কবিতা কি জনবিচ্ছিন্ন, সামাজিক ঘটনা প্রবাহ বিচ্ছিন্ন কিছু? কিছু মানুষ, কবি অভিধায় অভিহিত হয়ে সমাজ সংকট বিচ্ছিন্ন হয়ে কেবলই কবিতা নামের কিছু ফানুস ওড়াবেন, এটাই কি কবিতা চর্চার মূল কাজ? নাকি কবি ও কবিতা হবে সমাজ ও সমাজের চালচিত্র সংবেদী?


প্রশ্নগুলো মাথায় সব সময় ঘুরপাক খায়।মাঝে মাঝে কিছু প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষালয় একটা ব্যানার হেড ব্যবহার করে ‘‘রাজনীতিমুক্ত’’। কবিতাও কি এমন ব্যানারহেডে বিশ্বাসী হবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে? অনেকেই তাদের নানা ইভেন্টের জন্য কবিতা চান বা কবিতার আমন্ত্রণ জানান, কিন্তু শর্ত থাকে রাজনীতি ও ধর্মীয় বিষয় মুক্ত হবে। কেন? কবিতার আর সব কিছু থাকতে পারলে এ দু’টি বিষয় অপাঙক্তেয় কেন? এতে দ্বন্দ্ব বা দ্বান্দ্বিক অবস্থান বেশি বলে? রাজনিীতি ও ধর্ম মানুষের ব্যক্তি গোষ্ঠী, ক্ষুদ্রতর সমাজ, বৃহত্তর সমাজ ও রাষ্ট্রকে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। প্রেম ব্যক্তির জীবনকে প্রভাবিত করে, পরিবেশ ইস্যু, মানবতাকেন্ত্রীক ইস্যু, স্যোশাল ক্রাইম ও অন্যান্য সামাজিক সম্যা কেন্দ্রিক ইস্যুগুলো কবিতায় উঠে আসতে মানা নেই, আছে শুধু ধর্ম ও রাজনীতিতে। এতে কি খুব উপকার হয়?


আমি মনে করি কবিতা হওয়া উচিত কাব্য ভাবনা সমৃদ্ধ, রাজনৈতিক শ্লোগান বা ধর্মের প্রচার বাণীসিদ্ধ নয়। এমন হলে কবিতায় ধর্ম ও রাজনীতি আসায় কোন বারণ থাকা উচিত নয়। এই বারণ কবিদেরকে সমাজ বর্জিত আত্মকেন্দ্রিক জীবে পরিণত করবে।


আইলান, এরদোয়ান, ওবামা, আসিয়ান, জি সেভেন, আইএস, অনার কিলিং, মাদক, জঙ্গী, পাচার, ভূ-রাজনীতি, মুক্ত চিন্তা, আস্তিক-নাস্তিক, উন্নয়ন-পরিকল্পনা, সম্ভাবনা-সংকট সবই কবিতায় উঠে অাসতে পারে। এবং এগুলো প্রকাশে কোন নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত না।


গল্প-উপন্যাস যেন ‘‘চটি’’ না হয় এবং কবিতা যেন ‘‘শ্লোগান’’ না হয়ে ওঠে সেদিকেও খেয়াল রেখে সকল ধরণের বক্তব্য সম্বলিত বিষয়ই কবিতার বিষয় হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। কবিতার সাইটেও সব ধরণের বক্তব্য সম্বলিত লেখাই প্রকাশের ব্যবস্থা থাকা উচিত।


০১ শ্রাবণ ১৪২৩, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০১৬/ঢাকা।