আমি দুঃসাহসী<br />তোমার চুল থেকে যেন ফুলের ঘ্রাণ এসে লাগে নাকে<br />ফেনার মতো রক্ত দুলে ওঠে হৃদয়ের বাঁকে<br />যখন তোমার মুখ পানে চেয়ে থাকি<br />তখন তোমার ঐ মুখে যেন গ্রীক দেবীর ছায়া এসে পড়ে।</p>
<br /><p>তুমি আমাকে ভালোবাস কি ভালোবাসো না<br />সে কথা না হয় থাক<br />আমি তোমায় ভালোবেসে হয়েছি প্রেমিক<br />সে কথা যেন এ পৃথিবীতে বলুক লোকে।</p>
<br /><p>এ পৃথিবীতে টাকা আর সম্পদে মানুষ দামী<br />এইসব সত্যকে স্বীকার করে<br />মেয়েমানুষরা পুরুষের জীবনে ভালবাসতে আসে<br />তখন তাদেরও হৃদয়ে প্রেম আসে, শরীরে পিপাসা বাড়ে।<br />তুমিও হয়তো বা তাদেরই মতো একজন<br />তবু শিশুর মতো তোমার কাছে জানিয়েছিলাম দাবি<br />চলো, ‘কোন এক জলের ধারে অথবা ঝাউ বনের কাছে<br />হলুদ পাড়ের শাড়ির আঁচল ছড়িয়ে<br />উদাসী হাওয়ায় বসি দু’জনে ঘাসের উপর’!<br />তখন আমি শূন্য দৃষ্টিতে তাকাব না তোমার চোখে<br />চেয়ে রব গোপন গভীর বিস্ময়ে; পাব নতুন জীবন।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/cholliser-vabnai/চল্লিশের ভাবনায়2020-06-18T00:28:31-04:002023-06-27T19:29:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বিগত চল্লিশ বছরের ভার পিঠে নিয়ে<br />অস্পষ্ট গোধূলি আলোয় যৌবনকে ফিরে ফিরে দেখি <br />আহা! কি সুন্দর সেই সোনালী দিনের মুহূর্তগুলি।<br />এখন আমার কাছে পড়ে আছে<br />একাকীত্ব, টালমাটাল সংসার<br />প্রতিদিন আমি স্বর্গ নরক একসাথে নিয়ে বয়ে বেড়াই।</p>
<br /><p>জীবনের কান্নার স্বর চাপা রেখে<br />সময়ের ট্রেনে চেপে চলছি গন্তব্যে<br />যেখানে সবাইকে যেতে হয়!<br />বহু সাধনায় লেখা জীবনের ছন্দময় অতীত পাণ্ডুলিপি<br />রং হারায় পড়ন্ত বিকেলে, চরের মতো স্বপ্নগুলো জেগে থাকে।</p>
<br /><p>জীবন ছিল পৌরাণিক কাহিনীর বিস্ময়ের মতো <br />এখন একা একা বসে দেখি<br />জ্বলন্ত সূর্যের অস্ত যাওয়া<br />চল্লিশ বছর কেটে গিয়ে আসবে পঞ্চাশ!!<br />রোগ-বালাই বাসা বাধবে<br />মরণের শিহরণ ভয়ংকর ভাবে আমাকে কাঁপায় ।</p>
<br /><p>পঞ্চাশ! তাও কেটে যাবে!!<br />সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা পাখির মতো ঝিম মেরে দেখব<br />জীবনের ধুসর পাণ্ডুলিপির গায়ে<br />অস্পষ্ট অক্ষরের বিন্যাস।<br />যে যৌবন হারিয়ে গিয়েছে কুয়াশায়<br />যে হাসিতে পাগল ছিলাম ভর দুপর বেলায়<br />যে রূপে মুগ্ধ ছিলাম ভুল ভালোবাসায়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/a-deshe-mabush-koi/এ দেশে মানুষ কই2020-06-16T07:17:54-04:002023-06-26T08:13:22-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>দিনের স্পষ্ট আলোয় লাঞ্ছিত মেয়ের চিৎকারে<br />আমার বুক মুচড়ে উঠেছিল সেদিন<br />আমার সুন্দর জীবনে ঝুঁকি আসতে পারে ভেবে<br />সেদিকে তাকাতে যাইনি।<br />মানুষের ভিড়ে মুখ লুকিয়ে সটকে পড়েছি<br />আমি এক প্রত্যক্ষদর্শী; নিজের ভাবনায় নিমগ্ন থেকেছি।</p>
<br /><p>হত্যাকারীর বীভৎস উল্লাস দোকানের চিপায় দাঁড়িয়ে দেখেছি<br />ছোট্ট ছেলেটার সামনে<br />মায়ের বুকে ধারালো ছুরি ঢুকে গিয়েছিল <br />তার বুকফাটা আর্তনাদে আদিম সভ্যতা ফিরে এসেছিল<br />জনতার ভীরু চোখে আমি সেদিন কোন লজ্জা দেখিনি।</p>
<br /><p>সেবা খাতগুলো দখল নিয়েছে জমজমাট ট্রেড বিজনেস<br />হাসপাতালের আইসি ইউনিটে ডাক্তার বেশে<br />শয়তানকে দেখেছি<br />সাপের গর্তে পড়েছে রোগী ডাক্তার ফণা মেলে ধরেছে<br />বাঁচাতে হলে আরও টাকা চায়<br />নি:স্ব পরিবারের অভিশাপে বাড়ছে ডাক্তারদের বিলাসিতা।</p>
<br /><p>লেকের ধারে ভরা সন্ধ্যাবেলা<br />এক বেকার যুবককে কাঁদতে দেখেছি<br />একটু আগে সানাইয়ের সুরে হারিয়েছে তার প্রিয়তমাকে<br />বাবা অসুস্থ, মায়ের প্রতীক্ষা ছেলের একটা চাকরি<br />ফিরবে সুদিন<br />সেই মা থাকে অপেক্ষায় অপেক্ষায়..........।<br />আমি সেই যুবকের কান্না ভেজা চোখে প্রতিজ্ঞা দেখেছি<br />‘তাকে অনেক টাকা বানাতে হবে<br />এমনি করেই ছিনিয়ে আনবে অন্যের প্রিয়তমাকে’।</p>
<br /><p>আমি দেখেছি দৌড় প্রতিযোগিতা<br />বড় বড় ডিগ্রি শিকায় তুলে ছুটছে তারা মধু নিতে<br />ক্ষমতার মধু নিয়ে বসে আছে রানী সাহেবা<br />পদলেহন করে নর্তন কুর্দন করে চাই একটু তুষ্টি<br />তাহলেই ব্যস, ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে<br />এইসব কুলাঙ্গারদের দাপটে মানুষ দেখিনি।</p>
<br /><p>আমি বিচারের নামে সার্কাস দেখেছি<br />নতুন নতুন নাটক মঞ্চায়িত হয়<br />পত্রিকার পাতায় পাতায় শো-ডাউন চলে<br />চরম বিনোদন, তুমুল করতালি, জনগণের উল্লাস<br />ঢাকা পড়ে যায় মজলুমের ক্রন্দনের ধ্বনি।</p>
<br /><p>এখন চলছে ভীষণ দু:সময়<br />দেশপ্রেম শেখানোর টেন্ডার নিয়েছে দেশের দালালরা।<br />ঝড় বয়ে চলে এ দেশের প্রতিটা মানুষের উপর দিয়ে<br />সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মূল্যবোধের অধ্যায়গুলো<br />একে একে উড়ে যায়<br />অবক্ষয়ের স্তূপে জমা হয় পাপ, আদিম সভ্যতা।<br />একটা জাতির ধ্বংস হওয়ার নীরব প্রত্যক্ষদর্শী আমি <br />এ সব দেখেছি আমি<br />জাতির অধঃপতনের চরম সীমানায় দাঁড়িয়ে।<br />আমি নিরুপায়, এই বাংলা ছেড়ে কোথায় যায়?<br />এ বিশ্ব নেবে কি আমায়? </p>
<br /><p>জন্মভূমির কোলে মাথা রেখে<br />আমি আজও স্বপ্ন দেখি এ দেশকে ছেড়ে যাওয়ার<br />নিশুতি রাত আমাকে ঘুমাতে ডাকে<br />আমার ঘুম আসে না।<br />পাসপোর্টের খালি পাতায় ভিসার রঙিন স্কেচ আঁকি<br />আমি ঘুমাতে পারি না।<br />বাংলার উন্মুক্ত আকাশে শুনি চিলের চিৎকার<br />দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে ডেকে ওঠে শিয়াল<br />সভ্যতার জমকালো ছদ্মবেশে মৃত মনুষ্যত্বের গলিত শবের গন্ধ<br />ভাগাড়ে জমে উঠেছে খেলা, চলছে মচ্ছব, এ দেশে মানুষ কই?</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/zakat/যাকাত2020-06-12T11:38:52-04:002023-06-24T20:41:09-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>রমজান এসেছে,আসছে ঈদ<br />যাকাত দিয়ে নাম কুড়াতে হবে<br />বহু দোকান ঘুরে<br />সবচেয়ে কম দামের যাকাতের কাপড় কেনা হল।<br />যত মানুষ পাবে তত বেশি নাম, তত বেশি বাড়বে স্ট্যাটাস<br />চারদিকে মাইকিং চলছে।</p>
<br /><p>একটা নতুন কাপড়ের স্বপ্ন আঁকা মানুষেরা<br />শুনল সে খবর<br />স্বপ্ন পূরণের আশায়<br />একে একে জমা হলো লোহার গেটের বন্ধ দরজায়<br />শত শত মানুষ,নিরাশার সেল বিঁধল বুকে<br />এমনিতে কিছুই মিলবে না<br />যুদ্ধ করে ছিনিয়ে নিতে হবে।<br />গেটের সামনে সবাই বসে আছে<br />গেট খুলতেই সব পঙ্গপালের মতো ছুটল সামনের দিকে।</p>
<br /><p>ভিড়ের চাপে কচি দুই শিশু পায়ের তলায় পিষ্ট হলো<br />কাদা মাটি মাখা খালি গায়ে<br />রক্ত ফেনা মুখে মড়কের ইঁদুরের মতো ঘাড় গুঁজে<br />গেটের সামনে পড়ে আছে নীরব নিথর দেহে<br />আতঙ্কে লাল জামার স্বপ্ন আঁকা চোখ<br />যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে<br />মুখের ক্যানভাসে ভেসে উঠেছে <br />রক্তের জামা পরা এক চঞ্চল শিশু।</p>
<br /><p>মায়ের বুক থেকে সে হারিয়ে গেল<br />জীবনের সেরা যাকাত নিয়ে মা বেদনায় পাথর।<br />বিধাতা! মানুষ তোমার সৃষ্টির সেরা জীব হলে<br />কেন এত অবহেলা? তবে এরা কি মানুষ নয়!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/utpirhon/কাহিনীকাব্য :: মুহাম্মদ (স:)- ৭. উৎপীড়ন2020-06-10T11:52:08-04:002023-06-25T14:14:14-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>অত্যাচার নির্যাতনের আগুন ছড়িয়ে যায় দিকে দিকে<br />বেলালের উপর উমাইয়া ক্ষিপ্ত বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে<br />পেটাতে পেটাতে যখন ক্লান্ত হয় তখন গলায় দড়ি বেঁধে<br />মক্কার বালকদের হাতে তুলে দেয় তামাসা করতে<br />সন্ধ্যায় ক্ষুধার্ত অর্ধমৃত অবস্থায় বেলালকে ফিরিয়ে দেয় তারা<br />উমাইয়া জিজ্ঞাসা করে,এখনো কি মুহাম্মদের ধর্মের সাধ আছে?<br />বেলালের নির্ভীক উত্তরে আরও ক্ষিপ্ত হয় উমাইয়া<br />রোদ্র তপ্ত মরু বালুর উপর তাকে বুকে পাথর চাপা দিয়ে শোয়াইয়ে দেয়<br />তার কষ্ট দেখে অশ্রু ঝরে আবু বকরের, চড়া দামে কিনে নেয়<br />কষ্টের বিনিময়ে বেলাল পায় স্বাধীন জীবন।<br />ইয়াসিরের দুই পা বেঁধে দেয় দুই উটের সাথে ছিঁড়ে যায় দেহ<br />পুত্র আম্বর পিঠে চাবুকের আঘাতে জ্ঞান হারায়<br />এসব দেখেও ইয়াসিরের স্ত্রী সুমাইয়া শুধু কালেমা পড়ে চলে<br />আবুযহল ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে করে বর্শা বিদ্ধ<br />অভিজাত উসমানকে করে তার বাবা নির্মম প্রহার<br />খাব্বারকে শুয়ে দেয় জ্বলন্ত কয়লার উপর<br />জেন্নিরার দুই চোখ উপড়ে ফেলে<br />শোয়েব সব অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করলেও বাড়িঘর কেড়ে নেয়<br />মুহাম্মদ এসব দেখে পরামর্শ করে রাতের আঁধারে<br />চৌদ্দ জনের দল চলে যায় আবিসিনিয়ায়<br />কয়েকদিন পরে আবু জাফরের নেতৃত্বে আরও ৮৩ জন।<br />কোরাইশগন তাদের আটকাতে ব্যর্থ হয়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়।<br />কোরাইশরা তাদের ফেরাতে অনেক উপঢৌকন দিয়ে <br />প্রতিনিধি পাঠায় সম্রাটের দরবারে, দামী উপহারে সম্রাটও খুশি<br />জিজ্ঞাসিল, তোমাদের জন্য আমরা কি করতে পারি বল?<br />তারা বলে, কিছু উচ্ছশৃঙ্খল ধর্মদ্রোহী আপনার এখানে আশ্রয় নিয়েছে<br />আমরা তাদের ফিরিয়ে নিতে চাই<br />সম্রাট বললেন, অপর পক্ষকে ডাক, কথা শোনা যাক<br />মুসলমানদের পক্ষে আলীর ভাই বাকপটু জাফর জবাব দেয়<br />বাদশা খুশি হয়ে বলে, তোমরা থাক যতদিন খুশি।<br />আফ্রিকায় ইসলামের বীজ বুনে <br />আবারও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে কোরাইশ প্রতিনিধি দল!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bibek-muse-felar/বিবেক মুছে ফেলার2020-06-09T01:09:52-04:002023-06-27T06:49:34-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বিবেক মুছে ফেলার সময় এসেছে<br />স্বার্থপরের মতো চলো, তাহলে হবে জীবন গড়া।<br />অন্যকে বাঁচাতে হলে আগে নিজে বাঁচতে হবে<br />যেভাবে বেঁচে আছি তাকে কি বেঁচে থাকা বলে?</p>
<br /><p>সত্য ও ন্যায়কে একপাশে রেখে<br />চলো আমরা মুখোশ পরি<br />কথার প্যাঁচে তাক লাগিয়ে ফায়দা তুলি<br />এতেই হবে সুন্দর একটা জীবন গড়া।<br />তা না হলে সময়ের স্রোতে<br />নদীর বুকে পাথরের মতো তলিয়ে যাবে। <br />ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কলামিস্ট, রাজনীতিবিদ, অধ্যাপক<br />সবাই এসো, ঠেলাঠেলি করে নোংরার মধ্যে চড়ে বস<br />সময়ের ট্রেন এসে গেছে<br />ভাবনা চিন্তা ফেলে আখের গোছাও<br />পৌঁছে যাবে গন্তব্যে! উঠে পড়! উঠে পড়!!</p>
<br /><p>শুধু সেই একজন সুতীব্র যন্ত্রণা-নীল চোখে<br />স্টেশনে পথ চেয়ে বসে থাকে সারাক্ষণ।<br />প্রতীক্ষা করে! কিসের প্রতীক্ষা তার।<br />পাগল নাকি! নাকি স্বপ্নদ্রষ্টা।<br />সে একা একাই ডাক দিয়ে যায়!!<br />‘পুরাতন সব রাস্তাগুলো ভেঙ্গে ফেল<br />নতুন রাস্তা গড়তে হবে<br />কেউ যদি হাত না দেয় তাতে সবাইকে তখন সরতে হবে<br />এই রাস্তাটা তৈরি হলে <br />এখন যারা চলছে ধীরে তারাই যাবে সবার আগে<br />যেমন ধারা চলছে এখন সেই ধারাটা পাল্টে যাবে<br />সময় এসেছে বদলে যাওয়ার, তোমরা এবার বদলে যাবে’।<br />স্টেশনে বসে বসে সেই লোকটা কেবল বিড়বিড় করে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/dormo-procher/কাহিনীকাব্য :: মুহাম্মদ (স:)- ৬.ধর্ম প্রচার2020-06-03T10:29:56-04:002023-06-24T20:40:49-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আল্লাহর নির্দেশে মুহাম্মদের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার মেঘ<br />খাদিজা বলে, তুমি কেন কর এত চিন্তা! <br />ওঠ! এসো, তুমি আমায় দিয়ে প্রথমে শুরু কর<br />আগে তোমার ছিল শূন্য, এখন হলো এক<br />এগিয়ে যাও, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন!<br />যেন বিদ্যুতের সমসূত্রে গাথা দুটি আলোর বাতি<br />একটি জলে উঠতেই অপরটি ছড়িয়ে দেয় আলো।</p>
<br /><p>একে একে সত্যের মিছিল বড় হয়, সবই গোপনে। <br />আল্লাহর নির্দেশ আসে, ইলামকে প্রকাশ করতে হবে!<br />প্রথমে বিশিষ্ট চল্লিশ জনকে দাওয়াত দিয়ে বললেন সেকথা<br />সবাই ক্রুদ্ধ হয়ে প্রত্যাখ্যান করে চলে গেল<br />দেখে আলি সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে, আমি আছি তোমার সাথে<br />তারপর সাফা পর্বতে লোকজনকে ডেকে সত্যের পথে জানালেন আহ্বান<br />আবারও ব্যর্থ; সকলে গালি দিতে দিতে ফিরে গেল<br />এরপর একদিন কাবা শরীফে গিয়ে উচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা করলেন<br />যেন কাবা গৃহ সেই মহাসত্যের ঝংকারে মুখরিত<br />দেবদেবী যেন কেঁপে ওঠে থরথর, ছুটে আসে কুরাইশরা।<br />দেবদেবীকে একি অপমান! একি ধৃষ্টতা! রাগে অন্ধ হয় তারা<br />খোলা তরবারি এগিয়ে আসে মুহাম্মদের দিকে<br />খাদিজার পুত্র গর্জে ওঠে হারিস, ক্রোধের আগুনে সে নিভে যায়<br />কাবা শরীফে ইসলামের ঘোষণার প্রথম দিনেই<br />হারিসের বলিদানে শুরু হলো ইসলামের রক্তাক্ত পথ চলা। <br />কোরাইশরা দল বেধে আসে গোত্র প্রধান আবু তালেবের কাছে<br />বিচলিত আবু তালেব মুহাম্মদকে ডেকে বলে <br />তোমার এই নতুন ধর্ম ত্যাগ কর বাবা, দুশমন বাড়িও না<br />মুহাম্মদ বলে, চাচা! সবাই আমাকে পরিত্যাগ করলেও<br />আমি সত্য পরিত্যাগ করতে পারি না।<br />কথা শুনে কোরাইশরা মুহাম্মদের জীবন নেওয়ার হুমকি দেয় <br />আবু তালেব বেঁচে থাকতে ভাতিজার গায়ে ফুলের আচঁড়ও লাগতে দেবে না<br />এই ছিল তার পণ, সে গর্জে উঠলে করাইশরা চলে যায় রেগে<br />তারপর সে মুহাম্মদকে মায়াময় কণ্ঠে বলে<br />তোমার কাজ তুমি চালিয়ে যাও, দেখি তোমার গায়ে কে দেয় হাত!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/akaser-dike-dirsti/আকাশের দিকে দৃষ্টি2020-05-31T01:18:24-04:002023-06-24T20:40:35-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আকাশের দিকে দৃষ্টি ফেরাল জনতা<br />চোখে মুখে দুশ্চিন্তায় অবসাদ জমেছে<br />দিন গড়িয়ে গভীর হয়েছে রাত<br />গাঢ় অন্ধকারে তাদের এতো কিসের প্রতীক্ষা!<br />দুরে কোথাও অস্পষ্ট মোমবাতির আলোর মতো<br />একটা শিখা ভুল দৃষ্টিতে দেখে<br />মশাল হাতে নেতা আসছে, তার জন্য এই প্রতীক্ষা<br />প্রভাতের আগুন ছিটিয়ে সে আনবে সোনালী ভোর।<br />বুকের যন্ত্রণায় অন্ধকার কোটরে জ্বলে চোখ <br />জনতার হৃদয়ে শান্তির পিপাসা মিটিয়ে দিতে আসবে সে।</p>
<br /><p>নেতাকে উদ্দেশ্য করে <br />সমস্বরে জনতার চিৎকারে কানে তালা লেগে যায়।<br />অশ্রু শূন্য চোখে তারা বিলাপ করছে......<br />আমাদের এই প্রজন্মকে অবক্ষয় থেকে বাঁচাও<br />আমাদের এই দেশকে অধঃপতন থেকে বাঁচাও<br />বিবেক মনুষ্যত্ব লুণ্ঠনের হাত থেকে বাঁচাও<br />আমাদের বুকের ভেতরের ক্ষতগুলো থেকে বাঁচাও।</p>
<br /><p>আমরা দিনের বেলায় চোর ছিনতাইকারীর ভয় নিয়ে হাঁটি<br />আমাদের সম্পদ বেদখল হওয়ার ভয় নিয়ে থাকি<br />মান-ইজ্জত লুট হওয়ার ভয় নিয়ে ঘর থেকে বের হই<br />যখন ক্লান্ত দেহে বাসায় ফিরি<br />তখন জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ে ভয়ে থাকি।<br />ভয়ে ভয়ে জীবন কাটায় কথা বলার অধিকার নাই<br />দরিদ্র অসহায় মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার নাই<br />মরে গেলে স্বজনদের লাশটা পাওয়ার অধিকার নাই।</p>
