ফাগুন বিলাপ


১.


এই ফাল্গুন ছাপিয়ে আসছে চৈত্র, তাপদাহ এবং
ঈশান কোণের কালো মেঘের হাওয়ার পালা, বৈশাখী ঝড়
ধুলো উড়বে, ফুল উড়বে, আবার ঝরবে, নিরন্তর।
আমি একা কুনো ব্যাঙ, ঘরের কোণায় মুখ লুকোবার দিন এসেছে
সহ্যাতীত হয়ে দাঁড়িয়েছে এই পরাগ স্ফুরণ, ধুলির প্রকোপ
নিজেকে নতুন করে দেখছি, কী অপরূপ ইউ-টার্ণ,
বসে ভাবছি কোন সুরে যে শুরু হয়, আর কোথায় মেলায় জীবনের গান।


রচনাকালঃ ১১ ফাল্গুন ১৪২৩/বৃহস্পতিবার/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ঢাকা।


                প্রিয় মৃত্তিকা


২.


পুরনো উঠান জেগেছে আবার জাগবে পুরনো ঘাস
নতুন পাওয়া পুরানো উঠোনে হোক সবুজের চাষ।
নতুন করে পুরাতনকে ক’জন জীবনে পায়!
সকল স্মৃতির ভারকে আগলে চারণের পথে যায়!


পুরনো উঠোন হাত ধরে আনে পুরনো খেলার মাঠ
ব্যাডমিন্টন, খুনতি-শাবল, গাঁইতি-হাতুড়ী, হাত।
যদিও নেই সে পুরনো বন্ধু, ঝগড়া-খেলার সাথী
কোথায় গিয়েছে হারিয়ে সে সব জীবনের সদাপাতি।


পুরনো মাটিতে অশরীরী ছবি তুলে আনে স্মৃতি রেখা
সময় গিয়েছে স্মৃতিরা তাজা, অমর বর্ণে আঁকা।
নেই সে ফুলের হাসি মাখা মুখ, প্রিয় সে সূর্যমুখী
শৈশবটাকে ছড়িয়ে রেখেছে প্রিয় মৃত্তিকা, সুখী।


ফিরে আসা এই নতুন মাটিতে ফলুক শস্য দানা
লাখো কোটি টাকা মূল্য দিয়েও হবে না তার এক কণা
এমন দামের ফসল ফলুক ক্ষণিক ফেরা এ মাঠে
আর একবার সবুজ পাতায় হাসুক শিশির ঘাসে।


আরো কিছুদিন যাক না এভাবে মাটির শয্যাটুকু
বুকের ভিতরে তোলপাড় করা ভালোবাসা হোক রুখু
এবার এ ঘাস কিংবা শস্য অথবা পুষ্প চারা
চলে গেলে আর শতেক বর্ষে হয়তো হবে না ফেরা।


আরেক পর্ব পাবে এ মাটি তখন আমি তো হাওয়া
হাওয়ার ডানায় ভর করে ফের এ মাঠেই দেব হানা
স্মৃতির সে সব বন্ধু ও ঘাস, ফসল বীজ ও ধুলি
আমার মতোই হাওয়ার সারথী হয়ে দেবে পদধুলি।


সে সব অনেক পরের কথা, দিন গুলো বহুদূর
এখন সামনে উদোম মাটিই হৃদয় করছে চুর
মানুষ আসবে চলেও যাবে তবুও কাতর হয়
এটাও নিয়ম এই পৃথিবীর, যদিও আসবে লয়।


রচনাকালঃ ০৯ ফাল্গুন ১৪২৩/মঙ্গলবার/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক।


প্রকাশকালঃ ১১ ফাল্গুন ১৪২৩/বৃহস্পতিবার/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ঢাকা।