এক রাতে
ফসল যোগাতে জমিতে একাই
বাঁশের মাচার উপর শুয়ে ছিলাম,
অমাবস্যার রাত, ঘুটঘুটে অন্ধকার
শিরশিরে হাওয়া,
ভয়ে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছিল
কত রকমের বিদখুটে শব্দ
কানের মধ্যে দিয়ে ঢুকে
মাথার মধ্যে খেলা করছিল ।
কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, জানি না ।
ঘুম ভাঙল অনেক রাতে
দেখলাম হ্যারিকেন নিভে গেছে
সাহস করে আস্তে আস্তে চারপাশে তাকালাম ।
কিছুই দেখতে পেলাম না
ঘুটঘুটে কালো রাত
শুনতে পেলাম নিশুতি রাতের কান্না,
ভোরের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে ।
রাতের ঘন অন্ধকার প্রথম উপলব্ধি করলাম
তার কালো মুখ থমথম করছিল
এক অজানা আশঙ্কায় ।


একটা দিয়াশলাই-এর কাঠি জ্বালালাম
অন্ধকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে
ফস করে জ্বলে উঠলো একটা আলো,
বুঝিয়ে দিল
অন্ধকারের সংজ্ঞাটা কি !
কয়েক মূহুর্তের আলো
নিভে গেল ।
আবার চোখ বন্ধ করলাম ।
খানিক পরেই দেখলাম
আলো আর আঁধারের আলিঙ্গন,
অন্ধকারের ঠোঁটে আলোর চুম্বন ।
বুঝলাম আঁধারই শুধু অপেক্ষা করে না
আলো প্রথম আঁধারের কাছেই ছুটে আসে ।
সেই প্রথম অনুভব করলাম
অন্ধকারকে বোঝা অতো সহজ কাজ নয়,
শুধু একটা অন্ধকার রাতকে বুঝতেই
আমার কয়েক দশক পার হয়ে গেল ।
যাদের জীবনটাই অন্ধকারে ডুবে আছে
তাদের বুঝতে হয়ত
কয়েকটা জন্ম লেগে যাবে ।