<br /><p>যে মায়ের সন্তানেরা গুম হয়ে গেছে<br />সেই মা অশ্রু ভেজা চোখে আজো থাকে প্রতীক্ষায়<br />লাঞ্ছিত বোনের আত্মারা নিশুতি রাতে বিচারের জন্য কেঁদে ফেরে<br />কিছু কেষ্টবিষ্টুদের বিলাসিতায় দেশের স্বার্থ গোপনে বিনিময় হয়<br />তার জন্য ঘরে ঘরে ওঠে হাহাকার।<br />জনতা ফিরে এসেছে ঘরে আর্তনাদ নিয়ে<br />বিদ্যুতের ঝলকের মতো মুষ্টিবদ্ধ হাতে<br />তারা ঝলকে উঠতে পারে নি।<br />প্রতিজ্ঞায় নেয় না তারা দৃঢ়তর শপথ<br />ফিরে এসেছে তারা পরাজয় অস্বীকার করে<br />চোখে জল ধরে।<br />হতাশার পাঁকে ডুবে যেতে যেতে <br />একজন বলে উঠেছিল নেতা আসবে, বিশ্বাস রাখো আশা রাখো।<br />বিষাদের বেলাভূমিতে বসে<br />আনন্দের গান গেয়ে ওঠো একবার সমস্বরে।<br />আর ফিরে যাও যখন তোমরা চারদিকে বাতাস কাঁপিয়ে<br />একই বিন্দুতে মিলিত হয়ে এক হবে<br />তখন সে আসবে নয়তো আরও অপেক্ষা কর!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/anek-din-por/অনেক দিন পর2020-05-29T12:02:08-04:002023-06-24T20:40:42-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>অনেকদিন পর একটা মিষ্টি কণ্ঠ হাওয়ায় ভেসে এলো<br />বলল সে,কাল আমাদের দেখা হবে<br />কোন এক পার্কের সবুজ ঘাসে অথবা এক রেস্টুরেন্টে<br />তোমার সময় হবে?<br />তারপর আমার বুকের মধ্যে ঝড় বয়ে গেল।</p>
<br /><p>পাখির মত কেঁপে ডানা মেলে বিস্মৃতি অতীত<br />উঠল জেগে নতুন চেতনায়<br />শব্দহীন স্তব্ধতায় ব্যাকুল নয়নে অতল স্বপ্ন সাগরে<br />তাকে নিয়ে ডুবে ছিলাম একদিন<br />নিবিড় কুয়াশার মত বুঝেছিলাম তার মন<br />দিনের স্পষ্ট আলোর মতো<br />নারীর মন সমস্তই-বা বুঝেছে কে কখন?</p>
<br /><p>একদিন দিয়েছিল যে ভালোবাসা আজ তা মনে নেই<br />সন্ধ্যায় বাউলের গানের অস্পষ্ট সুরের মতো<br />সেই ভালোবাসা শুধু দূর থেকে ভেসে আসে।<br />অন্তরের আকাঙ্ক্ষাকে বিদায় জানিয়ে<br />বাস্তবতার দেওয়ালের দুপাশে দু’জন রয়েছি দাঁড়িয়ে।</p>
<br /><p>আজ বিকেলের নরম রোদে সে বসে আছে মুখোমুখি<br />মুখে কথা নাই,সেই হাসিও নাই<br />কতদিন চোখাচোখি হয়নি আমাদের দুজনার<br />খোলা আকাশের নিচে আমরা---দুজন--একা !<br />বারবার কেন ওর চোখ ভরে জল আসে! <br />ওর দিকে চেয়ে শুধু মনে হয়<br />স্বপ্ন নয়, ভালোবাসাও নয় সব অভিনয়!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ekla-ami-dari-a-achi/একলা আমি দাঁড়িয়ে আছি2020-05-26T11:04:07-04:002023-06-26T13:58:04-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তোমার সাথে আমাকে নেবে নাকি?<br />একলা আমি দাঁড়িয়ে আছি<br />তোমার জন্য গলির চিপায়।<br />একটা দুটা সহজ কথা<br />বলব আমি চোখের তারায়<br />বিকিয়ে দেব এই আমাকে<br />তোমার ডাকে ধন্য হয়ে।</p>
<br /><p>তোমার চোখের আলো দেখে<br />চেয়ে আছি নি:স্ব হয়ে<br />ভয় না করে কলঙ্ক রেখায়<br />শ্যামল মুখটা কোমল করে <br />একটু হাস সহজ করে<br />ছড়িয়ে পড়ুক আশার আলো <br />আমার বুকের শূন্য খাঁচায়। </p>
<br /><p>যদি হঠাৎ একদিন দরজায় এসে<br />শুধাও তুমি কেমন আছি?<br />সেই দিনেরই অপেক্ষাতে<br />দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকি<br />একলা আমি দাঁড়িয়ে আছি।</p>
<br /><p>ও হাতে হাত রাখতে আমি <br />সহজ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি<br />ঐ হাতে হাত রাখতে পারা সহজ কথা নয়!<br />ঐ হাতের বোঝা বয়তে পারাও সহজ কথা নয়!!<br />তবু আমি দাঁড়িয়ে আছি<br />একলা আমি দাঁড়িয়ে আছি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bichar-chai/বিচার চাই2020-05-21T11:09:53-04:002023-06-24T20:40:46-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমার বোন কতিপয় বখাটে যুবকের হাতে<br />লাঞ্ছিত হলো প্রকাশ্য দিবালোকে<br />তার বিচার চাইতে এসেছি সভ্য সমাজের কাছে।</p>
<br /><p>‘এইভাবে কুকুরের মতো কুঁইকুঁই শব্দ করে<br />কেউ কোনদিন বিচার পেয়েছে’?<br />রাষ্ট্র-যন্ত্র যখন বিচার ব্যবস্থার গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেয়<br />তখন কেন তোমরা মৃত শবের কাছে আর্তনাদ কর?<br />তোমরা কি ভীরু কাপুরুষদের দলে ভিড়ে ভিক্ষা চাইছ?<br />তবে শুনে রাখ বেকুবের দল<br />-‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই পাবে না তুমি’।</p>
<br /><p>আর ফিরে যাও, চুরি হাতে নাকি-কান্না করতে এসো না<br />যেইদিন বাবুসাহেবদের সামনে লাল চোখ করে<br />পেশিতে শক্তি নিয়ে দাঁড়াতে পারবে সেদিন ফিরে এসো<br />সেদিন তারা তোমাকে সেলাম জানাবে<br />বিচার না নিয়ে কিছুতেই তোমাকে ফিরতে দেবে না।<br />তুমি কি জান না? সবাই কেবল শক্তিরই জয়গান করে!</p>
<br /><p>নিপীড়িত মানুষের ক্রন্দনের ছবির স্তূপে দাঁড়িয়ে<br />ইতিহাস কথা বলে--<br />‘দুর্বল মানুষেরা ন্যায়ের দরজার তালা কখনই খুলতে পারেনি’। <br />তারা ফিরে গেছে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে<br />অভিশপ্ত জীবনে তোমাদের আঁকা কলঙ্কের সীলমোহর নিয়ে<br />একা দুর্বিষহ দিনগুলো পার করেছে তারা<br />আশায় আশায়, লজ্জা আর অপমানে <br />তারা তোমার আপনজন, তোমার আত্মার অংশীদার<br />তাদের বুকের পাঁজরে ব্যথার প্রতিধ্বনি শুনতে কি পাও?<br />এসব শুনতে শুনতে তোমার রক্তে কি হিম-শীতল প্রবাহ চলে?<br />গলার স্বর কি মিনমিন করে?<br />তাহলে মানুষের খাতা থেকে নাম কেটে ফেল<br />বাঁচ একা, পশু-পাখির মতো; আর মনে রেখ<br />জীবনের মায়া তুচ্ছ করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হয়!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tumi-amar/ তুমি আমার2020-05-18T09:54:05-04:002023-06-24T20:41:07-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>সীমাহীন আকাশের বুকে অজস্র তারার মেলা<br />তুমি মুগ্ধ চোখে দেখে বললে,ও আকাশ তুমি আমার<br />আকাশ পাথর চোখের দৃষ্টি নিয়ে<br />তোমার দিকে তাকিয়ে থাকল; বলল না কিছুই।</p>
<br /><p>তখন তোমার ছিল আকাশচুম্বী স্বপ্ন<br />তোমার বাঁকা চোখের চাহনিতে আমার হৃদয় ঝলসে যেত<br />জীবনের তরী ঠেলে তুমি যখন ক্লান্ত প্রাণ এক<br />তখন চাঁদের জোছনায় ভিজতে<br />তৃষ্ণার্ত নয়নে সঙ্গী খুঁজেছিলে<br />দখিনের জানালার পর্দা দু’হাতে সরিয়ে দাঁড়াতেই<br />সোনার ডিমের মত মায়াবী চাঁদের নরম আলো<br />তোমার সারা শরীর ভিজিয়ে দিলো।<br />তুমি অভিভূত----! বললে, ও চাঁদ তুমি আমার<br />কিন্তু সে বোবা হয়ে রইল; বলল না কিছুই।</p>
<br /><p>তারপর একদিন শরতের সকালে<br />শিশিরে ভেজা একটা শিউলি ফুলের মালা<br />গলায় জড়িয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালে<br />মুক্তার মত জড়িয়ে থাকতে দেখে বললে<br />ও ফুল তুমি আমার; সেও কিছুই বলল না তোমাকে।</p>
<br /><p>কিন্তু বিন্তি! তুমি যদি কখনও আবেগ মাখা ভেজা চোখ নিয়ে<br />আমার এ চোখের দিকে তাকিয়ে<br />শুধু একবার বল ‘তুমি আমার’<br />তাহলে আমি কি করে শান্ত থাকতে পারি বল?<br />চঞ্চলা হরিণীর মতো ছুটে এসে<br />শাহবাগের চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলব<br />বিন্তি! তুমি আমার আর আমি তোমার।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/raster-sele/রাস্তার ছেলে2020-05-16T17:09:16-04:002023-06-26T03:16:55-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>কবে কোথায় তার জন্ম জানা নেই<br />জ্ঞান হতেই দেখছে সে চরম অনাদর আর অবহেলায়<br />আবর্জনার মতো পড়ে আছে রাস্তার এক কোনে<br />স্নেহ মায়া মমতাহীন পরিবেশে আগাছার মতো বেড়ে উঠছে সে।<br />উচ্ছিষ্ট খাবার অথবা সস্তা চালের ভাত<br />যখন সে পেট পুরে খেতে পায়<br />তখন পৃথিবীর আস্তাবলে সুখী মানুষ সে<br />গরম ভাতের সুবাস তার সবচেয়ে ভালোলাগে।</p>
<br /><p>কাগজ আর বোতল টোকাতে ছেঁড়া বস্তা নিয়ে রাস্তায় হেঁটে যায়<br />হরতাল শুনে চকচক করে উঠে দু'চোখ<br />মিছিল-পিকেটিং এর জন্য পঞ্চাশ টাকা বাড়তি দুপুরে খাওয়া<br />কত দিন চলে যায়, দুপুরে খাবার জোটে না<br />অথচ আজ সে খাবে চিকেন বিরিয়ানি<br />ছোট একটা প্যাকেট থেকে সুন্দর গন্ধ ভুর ভুর করে বেরিয়ে আসে!!</p>
<br /><p>হরতালে পুলিশের টিয়ার সেল উপেক্ষা করে<br />গাড়ী ভাংচুরের লোহা কুড়াতে গিয়ে<br />পুলিশের লাঠির আঘাতে ব্যথায় মুচড়ে উঠে সমস্ত শরীর<br />তবুও কুড়াতে পারার তীব্র আনন্দ ব্যথাকে ম্লান করে দেয়।</p>
<br /><p>প্রতিদিন সংগ্রাম দেড় কেজি চালের টাকার<br />অথচ এসব বিক্রি করে যা পেল তা দিয়ে<br />পাঁচ কেজি চাল অনায়াসে পাবে সে<br />বিরাট এক সফলতার কাহিনী; হরতাল যেন আশীর্বাদ।</p>
<br /><p>যে ছেলের বই হাতে স্কুলে যাওয়ার কথা<br />সে ছেঁড়া বস্তা হাতে জীবিকার সন্ধানে রাস্তায় হেঁটে বেড়ায়।<br />স্কুল যেন এক রহস্যপুরী<br />বোতল আর কাগজ কুড়াতে পারলে জীবনের চাকা ঘোরে।<br />চরম অনিশ্চয়তায় ধুকছে তার ভবিষ্যৎ<br />সে যেন বাংলাদেশের আয়না<br />কিছুরই আশা নেই; তবুও স্বপ্ন আছে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ghumer-moddhe-naki/ঘুমের মধ্যে নাকি2020-05-10T13:18:48-04:002023-06-24T20:40:52-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ঘুমের মধ্যে নাকি সবচেয়ে সুখ আছে শান্তি আছে<br />তবুও আমরা চোখ মেলে জেগে উঠি।<br />পৃথিবী সূর্যের টানে যেভাবে চলে<br />সেইভাবে আমরা আকাঙ্ক্ষার পিছনে ছুটে চলি।<br />পাহাড়ের গা বেয়ে<br />নেমে আসা নদীর স্রোতের মতো আমাদের মন<br />আপন খুশিতে বয়ে চলে আমাদের নিয়ন্ত্রণ-হীন সীমানায়।</p>
<br /><p>হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষাকে আমরা ভালোবাসি<br />এই পৃথিবীর পরে সে মরীচিকা।<br />তাকে কে কবে খুঁজে পেয়েছে কে জানে!<br />তবুও আমরা খুঁজে চলি অন্তহীন আলো আঁধারের ভেতর<br />অজানা পথে হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ি।</p>
<br /><p>মৃত্যুর ঘুমে ঘুমাতে চাই<br />ঘুমের মধ্যে আকাঙ্ক্ষার অধীরতা এসে<br />আমাদের জাগিয়ে দেয় ।<br />হৃদয়ের অন্ধকার গহ্বরে সূর্যের মতো সে জ্বলতে থাকে<br />আর এই মন!<br />পৃথিবীর পরিভ্রমণের মতো ছুটে চলে তার পিছে পিছে।</p>
<br /><p>জীবনের ব্যর্থতা দেয় না এক ফোঁটা অবসর,<br />কোন এক অসীম পিপাসার টানে<br />এ দুনিয়ার অলিগলিতে একা একা মরিতেছি ঘুরে<br />তবুও যে আকাঙ্ক্ষাকে আমরা ভালোবাসি<br />সে আসেনি<br />রাতের বাঁকা চাঁদের মতো গিয়েছে মিশে<br />আকাশে আকাশে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/koran-abotirno/কাহিনীকাব্য :: মুহাম্মদ (স:) - ৫. কোরান অবতীর্ণ 2020-05-09T09:43:31-04:002023-06-24T20:40:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>সর্বদা কিসের ধ্যানে মগ্ন তিনি!<br />যেন তিনি শুনতে পেতেন কেউ ডাকছে তাকে,কিসের ডাক?<br />পাহাড় পর্বত তরুলতা জন্তু জানোয়ার যেন সবাই তাকে চেনে<br />তারা কিছু বলতে চায়! ধ্যান ভেঙ্গে যায়, আবার মগ্ন হয়ে পড়েন!<br />সংসারের কর্ম কোলাহলে যেন ধ্যানের গতি-স্রোত থেমে যায়<br />একদিন তিনি চলে গেলেন হীরা পর্বতের গুহায় নির্জনতায়<br />খাবার পাঠায় খাদিজা; আর তার ফেরার পথ চেয়ে বসে থাকে!<br />তখন তার বয়স চল্লিশ বছর, রমজান মাস<br />গভীর ধ্যানের মধ্যে একটা কণ্ঠের ডাক ভেসে আসে<br />‘মুহাম্মদ’, চোখ খুলে দেখে জিবরাইলের নুরে গুহা আলোকিত<br />চোখের সামনে নুরের অক্ষরে লেখা জ্যোতির্ময় বানি ভেসে উঠল<br />জিবরাইলের প্রচেষ্টায় নিরক্ষর মুহাম্মদের মুখ থেকে নিঃসৃত হলো</p>
<br /><p>‘ইকরা-বিসমি রাব্বিকাল-লাযী খালাক.........’<br />[১.পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন ২. সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে ৩. পড়ো! তোমার পালনকর্তা মহামহিমান্বিত ৪. যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে ৫. শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানতোই না ]</p>
<br /><p>মহাসত্যের প্রথম উপলব্ধির বর্ণনা ভাষাহীন<br />ভোরের আলোয় তিনি খাদিজার কাছে ছুটে যান<br />প্রতি রাতে দরজার কড়া নাড়বার শব্দ শুনবে বলে<br />খাদিজা উৎকণ্ঠায় চেয়ে থাকে,আজ তার দরজায় কে কড়া নাড়ে?<br />খুলে দেখে মুহম্মদ কাঁপছে ভয়ে<br />কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন দুশ্চিন্তা নিয়ে<br />মুহাম্মদ খাদিজার কোলে মাথা রাখে, খাদিজা সাহস দেয়<br />সে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়। </p>
<br /><p>সব শুনে খাদিজা যেন বিদ্যুতের শকে চমকে উঠল<br />তখনো মুহাম্মদ কম্বল মুড়ে পড়ে আছে, বিহ্বলতা কাটে নাই<br />বিচলিত খাদিজা দৌড়ে গেলেন বিচক্ষণ অর্কার কাছে<br />শুনে তিনি বললেন, ‘এ তো সেই ফেরেশতা’!<br />যে যুগে যুগে আল্লাহর মহান বানী নিয়ে এসেছে মানুষের কাছে<br />আরও শোনালেন সাবধান বানী, তার জীবনে আসছে দুর্যোগ দুর্দিন! <br />ওসব শোনার সময় নেই খাদিজার! শুভ সংবাদ দিতে হবে তাকে<br />তিনি আনন্দে দৌড়ে গেলেন মুহাম্মদের কাছে, শোনালেন অর্কার কথা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/asto-hate-kothai-zao-mujahid/অস্ত্র হাতে কোথায় যাও মুজাহিদ2020-05-08T16:51:19-04:002023-06-24T20:40:44-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বন্ধ চোখে অস্ত্র হাতে তুমি কোথায় যাও মুজাহিদ?<br />আফগানস্থান,ইরাক,মিশর,লিবিয়া,সুদান,চেচনিয়া<br />পূর্ব থেকে পশ্চিমে উত্তর থেকে দক্ষিণে<br />অন্ধ আবেগে ইসলামের লুটানো পতাকা উড়াতে<br />কায়েমি স্বার্থের আগুন ঢালা উত্তপ্ত পথে আরও রক্ত ঝরাতে <br />তুমি কোথায় ছুটে চলো মাতালের মতো একাকী!</p>
<br /><p>চোখ খোল,কান পেতে শোন<br />তোমার পায়ের কাছে কবর থেকে উঠে আসে<br />হাজারো নারীর কান্না<br />তারা আকুতি জানায় উঠুক এই জনপদে নিষ্ঠুর প্রলয়<br />যন্ত্রণা-বিদ্ধ চোখে তারা থেকেছে কেবল তোমারই প্রতীক্ষায়<br />অথচ তুমি কিছুই দেখনি<br />তোমার সামনে নাচে পাপ<br />অবাধে চলে দস্যু; ছিনিয়ে নেয় সৌন্দর্য আর ভালোবাসা।</p>
<br /><p>এখানে যারা আজো মানুষের কথা বলে<br />তাদের রক্তে ভেজা মাটির গন্ধ<br />তোমার নাকে আসে নাকি মুজাহিদ?<br />শাসকের বিকৃত হুংকারে মানবতা কাঁপে<br />পুণ্য-পথের নিষ্পাপ যাত্রীদের কে দেয় সুরক্ষা!<br />আজ শঙ্কিত জাতির দুর্বল মেরুদণ্ডে<br />চরম আঘাত হেনেছে কিছু সুযোগ সন্ধানী কাপুরুষ।<br />ক্ষতবিক্ষত বিচার ব্যবস্থায় <br />প্রতিটা মানুষের বুকে ওঠে অভিশাপের তুফান<br />অশুভ আত্মারা নিয়ে আসে গাঢ় অন্ধকার<br />ঈমানের নক্ষত্র খসে পড়ে আদর্শের সূর্যটা নিভে আসে<br />এইসব ছেড়ে কোথায় পালাও তুমি!<br />এই কাণ্ডারির হাল ধরতে চোখ বন্ধ কেন তোমার?</p>
<br /><p>বর্বর নিষ্ঠুরতায়<br />আমাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আজ দলিত পুষ্প<br />পৃথিবীর কণ্ঠে শোনা যায় ইসলামের সোনালী কাহিনী<br />অথচ চাবুক খেয়ে অন্যায়ের জোয়াল টেনে টেনে<br />কাটছে আমাদের দিন<br />মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শুনে শুনে পড়ছে চোখের জল<br />হৃদয়ের স্ফুলিঙ্গ নিভে যায় অবিশ্বাসের বৃষ্টিতে<br />সাহসের প্রান্তসীমায় বাজে ভয়ের ডুগডুগির বাজনা<br />শিরায় শিরায় প্রবাহিত ক্রোধের ফুটন্ত লাভা<br />অলি-গলি ভরে ওঠে রক্তের কালো দাগে।<br />মুজাহিদ শুধু আকাশ দেখ না, চারিপাশেও দেখ<br />আমাদের লুট হয়ে যাওয়া বিবেক জাগানোর দায়িত্ব নেও <br />ব্যথিত আত্মা আর্তনাদ করে সত্যের কাছে আসতে<br />এসব ছেড়ে তুমি অস্ত্র হাতে কোথায় যাবে?</p>
<br /><p>তুমি মানবতার কাছে এসে সবাইকে চমকে দাও<br />যাদের আকাশে অন্যায় অবিচারের কালো মেঘ<br />সামনে অসীম কুয়াশায় ঘেরা দিন<br />নীল চক্রান্তে উত্তাল সমুদ্রে ক্রমে ডোবে আশার তরী<br />যাত্রীরা দিন গোনে নিরাশার ছবি এঁকে<br />সেখানে অস্ত্র হাতে তুমি তাদের পাশে দাঁড়াও।</p>
