ফেসবুকে কবিতা দেখলে কারো কারো জর আসে। কেউকেউ নাক-সিটকান।প্যানপ্যানানি। প্রেমে বিফল ;তাই ভেনতারা ভাজছে।এগুলো কবিতা বাজারের ফর্দ।কবিরা এসবের পাত্তা-নাদিয়েই কেজি কেজি কবিতা লিখে চলেছে ফেসবুক জুড়ে।ওরে বাবা মানুষতো খুন করছিনা কবিতা লিখছি। আমরা স্বভাব কবি। তাইতো পাঠকের চেয়েও কবির সংখ্যা বেশি।ছন্দ-কবিতার চাইতে গদ্য-কবিতার ছড়াছড়ি ।কেউ কেউ কবিতাকে এতো দুর্বোধ্য করে তুলতে চাইছেন যাতে পাঠক বুঝতে গিয়ে মথার চুল ছিঁড়ে comment করেন অসাধারণ।কেউ কেউ কবিতার ভাঁজে ভাঁজে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন গোপন সুড়সুড়ি। নিজের লাস্যময় ফটো সেটে দিচ্ছেন। আমার মতো পুরুষ কবি থুড়ি কাক; বিচ্ছিরি দেখতে না হলে সেখানে লাইক আর মন্তব্যের বন্যা হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো কবি দেখছি সে কতো বড়ো কবি প্রমাণ দিতেগিয়ে।কাদা ছোড়া ছুড়ি মল্লযুদ্ধও শুরু করেছেন। এসবনিয়ে ফেসবুক এখন কবিতার বই।বেশ সরগরম।কবিতা একটা শিল্প।আসুন দেখি শিল্প আর শিল্পী নিয়ে বিশিষ্টরা কি বলেন।
গোর্কি শিল্প ও শিল্পী সম্বন্ধে অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন ;
“ শিল্পী হচ্ছেন তাঁর দেশের –ও তার স্বদেশ ও সমাজের যেন চক্ষু, কর্ণ আর হৃদয় । এক কথায় তার যুগের বানী বা প্রতিধ্বনি ।তিনি যথাসাধ্য সব কিছু জানবেন । অতীতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় থাকবে যত বেশী ততই তিনি নিজের যুগকে ভালভাবে বুঝতে পারবেন ,ততই তিনি তার কালের সার্বজনীন বিপ্লবী রূপে ও কর্তব্যের পরিধি তীব্রভাবে গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন । জনগণের ইতিহাস তাঁর জানা উচিত , শুধু জানা উচিত বললেই হবে না , তাঁকে তা,জানতেই হবে । রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা গুলি সম্পর্কে জনগণের মনোভাব কি তাও তাকে বুঝতে হবে ।”
শিল্পীর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্বন্ধে রমাঁ রোঁলা আরো সুন্দর করে বলেছেন-“ শ্রমিকেরা যে পথ গড়ছে বুদ্ধি জীবীদের তা আলোকিত করতে হবে । তাঁরা দুটি বিভিন্ন মজুরের দল কিন্ত্তু কাজের লক্ষ্য এক ।_যে সংগ্রাম আজ নতুন পৃথিবীর সৃষ্টি করছে তাঁর মহান যোদ্ধা হওয়ার চাইতে বুদ্ধিজীবীদের আর কোন বড় কাজ নেই ।”
এসব পথ ধরেই কবিতা কোন রাজনৈতিক নেতার চিপ স্টান্ট দেওয়া বক্তব্য নয়; কবির হৃদয়ের জারণ, তার জীবন অভিজ্ঞান । পিকিউলিয়ার হ্যালুসিনেশন নয় ;
এক্সপ্রেশন অফ হাট অ্যান্ট মাইন্ড ইন্টু দ্যা সোসাইটি ।
বিষ্ণু দে বলেছিলেন , কবিতা রচনা আসলে আত্ম সচেতন । কবিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে জীবনানন্দ দাশ জানিয়ে ছিলেন ; সত্যিকার কবিতা পড়ে আমাদের কী মনে হয় ।
মনে হয়, এ-জিনিস আমারও অভিজ্ঞতায় ছিল ।
যখন মানুষের ভেতর কার সমস্ত এক্সপ্রেশন গুলো হারিয়ে যাচ্ছে ! কবিই ইনটেনসিভ কেয়ার নিচ্ছে সেরিব্রাল অ্যাটাক হওয়া আমাদের মস্তিষ্কের ।