ঠাকুমা বলতেন
নাতি আমার খুব সরল,
উনি জানতেনই না সরলের মধ্যে
যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ, বন্ধনী
সবই থাকে ।  
আমার ঘরনী এটা খুব ভালো করে জানে ।
আসলে যে যাকে নিয়ে ঘর করে
সে তার মর্ম বোঝে ।


আমার স্ত্রী রেগে গেলে কথায় কথায় বলে,
শুধু আমার কেন ...
বোধ হয় সবার স্ত্রী-ই  বলে
আমার মতো মেয়ে বলেই তোমার কাছে
টিকে গেল
অন্য মেয়ে হলে
মুখে ঝামা ঘঁসে দিয়ে
কবেই বেড়িয়ে চলে যেত ।


আগে এত কথা বলতো না,
ইদানীং বলছে ...
আসলে মেয়েরা বিয়ের পর প্রথম দশ বছর
‘চন্দ্রমুখী’
দ্বিতীয় দশ বছর ‘সূর্যমুখী’
আর তারপর তারা হয়ে যায়
‘জ্বালামুখী’
মানে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ।


সাঁইত্রিশ বছর আগে
ওর সীঁথিতে সিঁদুর পরিয়েছি,
প্রথম প্রথম ছোঁয়া লাগলে লজ্জাবতীর মতো
নুয়ে পড়ত ...
আর এখন কালনাগিনীর মতো
ফোঁস করে উঠে ।
শেষ বয়সে সাপুড়ের কাছে বিন বাজানোর
ট্রেনিং না নিতে হয় ।


তবে মন ভালো থাকলে
সে আজও লজ্জাবতী লতা
আগ্নেয়গিরির মাঝেই আবিস্কার করি
আমার সেই চন্দ্রমুখীকে
সে  ভুলে যায় ফেলে আসা সাঁইত্রিশটা বছর
তিক্ততা, খেদ, অপমান, অভিমান ... সব,
বুকের মধ্যে এসে গদগদ হয়ে বলে
তুমি আজও সহজ, সরল … সুন্দর ।