<br /><p>তোমার ভুলে আমাদের বুকে লাগে ব্যথার সেল<br />তুমি চলেছ কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে?<br />তোমার সীমানায় ঘরে ঘরে ওঠে মজলুমের আহাজারি<br />ঘরে ঘরে ওঠে চাপা ক্রন্দনধ্বনি, শুনতে কি পাও?<br />নাকি এসব বাতাসের হাহাকার? একটু চেয়ে দেখ মুজাহিদ!<br />বন্ধ চোখে অস্ত্র হাতে তুমি কোথায় যাও?<br />তোমার পায়ের কাছে কবর থেকে ওঠে আসে <br />হাজারো মজলুমের বেদনার চিৎকার!<br />তুমি তাদের পাশে এসে দাঁড়াও।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ajo-sopno-dekhi/আজও স্বপ্ন দেখি2020-05-05T07:22:47-04:002023-06-24T20:40:35-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমরা আজও একটা স্বপ্ন লালন করি বুকে<br />টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া শিবগঞ্জ থেকে থানচি<br />গভীর রাতে অন্ধকারে একা এক কিশোরী হেঁটে যাবে<br />তার জন্য পথের মোড়ে মোড়ে আলো হাতে<br />সাহস দিতে দাঁড়িয়ে থাকবে অজ্ঞাত অচেনা লোক।</p>
<br /><p>লোভী নরপশু ভয়ে মুখ লুকবে মায়ের আঁচলে<br />বেপরোয়া বেয়াড়া যুবক মাথা নিচু করে <br />পথ ছেড়ে দিয়ে স্যালুট জানাবে পথে পথে<br />চোর ছিনতাইকারী যাদের চোখে চোখে স্বপ্ন ছিল<br />তারা ফিরে পাবে তাদের কাঙ্খিত সুন্দর জীবন।</p>
<br /><p>যেখানে থাকবে না ক্ষুধার্ত শিশুর হাহাকার<br />দারিদ্রের স্রোতে হারাবে না তাদের অমূল্য শৈশব<br />বই হাতে উল্লাসে ছুটে যাবে স্কুলের সীমানায়<br />শিক্ষকরা হবে আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান<br />তারা হবে জ্ঞানের আধার,শেখাবে আদর্শ নীতি <br />ধন গড়ার প্রতিযোগিতা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়ে<br />আজকের শিশু চরিত্র গড়ার প্রতিযোগিতায় নামবে।<br /> <br />শাসকেরা হবে রাষ্ট্রের সেবক মনুষ্যত্বের আমানতদারী<br />যেখানে বিনষ্ট মনুষ্যত্ব সেখানেই তারা ছুটে যাবে<br />ন্যায়ের নিশানা উড়তে দেখে ভয়ে কাঁপবে জালেমের আত্মা<br />মানুষের ব্যথায় আজো যারা সুযোগ খোঁজে<br />তাদেরকে বাধ্য করবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে<br />মানুষকে ভালবাসতে।<br />আমি আজও সেই দিনের স্বপ্ন দেখি<br />টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া শিবগঞ্জ থেকে থানচি<br />গভীর রাতে অন্ধকারে একা এক কিশোরী হেঁটে যাবে<br />ভয়হীন শঙ্কাহীন<br />তার জন্য আলো হাতে ছুটে আসবে অজ্ঞাত অচেনা লোক।<br />আমি আজও স্বপ্ন দেখি,স্বপ্ন দেখি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/sostho-jonmodin/এ আমার অঙ্গীকার2020-05-03T20:27:32-04:002023-06-24T20:41:03-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>জন্মে আমি কেঁদেছিলাম তোমরা হেসেছিলে<br />আমার মুষ্টিবদ্ধ হাতে ছিল শপথের অঙ্গিকার<br />তোমাদের জন্য আরও কাঁদব আমি; ক্ষতি নেই তাতে!<br />তোমাদের ক্রন্দনে বুকে পাথর বাঁধতে আসিনি<br />অত্যাচারী শাসকের বুকে কালো পতাকা উড়াতে এসেছি<br />তাদের লম্বা কালো হাত ভেঙ্গে ফেলব!<br />তাদের মুখ দিয়ে বিষাক্ত রক্তের ধারা বইয়ে দেব!!<br />আমি ক্লান্ত নই<br />আমি বিশ্রাম নিতে আসিনি, পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দিতে এসেছি।</p>
<br /><p>আমি এসেছি স্বপ্ন দেখাতে, এসেছি লড়াই করতে<br />এসেছি আশাহীনদের নেতৃত্ব দিতে<br />মীরজাফরদের সাথে আপস করতে আসিনি।<br />আমি ইতিহাস পড়তে আসিনি, ইতিহাস সৃষ্টি করতে এসেছি<br />ন্যায়ের ইতিহাস, জীবনের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস<br />মৃত্যুকে ভয় করতে জন্মাইনি আমি, জন্মেছি জয় করতে।<br />নিপীড়িত মানুষের আর্তনাদ, হিংস্র শাসকের দিনলিপি<br />এখন ইতিহাসের বাতিল পাতা।</p>
<br /><p>অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, ঘুষ, চুরি, খুন, ছিনতাই দেখে দেখে<br />জীবনের ক্লান্তি যখন তোমাদের ঘিরে ধরেছে<br />তখন মুক্তি এনে দিতে তোমরা যাকে খুঁজেছ<br />সে এই আমি।<br />গভীর দু:স্বপ্নের রাতে যাকে ব্যাকুল হয়ে খুঁজেছ<br />সে এই আমি।<br />জন্মেছি এক সাধারণ ঘরে<br />মরে গিয়ে রইব আমি সাধারণ মানুষের ভিড়ে<br />তোমাদের মাঝে এ আমার একমাত্র অঙ্গীকার।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/echsa-chilo-nayok-hobo/ইচ্ছা ছিল নায়ক হব2020-04-29T18:54:19-04:002023-06-24T20:40:49-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ইচ্ছা ছিল নায়ক হব,স্বপ্নে বিভোর ছিলাম নায়ক হব<br />গুণ্ডা,বদমায়েশ,দুর্নীতিবাজদের সব ফাইট করে হটিয়ে দেব<br />পথে প্রান্তরে বনে জঙ্গলে হাজারো নায়িকার চিৎকারে<br />অসহায় মানুষের ক্রন্দনে,নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে<br />চোখের পলকে উড়ে আসব;আমি ভীষণ প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি।</p>
<br /><p>সরকারী অফিসে ঘুষখোরেরা টেবিলে টেবিলে ঘাঁটি গেড়েছে<br />তীব্র প্রতিরোধের মুখে ফাইল ইঞ্চি ইঞ্চি করে এগিয়ে যায়<br />আমি তাদের হাত জোড় করে<br />হুজুর হুজুর বলে সেলাম ঠুকে যায়।<br />জোচ্চোর,সমাজবিরোধীরা যখন রাজনীতির হাতিয়ার তুলে<br />আইন ও বিচারের চোখে টাস টাস করে গুলি করে<br />তখন আমি বলদের মতো লেজ তুলে ভয়ে পালিয়ে যায়<br />বিপদের গন্ধ আমার প্রতিবাদের কণ্ঠ রোধ করে দেয়।</p>
<br /><p>প্রকাশ্য দিবালোকে বখাটে লম্পট ছেলেরা<br />রমণীদের গাঁয়ে কলঙ্ক আঁকে<br />সমাজের আনাচেকানাচে অন্যায় অবিচারের মেলা বসে<br />দেশপ্রেমিক আর জ্ঞানীরা<br />আমাদের এই রঙ্গমঞ্চে সঙ সেজে লোক হাসায়<br />আমজনতা দর্শকের গ্যালারী থেকে প্রবল বেগে হাততালি দেয়<br />এইসব দেখেশুনে<br />উটপাখির মতো বালির স্তূপে মুখ গুঁজি আমি<br />তখনও আমার নায়ক হওয়ার প্রস্তুতি শেষ হয়নি।</p>
<br /><p>ক্ষমতার দাপটে আছে সিংহের শক্তি হায়েনার ধূর্ততা<br />প্রেম-প্রীতি মানবতা-বিবেক তাদের কাছে মাংসের টুকরো<br />আমাদের রাষ্ট্রের সাহসী ও আদর্শবানেরা সব হরিণ শাবক<br />কখন কার ঘাড় মটকাবে সেই ভয়ে তটস্থ তারা<br />ক্ষমতা-লোভী সিংহের হামলায়<br />এইসব নিরীহ হরিণ শাবকের মৃত্যুসংবাদ<br />পত্রিকার পাতায় বড় বড় শিরোনাম হয়।<br />বিচলিত হয়ে<br />একহাত মুষ্টি করে নায়কের মতো দৌড়ে যায়<br />সামনে পড়ে গিয়ে তাদের চোখ রাঙানো দেখে ভয়ে<br />কুকুরের মতো<br />কুঁইকুঁই শব্দ করে লেজ গুটিয়ে পিছিয়ে আসি<br />কারণ তখনও আমি নায়ক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।</p>
<br /><p>হে বৎস আর কতকাল লাগবে তোমার প্রস্তুতি নিতে?<br />জরা-রোগ-ব্যাধি যখন তোমার মেরুদণ্ডকে<br />ধনুকের মতো বাঁকিয়ে দেবে<br />তখন দুর্বল একখান লাঠি হাতে দাঁড়াতে পারবে কি?<br />তোমার সাহসের মেরুদণ্ড যদি এখনও কেঁচোর মতো থাকে<br />তাহলে আর দেরী কেন? নায়ক হওয়ার স্বপ্ন ত্যাগ কর।<br />তেলের ড্রাম হাতে মোসাহেব হয়ে যাও।</p>
<br /><p>উনষাট বছর পেরিয়ে গেল<br />এখনো আমার নায়ক হওয়ার প্রস্তুতি শেষ হয়নি!<br />শামুকের মতো গুটিয়ে গিয়েও স্বপ্ন দেখি আমি নায়ক হব।<br />অন্যায় অবিচার রুখে দিতে,দুর্বল মানুষের সহায় হতে<br />মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে,আশাহীনদের নেতৃত্ব দিতে<br />চোখের পলকে উড়ে আসব<br />তাই আমি ভীষণ প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছি নায়ক হব! নায়ক হব।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/chohker-jole-mlan-sopnogulo/ চোখের জলের ম্লান স্বপ্নগুলো2020-04-28T19:31:32-04:002023-06-24T20:40:47-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমারা যাকে নির্বাচিত করেছি<br />সে আমাদের সামনে বুক ফুলিয়ে হেঁটে যায়<br />তার হাতের রক্তের দাগ প্রকাশ্যে ধুয়ে ফেলে।<br />কেউ নেই তার সামনে গিয়ে বলি, ‘তোমার বিচার হবে’<br />এমনকি তার সামনে কেউ ক্রোধে ঘৃণায় জ্বলে উঠি না<br />সকলে থাকি নিরাপদে নিজ নিজ ভাবনা নিয়ে।</p>
<br /><p>বুকের জমিন অন্ধকারের শক্তি চেপে ধরেছে<br />নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়<br />প্রতিটা মানুষের দিকে তাকাও; তারা কিছু বলতে চায়<br />এসব ভাড়াটে জল্লাদের রাজ্য থেকে তারা মুক্তি চায়<br />মাটিতে কান পেতে শোন মানুষের আর্তনাদ<br />জীবন যেন স্থির হয়ে আছে নতজানু ক্রীতদাস!</p>
<br /><p>মানুষের স্বপ্ন সাধ নিয়ে আমাদের নেতারা খেলা করে<br />তাদের মুখে আশার কথা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি<br />হৃদয়ের গহিনে বিদ্যুৎ চমকায়; বুকের যন্ত্রণায় ঘুম ভাঙে<br />কেন একবার মানুষের ছেলের মতো ফুঁসে উঠতে পারি না!<br />আমরা সকলই যেন বিকলাঙ্গ, বোবা<br />রক্তচক্ষু শূয়রেরআস্ফালনে আমরা লেজ নেড়ে নতজানু<br />আমরা কি সত্যিকারের মানুষ!<br />চোখের জলের ম্লান স্বপ্নগুলো বাতাসে কাঁপে<br />অসহ্য এক চেতনায়!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ami-ghumiye-asi/আমি ঘুমিয়ে আছি2020-04-25T21:34:58-04:002023-06-25T13:41:19-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>চারিদিকে আগুন জ্বলে ঘরে ঘরে <br />চাপা কান্নার বিস্ফোরণে পৃথিবী কেঁপে কেঁপে ওঠে<br />রাস্তার মোড়ে মোড়ে আদিম সভ্যতা ফিরে এসেছে<br />জ্বলে উঠেই নিভে যায় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর<br />এসব দেখেও সবাই আপোষকামী মানুষ হয়ে<br />ক্রমে ফিরে যায় মধ্যযুগে<br />একে অপরের মুখের দিকে সন্দেহের চেখে তাকায়<br />নীরব ভাষায় তথ্যের আদান প্রদান<br />‘সব চেপে যান..., সব চেপে যান...’<br />চাপতে চাপতে বুকের হৃৎপিণ্ডটাই খামচে ধরেছে শকুন<br />আর আমি ঘুমিয়ে আছি।</p>
<br /><p>মেহনতি মানুষের ঘামে ভাগ্য বদলায় মালিকের<br />শ্রমিক মজুর যারা গড়ে তোলে কারখানা ইমারত<br />তারা পায় না সম্মান,পায় না অধিকার <br />বেতন অধিকারের দাবিতে জটলা পাকায় রাজপথে<br />দু’একটি প্রতিবাদী কণ্ঠ স্লোগানে ঝড় তোলে<br />মুহূর্তে পুলিশের হুইসলে বেজে ওঠে আবহ সংগীত<br />থেমে যায় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর,তখনও আমি ঘুমিয়ে আছি।</p>
<br /><p>সরকারী টেবিল চেয়ার ইজারা নিয়েছে গুটিকয়েক কর্মকর্তা<br />ঘুষ দুর্নীতি রূপ নেয়েছে মহামারী,আমরা নির্বিকার<br />ভোগ বিলাসে মত্ত কতিপয় কর্মনিষ্ঠ আমলা<br />শোষণ নিপীড়ন চলছে নগ্ন চোখে আপোষহীন<br />মুক্তিকামী মানুষগুলোর স্বপ্নের মৃত্যু ঘটে প্রতিনিয়ত<br />যাদের অমূল্য আত্মদানের বিনিময়ে এই দেশ<br />তাদের সেই স্বপ্নগুলো ধুলোর আস্তরণে মলাট বন্দী <br />আর আমার চোখে এখন কুম্ভকর্ণের নিদ্রা।</p>
<br /><p>মানবতার বিরুদ্ধে যারা আরও রক্ত ঝরাতে মত্ত<br />তাদের রক্তের ভাষার জবাব রক্ত দিয়ে আসে না<br />ভয়ে ক্ষীণ কণ্ঠে বেরিয়ে আসে কুইকুই স্বর<br />সুবিধাবাদীদের দুর্বার তরঙ্গের টানে<br />গা ভাসিয়ে দেই অবলীলায়<br />বিবেকের দংশন হয় না,আসে আনন্দ<br />মৃতদের শশ্মানে জীবনকে জাগাতে কেউ এগিয়ে আসি না<br />অথচ রক্তের অক্ষরে ইতিহাস সংগ্রামের ডাক দিয়ে যায়<br />সে ডাক আমি শুনি না; আমি যে ঘুমিয়ে আছি!</p>
<br /><p>পড়ে পড়ে মার খেয়ে খেয়ে<br />আমাদের বিবেক বুদ্ধি নষ্ট হয়ে গেছে, আমরা ভীত<br />কোন রকমে জানটা বাঁচিয়ে রাখতে পারলেই খুশি<br />হৃদয়ের দীনতা আঁকড়ে ধরেছে মিথ্যার আধিপত্য<br />তবুও কেউ কেউ ভুল করে প্রতিবাদের ডাক দিয়ে যায়<br />লাশের স্তূপের মাঝে ভূলুণ্ঠিত হয় তার বিজয়ের পতাকা<br />তার রক্তের বদলা নিতে কেউ ছুটে আসে না<br />শ্রদ্ধা নিবেদন হয় একান্ত গোপনে,কাকপক্ষীও টের পায় না<br />ক্রমে ক্রমে ভেঙে পড়ছে <br />আমাদের প্রতিরোধের ব্যূহ,আমাদের স্বপ্ন<br />আর আমি ঘুমিয়ে আছি,ঘুমিয়ে আছি!!</p>
<br /><p>সুপ্ত আগ্নেয়গিরি বুকে নিয়ে আমি ঘুমিয়ে আছি<br />প্রচণ্ড বিস্ফোরণে আমি জেগে উঠে পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দেব।<br />যাদের জীবনের বলিদানে এই দেশ<br />যাদের রক্তে ভেজা এই মাটি<br />তাদের রক্ত ছুঁয়ে শপথ নিয়েছি<br />তাদের বিজয়ের নিশানা এ মাটিতে উড়াবোই উড়াবো<br />দিগন্তের কালো মেঘ কেটে উঠবে প্রতীক্ষার সোনালী সূর্য<br />যারা এখনো ঘুমিয়ে আছে তারা জেগে দেখবে<br />আমাদের সংঘবদ্ধ শক্তির কাছে সকল অশুভ শক্তির পরাজয়!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ami-o-amader-sontan/আমি ও আমাদের সন্তান2020-04-21T06:19:07-04:002023-06-24T20:40:41-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমি আমার সন্তানদের বলি, ‘লেখাপড়া শিখে তোরা মানুষ হ’<br />তারা কি বোঝে কে জানে!<br />তবে তাদের চোখে মুখে ফুটে ওঠে আত্মবিশ্বাস<br />দেখে আমি পুলকিত হই, মানুষ তারা হবেই হবে<br />একদিন আমার সন্তান আমাকে আচমকা প্রশ্ন করল</p>
<br /><p>‘মানুষ হওয়া কাকে বলে, বাবা’?<br />তখন আমার চোখের সামনে কোন মুখ স্পষ্ট হয়ে এলো না<br />আমি চারপাশে তাকালাম, তারপর আরও দুরে<br />মহল্লা থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে শহর, শহর থেকে শহর<br />আমার সন্তানকে দেখানোর মতো কাউকে পেলাম না!<br />আমার বুক ধকধক করে উঠল, সে যদি আমার মতো হয়!!<br />না, এরকম হতেই পারে না<br />আমার সন্তানেরা হবে মানুষ, মস্ত বড় মানুষ!<br />আমার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে আমার সন্তান আবার প্রশ্ন করল<br />‘কি ভাবছ বাবা’? <br />কই কিছু না তো! আমি জবাব দিলাম হাসিমুখে<br />আমি বললাম, মানুষ হওয়া মানে ক্যারিয়ার গড়া<br />ভালো করে মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে নে, বুঝলি?<br />সেই থেকে তারা মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছে<br />ডাক্তার, ইঞ্জিনয়ার, জজ, ব্যারিষ্টার, বিজনেস, সর্বপোরি মুনাফা গড়া।<br />আমাদের সন্তানকে আমরা দম দেওয়া পুতুলের মতো ছেড়ে দিয়েছি<br />লাভের পেছনে ছুটতে ছুটতে তারা একদিন<br />বন ধ্বংস করবে, পাহাড় ধ্বংস করবে, নদী-নালা ভরাট করে ফেলবে<br />যুদ্ধ বাধাবে, আমাদেরকে বিকিয়ে দেবে, তাতে কি!<br />আমরা তাদের আত্মোন্নয়নের কথা কিছু শেখায় না<br />তাদের হৃদয়টা কোমল করতে, ভেতরের মনুষ্যত্বটা জাগ্রত করতে<br />মানুষকে ভালবাসতে কেউ বলি না<br />মানুষের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে কথা বলতে আমরা কেউ-ই বলি না<br />সে যেন অনুভব করতে পারে <br />ঘাসের বুক থেকে শিশিরের ঝরে যাওয়ার বেদনাও<br />আমরা আমাদের সন্তানদের দিয়েছি অসুখ<br />গভীর গভীরতর অসুখ, সবকিছু অনাচার দেখে নিলির্প্ত থাকার অসুখ।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tomake-khub-bhalo-lage/ তোমাকে খুব ভাললাগে2020-04-20T05:42:15-04:002023-06-24T20:41:06-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তোমাকে খুব ভাললাগে—সে কথা তো তুমি জান!<br />সবাই যাকে প্রেম বলে-তুমি তাকে কি বল?<br />কিছুই যদি না-ই বল,<br />তাহলে ঐ চোখ দিয়ে আমাকে কেন টান?<br />তুমি কি ভয় পেয়ে চুপ করে থাকো?</p>
<br /><p>তোমার রূপে থাকে রঙের বাহার<br />ঢেউয়ের মতো মুহূর্তেরা যায় আমার চোখে আঁধার<br />বহুকাল আগে থেকে আমি তোমাকে বেসেছি ভাল<br />যেন ঐ দু’চোখে সাজানো থাকে এক অপরূপ মায়া<br />সুনীল আকাশের তলে<br />কেবল আমি দেখি জ্বলে একজোড়া সন্ধ্যাতারা<br />তুমি যদি থাকো আমার সাথে ভেবে আমি দিশেহারা! <br />তাহলে তখন শুধু দু’জনার স্বপ্ন দেখার পালা।<br />আর নাই বা বাসলে ভালো!<br />আমার জীবনের ট্রেন আগামীর দিকে।<br />তোমার রূপের স্তুতি করি তার-ই-বা সময় কোথায়?</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amar-mutophone/আমার মুঠোফোনে2020-04-17T10:50:51-04:002023-06-24T20:40:38-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমার মুঠোফোনে প্রথম যেদিন বাজল তোমার কণ্ঠস্বর<br />ঝিম মারা এই শরীরটাতে লাগিয়ে দিলে ঝড়<br />যেন ছলাত করে অমৃত সব পড়ল এসে প্রাণে<br />তার নেশাতে বেহুশ হলাম সবকিছু তখন ভুলে।</p>
