লোকটি ভারতীয়,
কিন্তু নিগ্রোর মতই মোটা ও কালো
ছফুট উঁচু, আটানব্বই কিলো ওজন
মুখমন্ডল গোলাকৃতি
তাতে কাটা দাগে ভরতি
সব মিলিয়ে দেখলে তাকে একটা দৈত্য মনে হবে
লোকটির চামড়াই শুধু কদর্য্য ছিল না
কদর্য্যতা প্রবেশ করেছিল তার হাড় পর্যন্ত ।
স্হানীয় ছেলেমেয়েরা বলত
একটা জীবন্ত দানব ।


আমার ইংরাজী শিক্ষক বলতেন
এই পৃথিবীতে কিছুই কুৎসিত নয়
শুধু সোন্দর্য্য দেখার মত চোখ চাই,
যার ভিতরটা যারপরনাই সুন্দর
তাকে বাইরে থেকে কুৎসিত দেখায়
ঠিক প্রজাপতির মতো তার যাত্রা শুরু
প্রথমে শুঁয়োপোকা, তারপর গুটি,
শেষে রঙীন প্রজাপতি ...
সকলকে চমকে দিয়ে বেড়িয়ে আসে ।
আমি লোকটির সৌন্দর্য্য খুঁজতে শুরু করলাম ।


রহস্য উন্মোচিত হলো ...
কুৎসিত লোকটি একজন প্রাক্তন সৈনিক,
অবসর নেওয়ার পর ব্যবসা খুলেছে
সম্ভবতঃ তার চেহারাই তাকে বাধ্য করেছে
ব্যবসা খুলতে, হয়ত উপায় ছিল না ।
তার মুখের দাগগুলো ছিল যুদ্ধাস্ত্রের আঘাত-চিহ্ন
তার সঙ্কটের নীরব সাক্ষী,
নিঃসন্দেহে সে শক্তিশালী পুরুষ,
তাই জীবন যুদ্ধে জয়ী এবং আজও বিদ্যমান
কিন্তু মানুষ সেটা দেখতেই পায় না ।


সে খুব ভালো করে জানত
লড়াই, সহনশীলতা, সংগ্রাম বা ক্ষতি কাকে বলে
এবং তা থেকে কিভাবে বেড়িয়ে আসতে হয়
একটি দেশ ঐ রকমই নাগরিক চাই
কুৎসিত হোক কিন্তু বুদ্ধিমান
সাহসী, শক্তিশালী, আশাবাদী ও চালাক ...
লাল টুকটুকে মাকাল ফল নয় ।
আমার মাস্টারমশাই ঠিকই বলতেন,
আমি কুৎসিত লোকটার মধ্যে
এক অপরূপ সৌন্দর্য্য আবিস্কার করলাম ।