<br /><p>মন নাচল পাখা মেলে উসকে দিল বুকের আগুন<br />কথার গাড়ি চলল বেগে নৃত্য করে<br />এক নিমিষেই বৃষ্টি হয়ে নিভিয়ে দিলো মনের আগুন।<br />তারপরেতে শুধু একটা কথাই বলার ছিল<br />-‘কি কথা?’ কেবল সেই কথাটি-ই মনে ছিল!<br />সেই কথাটি বলতে পেরে স্বপ্ন দেখার জ্বালা ছিল।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/sei-seleta/সেই ছেলেটা2020-04-14T14:25:37-04:002023-06-24T20:41:02-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>পয়সাওয়ালা কতিপয় শকুনের শ্যান দৃষ্টি জায়গাটার উপর<br />এখানে আগুন লাগবে,জলের কল বন্ধ হবে,হবে আরও কিছু <br />কে দেয় আগুন সেখানে? কে পুড়িয়ে মারে মানবতা?<br />গোটা বস্তিতে দাউ দাউ জ্বলছে আগুন<br />ধূয়ার কুণ্ডলী আকাশে পাকিয়ে ওঠে<br />একটা ছেলে তার কান্না থামিয়ে দুরে দাঁড়িয়ে দেখছে<br />প্রতিশোধের আগুনের কুণ্ডলী তার বুকের মধ্যে পাকিয়ে ওঠে।</p>
<br /><p>তার মা বাবা আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে<br />পোড়া বীভৎস গন্ধ তার নাকে এসে লাগে<br />তার ছোট বোনটা কি পুড়ে গেল? কার সন্তান পুড়ে যায়?<br />সে কিছুই দেখে না,কিছুই শোনে না<br />অসহ্যতায় সে সরিয়ে নেয় চোখ।</p>
<br /><p>একদিন একরাত যেন তাদের চোখ মেঘলা আকাশ<br />সারাদিন চোখ ফেটে শুধু জল ঝরে<br />গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে-‘কি দারুণ শিল্প এক!’<br />চোখের জল মুছে তারা উঠে দাঁড়ায়<br />এতটুকু এক আশ্রয়ের জন্য জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে না।</p>
<br /><p>একদিন ঝকঝকে চাঁদের আলোয় সেই ছেলেটাকে<br />পোড়া ঘরগুলোর মাঝে হাঁটুতে মুখ গুজে <br />কাঁদতে দেখেছিল তাদের একজন,যারা আগুন দিয়েছিল<br />কণ্ঠ গর্জে উঠেছিল,‘কোন শালা এখানে কাঁদে?’।<br />তারপর থেকে তাকে আর দেখা যায় না<br />কে খোঁজে? বইয়ের ছেঁড়া পাতার খোঁজ কে রাখে?</p>
<br /><p>অনেকদিন পর পাওয়া গেল তাকে খবরের কাগজে<br />পুলিশের অসংখ্য ডায়েরির মাঝে<br />যারা পুড়িয়েছিল তাদের ঘর আজ তারা আতঙ্কিত<br />সেই ছেলেটার বুক এখনও পোড়ে, এখনও সেখানে আগুন জ্বলে<br />অস্ত্রের প্রতিটি ট্রিগারের টিপে শীতল হয় তার বুকের আগুন।</p>
<br /><p>খেয়ে না খেয়ে দিন গেছে, তার দিকে কে বাড়িয়েছে হাত?<br />দয়ামায়া সকলেরই আছে, পথের ছেলেটাকে কে করে দয়া?<br />আবর্জনার স্তূপে জমা হয় কয়েকটা প্রাণ!<br />তারা শুধু সংখ্যা মাত্র! কে দেয় তাদের দাম!<br />বকুল ফুলের গন্ধ,পারফিউমের গন্ধ তারা জানেনা<br />কখন কার জন্মদিন কেউ তার খোঁজ করে না<br />গ্রিল চিকেন,কাবাব তন্তুর রুটির গন্ধ শুকে তারা বড় হয়<br />বিফ স্লিজিংয়ের মতো ভেতরটা তাদের আগুন!</p>
<br /><p>সে জানে পয়সাওয়ালা সেই শকুনদের দৃষ্টি এখন তার দিকে<br />তারা তাকে বেশিদিন বাঁচিয়ে রাখবে না<br />তবুও সে যে কয়টাকে পারে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবে<br />লাভ কি তাতে? আরও জন্ম নেবে দুই,চার,আট জ্যামিতিক হারে<br />যারা গণতন্ত্রের কথা বলে <br />কথায় কথায় দু’দশটা লাশ ফেলে তাদের আমরা মেনে নিই<br />যারা কলমের খোঁচায় পকেট ভরায় তাদের আমরা মেনে নিই<br />যারা সরকারী অফিসে হাত পেতে থাকে তাদের আমরা মেনে নিই<br />যারা মাঝ রাতে মাতাল হয়ে ফেরে তাদেরও আমরা মেনে নিই<br />কিন্তু যারা ঐসব লোকদের থেকে অস্ত্র হাতে লুট করে আনে<br />ছন্নছাড়া মানুষের জন্য,বঞ্চিত মানুষের জন্য<br />তাকে আমরা মেনে নেই না;অভিশাপ দিই!</p>
<br /><p>সেই ছেলেটা মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে ঘর ছেড়েছিল<br />আর দেখা হয়নি তাদের;বার বার মায়ের মুখটা তার মনে পড়ে<br />সে থাকে বিলাসিতায় হোটেলের রুমে নয়তো কারাগারে<br />বকুল ফুলের গন্ধ সে খুব পছন্দ করত<br />সে চেয়েছিল প্রিয়তমার খোপায় বকুল ফুলের মালা জড়িয়ে<br />এক বাহুর মধ্যে ধরে মায়ের সামনে হাসিমুখে দাঁড়াবে<br />নাকে এসে লাগবে বকুল ফুলের ঘ্রাণ! আহ্ !<br />অস্ত্র হাতে সে রক্তের নদীতে তুফান আনতে পারে <br />অথচ বকুল ফুলের মালা খোপায় জড়াতে পারে না।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tumi-aporup/তুমি অপরূপ2020-04-12T06:14:32-04:002023-06-24T20:41:07-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>প্রিয়া তুমি সুন্দর!<br />কেউ বলুক আর নাই বলুক আমি বলি<br />আমার দেখার আগে তুমি ছিলে না এত রূপসী<br />তুমি ছিলে পাতায় ঢাকা বনফুল<br />যেদিন কবির চোখ দিয়ে আমি তোমাকে দেখলাম<br />যেদিন তোমার চোখে নতুন প্রেমের আলো ছড়ালাম<br />সেদিন অকস্মাৎ ছড়ালে তুমি হাসনাহেনা ফুলের সৌরভ।</p>
<br /><p>সকলের কাছে ছিলে কাঁচ<br />জহরী সেজে আমিই চিনিয়েছি তাদের তোমার দাম!<br />আমি তোমাকে দিয়েছি প্রেমের পরশ তুমি ছড়িয়েছ আলো<br />তোমার ছিল না কদর আমি আসার আগে<br />আমি সবাইকে দিলাম তোমার রূপের সন্ধান<br />তাই তোমার এত খ্যাতি<br />তুমি ভাবছ মিথ্যা কথা! তা নয় প্রিয়া!<br />আমি যে তোমাকে দেখেছি ভালোবাসার চোখ দিয়া<br />সসীমের মাঝে অসীমের ছায়া পড়ে<br />যত দেখি মনে হয় আরও যেন থাকে বাকী!<br />তুমি যেন কোন অজানা দেশের মেয়ে<br />পথ ভুলে হয়েছ বন্দিনী,চিররহস্য আছে ঐ মুখ ছেয়ে!</p>
<br /><p>যদি ভুল বুঝে থাক তুমি ভোল সে সব কথা<br />ঐ হাসি মুখ,ঐ রাঙা ঠোঁট সব বিধাতার দান<br />ঐ রূপ অপরূপ সে আমারই কল্পনা,সে আমারই ভালোবাসা<br />আমার কল্পনার প্রেম কুঞ্জবনে বসে ফুল কুমারী হাসে<br />কে বলে আমি তোমাকে পাই নাই! পেয়েছি পেয়েছি তোমাকে!<br />আমার মুখপানে চেয়ে হেসেছ,আমার পাশে এসে বসেছ<br />তোমার নরম হাতের স্পর্শ আমাকে দিয়েছ<br />এই কি যথেষ্ট নয়! আর কি চাই!<br />তোমার ঐ রূপ যেন অপরূপ<br />মনে হয় তোমার ঐ দুটি আঁখি যেন দুর আকাশের পাখি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/atodine-tumi-chile/এতদিনে তুমি ছিলে 2020-04-06T17:10:54-04:002023-06-24T20:40:44-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>এতদিনে তুমি ছিলে শুধু শোভাময়ী<br />তোমাকে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় যুবকেরা সাধনায় মগ্ন ছিল<br />তাদের এলোমেলো স্বপ্নগুলো অপূর্ণ রেখে<br />হঠাৎ একদিন নিলামের ডাকে তোমাকে পেলাম<br />তুমি লাজুক হেসে আমার কাছে এসেছিলে<br />তোমার ঐ চোখের দিকে চেয়ে বুকের মধ্যে ঝড় উঠেছিল।</p>
<br /><p>তারপর সকালের কুমারী সন্ধ্যায় বেনারসি পরে<br />এসেছ আমার ঘরে<br />মায়াবী ঐ চোখে ছিল না কাজল, ছিল শুধু জল।<br />আমি শুধু জানি, তুমি সব সীমারেখা পার করে<br />এসেছ আমার কাছে তোমার কল্যাণ দ্বীপ জ্বালাতে<br />না পাওয়া বুকের তৃষ্ণা মিটাতে<br />তখন জৌলুসে ভরা রাঙা স্বপ্নগুলো উঠেছিল নেচে।</p>
<br /><p>স্বপ্নের আবেগে গভীর নীরবতা ভেঙ্গে<br />দুজনার দুটি দীর্ঘশ্বাস পড়েছিল একসাথে<br />জীবনে সেই তখন প্রেম হয়েছিল বুঝি !! হয়তোবা।<br />সেই প্রেমকে তোমার মাঝে আমি এখনও খুঁজি !</p>
<br /><p>যখন জীবনের ব্যস্ততা তোমাকে ছেড়ে<br />আমাকে অনেক দূরে নিয়ে যায়<br />শরীরের ক্লান্তিতে বিছানায় ঢলে পড়ি<br />মাঝ রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়; সেই প্রেম আমাকে জাগিয়ে দেয়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/fule-fule-ronger-barud/ফুলে ফুলে রঙের বারুদ2020-04-03T17:36:13-04:002023-06-24T20:40:51-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ফুলে ফুলে রঙের বারুদ জ্বালিয়ে দিয়ে<br />মনের বাগানে<br />একটি মাত্র গোলাপ ফুটে আছো সে তুমি,<br />এখন শীতার্ত বনের বুকে বইছে বসন্তের হাওয়া।</p>
<br /><p>রাতের গভীরে<br />ঝিরিঝিরি বাতাসে মাতাল করা গন্ধ ভেসে আসে,<br />যেন সন্ধ্যা বেলায় হাসনাহেনা ফোটে<br />তোমায় পেতে গন্ধ তারা ঢালে,<br />এক তীব্রতা টেনে নিতে চাই শুধু তোমার কাছে।</p>
<br /><p>পথহারা নিবিড় বনে পিপাসার্ত প্রাণের কাছে<br />তুমি ঝর্ণার এক আঁজলা জলের মতো।<br />খাঁ খাঁ রোদের নির্জন দুপরে তুমি গাছের শীতল ছায়া<br />জোছনা রাতে একা পথের দুর্লভ একমাত্র সঙ্গী;<br />তুমি এক সুমধুর স্বপন,<br />অমাবস্যা রাতে হঠাৎ উঠা ঘূর্ণি ঝড়ে<br />টালমাটাল নৌকার ভিতর থেকে আকুল হয়ে দেখা<br />দূরের আলো জ্বালা জাহাজের মতো তুমি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/garments-kormi/গার্মেন্টস কর্মী2020-04-01T15:19:19-04:002023-06-24T20:40:51-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>কাক ডাকা ভোরে অপুষ্টি আর অর্ধাহারে থাকা<br />গার্মেন্টস কর্মীরা পিঁপড়ার মত দল বেঁধে<br />বুকে দুঃসহ যন্ত্রণা চেপে মুখে হাসি ধরে ছুটে চলে<br />আর স্বপ্ন আঁকে সুদিনের। <br />কিন্তু হায়! সে দিন তো আর আসে না।</p>
<br /><p>প্রবেশ করে তালা দেয়া ইটের বদ্ধ খাঁচায়,<br />বিচ্ছিন্ন পৃথিবীতে,আনন্দহীন একঘেয়ে পরিবেশে।<br />সেদিন তালাবন্ধ কারখানায় আগুন লেগেছিল<br />জীবন্ত দগ্ধ সকিনা আর শিউলি;<br />পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে <br />আরও কয়েকটা রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে সিঁড়ির উপর।</p>
<br /><p>বারে বসে মদের পেয়ালা হাতে নিয়ে<br />টাকার বান্ডিল ছুঁড়ে মারো তোমরা নর্তকীর গায়ে<br />অথচ এখানে চাঁদা তুলে<br />শ্রমিকেরা বাবাকে পাঠাল মেয়ের লাশ<br />সেই বাবার বুকে কত আশা ছিল, প্রেম ছিল, ভালোবাসা ছিল। <br />বুক ভেঙ্গে গেল তার! কি নিয়ে ঘর বাঁধবে সে?<br />মেয়েগুলো এখানে বাঁচতে এসেছিল<br />অথচ নিষ্ঠুর এই পৃথিবী তাদের বহিষ্কারের আদেশ জানাল<br />অবশেষে তারা আর্তনাদ নিয়ে<br />খালি হাতে পৃথিবী থেকে চলে গেল।<br />জীবনের পাতায় পাতায় সংগ্রাম, শোষণ আর বঞ্চনার<br />ইতিহাস লিখে গেল।</p>
<br /><p>কাজের চাপে তাদের যন্ত্রণার ইতিহাস মুছে যায়<br />ওভার টাইমের শৃঙ্খলে ভাগ্য ঝুলতে থাকে<br />শোকের বদলে পশুপাখির জীবন মেনে নেয়।<br />এ এক জীবনে তারা আর কত কষ্ট পাবে?<br />জীবন-আঁধারে আলোর প্রদীপ বুঝি আর জ্বলানো গেল না!</p>
<br /><p>কারখানার নির্মম নিয়মে তারা বিসর্জন দেয়<br />প্রিয়জনের কাছে থাকার সুখ।<br />তবুও স্বপ্ন আছে,মাস ফুরলে বেতন পাবে<br />ছেলেটাকে ডাক্তার দেখাবে, অনেকদিন পর ঈদে বাড়ি যাবে।<br />এত প্রতীক্ষা!<br />অথচ খবর এলো বোনাস নেই,বেতন পাবে অর্ধেক।<br />খবর শুনে বুকে বেদনার পাথরে পাথর ঘষে জ্বলে উঠলো আগুন<br />চাকরী অনিশ্চিত করে <br />বেতনের দাবিতে সবাই দলে দলে রাস্তায় নেমে এলো<br />পুলিশের হুইসিলে বেজে উঠে আবহ সংগীত<br />মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে যায় বিপ্লবী কণ্ঠস্বর<br />পুলিশের লাঠি তাদের কোমল শরীরে উল্কি এঁকে দেয়<br />তাদের ঘাম ঝরা কপালে তাজা রক্ত ঝরে।</p>
<br /><p>তোমরা যারা আছো সুখে দেখেছ কি কখনো?<br />অভাবের তীব্রতায় বেঁচে থাকার আকুলতা ।<br />যাদের ঘামের স্রোতে ভেসে গেছে তোমাদের সব কষ্ট<br />গড়ে উঠেছে তোমাদের বৃহৎ অট্টালিকা।<br />বিলাসিতা আর লোভের পর্দা দিয়ে ঢেকেছ তোমাদের চোখ<br />তাই তাদের দেখনি।<br />কিন্তু বিধাতার খাতায় সব হিসাব জমা আছে<br />একদিন তার কাছে তোমরা কাঁদবে এই শ্রমিকের মতো<br />সেই দিন আসিতেছে আরশে বসে হাসছেন বিধাতা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/rater-govire-mogno-josnai/রাতের গভীরে মগ্ন জোছনায়2020-03-27T15:37:48-04:002023-06-24T20:41:01-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>রাতের গভীরে মগ্ন জোছনায় বাতাসে ভাসে<br />হাসনাহেনার গন্ধ<br />চাঁদের মত মেঘ ভেঙে উঠে এলে তুমি স্মৃতির আকাশে<br />রাতের নিস্তব্ধতায় হৃদয় জেগে দেখছে তোমাকে।</p>
<br /><p>যে তুমি আমাকে শিখিয়েছিলে প্রেম<br />সেই তোমাকে আমার সীমানাতে বাঁধতেই<br />তুমি শিশিরের শব্দের মতো হারিয়ে গিয়েছ<br />হৃদয়ে জ্বেলেছ তুষের আগুন।<br />সে আগুনের উত্তাপে উড়ে গেছে দু’চোখের সব ঘুম<br />একে একে ফুরায় স্লিপিং পিলের পাতা<br />জেগে থাকি প্যাঁচার মত।</p>
<br /><p>তোমার লোভী মনে আরও কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল<br />বুঝিনি আমি।<br />যতটুকু চেয়েছ সব দিয়েছি তোমাকে<br />আমার প্রেম আর অনুরাগ নিয়ে তুমি দিয়েছ বিষের পুঁটলি।<br />আমার মনে জাগে নি:স্বার্থ ভালোবাসা<br />তোমার মনে থাকে অতৃপ্ত বাসনা<br />তুমি চাও দেবীর মতো বহুজনের ভালোবাসা।<br />ভালোবেসে যে হৃদয় ছিঁড়ে তোমাকে দিলাম <br />বিনিময়ে সেই হৃদয় দলে<br />তাজা রক্তের আলতা পরালে তোমার পায়।</p>
<br /><p>আমার ভালোবাসার নৌকা নিয়ে<br />তোমার ভালোবাসার ফসল বিকিয়েছ যারে<br />সে তোমাকে তার শখের সাজানো শো-কেসে রাখবে চিরকাল?<br />তোমাকে নিয়ে সে মনের সুখে খেলা শেষে<br />অবহেলায় ছুঁড়ে দিলে<br />বুকে ব্যথা পেলে মনে করো একদিন কেউ ভালবেসেছিল<br />তারই হৃদয় দলে রক্তের আলতা পরেছ তুমি;তোমার পায়।<br />তোমার বক্ষে সেই প্রেমের স্মৃতিচিহ্ন আঁকা রবে চিরকাল।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/rater-nirjone/রাতের নির্জনে2020-03-20T09:09:41-04:002023-06-24T20:41:01-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>রাতের নির্জনে চুপিচুপি ঝরে পড়ে জোছনা<br />অপলক চাঁদ জেগে আছে আকাশের গায়ে<br />খোলা বারান্দায় আমি একা।<br />জোনাকির আলোর মতো ভেসে ভেসে<br />আমার স্মৃতির বাগানে তুমি জ্বালছ আলো।<br />আমার এ অবুঝ চোখ<br />একদিন তোমাকেই বুঝি পেয়েছিল খুঁজে!!</p>
<br /><p>বন্দি স্মৃতি কাঁদছে আমার বুকে ছাইচাপা আগুনের মতো<br />ক্ষুধাতুর দুটি আঁখি তুলে মেঘের ঘোমটার ফাঁকে<br />অতি দূর তারকায় দেখি তোমার মুখ।<br />আলেয়ার আলো হয়ে আমারে ডেকেছিলে পার্কের নরম ঘাসে<br />বকের ছানার মতো এলোমেলো ডানা মেলে<br />স্বপ্নরা উঠেছিল নেচে।<br />তারপর মাঝপথে সব থেমে গেল<br />শকুনের মতো শূন্যে ডানা মেলে <br />দূরে, আরও দূরে উড়ে চললে।</p>
<br /><p>যৌবনের রাঙা আলোয় এসে<br />জীবনের বসন্ত উৎসবে একখানি শূন্য পাত্রে<br />তুমি ঢেলেছিলে প্রেমের সুরা<br />মাতালের মতো চোখ বুজে আমি সব করেছিলাম পান;<br />তারই নেশা এখনও আছে।</p>
<br /><p>দীর্ঘ রাত বন্ধ চোখে মস্তিষ্ক জেগে থাকে<br />জীবনের এলোমেলো পথে তোমারে খুঁজে পাই না আর ।<br />দিনের আলোয় লুকিয়ে থেকে নিঝুম রাতে একাকী কথা কও<br />জীবনের সব ধার ক্ষয়ে ক্ষয়ে<br />তুমি আমার বুকের পরে আজও জেগে আছো অপলক।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/aj-amar-muktir-din/আজ আমার মুক্তির দিন2020-03-14T09:35:55-04:002023-06-24T20:40:34-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমার এক হাতে এখন ইংল্যান্ডের ভিসা<br />আর হাতে মুঠো বন্দি স্বপ্ন ।<br />বাংলাদেশ যেন এক বৃহৎ কারাগার<br />মুক্তি মেলেনা কিছুতেই,এখানে জন্ম এক অভিশাপ।<br />বহু সাধনার পর পেয়েছি আমি এখান থেকে মুক্তির সনদ।</p>
<br /><p>আমার এই খুশির দিনে দেখুক হতভাগী দেশ<br />মুক্তির সনদ আমার হাতে বাতাসে কাঁপছে।<br />মেয়ের বাবারা এখন আমার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায়।<br />আর কোনদিন খাওয়ার চিন্তায় ভেবে ভেবে<br />রাত ভোর হবে না।<br />টাকা বাঁচাতে মুড়ির টিনের মতো লোকাল গাড়িতে<br />জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর ঝুলতে হবে না।<br />অবজ্ঞার চোখে ঠোঁট উল্টিয়ে আর কেউ বলবে না<br />এত লেখাপড়া শিখে কি করেছ তুমি?<br />কিছু বলতে এলে<br />ইশারায় আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেব এই ভিসা।</p>
<br /><p>পৃথিবীর সুন্দর রূপ আমি দেখেছি টিভির পর্দায়<br />এবার দেখব নিজের চোখে;<br />বাংলার এই নোংরা মুখ আর দেখতে হবে না কোনদিন !<br />বাংলাদেশ! আর কোনদিন আসব না তোমাকে ভালোবেসে<br />তোমার রচিত এই কারাগারে।</p>
<br /><p>তবুও যাবার বেলায় বুক ভাঙে কেন গোপন ব্যথায়?<br />দু'চোখে শ্রাবণের ধারা বাঁধ মানে না।<br />তবে কি এই দেশ তোমাকে ভালবেসেছিলাম ! হয়তোবা।<br />জীবনের প্রয়োজনে তোমাকে ঠেলে দিলাম অনেক দূরে<br />আর কাছে ডেকো না কোনদিন,<br />যতদিন বেঁচে থাকব হৃদয়ে আলো হয়ে রইবে তুমি।<br />আজ আমার মুক্তির দিনে তোমাকে বিদায় বাংলাদেশ!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/kahini-kabbo-mohommod-sm-4-manob-kollan/কাহিনীকাব্য :: মুহাম্মদ (স:)- ৪.মানব কল্যাণ 2020-02-25T11:08:42-05:002023-06-24T20:40:55-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>শোচনীয় কাবাঘরের সংস্কার কাজ এগিয়ে চলে<br />আজ কে পাবে কৃষ্ণপাথর সরাবার সম্মান?<br />সবাই পেতে চাই সেই সম্মান! কে কার কথা শোনে? <br />দ্বন্দ্ব শুরু; তুমুল হট্টগোলে বেজে ওঠে যুদ্ধের দামামা!! <br />মুহাম্মদের বিচক্ষণতায় যুদ্ধ যায় থেমে।</p>
<br /><p>স্রষ্টাকে পেতে মুহম্মদ হলেন সংসারী <br />বাণিজ্যে শিখলেন মিতব্যয়ীতা,দূরদর্শিতা,বিশ্বস্ততার কৌশল<br />সংসারে পেলেন তিন পুত্র চার কন্যা; বাঁচল না পুত্ররা<br />তখন কন্যা মানে অসম্মানের বীজ! কে দেখবে তাকে?<br />খাদিজা তার জন্য মেলা থেকে কিনে আনে বালক জায়েদকে!<br />সেবার জন্য কৃতদাস পেয়ে মুহাম্মদ বলে,<br />‘মানুষ সবাই সমান;কেউ কারো প্রভু হতে পারে না!<br />জায়েদ,মুক্ত তুমি! যেখানে খুশি যেতে পারো!’<br />জায়েদ বলে,‘আমার কেউ নেই,আপনিই আমার সব।<br />জায়েদের খোঁজ পেয়ে পিতা মুহম্মদকে এসে বলে<br />ছেলে ফিরিয়ে নিতে চাই,কত দাম তার’?<br />মুহাম্মদ বলে ‘দাম দিতে হবে কেন? সে মুক্তই আছে, নিয়ে যান’<br />জায়েদের পিতা বিস্ময়ে হতবাক! এ কিরকম কথা!<br />টাকা দিয়ে দাস কিনে মুক্ত করে তাকে দেবে বিনামূল্যে! <br />সন্তানকে পেয়ে বাবা বলে, ‘মানিক আমার, চল ফিরে যায়’।<br />জায়েদ বলে, ‘তোমাকে পেয়ে আমিও খুশি বাবা<br />‘তবে তিনি আমাকে দিয়েছেন পিতার স্নেহ মাতার মমতা<br />তাকে ছেড়ে কি করে যাই! বাবা!! আমাকে ক্ষমা কর’।</p>
<br /><p>এক বালকের ভালবাসা, এক কৃতদাসের ভালবাসায় পরাজিত হয়ে <br />নিরাশ হয়ে পিতা চোখ মুছে বাড়ি ফিরে যায়!<br />মুহাম্মদ কাবাগৃহে উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলল<br />‘তোমরা সাক্ষী থাক,আজ থেকে এ জায়েদ আমার পুত্র!<br />সে আমার উত্তরাধিকারী।’<br />ছিল কৃতদাস! সে হলো উত্তরাধিকারী!!<br />লাঞ্ছিত নিপীড়িত মানবাত্মার এ কোন সম্মান?</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/kahini-kabbo-mohommod-sm-bibaho/কাহিনীকাব্য:মুহাম্মদ (স:) :: ৩। বিবাহ2020-02-19T15:42:28-05:002023-06-24T20:40:55-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>মক্কার এক সম্ভ্রান্ত, বিত্তশালী বিধবা মহিলা খাদিজা<br />মানুষের মুখে মুখে শোনে মুহাম্মদের নাম<br />বাণিজ্যে তিনি হাঁপিয়ে উঠেছেন;কে দেবে তাকে একটু বিশ্রাম!<br />লোক মারফত খাদিজা মুহাম্মদকে ডেকে প্রস্তাব রাখে<br />আমার এ ব্যবসা পরিচালনার ভার তোমাকে দেব<br />পারিশ্রমিক নিয়ে ভেবো না,পাবে দ্বিগুণ’।<br />উত্তরে মুহাম্মদ বলে,‘চাচাজির মতামত দরকার, একা কি করে নিই!’<br />তখন তাদের সংসারে টানাটানির দিন<br />আবু তালেবের পরিবারে-এ যেন একটা খুশির সংবাদ।</p>
<br /><p>মুহাম্মদ এগিয়ে চলল দামেস্ক,ইয়াস্রেব,হাইফা,জেরুজালেম<br />যেখানেই যায় ব্যবসা সফলতার বন্যায় প্লাবন আসে<br />এদিকে খাদিজা আবেগ উৎকণ্ঠায় পথের দিকে চেয়ে থাকে<br />সে কি পারল? নাকি পারল না? সেকি ফিরল? নাকি ফিরল না?<br />তার অহেতুক এ কিসের উদ্বেগ,কিসের আকুলতা!<br />জীবনের সুপ্ত সাধ এ অবেলায় কি ডেকে উঠলো?<br />একটা নতুন প্রেরণা তার অন্তরের আড়ষ্টতা ভেঙ্গে দেয়<br />খাদিজা একদিন একমনে দাঁড়িয়ে দেখে দুরের কাফেলা<br />উঠের পিঠে মুহাম্মদ!<br />সে এসে সমস্ত হিসাব বুঝিয়ে দেয় উচ্ছ্বাসিত কপট-হীন প্রাণে।<br />তখন মুগ্ধ খাদিজা তার সততা ও বিশ্বস্ততায়<br />ক্রমে এসে গেল তার কাছে প্রণয়ের ঋণ,ভালোবেসে ফেললেন!<br />খাদিজার দুশ্চিন্তা দেখে নাফিসা বলে,‘তোমার মনে এ কিসের চিন্তা!<br />যত কঠিনই হোক! তুমি সে ভার আমাকে দাও।</p>
<br /><p>নাফিসা নিয়ে গেল মুহাম্মদের সাথে খাদিজার বিয়ের পয়গাম<br />মুহাম্মদ বলে,‘এ কি সম্ভব! এ যে রূপকথা, এ যে স্বপ্নময়!’<br />উভয়পক্ষের বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা!<br />একদিকে পঁচিশ বছরের যুবক সৌন্দর্য,বুদ্ধিমত্তা,সাহসে তুলনাহীন<br />অপরদিকে চল্লিশ বছরের বিগতযৌবনা বিধবা রমণী<br />বয়স কি এসে যায়!<br />ভালোবাসা প্রকাশ পায় অন্তরের গভীরতায়!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/jibikar-tane-tomake/জীবিকার টানে তোমাকে2020-02-11T11:31:56-05:002023-06-24T20:40:53-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>জীবিকার টানে তোমাকে দুরে ঠেলে<br />আমি পড়ে থাকি একা<br />শুধু ভাবি আমি তোমার কাছে যাব<br />ঘুমের ঘোরে শুনতে পাই তোমার চুরির রিনিঝিনি শব্দ<br />আমি কান পেতে থাকি<br />তোমার নগ্ন পায়ের নূপুরের ধ্বনি শুনে চমকে উঠি।<br />ঘুম থেকে উঠে বসি<br />তোমার গায়ের গন্ধ যেন বাতাসে ভাসে।<br />মাথা তোমার ছাপা শাড়ির আঁচলে ঢাকা<br />মিষ্টি একটা কণ্ঠের প্রতিধ্বনি ফিরে ফিরে আসে<br />স্তব্ধ হয়ে বসে থাকি<br />শুধু ভাবি আমি তোমার কাছে যাব।</p>
<br /><p>তুমি পাশে নেই অথচ আমি বেঁচে আছি<br />আমার নিশ্বাস বহে ধীরে<br />তুমি ছাড়া আমার এ কি রকম বেঁচে থাকা?<br />কত সকাল,কত দুপুর,কত রাত<br />একাকী বিষণ্ণ কারাগারে কেটে যায় তোমার কথা ভেবে।<br />তোমার ভালোবাসার আশ্রয়ে আমার হৃদয়ে মুক্তি মেলে<br />অথচ আজ তুমি নেই।<br />জীবিকার টানে আমি বন্দী এক আসামি<br />জীবনের বসন্ত দিনে প্রাপ্তির মুকুল ঝরে যায়<br />আমি শুধু ভাবি,আমি তোমার কাছে যাব।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tumi-bolle-tai/তুমি বললে তাই2020-01-30T14:14:33-05:002023-06-24T20:41:08-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তুমি বললে তাই বাসন্তী রং শাড়ি পরেছি<br />একটা ফুলের মালা খোপায় জড়িয়ে চলে এসেছি<br />জীবনের কঠিন মূল্য দিয়ে <br />বুকের কুসুমে তোমাকে ফুটিয়েছি।<br />তোমার ডাকে জননীর কোল ফেলে এসেছি<br />সামনে পেছনে অদৃশ্য নিয়তি জেনেও<br />আমার সাজানো ভুবন ফেলে<br />তোমাকে পাওয়ার নেশায় একা আমি চলে এসেছি।<br />স্বর্গের সোপানে পা রাখব বলে নরকের পথে হেঁটে চলেছি।</p>
<br /><p>তুমি বললে তাই ভালবাসার পতাকা উড়াতে<br />শাসন ভাঙার দু:সাহস দেখিয়েছি<br />আমার তপ্ত ভালোবাসায়<br />তোমার হৃদয়কে রাঙিয়ে দিয়েছি<br />তোমার বোঝা বইবো বলে আমি দু’হাত বাড়িয়েছি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amader-besto-somoy/আমাদের ব্যস্ত সময়2020-01-09T05:29:38-05:002023-06-24T20:40:37-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমাদের দু’জনার সেই আবেগী প্রেম এখন আর নেই!<br />অর্থের সাধনায় সঁপে দিয়েছি<br />আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জিরো আওয়ার।<br />সময় কোথায় চাঁদনি রাতে দু’জন মুখোমুখি বসার<br />রজনীগন্ধা কিংবা গোলাপ হাতে পরস্পরের কাছে আসার।</p>
<br /><p>আমরা একদিন ঝাউ বনের নিচে, কফি শপে<br />পার্কের বেঞ্চে মুগ্ধ চোখে কাটিয়েছিলাম বেলা <br />ক্যারিয়ারের চাপে সেইসব সময় কখন যেন ফুরিয়েছে<br />ভুলে গেছি সেইসব দিনের কথা<br />যে জীবন ছিল একান্ত তোমার আমার!<br />অর্থের ডাক এসে বলে গেল এ সময় না তোমার না আমার।</p>
<br /><p>ভালোবাসার প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে<br />আমরা চলছি ক্রমাগত অন্ধকার গভীর গুহায়<br />দারিদ্র্যের জ্বালা ছেড়ে আমরা পেয়েছি<br />অতৃপ্ত চোখে ঝলসে যাওয়া লালসার ঝড়<br />বিলিয়ার্ড খেলায়, ক্লাবঘরে, পার্টিতে, জলসাঘরে<br />তৃপ্তি খুঁজি গদ বাধা পথে ছন্দহীন প্রাণহীন কবিতার মতো।</p>
<br /><p>তুমি থাক তোমার কাজে আমি থাকি আমাকে নিয়ে<br />সংসারের ঝামেলা আর আমরা কেউ পোহায় না<br />তবুও মাঝে মধ্যে প্রণয়ের ঝড় আসে<br />না, হয়তো প্রণয় নয়; তোমার আমার অভ্যাসের সম্পর্ক<br />হৃদয় থেকে খোলস খুলে পড়ে<br />তোমাকে বলার মতো অজস্র কথা জিবের ডগায় চলে আসে<br />কিছুই বলা হয় না;<br />ব্যস্ত সময়ের ইশারায় অন্য কথা মনে পড়ে যায়<br />ক্লান্ত দেহে হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি দেখে <br />গাড়ির জানালা খুলে তার ছোঁয়া নিয়ে তৃপ্ত হই<br />এইভাবেই চলছে জীবন তোমার আমার!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amra-dujon-bondi/আমরা দু’জন বন্দী2020-01-01T06:58:20-05:002023-06-24T20:40:41-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমরা দু’জন দু’জনকে বন্দী করে খাঁচায় ভরেছি <br />রক্তাক্ত হৃদয়ে পরস্পরকে পাহারা দিই<br />দু’জন দুজনের জীবনে ছড়িয়ে দিচ্ছি নীল বিষ<br />দু’জন দুটো লোহার বস্তা বুকে চেপে<br />রাতের গভীরে অন্ধকারের ভেতরে তাকায়।<br />পরস্পরের দোষ খুঁজতে নিরন্তর প্রচেষ্টা করি<br />অন্ধকারে ভাঙা রেকর্ড বেজে চলে ঘুম আসে না<br />কে কার কাছ থেকে কি পেয়েছি; আর কি দিয়েছি; এইসব।</p>
<br /><p>সম্পর্কের মেঘ না কেটে অন্ধকারে কুৎসার ঝড় ওঠে<br />কলসিতে অমৃত আছে এই ভেবে<br />লোভে আমরা হাত বাড়িয়েছিলাম পরস্পরের দিকে<br />আমরাও একদিন থামের আড়ালে, গাছের তলায়<br />পার্কের কোনে দু’জন ঘন হয়ে বসেছিলাম<br />আর এখন প্রত্যাশার চাপে পুড়ছে আমাদের মন<br />দু’জন দুজনার পোড়া মন খুঁড়ে খুঁড়ে তুলছি কয়লার মতো। </p>
<br /><p>প্রেম শেষ হয়ে গেলেও শরীরে আকাঙ্ক্ষা রয়ে গেছে<br />মাঝে মাঝে এক ছাতার তলায় দু’জনে বৃষ্টিতে ভিজি<br />কে কাকে ভালবাসতাম সেই স্মৃতি নিয়ে ভিজতে থাকি।<br />রাতের অন্ধকারে আমাদের দুজনের মাঝখানে<br />পাশাপাশি শুয়ে বড় হয় বিভেদের কেউটে সাপ<br />দংশন যন্ত্রণায় বাড়ছে অবিশ্বাস<br />আমাদের ভালোবাসা এখন দুর্গন্ধ ছড়ায়।<br />মাংসের কারাগারে আবদ্ধ দাম্পত্য জীবন<br />বন্ধনের সোনালী শিকল সংসারের গভীরে<br />তৈরি করেছে দগদগে ক্ষত;<br />আমরা দু’জন বন্দী রক্তাক্ত হৃদয়ে পরস্পরকে পাহারা দিই।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tumi-jodi-dako-amai/তুমি যদি ডাকো আমায়2019-12-22T15:14:10-05:002023-06-24T20:41:08-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তুমি যদি নরকের দরজায় দাঁড়িয়ে ডাকো আমায়<br />আমি ছুটে আসবো, তোমাতে আসক্ত আমি।<br />নেশায় আসক্তদের নেশা ছাড়া জীবন চলে নাকি!<br />তুমি এসব বুঝবে না!!<br />তুমি যদি যন্ত্রণায় কষ্ট পাও কিছুটা আমাকে দিও<br />আমার জীবনের দামে তোমার সুখের বাসর সাজাব।</p>
<br /><p>যদি নির্জন দুপরে তুমি ডাক আমায় পার্কের এক কোণে<br />মিথ্যা বাহানা খুঁজে<br />কাজ ফেলে ছুটে আসব আমি তোমার কাছে। <br />তোমার হৃদয় আকাশে উড়াবো সোনালী স্বপ্নের ঘুড়ি<br />মুছে ফেলব বিগত দিনের একঘেয়ে মলিন ইতিহাস।</p>
<br /><p>কোন এক রেস্টুরেন্টের নিয়ন আলোয়<br />তুমি যদি ডাকো আমায়<br />আমার বুকের যন্ত্রণা খামচে ধরে<br />মানিব্যাগটা জলাঞ্জলি দেব শুধু তোমার জন্য<br />তোমার শীতল চোখে তুলব আমি ভালোবাসার তুফান।</p>
<br /><p>তুমি যদি ডাকো আমায় সমুদ্র সৈকতে<br />বলে দেব নীল সমুদ্রকে তোমার জন্য মঞ্চ সাজাতে<br />সামিয়ানার নিচে আয়েশি চেয়ারে বসে দেখবে তুমি<br />মেঘের ভেলা উড়ে যায় উদাসী হাওয়ায়।</p>
<br /><p>তুমি যখন ডাক আমায়, কে আমাকে আটকে রাখে?<br />তোমার ডাকের প্রতীক্ষায় থাকি আমি<br />শুধু এইটুকু মিনতি, ডাকতে ভুল না আমায়!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/koto-din-tomake-dekhini/কত দিন তোমাকে দেখিনি2019-12-09T13:35:06-05:002023-06-24T20:40:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>এই দুর দেশে তুমি ছাড়া আমি পড়ে আছি একা <br />কতদিন দেখিনি তোমাকে<br />প্রতি রাতে আকাশের আয়নায় দেখি তোমার মুখ<br />তুমি কাছে থেকে ছড়িয়েছিলে সোহাগের ফেনা।<br />দুরে থাক নিয়ে আমার প্রাণের সমস্ত উচ্ছলতা<br />রহস্য ঘেরা অগাধ স্তব্ধতা আমাকে পোড়ায়।</p>
<br /><p>আমার দু’চোখে শুধু তোমার ছবি ভাসে<br />মিষ্টি সুরেলা কণ্ঠ হৃদয়ের দেওয়ালে ধ্বনি প্রতিধ্বনি হয়<br />তুমি ফিরে ফিরে আসো; আমার ঘুম আসে না<br />তোমার চোখের আলো পড়ে আমার ঘুম কেবলই ভেঙ্গে যায়।<br />পাখির পালকের মতো নরম স্বপ্নগুলি<br />সমস্ত রাতের অন্ধকারে ভেঙে ছুটে বেড়ায়<br />ভীষণ একা লাগে <br />আমাদের লাল-নীল সংসার সাজাতে<br />এতটা পথ ফেলে এসেছি; তোমাকে ছেড়ে এসেছি।</p>
<br /><p>সংসারের আবর্জনা ঠেলে দুরন্ত আবেগ বুকে জ্বেলে<br />নিভৃত হৃদয়ে তুমি চেয়েছিলে খানিক শুভ অবসর<br />কুমারী মেয়ের মতো ছিল তোমার সে প্রত্যাশা।<br />তোমার অনিবার্য ব্যস্ততা <br />আমি দুর থেকে নি:শব্দে দেখে যেতাম<br />দেখতে ভালবাসতাম!<br />এখানে মাঝেমাঝে সমুদ্রের তরঙ্গগুলির ব্যস্ততা দেখতে যাই<br />তোমার কাছে সে কিছু নয়।<br />মাথার মধ্যে এক মাদকতা ছড়ায়, শুধুই তোমাকে দেখার।<br />আমাদের লাল-নীল সংসার সাজাতে<br />এই দুর দেশে তুমি ছাড়া আমি পড়ে আছি একা <br />এ মন শুধু কাঁদে; কতদিন দেখিনি তোমায়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/kahini-kabboo-mohommod-sm-bere-utha/কাহিনীকাব্য:মুহাম্মদ (স:): ২. বেড়ে ওঠা2019-11-30T11:48:12-05:002023-06-24T20:40:55-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>পাঁচ পাঁচটি বছর পর মুহাম্মদ ফিরে যায় মা আমিনার কোলে<br />মায়ের কোলে বসে ছোট্ট শিশুর দু’চোখ বাবাকে খোঁজে!<br />তবুও তো একদিন শেষ হয়ে যায় অপেক্ষার পালা!<br />বাবার কবর দেখে ফেরার পথে আমিনা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে<br />মাথার উপরে নীল আকাশ<br />মরু প্রান্তরে উটের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদে বালক মুহাম্মদ!</p>
<br /><p>দু’বছর পরে দাদা মোতালিবও তার পথ ধরে<br />চাচা আবু তালিবের সাথে মক্কায় শুরু হয় নতুন জীবন <br />সে বিস্ময়ে চেয়ে থাকে, কতকিছু জানার বাকী! চেনার বাকী!<br />একদিন আবু তালেব তাকে সাথে নিয়ে চলে সিরিয়ায়<br />কাফেলা এগিয়ে চলে, কতকিছু দেখে,অকারণে প্রশ্ন করে<br />কত বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে তার সাথে।<br />ফিরে এসে তাকে শুধু ডাকে ইশারায় নীল আকাশ,উন্মুক্ত প্রান্তর<br />এক মোহময় ডাকে ছুটে চলে মেষ নিয়ে নির্জন পাহাড়ের ঢালে<br />উদার আকাশের তলে সমাজ সংসারের কোলাহল থেকে দুরে<br />প্রকৃতির নিবিড়তায় অসীমের স্পর্শে নীরবতার গহিনে<br />যেন এ বিশ্ব সৃষ্টির রহস্য গোপনে সে শুনতে পায়।</p>
<br /><p>অন্যদিকে চলে মেলা,কাব্য-যুদ্ধ,ঘোড়দৌড়,জুয়াখেলা<br />যুদ্ধ, ঘরে ঘরে ক্রন্দন, হাহাকার, কোন প্রতিকার নেই!<br />অথচ তিনি ভাবেন অন্য কথা, আর্ত পীড়িত ব্যথিতদের কথা<br />যুদ্ধ থামাতে তরুণদের নিয়ে গড়লেন ‘হিলফ-উল-ফুজুল’।<br />তাদের একহাতে থাকে সেবা-প্রেম<br />অন্য হাতে খোলা তলোয়ার<br />তাদের বুকের পাঁজরে জমা হতে থাকে নরম ভালোবাসা<br />তারা খুঁজে ফিরত<br />কোথায় অনাথ শিশু কাঁদে অবিরাম ক্ষুধার যন্ত্রণায়<br />কোথায় দুঃস্থ রুগ্ন মানুষের আর্ত-চিৎকার ভেসে আসে<br />কোথায় অসহায় নারীর ক্রন্দনে বুক ফেটে যায়<br />তাদের পাশে সবার আগে অন্ধকারে ছুটে আসে মুহাম্মদ<br />আরব-বেদুইনদের কাছে সে তখন ‘আল-আমিন’।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ovizog/অভিযোগ2019-11-23T11:49:03-05:002023-06-24T20:40:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বিধাতা, মানুষ তোমার সৃষ্টির সেরা জীব<br />সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তাদের<br />তবে তাদের মধ্যে গড়েছ কেন এত ভেদাভেদ?<br />যে সময়ে এক শিশু জন্ম নেয় বৃহৎ অট্টালিকায়<br />আনে খুশির জোয়ার<br />সেই সময় আরেক শিশু জন্ম নেয় ফুটপাতে বস্তিতে<br />ডেকে আনে অদ্ভুত এক আঁধার;<br />এই নিষ্পাপ শিশুর মাঝে কেন এত বৈষম্য তোমার!<br />এ কেমন ভালোবাসা?</p>
<br /><p>স্বপ্ন হীন বেড়ে ওঠা এক শিশু<br />খেলার সময় কখন কিভাবে চলে যায় পায় না তো টের<br />সংসারের বোঝা ঘাড়ে এসে পড়ে<br />জীবন চালাতে কাজ নেয় চার দেওয়ালের বদ্ধ প্রকোষ্ঠ<br />বাসাবাড়ি কারখানায়;<br />এক ফোঁটা অবসর নেই,ক্লান্ত শরীর,ক্লান্ত জীবন;<br />তবুও কি তারা শ্রমের দাম পায়! পায় না।</p>
<br /><p>যারা পৃথিবীকে করেছে জ্বালাময় নিবিয়েছে মানবতার আলো<br />বিধাতা,তাদের তুমি কেন ভালোবাসো !<br />যারা তোমাকে দিল ভালবাসা<br />গভীর রাতে নীরবে নিভৃতে দিল সে দান<br />কেন তুমি তাদের ফিরিয়ে দাও?<br />যেখানে শোষণ আর প্রবঞ্চনা জালেমের হাতিয়ার হয়ে<br />দুর্বল নিঃসহায়ে আঘাত করে<br />সেখানে কাদের পাশে তুমি আছো, হে বিধাতা?<br />জানা নেই।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amra-dujone-pashapashi/আমরা দু'জনে পাশাপাশি2019-11-18T05:04:15-05:002023-06-24T20:40:41-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমরা দু’জনে পাশাপাশি হেঁটেছি রাস্তার কিনার ধরে<br />কতদিন কেটেছে আমাদের শুধু ভুল স্বপ্ন নিয়ে <br />একা সারাটা রাত জেগে কাটিয়ে দিয়েছি জানালার পাশে বসে<br />তোমার অপেক্ষায় অপেক্ষায় দিন চলে গেছে<br />এখনো সেই জানালার পাশে বসে জেগে থাকি ঘুমেরই অপেক্ষায়।</p>
<br /><p>করুণ মোমের মতো জীবন জ্বলে জ্বলে শেষ হয়<br />তোমাকে দেখেছিলাম জীবনের মাত্র দু’তিনটা বছর<br />বহু পথ হাঁটি; আজো তোমাকে দেখি পথের শেষ সীমানায়<br />আজ কতদূরে তুমি আর আমি কত দুরে!<br />আমার সাথে অনেক দূরে যাবে তুমি বলেছিলে<br />অথচ তোমার বুকের গভীরে অন্য স্বপ্ন নিয়ে ফিরে গেছ<br />তবুও মাঝখানে ভালবাসা ছিল<br />হতে পারে ভুল ভালবাসা; তবুও ভালবাসা তো!</p>
<br /><p>সেই ভালোবাসার আগুন জ্বলে এখন আমার চোখের পাতায়<br />ঘুম আসে না <br />হয়তো এই গভীর রাতে অন্য কারো সাথে তুমি জেগে আছো<br />অন্ধকারে তুমি তার মুখোমুখি।<br />যে জীবন পেলে কেমন সে জীবন? কষ্টকর? নাকি একা? <br />চারদিকে শুধু শুনি ভালবাসার কথা<br />ভালবাসা! ভালবাসা! আর ভালবাসা।<br />তবুও তো একদিন ভালবাসা শেষ হয়<br />প্রেমিকেরা স্বামী হয় তারপরও কি প্রেমিক থাকে?<br />জানি না! আর জানতেও চাই না।<br />আমাদের সাক্ষাত হয়েছিল এক রাক্ষসী বেলায়<br />সেদিন তুমি এসে সম্মুখে দাঁড়িয়েছিলে<br />এখন তোমার প্রেমের সমাধি আমার ভালবাসার জঞ্জালে ভরা<br />আমার চোখে এখন আর তোমার স্বপ্নের আঁচল ওড়ে না<br />প্রথম প্রেমের সহস্র অনিবার্য স্রোত এখনে এসে থেমে গেছে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ami-ek-hotovagoy/আমি এক হতভাগা2019-11-13T11:45:34-05:002023-06-26T16:20:24-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>আমার ভাগ্য রেখা ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়<br />নিদ্রায় আসক্ত তবুও বেদনায় জেগে থাকি নীরব রাতে<br />আমার এই চোখ থেকে ঘুম কেবলই ভেঙ্গে যায়<br />নরকের মতো এই পৃথিবী তবুও বাঁচতে হয়<br />মৃত্যুকে কামনা করি সে যে আসে না!</p>
<br /><p>গভীর রাতে শশ্মান ঘাটে ফেলে যাওয়া লাশের মত<br />একাকী অন্ধকারে পড়ে থাকি বিছানায়।<br />বার বার ভাবি শুধু শুধু বেঁচে থেকে কি হবে?<br />জীবনের পাতায় পাতায় শুধু যে পরাজয় লেখা !</p>
<br /><p>জীবনের পাওয়ার পাতা শূন্য দেখে<br />প্যাঁচার মত রাত জেগে হিসাব মেলায় বারে বারে;<br />হতাশায় ঝরা ফুলের মত সব আশা ঝরে যায়।</p>
<br /><p>পৃথিবী সুন্দর,নক্ষত্রের আগুন ভরা আকাশে চাঁদ সুন্দর;<br />আর সবচেয়ে বেশি সুন্দর আমাদের এই চাওয়া<br />তবুও যখন পাওয়ার পাতা শূন্যতে ভরে যায়<br />পৃথিবী হয়ে ওঠে সবচেয়ে অসুন্দর,নরক যন্ত্রণা-সম।</p>
<br /><p>এই নরকে শুধু শুধু বেঁচে থেকে কি হবে?<br />ও মায়াবী পৃথিবী, তোমাকে বিদায়-----!<br />যারা আছে সুখে তাদের নিয়ে তুমি ভালো থেকো।<br />পূর্ণিমার গভীর রাতে<br />অপলক চাঁদ যখন মেঘের পালকে ঢালবে আলো;<br />তখন খোলা মাঠে<br />মায়াবী জোছনায় আমাকে আর ডেকো না।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/atodin-pore-hotath-dekha/এতদিন পর হঠাৎ দেখা2019-10-30T02:23:15-04:002023-06-24T20:40:44-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>এত এত দিন পরে তার সাথে দেখা হলো<br />পরনে লাল পাড় হলুদ রঙের শাড়ি<br />আধ খোলা মাথা ছিল আঁচলে ঢাকা<br />অবাক চোখে দেখে বলল সে, কেমন আছ?<br />আমি তখন ফিরে গেছি পনের বছর আগে<br />জবাব না দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম মুখের দিকে চেয়ে<br />এত বছর পরেও আমার ভেতর এ কেমন অস্থিরতা!</p>
<br /><p>ঝিনুকের মধ্যে মুক্ত যেমন লুকিয়ে থাকে <br />তেমন করে এতগুলো বছর লুকিয়ে রেখেছি তাকে বুকের মধ্যে।<br />হাজার নক্ষত্রের ভিড়ে হঠাৎ দেখায়<br />চাঁদ যেমন চোখে স্থির হয়ে ভেসে থাকে<br />ডাকে ইশারায় মায়াবী জোছনায় আকাশের ছায়াতলে।<br />আজ তার কিছুই নেই!<br />একদিন দুর্বোধ্য ইশারায় আমার চোখে উড়ত <br />তার মাথায় ঘোমটা ঢাকা শাড়ির আঁচল।<br />এখন আমার সে চোখে চঞ্চলতা গেছে থেমে।</p>
<br /><p>বছর পনের পর আমাদের দেখা <br />যেন এই ক’দিন-ই শেষ হয়ে গেল অনেক সময়!<br />তারপর ঐ পথে কতবার আসা যাওয়া<br />হয়তো এইভাবে আরও পনের, পনের বছর কেটে যাবে<br />জীবনের কুয়াশা আসবে একদিন চুপিচুপি<br />তবুও এই চোখে জেগে থাকে ফুটফুটে জোছনা, পিপাসা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/mohommod-sm-jonmo/কাহিনীকাব্য:মুহাম্মদ (স:) :: ১.জন্ম2019-10-26T13:22:40-04:002023-06-24T20:40:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>শুক্লা দ্বাদশীর রাতে আকাশে কেন অত বড় চাঁদ উঁকি দেয়<br />আরবের এক জীর্ণ কুটিরে একাকী এক নারী প্রসব বেদনায় অস্থির<br />অসীম আকাশ থেকে আলোর মিছিলে ঝলসে যায় ঘর<br />আমিনার কোলে আসে নতুন শিশু যেন পূর্ণিমার এক চাঁদ<br />তবুও ঐ গৃহ দারিদ্র্যের অন্ধকারে ডুবে যায়!<br />অকস্মাৎ ঘুম ভেঙ্গে আরবের বেদুইনরা চেয়ে থাকে বিস্ময়ে<br />ভোরের আকাশে আজ এত কিসের আলামত<br />চারিদিকে এত কিসের উল্লাস ধ্বনি শোনা যায়!</p>
<br /><p>নতুন শিশুর খবর পেয়ে উদ্ভাসিত আব্দুল মোতালিব<br />এ আনন্দের দিনে পুত্র আব্দুল্লার বিয়োগ বেদনা জাগে তার প্রাণে<br />কোন এক অদৃশ্য ইশারায় শিশুর নাম রাখে ‘মুহাম্মদ’।<br />তখন ছিল এক অসীম অন্ধকারের যুগ!<br />উত্তর থেকে দক্ষিণ পূর্ব থেকে পশ্চিম নিভেছিল সভ্যতার আলো<br />অবিচার অত্যাচার ব্যভিচার দুর্নীতি সমাজ শাসনের হাতিয়ার<br />মানুষের হাটে মানুষকে বেচে মেটাত শখের দাম<br />সুরার পাত্রের সাথে নারী থাকত উপহার, মর্যাদা যেন গৃহপালিত পশু।</p>
<br /><p>দারিদ্রে ঘেরা নিষ্পাপ শিশুকে কে নেয় কোলে!<br />হৃদয়ে কার এত সাহস তাকে আদরের?<br />হৃদয়বান হৃদয় দিয়ে মাপে মানুষের দাম<br />একদিন আমিনার কাছে হালিমা এসে নিয়ে যায় তাকে<br />দিগন্ত বিস্তৃত মরু প্রান্তরে ছোট এক কুটিরে;<br />মুক্ত আকাশ মুক্ত বাতাস চারিদিকে বিশাল প্রান্তর <br />এখানে তার পিতা নেই,মাতা নেই,শিক্ষক নেই।<br />সে বড় হয়;<br />মায়া মরীচিকার মরু দিগন্তে কে তাকে শিক্ষা দেয়?<br />কে তাকে ভালোবাসে,কে দেয় সুরক্ষা?<br />দুরের নীল আকাশের দিকে সে চেয়ে থাকে<br />চাঁদ যেন তাকে হাতছানি দেয়,তারারা কাছে ডাকে<br />বাতাস এসে কানে কানে বলে যায় কি সব গোপন কথা!<br />দৃশ্য জগতের অন্তরালে সে যেন কতকিছু দেখে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tobuo-manush-se/তবুও মানুষ সে2019-10-24T15:02:31-04:002023-06-24T20:41:05-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>অসুস্থ বাবা আর দুই অবুঝ শিশুর মুখে<br />দু’মুঠো অন্ন তুলে দিতে আধো আলো আধো ছায়ায়<br />পৃথিবীর সমস্ত লাঞ্ছনা আর ঘৃণার বোঝা মাথায় নিয়ে<br />হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে এক নারী।<br />সস্তা মেকআপে প্রেমের পসরা সাজিয়েছে বিক্রির আশায়।</p>
<br /><p>দিনের আলোয় দ্বার রুদ্ধ করে সে এখন নিশাচর<br />যেন এক নেশার পণ্য<br />আসক্তদের আনন্দ বিলাতে দাঁড়িয়ে আছে সে।<br />জীবন তার যন্ত্রণায় ভরা পরিহাস আর প্রহসন<br />সমাজের বুকে সে যে এক অভিশাপ<br />সে যে এক অর্স্পশ্যা! তবুও মানুষ সে।<br />কিছু সময় আনন্দে ভরিয়ে দিয়ে বিনিময়ে পায় দাম।</p>
<br /><p>রাতের আঁধারে চার দেওয়ালের মাঝে<br />বুকে শত যন্ত্রণা চেপে নববধূ সেজে যে হয় রাণী<br />সে ভোরের আলোয় রাস্তায় নেমে অপবাদ পায় নষ্ট মেয়ে।<br />তখন তোমরা!<br />মুখোশের আড়ালে মুখ ঢেকে সাজো দেবতা।</p>
<br /><p>এই অবাঞ্ছিত মেয়ের জন্য অধীর হয়ে বসে থাকে<br />তিনটি জীবন।<br />খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরলে স্বর্গ নেমে আসে ঐ ঝুপড়ি ঘরে<br />সে এখানের সুখ-দুঃখের কাণ্ডারি;একমাত্র অবলম্বন ।</p>
<br /><p>মুখ বুঝে সব নির্যাতন লাঞ্ছনা অপবাদ সয়ে<br />এইখানে যে বাঁচাল জীবন<br />সমাজের বুকে সে এক অভিশাপ,সে এক নিষিদ্ধ !<br />বিধাতা তোমার কাছে সে কি?<br />জানা নেই,তবুও তো সে মানুষ!<br />কোন এক নারী; তোমার সৃষ্টির সেরা জীব।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/hasi-kannaer-din-ekhono-ase/হাসি কান্নার দিন এখনো আছে2019-10-22T09:37:22-04:002023-06-24T20:40:52-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তোমার কালো পটল চেরা চোখ<br />যে দিন ঘোলাটে হয়ে যাবে<br />মোমের মতো সুন্দর মসৃণ ত্বক <br />যে দিন ডুমুর পাতার মতো খসখসে হয়ে যাবে<br />বাদুড়ের পাখনার মতো ঝুলে পড়বে চামড়া<br />তখনও আমি তোমাকেই ভালবাসব।</p>
<br /><p>আমি আর তুমি বয়সের ভারে নুয়ে পড়ব<br />তবুও আমরা সেইসব রাতের মতো অবিচল।<br />সাধারণ কথায় কথায়<br />আমাদের অসাধারণ রাত কেটে যাবে<br />নির্ঘুম রাত তবুও ক্লান্তিহীনভাবে জেগে থাকব।</p>
<br /><p>পরিচিত সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে<br />সমস্ত বিধি নিষেধ অমান্য করে<br />আমরা যেমন প্রথম হেঁটেছিলাম পার্কের রাস্তায়<br />তেমনি করে আমরা হেঁটে বেড়াব<br />সকালে বিকালে প্রকাশ্যে খোলা প্রান্তরে<br />ডাক্তারের পরামর্শ মেনে স্টপ-ওয়াচ হাতে ধরে।</p>
<br /><p>জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তুমি আর দু:খ করবে না<br />আমাদেরও একদিন সময় ছিল ভালোবাসার; কাছে থাকার<br />সেই দিন এখনো আছে ভালো থাকার; ভালোবাসার।<br />সেই দিন এখনো আছে <br />জীবনের কষ্টগুলো, আনন্দগুলো ভাগ করে নেওয়ার।<br />ভালোবাসা দিয়ে পরস্পরকে আগলে রাখার<br />সেই দিন এখনো আছে<br />হাসি কান্নার দিন এখনো আছে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/sottota-o-deshprem/সততা ও দেশপ্রেম2019-10-14T00:11:03-04:002023-06-24T20:41:03-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>এইতো আমাদের সময়<br />মিথ্যার হাটে আমরা সততার ফেরি করি<br />ঠিকঠাক দামের জন্য অক্লেশে নুয়ে পড়ি।</p>
<br /><p>সততার বীজ রোপণ করে পরিবার<br />স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকশিত হয়<br />রাষ্ট্র লালন করে, রক্ষা করে অথচ আমরা কি দেখতে পাই<br />স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে সততা<br />সেখানে কিসের চর্চা হয়?<br />বড় হও,জ্ঞানী হও,সুযোগ বুঝে ফায়দা লুটো।<br />এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশপ্রেম শেখানো হয় না<br />বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সততার চর্চা উঠে গেছে<br />সততা ও দেশপ্রেম শেখানোর টেন্ডার নিয়েছে কর্পোরেট দালালরা<br />আমাদের যাপিত জীবন ছেড়ে <br />সততা আর দেশপ্রেম সোজা উঠে গেছে মঞ্চে<br />লাইভ টকশোতে,সিনেমার ডায়লগে,জাতীয় সংসদে।</p>
<br /><p>আমাদের অসৎ হওয়ার শিক্ষা দেয় কে?-রাষ্ট্র<br />প্রতি পদে পদে অসৎ হওয়ার মঞ্চ সাজায় কে?-রাষ্ট্র <br />সৎ অফিসার অফিসে কোণঠাসা হয়ে জীবন পার<br />আশাগুলো অপূর্ণ রেখে, সবাইকে শত্রু বানিয়ে জীবন পার<br />সৎ মানুষ জৌলুস-হীন; অভাব অনটনে জীবন পার<br />সৎ মানুষ মুকুটহীন, শিরোনামহীন জীবন পার<br />তবে আমরা কেন সৎ থাকব? সততা নিয়ে আমরা কি করব?<br />এইতো আমাদের সময়, অসৎ হয়ে জীবন গড়ি<br />সুযোগ যখন আছে দেশপ্রেম বিক্রি করি<br />তবুও কেউ কেউ পাগল; কেউ কেউ মানুষ--ব্যর্থ মানুষ<br />যারা সততা নিয়ে থাকে; যাদের আমরা রোজ দেখি স্বপ্নের ভেতর।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ekdin-amder-din-elo/একদিন আমাদের দিন এলো2019-10-12T00:50:29-04:002023-06-24T20:40:50-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>নগ্ন তরবারী হাতে খুনিরা দৌড়ে আসে<br />তখনও কিছু মানুষ তাদের রুখে দাঁড়িয়েছিল<br />তখনও ভয় না পাওয়া কিছু মানুষ রাস্তায় নেমেছিল <br />তখনও মানুষের ভয়ে অবশ দর্শক হওয়ার দিন আসেনি<br />তখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে বাঁচাতে<br />অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দিতে ভয় পায়নি অজস্র তরুণ।</p>
<br /><p>তারপর একদিন আমাদের দিন এলো<br />উন্নয়নের জোয়ার সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেল<br />আমরা পেলাম সভ্যতা, হারিয়ে গেল আমাদের বোধশক্তি<br />প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ মানুষকে হত্যা করে<br />চাপাতির কোপ অনায়াসে নেমে আসে শরীরে<br />হাতুড়ি পিটিয়ে কোমর ভাঙা হয়<br />মানুষ জড় পদার্থের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।<br />অস্ত্র হাতে যারা টাঙিয়ে রাখে ক্ষমতার বিজ্ঞাপন<br />তাদের দেখলেই মানুষ বুঝে যায় তারা কার লোক<br />এখন আর রক্ত দেখলে রক্ত গরম হয়ে ওঠে না<br />চেতনা অবশ হয়ে যায়।<br />আমাদের চেতনার পতাকা<br />এখন কতিপয় চেতনাধারীদের পকেটে বন্দী।</p>
<br /><p>দুর্বৃত্ত ক্ষমতার নগ্ন বিজ্ঞাপনে আমরা অবশ দর্শক<br />আমার দাঁড়িয়ে দেখছি কোটি কোটি টাকার লুটপাট<br />আমার দাঁড়িয়ে দেখছি ধ্বংস হয়ে যাওয়া নদী নালা বন জঙ্গল<br />আমার দাঁড়িয়ে দেখছি<br />চুরি হয়ে যাওয়া আমাদের প্রতিবাদের ভাষা<br />আমার দাঁড়িয়ে দেখছি<br />নষ্ট হয়ে যাওয়া সমাজ, চরিত্র, মানবজমিন।<br />আমরা ক্রমে হয়ে পড়ছি খাঁচায় পুরা মুরগি<br />চিৎকার নেই, চেচামেচি নেই, ছোটাছুটি নেই<br />ঝিঁমিয়ে ঝিঁমিয়ে দিন কাটায় জবাই হওয়ার প্রতিক্ষা নিয়ে<br />আমরা মানুষের ভিড়ে সবাই একা, বিচ্ছিন্ন<br />সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন<br />একটা রাখাল যেভাবে ভেড়ার পালকে নিয়ন্ত্রিত করে<br />সেভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে মাস্তান, সন্ত্রাসী, ক্যাডার, নেতা<br />এইসব দেখে দেখে আমরা নীরব হয়ে যাই<br />হাত গুটিয়ে থাকি, ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় তুলি<br />তাদের বিরুদ্ধে আমাদের হাত নায়কের মতো শক্ত হয়ে ওঠে না<br />আমাদের দু হাত ওঠে কেবল প্রার্থনার জন্য<br />এই অবস্থায় সমাজ জনতা বলতে কিছু নেই<br />চোখে অশ্রু, বুকে দীর্ঘশ্বাস, মুখে উন্নয়েনর স্লোগান।<br />এই জনপদে এক একটি মৃত্যু আমাদের দেখিয়ে দেয়<br />আমরা কোন অবস্থায় বেঁচে আছি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bekar-chele/বেকার ছেলে2019-10-09T15:47:40-04:002023-06-24T20:40:46-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>নিপা তখন দু’চোখে যমুনাকে ধরেছিল<br />ওর দিকে তাকায়ে পৃথিবীর সমস্ত ব্যথা আমার বুকে<br />বলল সে, ‘এভাবে আর কতদিন বাবাকে ঠেকিয়ে রাখব?<br />দু’মাস,চার মাস,বড় জোর এক বছর! একটা কিছু কর!!<br />আর কতদিন বেকার থাকবা?’<br />সত্যি তো, আর কতদিন বেকার থাকব আমি?</p>
<br /><p>বললাম, ‘আর মাত্র কয়েকটা দিন’।<br />ছোট একটা বাসা নেব, বারান্দায় একটা দোলনা ঝোলাবো<br />গভীর রাতে ঘুম ভেঙে নিয়ন বাতির আলো জ্বেলে দেখব তোমাকে<br />দেখে দেখে এ চোখের তৃষ্ণা মেটাবো;<br />তুমি যদি জেগে যাও একসাথে সেখানে ঝুলব দু’জনে।<br />তারপর পিনপতন নীরবতা দু’জনের দুটি দীর্ঘশ্বাস<br />নীরবতা ভাঙতে বলে চললাম বড় ভাইয়ের বন্ধুদের বলেছি<br />চাচাকে বলেছি,মামাকে বলেছি,তাদের বন্ধুদের বলেছি<br />আমার যেকোনো একটা চাকরী চাই; সবাই বলেছে ‘হয়ে যাবে’।<br />বাবাও বলেছে, ‘যত টাকা লাগবে দেব আমি।’<br />শুনে ওর চোখটা তখন খুশির আলোতে ঝলমল করে উঠলো<br />সে এক অপরূপ সৌন্দর্য; কোনদিন দেখিনি ওর চোখে।<br />ওর পাশে বসে কিছু সময় কাটল স্বপ্ন এঁকে এঁকে<br />যাবার সময় সে বলল শুধু ’চলি!’<br />যখন পিছন ফিরে চাইল,দেখলাম ওর চোখে যমুনার ধারা<br />কেন কি গভীর দুঃখ ওর মনে বুঝিনি আমি সেদিন।<br />বুঝেছি একটা চাকরী ভীষণ দরকার আমার!</p>
<br /><p>মাথায় আসে না কে এত ভালো পাত্র? যার জন্য ওকে হারাতে হবে!<br />‘ভাল মানুষ ভাল পাত্র হয় না<br />ভালো পাত্রের ভালো চাকরী থাকে, ভালো টাকা থাকে।’<br />বাবার উপর এখন আমার ভীষণ রাগ হয়<br />বলত ‘বুঝলি! ভাল মানুষ হওয়া বিরাট কঠিন। তোরা ভাল মানুষ হ’।<br />মানুষ কাকে বলে! বলে দেয়নি; আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।</p>
<br /><p>নিপার ব্যকুল করা কণ্ঠ সারাক্ষণ মনে পড়ে ‘একটা কিছু কর!’<br />একটা চাকরীর জন্য এখানে সেখানে ছুটে বেড়াই। লজ্জায়, যোগাযোগ কমে গেছে!<br />হয়তো সে বলবে, ‘চাকরী হলো’? কি উত্তর দেব তাকে?<br />একদিন রাতে ঘুম আসছে না<br />ফোন বন্ধ পেয়ে বুকের মধ্যে অজানা আশংকা জেগে উঠলো।<br />ওর ভীষণ অসুখ করেনি তো? <br />নাকি একমুঠো ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। <br />দুর্ভাবনায় কেটেছে আমার সারা রাত<br />কাক ডাকা ভোরে আমার ফোন ওর বান্ধবীর ঘুম ভাঙিয়ে দিল<br />তখনও আমার গলায় গভীর উৎকণ্ঠা ঝরে পড়ছে<br />‘কেমন আছে ও!’<br />ঘুম জড়ানো কণ্ঠে একটু থেমে থেকেই বলল সে,<br />‘তুমি জান না কিছু? দিন-তিনেক হলো নিপার বিয়ে হয়ে গেছে<br />তোমার জন্য ও ভীষণ কান্নাকাটি করছিল।’ <br />আর কিছুই শুনতে চাইনি আমি; লাইনটা কেটে দিলাম।<br />আমার পৃথিবী যেন ফাঁকা হয়ে গেল<br />সেই থেকে কত নির্ঘুম রাত কেটেছে দুঃস্বপ্ন নিয়ে! <br />একাকী মাঝরাতে রাস্তায় হেঁটে বেড়িয়েছি কত!!<br />সেই কণ্ঠ আমাকে ঘুমাতে দেয়নি-‘একটু কিছু কর!’</p>
<br /><p>হ্যাঁ একটা কিছু আমাকে করতেই হবে। <br />আমাকে ভালো মানুষ নয় ভালো পাত্র হতে হবে।<br />এখন আমি ভালো পাত্র হয়ে সংসার পেতেছি<br />তবুও নিপাকে হারানোর সেই ব্যথা <br />হৃদয়ের গোপন কোণ থেকে উঠে এসে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।<br />একদিন একটা অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আমি<br />গাড়ির দরজা খুলে নেমেই চমকে গেলাম<br />বহুদিন পর আমরা দু’জন মুখোমুখি।<br />বললাম তুমি এখানে? ওর ঠোঁট দু’টো তখন ভীষণ কাঁপছিল<br />বলল সে,‘আমার হাজবেন্ডের পোস্টিং এখানে।’<br />তারপর মানুষের ভিড়ে চেয়ারে সে<br />আমি অতিথির আসনে অন্যমনস্ক।<br />অনুষ্ঠান শেষে সে উঠে চুপচাপ দাঁড়িয়েছিল আমার দিকে চেয়ে<br />আমি বিদায় নিতে কাছে গিয়ে বলেছিলাম শুধু ‘চলি’<br />তখন ওর দু’চোখে যমুনার ধারা,বিষাদে মাখা।<br />একদিন ঐ চোখে দেখেছিলাম যে আলো আজ তা নিভে গেছে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tomake-chuechilam-ekbar/তোমাকে ছুঁয়েছিলাম একবার2019-09-28T06:21:35-04:002023-06-24T20:41:06-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তোমাকে ছুঁয়েছিলাম একবার নির্জনে ভুল করে<br />তোমার শরীরের বিদ্যুৎ তরঙ্গে হয়েছিলাম অস্থির<br />মলিন চক্ষু বিস্ফোরিত করে তোমাকে দেখেছিলাম<br />তারপর থেকে শুধু তোমাকে দেখি তোমাকে দেখি।<br />ভুলে যেতে চাই তবু তোমাকে দেখি সম্মুখে<br />দুরের আকাশে তাকায় দেখি চাঁদ<br />মনে হয় তুমি আমার অপেক্ষায় চেয়ে আছো।</p>
<br /><p>ফুলের দিকে তাকায় সৌন্দর্য মগ্ন হয়ে দেখি<br />মনে হয় রঙিন পাপড়িতে তোমার স্নিগ্ধ দৃষ্টি আমাকে ডাকছে।<br />ঝড়ে বাসা-ভাঙা পাখির ডাক শুনে চমকে উঠি<br />মনে হয় তোমার কষ্ট ভুলিয়ে দিতে তুমি আমাকেই চাইছ।</p>
<br /><p>বৈশাখের খর-তপ্ত দুপরে<br />হঠাৎ একটুকরো মেঘ ভেসে আসে ছাতার মতো<br />একটু শীতল ছায়ায় তোমার স্পর্শ খুঁজি পাই।<br />সমুদ্রের তীরে বসে আছি একা<br />তার কুহকী মায়ায় রাত্রি দিন কেটে যায়<br />বসে বসে মনে হয় ঐ বুঝি তুমি<br />দুর্বোধ্য ভাষায় শুধু কাছে টানো, ফেরাতে পারি না।</p>
<br /><p>আকাশে আকাশে নক্ষত্র জ্বলে ওঠে<br />রাত্রির ঢেউয়ে সরে সরে যায় আবার এসে দাঁড়ায়<br />মনে হয় তুমি ভালোবেসে একবার ফিরে যাও<br />আবার ফিরে এসে থামো।<br />হঠাৎ পায়ের শব্দ শুনি চমকে উঠি<br />দেখি একটা গাধা; পিছে পিছে হাঁটতে থাকি হাঁটতে থাকি<br />তবুও আনন্দ হয়; মনে হয় সেটাই তুমি, সেটাই তুমি।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/ukhiya/উখিয়া2019-09-18T02:21:22-04:002023-06-24T20:41:08-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তাদের কান্নার দাগ মুছে দিতে আকাশ ছেয়েছে কালো মেঘে <br />তুমুল তোড়ে আগুনের ফুলকির মতো বৃষ্টি নামে<br />রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে মায়ের কোলে শিশু<br />খোলা আকাশের নিচে ক্ষুধার যন্ত্রণা নিয়ে দাঁড়িয়ে ভিজে ভিজে<br />কঠিন সত্যকে নেয় চিনে; এই মাটিও তাদের নয়।</p>
<br /><p>মৃত্যু উপত্যকা ছেড়ে তারা এসেছে এখানে জীবনের খোঁজে<br />হরিণের মাংসের গন্ধে ওঁৎপেতে বিপদ আসে<br />সম্পদের আকর্ষণে ডাকাত দস্যু দুর দূরান্ত থেকে আসে<br />দুর্বল মানুষ দেখে ধূর্তরা চালাক শেয়ালের মত সুযোগ খোঁজে<br />নেতাহীন জন-অরণ্যের দখল নিতে <br />বাঘ সিংহ হায়েনা একসাথে আসে; কাকে ফিরিয়ে দেবে!</p>
<br /><p>একসময় আরাকান রাজসভা ছিল বাংলা সাহিত্যের চর্চাকেন্দ্র<br />এখন সেখানে নৈরাজ্য, তারা হারিয়েছে নাগরিক অধিকার<br />তারা নিষ্ঠুর শাসকের করুণা নিয়ে বেঁচে থাকে<br />শাসকের চোখে কেবল রহিঙ্গাদের সম্পদের চমক ওঠে<br />মাটির নিচে, পাহাড়ে, সমুদ্রে সম্পদে ঝলসানো স্বার্থের বিষ<br />বিদেশি বেনিয়াদের খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকাতে হবে<br />ক্ষমতার চিরযৌবন রূপের মোহে মানুষের জীবন কিছু নয়!</p>
<br /><p>স্বার্থের বারুদের বিস্ফোরণে জ্বলছে জনপদ<br />পুড়ছে বাড়িঘর, পুড়ছে আটকে পড়া মানুষ, গৃহপালিত পশু<br />পলায়নরত মানুষের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসে বুলেট <br />জীপ গাড়িতে আসে সৈন্য, খোলা তলোয়ার হাতে পার্টির ছেলেরা<br />তবুও রাতের আঁধার নামে, তারা অশ্রু মুছে ফেলে।<br />পাহাড়ে অরণ্যে লুকিয়ে টহলরত প্রহরীদের চোখ এড়িয়ে <br />অনাহারে অর্ধাহারে মাইলের পর মাইল কাঁদা পানি জঙ্গল ভেঙে<br />বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে তারা উখিয়ায় এসেছে।</p>
<br /><p>পরিবারের নয় জন লাশের মধ্যে লাশ হয়ে থেকে<br />একজন অবশেষে পৌঁছেছে এখানে<br />চোখের সামনে পিতা, ভাই, স্বামীর মুণ্ড বিচ্ছিন্ন হতে দেখে <br />কোলের শিশুটাকে বুকে আগলে ধরে কেঁদেছে নারী<br />সভ্রমের বিনিময়ে জীবন ভিক্ষা পেয়ে নারীও এখানে এসেছে!<br />এক লোক পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছিল হায়েনাদের হাতে<br />তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল তারা<br />আগুনে পোড়া ক্ষত নিয়ে সেও এখানে এসেছে!<br />যুবক ছেলেদের কাঁধে চড়ে বৃদ্ধরাও এখানে এসেছে<br />এখানে হাজারে হাজারে প্রতিটি মানুষেরই এরকম এক একটা গল্প আছে<br />আসার সময় তারা দেখেছে পথের ধারে<br />স্বজনদের লাশ নিয়ে শকুন আর শেয়ালের টানাটানি<br />তীব্র গন্ধের মৃত গলিত শবদেহকে পাশ কাটিয়ে হেঁটে এসেছে<br />মৃত সন্তানকে বুকে ধরে বাঁচার আশায় হেঁটে এসেছে<br />ডোবার ভেতর কচুরিপানার জঙ্গল ঠেলে বেরিয়ে পড়ে মুণ্ডহীন ধড়<br />নাফ নদীর তীরে পানার মতো ভেসে যায় স্বজনের লাশ<br />এই সব পেরিয়ে উখিয়ায় এসেছে তারা আশ্রয়ের খোঁজে।</p>
<br /><p>এইটুকুন এক জায়গা কে দেবে তাদের! কি খাবে তারা!<br />কোন উত্তর নেই! তবুও এসেছে।<br />তবুও এখানে তারা পায় লাশের গন্ধমুক্ত বিশুদ্ধ বাতাসের খোঁজ<br />তারা ফেলে এসেছে মৃত্যু উপত্যকা, আজো সেখানে চলছে নিষ্ঠুর খেলা<br />তাদের কান্নার দাগ মুছে দিতে <br />তুমুল তোড়ে আগুনের ফুলকির মতো বৃষ্টি নামে<br />মায়ের কোলে শিশু; পেটে ক্ষুধার যন্ত্রণা; মাথার উপর খোলা আকাশ<br />তাদেরও দু’চোখ ভোরে বৃষ্টির মতো স্বপ্ন নামে<br />বেঁচে থাকার, ভালো থাকার।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/anek-dure-jete-hobe/অনেক দূরে যেতে হবে2019-09-14T14:56:32-04:002023-06-24T20:40:42-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>তোকে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে<br />শুধু সামনে তাকাবি!<br />উপরে উঠতে গেলে শুধু সামনে তাকাতে হয়!<br />শুধু সামনে।<br />তোর মা সামান্য পয়সা বাঁচাতে <br />রোজ ভোর হতে রাত্রি অবধি খেটে যায়।<br />সেদিকে তাকাবি না।<br />আমি দিনের পর দিন<br />একই ড্রেস পরে ভাঙা সাইকেলে রোজ অফিসে যায়<br />সেদিকে তাকাবি না।<br />এমনকি কোন মেয়ে ইশারায় কিছু বলতে এলে এড়িয়ে যাবি <br />তোকে অনেক দূরে যেতে হবে।<br />শুধু সৎপথে থাকবি আর মন দিয়ে পড়ে যাবি<br />খাড়া পাহাড় বয়ে উপরে উঠতে অনেক দম লাগে। বুঝলি!!</p>
<br /><p>বাবা আমি পেরেছি! ছোট এক পাহাড়ের চূড়ায় উঠে পড়েছি<br />ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি।<br />আমাদের ভাঙা বাড়ির বদলে ডুপ্লেক্স উঠবে<br />তোমার সাইকেলের বদলে ফ্যাশনেবল গাড়ি থাকবে<br />মায়ের জন্য চার-পাঁচটা চাকরানী !!<br />আমি এখন আর পিছনের দিকে তাকাই না<br />শুধু দেখি সামনে। আমাকে অনেক দুরে যেতে হবে! অনেক দুরে.....!! </p>
<br /><p>বিবেক বন্ধ করে অকারণে স্যারের পিছনে ঘুর ঘুর করতে পারিনি<br />তাই পরীক্ষায় সামনের সারি অন্যদের দখলে !!<br />সময় চলে যায় বয়ে আনে আরও দুঃসংবাদ<br />বাবা,তোমার দেওয়া শিক্ষা ক্রমশ ভুলে যাচ্ছি !<br />সেদিন বিয়ের কার্ড নিয়ে এসেছিল নিপা<br />জলে ভরা চোখ নিয়ে বিদায় নিলো<br />দেখে বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠল।<br />ওর শরীরের পারফিউমের গন্ধ এখনও নাকে লেগে আছে<br />না না! ওর সাথে সেরকম কিছুই হয়নি<br />শুধু নোট দিয়েছি আর নিয়েছি; ওদিকে সেভাবে দেখিনি।<br />তবুও মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায়,সেইসব দিনগুলির কথা মনে আসে।</p>
<br /><p>ফুটবল,ক্রিকেট খেলিনি,বন্ধুদের সাথে আড্ডা জমায়নি<br />বইয়ের পাতায় মুখ গুজে শুধু পড়ে থেকেছি।<br />এ সমাজের নির্মম ব্যবস্থার অক্টোপাস<br />আমার বিবেককে হত্যা করেছে।<br />তাই বলে বিবেকের অসাড় শবের পাশে বসে<br />ক্রন্দনের ধ্বনিতে আকাশ বিদীর্ণ করিনি<br />ক্রুদ্ধ চোখে ক্ষোভের বারুদের গায়ে আগুন লাগিয়েছি<br />আমাকে অনেক দূরে যেতে হবে। অনেক দূরে...!!<br />এখন আদর্শ বিবেক স্রোতের মুখে ছুঁড়ে ফেলে<br />তোমাদের নগ্ন সভ্যতার মোহনায় এসে সুযোগের অপেক্ষায় আছি।<br />বিশাল একটা ঢেউয়ে চড়ে সহজেই পৌঁছে যাব দূরে! অনেক দূরে। </p>
<br /><p>হ্যাঁ বাবা আমি পেরেছি!<br />জীবনের খাড়া পাহাড়ের বিশাল উচ্চতায় এসে দাঁড়িয়েছি<br />আমার এক সাইনে পাশ হয়ে যায় কোটি কোটি টাকা<br />ফ্যাশনেবল গাড়ি,লাক্সারী ফ্লাট, সুটকেস ভর্তি টাকা গিফট আসে<br />না না ঘুষ নয়! আমাকে ভালবেসে লোকজন দিয়ে যায় ।<br />আমাকে ওদের ভালবাসতেই হবে! ওদের সব ফাইল যে আমার হাতে!!</p>
<br /><p>ওরা আমার সঙ্গ পেতে দাওয়াতের কার্ড নিয়ে ঘুর ঘুর করে<br />বাড়ির বদলে পাঁচতারা হোটেলের নিয়ন আলোয়।<br />সেখানে মেকআপের সুন্দর কারুকার্য রমণীদের গালে<br />ডালিম ফুলের রক্তিম আভা শোভা পায়।<br />হাসির ঝড়ের আঘাতে মদের পিয়ালায় টুনটুন শব্দ ওঠে<br />সে আওয়াজ হৃদয়ের দেয়ালে প্রতিধ্বনির ঝংকার তোলে।<br />নর্তকীর পায়ে ঘুঙ্গুর বাজে।<br />ব্যান্ডের তালে ফর্সা সুন্দর দেহের ঝাঁকুনিতে স্টেজ কাঁপে<br />চোখে বিস্ময় জাগে,ওঠে কামনার ঝড়।<br />তবু ছেলেবেলার সেইসব চেনা মুখ, <br />আমাদের সেই ছোট্ট বাড়ী, বাবার ভাঙা সাইকেল, নিপার জলে ভরা চোখ<br />সব একাকার হয়ে যায়।<br />না,না। না! এখনও আমাকে অনেক দূরে যেতে হবে।<br />হতে হবে আরও অনেক বড় মানুষ। অনেক বড়.......!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/prish-rode/প্যারিস রোডে2019-08-23T15:55:21-04:002023-06-24T20:40:59-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>বহুদিন পর রোদের দুপরে ছায়া ঢাকা প্যারিস রোডে<br />পিছন থেকে এক নারী ডাকল আমায়<br />অকস্মাৎ ডাকে আমার চোখে বিস্ময় কৌতূহলে<br />কত-কত দিন পরে দেখলাম সেই মুখ<br />তার চোখে জ্বলে আমাদের প্রেমের চিতার আগুন।</p>
<br /><p>আমি এখন প্রেম-অপ্রেম থেকে অনেক দুরে<br />সে কি কথা ভাবছে এখন এই নির্জন দুপরে!<br />হৃদয়ের খেলা নিয়ে<br />কত কত দিন দেখা হত আমাদের এইখানে<br />তার সাথে হেরে গেছি বহুবার; তবুও পেয়েছিলাম শান্তি<br />আজ তার মুখ ঢেকে আছে কৌতূহল জিজ্ঞাসায়।</p>
<br /><p>মায়া আর আবেগ এখনো বয়ে চলে নদীর মতো<br />ভুলে যাওয়া মুখ অন্তরে খেলা করে জোনাকির মতো<br />শরীরে ঘুমের ঘ্রাণ স্মৃতির গায়ে আলপনা আঁকে<br />কী চেয়েছি? কী পেয়েছি? কী হারিয়েছি! এইসব!<br />এক তারা ভরা রাতে জোছনার গন্ধ ভরা বাতাসে<br />অন্তিম আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তাকে চেয়েছিলাম<br />যেন সে ছিল এক সাধনার ফল<br />এখনো নারী মানে-ই তার মুখ ভেসে ওঠে!</p>
<br /><p>নিয়তির সুতায় ভাগ্য বুনে চলে<br />আমরা তার জালে জড়িয়ে পরস্পর থেকে সরে গেছি<br />দুর থেকে দুরে<br />বড় বড় বুকভরা ব্যথা, সংকল্প, স্বপ্ন আমাদের মুখের রেখায়<br />আজকের উজ্জ্বল রোদে সেই আগের মতো<br />পরস্পরকে ভালোবাসা দিতে গিয়ে থেমে যাই<br />তার আগে দু’টি সময়ের জাহাজ এসে থামে<br />তারপর; আমাদের দু’জনকে নিয়ে চলে যায়।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/sei-duti-chock/সেই দু’টি চোখ2019-08-16T04:01:10-04:002023-06-24T20:41:02-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>সেই দু’টি চোখ জানালার ধারে ট্রেনের কামরায়<br />বিদায় বেলায় একটা মায়ার জাল <br />আমাকে টেনে নিয়ে গেয়েছিল তার কাছে<br />ভাঙ্গা বুকের কান্নাকে পাথর চাপা দিয়ে<br />আমি তার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম দ্বিধাগ্রস্ত<br />ট্রেনের হুইসল বেজে ওঠে<br />বুকের মধ্যে একটা কষ্টের নদী হুহু করে বয়ে চলে<br />সেই যে আমি আমার কী আছে<br />কি দিয়ে তাকে ধরে রাখি!<br />দু’চোখে জলের ঝরনা মাটির দেহ বুঝে নেয়<br />হয়তো প্রতিদিন একই নাটক<br />এই প্লাটফর্মে মঞ্চায়িত হয়,শুধু বদলে যায় মুখ।</p>
<br /><p>দুরের ট্রেন যাত্রা শুরু করে<br />আমি প্লাটফর্মে পাগলের মতো দাঁড়িয়ে পড়ি<br />আমার চোখের মধ্যে শুধু এক জোড়া চোখ<br />ক্রমে এগিয়ে আসে আমার দিকে<br />সেই চোখে কাঁচের মতো স্বচ্ছ জল<br />শিশিরের মতো টলমল<br />আমি তার সাথে সাথে ট্রেনের সাথে সাথে<br />প্রাণপণে দৌড়াতে থাকি<br />তবু্ও ট্রেন আমাকে পেছনে ফেলে চলে যায়<br />আমি থেমে ঝাপসা চোখে<br />চলে যাওয়া ট্রেনের দিকে তাকিয়ে থাকি<br />ট্রেন ধীরে ধীরে দিগন্ত রেখায় মিশে যায়<br />তবুও আমি দাঁড়িয়ে থাকি মেটে না সাধ<br />শুধু দেখি জানালার ধারে এক জোড়া চোখ<br />চাপা রঙের উড়না মাথায় কপালে লাল টিপ<br />আমার বুকের ভেতরে ঝড়<br />আবার যদি একদিন দেখা হয় হঠাৎ তার সাথে <br />যখন পৃথিবীর সব আলো নিভে গেছে<br />আকাশে একাদশী চাঁদ।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/valobashi-ei-kothati/ভালবাসি-এই কথাটি2017-10-14T04:31:46-04:002023-06-26T01:09:06-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>‘ভালোবাসি’ এই কথাটি তোমার মুখ থেকে শুনব বলে<br />এতগুলো বছর অপেক্ষায় কেটে গেছে।<br />তোমাকে দেখি আর তোমার কথাই ভাবি<br />আমার জন্য আছে নাকি ভালোবাসা!<br />ভালোবাসার কথা তোমার কি শোনার সময় আছে!</p>
<br /><p>হৃদয় ভেসে যায়, অন্তরে অবসাদ জমে<br />সবই শূন্য মনে হয়; কে আমাকে ভালবাসে!!<br />আমাকে করেছ মুগ্ধ, স্বপ্ন দিয়ে দু’চোখ ঢেকেছি<br />বিদ্যুৎ চমকানোর মতো হেসে উঠেছিলে তুমি<br />আমি ঠিক ওভাবেই তোমাকে দেখেছিলাম<br />হঠাৎ মুখ ফিরে তোমাকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম।</p>
<br /><p>কতদিন আর কতদিন, কে জানে আর কতদিন<br />তোমার চোখে আমি চেয়েছি আশ্রয়<br />আমি বাড়তি কিছু বলিনি!<br />কতদিন ভাবি তুমি আর আমি সময়ের হাত থেকে ছুটি পেয়ে<br />বসি মলিন আলোর নিচে।<br />তবুও তো একদিন জানব কাউকে ভালবেসেছিলাম<br />জেগে ওঠে আবেগ পাহাড়ের মতো মাঝরাতে কিংবা শেষ রাতে<br />চিপা গলির অন্ধকার ফাকে চুপিচুপি তোমারে দেখি<br />ব্যক্তিগত গ্লানি ভুলে চেনা নারীর মতো তোমাকে চেয়েছি।</p>
<br /><p>গভীর বিস্ময়ে টের পাই আমার হৃদয়ে বসন্ত এসেছে।<br />অবাক পৃথিবীর বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে রয়েছ কঠোর নিষ্ঠুরতা<br />হৃদয় আকাশে ম্লান ভালোবাসার পর্দা নামে<br />তবুও মনে হয় এ জীবনে তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bitter-magic-moshal/বিত্তের ম্যাজিক মশাল2017-09-22T02:45:09-04:002023-06-24T20:40:47-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>হাঁটুর মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে বসে থেকে থেকে<br />জীবনের চল্লিশটি বসন্ত কেটে গিয়েছে<br />অবাধ্য স্বপ্নগুলোকে বুকের মধ্যে লালন করেছি<br />দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করেছি স্বপ্ন ধ্বসে পড়ার জ্বালা<br />বুকে বেদনা নিয়ে একাকী পথ চলেছি<br />শরীর থেকে রক্ত নিংড়ে নিয়েছে সুবিধাভোগীরা<br />আমি মুক্তির জন্য বদ্ধ খাঁচায় পাখির মতো ডানা ঝাপটিয়েছি। </p>
<br /><p>এখন তো তোমরা আমার জয়গান করবেই<br />তোমরা তো দেখনি অভাবের তীব্রতায় স্বপ্ন ক্ষয়ে যাওয়া।<br />তোমরা দেখনি আগামীকালের দু:চিন্তায় নির্ঘুম রাত পার করা<br />তোমরা দেখেছ শুধু আমার জৌলুসে ভরা রঙিন জীবন!</p>
<br /><p>আমার কাছে আছে এখন অর্থ-ভাণ্ডারের অমৃত সুধা<br />মধুর টানে তোমরা মৌমাছির মতো তো আসবেই।<br />কত হিম সন্ধ্যাবেলা, বৃষ্টি ভেজা রাত, জোছনা ভরা আকাশ<br />জলসা ঘরের বর্ণালী আলোক সজ্জা, হাই বিটের মিউজিক<br />আমার কাছে একঘেয়ে ঠেকেছে, চোখের কোনে তীব্র জ্বালা ধরেছে<br />খালি পকেটে কতই আর স্বপ্ন দেখা যায়!<br />মাত্র দু-চারটি টাকা বাঁচানের পথ আবিষ্কারের খোঁজে<br />ব্যর্থ চেষ্টায় আকাশ-পাতাল এক করেছি।</p>
<br /><p>তোমরা এখন আমার জন্য স্তুতি বাক্যের কবিতা রচনা কর!<br />বিজয় মাল্য কে আগে পরাবে তা নিয়ে তোমাদের মাঝে সংঘর্ষ হয়।<br />অথচ একদিন নিজের মনের সাথে বিবেকের সাথে <br />সংঘর্ষ করতে করতে আহত হয়েছি, ভাঙ্গা মনে যন্ত্রণা বয়ে বেড়িয়েছি<br />অথচ এখন আমার সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য <br />মিডিয়ার ভিড়, ব্যাংকগুলোর লম্বা লাইন<br />কয়টাকেই বা ফিরিয়ে দেব আমি!<br />আগে যেসব মানুষদের দুর থেকে দেখতাম তারার মতো<br />তারা এখন আমার হাতের স্পর্শ পেলে ধন্য হয়ে যায়<br />এখন যে আমার হাতে আছে বিত্তের ম্যাজিক মশাল!!</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/tomake-khuje-anboi-anbo/তোমাকে খুঁজে আনবই আনবো2017-09-17T22:23:46-04:002023-06-27T18:38:01-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>নূপুরের ছন্দে চমকে উঠে ধ্যান ভেঙে যায় <br />তাকিয়ে থাকি তোমার চকচকে মহনীয় চোখে<br />এ কি অপূর্ব বিস্ময়! <br />সেই থেকে আমার বিনিদ্র রাত<br />কখনো না আসে আমার প্রত্যাশিত ভোর<br />আমার দিন কাটে তো রাত কাটে না<br />নিরন্তর করুণ সুরে হাহাকার ওঠে বুকের চিতায়<br />আমি জ্বলে পুড়ে যায় বেদনায় নিঃসঙ্গতায়।</p>
<br /><p>ব্যকুল চোখে পথে পথে খুঁজে ফিরি ঐ মায়ার মুখচ্ছবি।<br />আমার বন্ধ নয়নে অন্ধকার<br />অথচ বিগলিত হৃদয়ে আলোর তুফানে স্বপ্ন চমকায়<br />মনের খাঁচায় বন্দি আশা উড়ে যায় আকাশের নীলিমায়।</p>
<br /><p>দুরের অস্পষ্ট ছায়াপথে তোমার স্থিরচিত্র ফুটে ওঠে<br />আচমকা বেজে ওঠে রাগিণীর সুর ঝংকার<br />আমাকে জাগিয়ে তোলে তোমার মায়াবী ঐ দুটি চোখ<br />রৌদ্রদগ্ধ পিপাসার্ত মরু পথিককে ফিরিয়ে দেয় কঠোর মরীচিকা<br />তবুও সে কি আশা ছাড়ে! ছাড়ে না।<br />আমিও আশায় থাকি অপেক্ষমাণ রাতের অন্তহীন অন্ধকারে<br />একদিন তোমাকে খুঁজে আনবই আনবো।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/sontan-dure-ase/সন্তান দূরে আছে2017-09-08T16:54:46-04:002023-06-24T20:41:03-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>সন্তান দূরে আছে অসীম শূন্যতা বুকে <br />ভালোবাসায় ভরা সেই ঘরে তারা<br />তাদের প্রিয় মুখগুলো খোঁজে হতাশায়<br />স্মৃতির বীণায় বাজে শুধু বেদনার সুর।</p>
<br /><p>জীবন বয়ে যায় আশা জেগে থাকে<br />একদিন সন্তান এসে ভালোবেসে পাশে বসে<br />মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে শুনবে তাদের কথা<br />সেই ছেলেবেলার মতো!<br />কিন্তু সেই আশা অবারিত প্রান্তরে আঘাত করে<br />বার বার ফিরে আসে তীব্র হতাশা নিয়ে।</p>
<br /><p>এই সন্তানের মঙ্গল কামনায় সীমাহীন আনন্দ পেত তারা<br />কঠিন পীড়ায় সন্তানের জীবন প্রদীপ যখন নিভ নিভ<br />তখন গভীর উৎকণ্ঠা নিয়ে আরোগ্য প্রার্থনায়<br />সারারাত কাটিয়ে দিতো এই দু’টি অসহায় নর-নারী।<br />তোমাদের মুখ চেয়ে<br />নিজের সুখ একটু একটু করে মুছেছিল যারা<br />তোমাদের স্বপ্ন রাঙাতে সব সঞ্চয় হাসি মুখে দিয়েছিল যারা<br />তারা আজ সংসারের বোঝা।<br />‘কেমন আছে তারা?’ <br />একথা জানার অবকাশ নেই তোমাদের।<br />এত ভালোবাসার এই প্রতিদান!<br />তোমার কষ্টের ভুবনে যারা ছিল তোমার পাশে<br />ত্যাগ আর ভালোবাসা দিয়ে ভরাল তোমার জীবন<br />তাদের কপালে এঁকে দিলে তুমি বেদনার টিকা!</p>
<br /><p>বিধাতা ভুলে নাই,সব লেখা আছে তার খাতায়।<br />দণ্ড দিতে যখন তোমাকে দেখাবে সেই খাতা<br />তখন ভয়ে কাঁদিবে তুমি সেই ছোট্ট শিশুর মত<br />দেখে বিধাতা হেসে বলবেন<br />তুমি কাঁদিয়েছিলে দু’টি প্রাণ; ক্ষমা নেই।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/sader-kinare-chad/ছাদের কিনারে চাঁদ2017-09-01T16:35:42-04:002023-06-24T20:41:02-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>ছাদের কিনারে চাঁদ আমাকে ডেকেছিল<br />পেয়েছিলাম তোমাকে<br />আকাশের দিকে তাকাতে ভুলে শুধু তোমাকে দেখেছি<br />তোমার চোখে ছিল নীল জোছনার আলো <br />তুমি একবার আমার চোখের দিকে চেয়েছিলে<br />তবুও তখন আমি নিশ্চুপ ছিলাম দাঁড়িয়ে।<br />রক্তিম মদের ফেনার মতো আবেগ উপচে উঠেছিলে।</p>
<br /><p>আমাকে দেখে তোমার মুখে হাসির ফোয়ারা উঠেছিল<br />পরনে ছিল লাল রঙের কামিজে কালো সালোয়ার<br />আমার হৃদয়ে দপ করে জ্বলে উঠেছিল আলো<br />তোমার রূপের আগুনে পুড়েছিল আমার চোখ।<br />রহস্য ঘেরা লাজুক হাসি নিয়ে<br />তুমি একাকী হেঁটে গিয়েছিলে সিঁড়ির দিকে ধীরে।<br />বোধহয় পৃথিবীর সব প্রেমিকের মতো<br />আমিও তোমার জন্য এই রাতের আলোয় অপেক্ষায় ছিলাম।<br />জোছনার সীমানা ছেড়ে অন্ধকার ছায়ায় সরে এসে<br />চুপিচুপি তোমাকে দেখেছি<br />তোমার শরীরের গন্ধ রাতের অন্ধকারে গিয়েছিল মিশে।</p>
<br /><p>এখনও দখিনা বাতাসে চাঁদের আলোয় বুকের মধ্যে<br />এ কার ডাক শুনি!<br />আমি তোমার গাঁয়ের ঘ্রাণ পায়; এ এক বিস্ময়! <br />যেন জোছনার শরীরের স্বাদ তোমার সাথে মিশে গেছে<br />যেখানে জোছনা নাই, আছে অন্ধকার, সেখানে দাঁড়ায়<br />এসেছে প্রেমের সময়, আমার বুকে আছে কেবল অসীম পিপাসা<br />তোমার বুকেও হয়তো জেগেছে বিস্ময়<br />ফুটেছে আকাঙ্ক্ষা-প্রেম<br />চিতার বুকে যেমন হরিণের মাংসের ঘ্রাণ আসে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/bristi/বৃষ্টি2017-08-25T06:54:10-04:002023-06-26T11:25:17-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে ঝুপ ঝুপ বৃষ্টি নামলো ব্যস্ত এই শহরে<br />কোলাহল থেমে নেমে এলো শশ্মানের নীরবতা।<br />সীমাহীন দুঃখে নিবিড় মায়ায়<br />অঝর ধারায় কাঁদছে শরতের আকাশ<br />তীব্র ক্ষোভে বিশাল শব্দে আছড়ে পড়ছে আলোর ঝলকানি।</p>
<br /><p>খোলা জানালা ভেদ করে কোমল বাতাস ছুঁয়ে দিল আমাকে<br />অদ্ভুত এক শিহরণে ঘুম ভেঙে চোখ মেলে দেখলাম<br />বিজলী মেয়ের হাসির চমকে<br />নূপুর পায়ে রিমঝিম শব্দের তালে নেচে যায় জলপরী<br />নীরবে গিয়ে দাঁড়ালাম জানালার পাশে<br />হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছুঁয়ে দিতেই মনে পড়ে গেল তোমাকে।</p>
<br /><p>হৃদয়ে জাগল নিবিড় পুলক<br />শীত থামাতে কাঁপা কাঁপা হাতে তুলে নিলাম গরম চাদর<br />শূন্য খাটে চাদর মুড়ি দিতেই বিষণ্ণতা জেগে উঠলো<br />আমার সমস্ত অস্তিত্ব,শরীরের প্রতিটি কণা<br />তোমার স্পর্শ পেতে ব্যকুল হলো।</p>
<br /><p>যদি তুমি থাকতে আমার পাশে<br />তাহলে তোমার স্পর্শে আজকের বৃষ্টির মতো<br />অঝর ধারায় শান্তি ঝরে পড়ত আমার এই হৃদয়ে।<br />তখন আমি স্বর্গের সুনীল সাগরের উপর বর্ণিল মেঘ হয়ে<br />ভেসে বেড়াতাম।<br />তবুও তুমি কেন এত দূরে থাকো? তুমি কি বোঝ না?<br />এই বৃষ্টি ভেজা রাতে<br />শুধুই খুঁজে ফিরি তোমার বুকের উষ্ণতা।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amar-redoy-khoke-pai-na/আমার হৃদয় খুঁজে পাই না2017-08-18T06:50:26-04:002023-06-24T20:40:38-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>যখন তোমার হলো মেহেদী রাঙা হাত<br />তখন আমার ঘনিয়ে এলো স্বপ্ন ভাঙ্গার দিন<br />ফুলে সাজানো গাড়ীতে নিয়ন আলোর বন্যায়<br />আমাকে ছেড়ে তুমি গেলে এক নতুন ঘরে<br />চারদিকে বিস্তীর্ণ কোলাহলে তুমি নতুন মানুষ<br />তবুও তোমার নতুন বাঁধনে নতুন হাসি মিষ্টি আলাপন।</p>
<br /><p>আর আমার শূন্য এ বুকে ফিরে আসে স্মৃতির ব্যথা<br />স্বপ্ন ভাঙ্গার জ্বালা।<br />এ জ্বালা তো কেউ বোঝে না<br />শুধু ক্ষত হয়ে জেগে থেকে কাঁদায় বারেবারে।<br />ভালোবেসে পাইনি বলে মিছে কেঁদে কি হবে?<br />কিন্তু মন যে বোঝে না !<br />ভুলতে গিয়ে আরও বেশি করে কেন এত মনে পড়ে?</p>
<br /><p>এ পৃথিবী জয়ীর পূজারী।<br />জয় হোক যতই নোংরা পথে তবুও তার জন্য <br />এ পৃথিবী-বাসী ফুলের মালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে।<br />পরাজিতদের কেউ খোঁজে না<br />তাই আমি হারিয়ে গেলাম তোমার মনের অন্ধকারে।<br />আমার রচিত ফুলের বাগানে এখন নতুন মালী<br />আর আমি,<br />ব্যর্থ এ জীবনে বেদনা লুকাতে<br />নিশীথ রাতে জায়গা খুঁজি দূর আকাশের সীমানাতে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/amake-tomar-pase-pabe/আমাকে তোমার পাশে পাবে2017-08-13T10:56:08-04:002023-06-27T03:50:58-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>যদি সব নদীর জল শুকিয়ে মরুতে মেশে<br />আকাশের সব তারা যদি খসে পড়ে<br />চৈত্রের প্রান্তরে যদি খরা আসে দাবানল ছড়াতে<br />পৃথিবীর সমস্ত বন জঙ্গল যদি ঢাকে কয়লার ছায়ে<br />তবুও তখন তোমার পাশে আমাকে পাবে।</p>
<br /><p>তোমার একক গানের জলসায় শ্রোতা-হীন আসরে<br />জীবনের উত্তাল সমুদ্রে স্বপ্ন ভাসাতে<br />ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে লক্ষ্যে পৌঁছাতে<br />সংসারের সকল বন্ধন থেকে মুক্তির ছাড়পত্র পেতে<br />তুমি আমাকে তোমার পাশে পাবে।</p>
<br /><p>ভোরের বিশুদ্ধ বাতাস বুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে<br />নির্মল সূর্যোদয়কে স্বাগত জানাতে<br />উড়ন্ত পাখির ডানায় তোমার স্বপ্নগুলোকে বেঁধে দিতে<br />মুক্ত আকাশের নিচে সবুজ ভালোবাসার প্রান্তর সাজাতে<br />বুকের ভেতর নীরব হাহাকারকে বিদায় জানেতে<br />তুমি আমাকে তোমার পাশে পাবে।</p>
<br /><p>তোমার সকল দীনতা পূর্ণতা খুঁজে পেতে<br />আমার দু’বাহু মালা হয়ে তোমাকে জড়াবে<br />বিজয়ের গৌরব আকাশে ঝুলিয়ে দিতে<br />তোমার রাঙা ঠোটে গোলাপের পাপড়ি মেলাতে<br />তোমার অন্তরের অফুরন্ত বেদনা সহজে হারাতে<br />তুমি আমাকে তোমার পাশে পাবে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/rater-prohori/রাতের প্রহরী2013-09-19T23:52:14-04:002023-06-24T20:41:01-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>রাতের আঁধার ভেঙে উঠেছে পূর্ণিমার চাঁদ<br />নিঝুম রাতে সবাই ঘুমায়<br />শুধু জেগে আছে রাতের প্রহরী।<br />শূন্য বিছানায় প্রিয়তমা তাকে পেতে<br />ঘুমের ঘোরে তাকে দু’হাতে খোঁজে নিরাশায়।</p>
<br /><p>আঁধারের ঘোমটায় ঢেকে<br />প্রেমের আবেগে কানে কানে কতকিছু বলার ছিল<br />কিছুই হলো না তার! ঘুম চলে যায়।<br />অপেক্ষার রাত আরও দীর্ঘ হয়<br />তারপরও সে আসে না।<br />আসবে কি করে!! সে যে রাতের প্রহরী।</p>
<br /><p>নিজের সম্পদ অরক্ষিত রেখে<br />প্রিয়তমার সান্নিধ্য থেকে নিজেকে তিল তিল করে বঞ্চিত করে<br />অন্যের সম্পদ পাহারা দেয় রাতের প্রহরী ।<br />এই মহান কাজের বিনিময়ে পায় অবহেলা আর অবজ্ঞা<br />তবুও মাঝ রাতে বাঁশি শোনা যায়,<br />পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়,কণ্ঠ ভেসে আসে।</p>
<br /><p>টানাটানির সংসারে ভুলে গেছে তার জীবনের সাধ<br />বৃথা আশায় কেটে যায় পৃথিবীর সুন্দর সময়গুলি<br />সোনার সে দিন,মনের মতো সে দিন তবুও আসে না।<br />বুকে কষ্ট নিয়ে<br />সমাজের বুকে মাথা নিচু করে বেঁচে থাকে রাতের প্রহরী।<br />আর স্বপ্ন দেখে তার প্রতীক্ষায় প্রিয়তমা পথ চেয়ে,<br />হৃদয়ের ক্যালেন্ডারের পাতায় সে দাগ কেটে চলে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/mehedi-ranga-hath/মেহেদী রাঙা হাত2013-06-20T23:55:18-04:002023-06-27T17:15:21-04:00আশিকুজ্জামানhttps://www.bangla-kobita.com/ashiquzzaman/<p>যখন তোমার হলো মেহেদী রাঙা হাত<br />তখন আমার ঘনিয়ে এলো স্বপ্ন ভাঙ্গার দিন<br />ফুলে সাজানো গাড়ীতে নিয়ন আলোর বন্যায়<br />আমাকে ছেড়ে তুমি গেলে এক নতুন ঘরে<br />চারদিকে বিস্তীর্ণ কোলাহলে তুমি নতুন মানুষ<br />তবুও তোমার নতুন বাঁধনে নতুন হাসি মিষ্টি আলাপন।</p>
<br /><p>আর আমার শূন্য এ বুকে ফিরে আসে স্মৃতির ব্যথা<br />স্বপ্ন ভাঙ্গার জ্বালা।<br />এ জ্বালা তো কেউ বোঝে না<br />শুধু ক্ষত হয়ে জেগে থেকে কাঁদায় বারেবারে।<br />ভালোবেসে পাইনি বলে মিছে কেঁদে কি হবে?<br />কিন্তু মন যে বোঝে না !<br />ভুলতে গিয়ে আরও বেশি করে কেন এত মনে পড়ে?</p>
<br /><p>এ পৃথিবী জয়ীর পূজারী।<br />জয় হোক যতই নোংরা পথে তবুও তার জন্য <br />এ পৃথিবী-বাসী ফুলের মালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে।<br />পরাজিতদের কেউ খোঁজে না<br />তাই আমি হারিয়ে গেলাম তোমার মনের অন্ধকারে।<br />আমার রচিত ফুলের বাগানে এখন নতুন মালী<br />আর আমি,<br />ব্যর্থ এ জীবনে বেদনা লুকাতে<br />নিশীথ রাতে জায়গা খুঁজি দূর আকাশের সীমানাতে।</p>@ 2024 - আশিকুজ্জামান